হটাৎ করেই মনে হলো কেউ পিছন থেকে জড়িয়ে ধরেছে আর পেটে স্লাইড করছে এত রাতে কে আসবে ভেবেই ভয়ে পিছনে তাকালাম আর পিছনে তাকিয়ে ভয়ের পাশাপাশি অবাক ও হলাম। কেননা আমার পিছনে রাদ শুয়ে আছে তাও আমাকে জড়িয়ে ধরে।
রাদ কে দেখা মাত্র ভয়ে আমার প্রাণ প্রায় যায় যায় অবস্থা কেনো না আজ সকালেই তাকে কবর দেওয়া হয়েছে।গতকাল রাতে সে হার্ট অ্যাটাক করেছে বলে ডক্টর জানিয়েছে ওর মৃত্যুর খবর শোনে তাড়াতাড়ি ওর বাসায় যাই কিন্তু ও এখন এইখানে তাও আবার আমার পাশে ভাবতেই শরীলের ভিতর শিহরিত হলো। ভয়ে ভয়ে রাদ কে জিজ্ঞাসা করলাম…
___ রাদ তু তুমি এইখানে কি কিভাবে? তুমি ন না আজ মারা গেছো(ভয়ে কথা মুখ দিয়ে আসছেই না)
___ওহ ডার্লিং তোমাকে ছাড়া কি আর আমি থাকতে পারি। তুমি আমাকে বলেছো না আমাকে ছাড়া তুমি থাকতে পারবে না আর আমি ও তো বলেছিলাম তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না তাই তো ফিরে আসলাম তোমার কাছে দীবা (চুলে মুখ গুঁজে)
___দূরে যাও তুমি আমার কাছে আসবে না তাহলে কিন্তু এরফল ভালো হবে না রাদ(দূরে সরে গিয়ে)
____ দীবা জান তুমি তো দেখছি সব ভুলে গেছো। কেনো জান তুমি কি আমাকে দেখে খুশি হও নি। জানো তোমার কাছে ফিরে আসতে কত কি করতে হয়েছে। আর এখন তুমি কিনা আমাকে দূরে যেতে বলছো। কিন্তু আমি তো দূরে যাবো না জান
___রাদ তুমি বুঝতে পারছো না তুমি এখন বেঁচে নেই তুমি আর আমি এক হতে পারবো না প্লিজ তুমি চলে যাও।
____আমি চলে গেলে বুঝি স্বপ্ন কে বিয়ে করতে পারবে আর ওর সাথে ঘর সংসার করে সুখে থাকতে পারবে….
দীবা কথাটা শোনা মাত্র রাদের দিকে তাকালো আর দেখলো রাদের পুরো শরীর একটা ভয়ানক রূপ ধারণ করেছে তা দেখে দীবা ভয়ে অজ্ঞান হয়ে নিচে পড়ে যায়… ….
🌄
সকালে…..
স্বপ্নের ডাক শোনে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি স্বপ্ন আর বাসার কাজের মেয়েটি দাড়িয়ে আছে আর স্বপ্নের চোখে মুখে চিন্তিত ও ভয়ের আভাস দেখা যাচ্ছে আমাকে চোখ খুলতে দেখে তাড়াতাড়ি আমার পাশে এসে বসে জিজ্ঞেস করলো….
___ কি হয়েছে তোমার দীবা? সকালে রাজিনা(কাজের মেয়ে) বললো তুমি নাকি অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে ছিলে তাই ও ফোন দিলো আমাকে
___স্বপ্ন ও ও এসেছিলো(ভয়ে স্বপ্ন কে জড়িয়ে ধরে)
__কে এসেছিলো নাম কি বলো ?
___ রা রাদ এসেছিলো আর ও ফিরে এসেছে
এই কথা শুনে স্বপ্ন কিছু বলতে যাবে তার আগেই রাজিনা বলে উঠলো….
___আফা আইন্নে এইত্তা কি কন মরা মানুষ আবার আইবো কেমনে আন্নে না শহরের মাইয়া আন্নেও এহন এইত্তা বিশ্বাস করেন। তাইলে কি হাচাই মরা মানুষ ফিইরা আইয়ে আমাগো গেরামে একবার এমন ঘটনা হইছিলো….
রাজিনার কথা শোনে দীবা ভয় পেয়ে স্বপ্ন কে আরো জড়িয়ে ধরে এইটা দেখে স্বপ্ন রাজিনা কে ধমক দিয়ে বললো….
___ওই রাজিনা কিসব বকছিস মাথা কি গেছে তোর যা গিয়ে মেমের জন্য গরম দুধ আর ডিম নিয়ে আয়
___আইচ্ছা সাহেব
রাজিনা চলে গেলো আর স্বপ্ন দীবার মুখে হাত দিয়ে বলে….
___দীবা তুমি এখন এইসব কি বলছো। হুম মানছি দেখেছো আর তা স্বপ্নে দেখেছো তুমি হয়তো গতকাল এইসব নিয়ে অনেক ভেবেছো তাই এইসব বলছো। শোনো মৃত্যুর পর কেউ কখনো আসতে পারে না। রাদ মারা গেছে ভুলে যাও রাদ কে
__ট্রাস্ট করো স্বপ্ন ও এসেছিলো আর খুব খারাপ ভাবে আমায় ছুয়ে ছিলো। জানো ওর মুখ কেমন ভয়ানক ছিলো ।
___বলছিনা জান তুমি এইসব স্বপ্ন দেখেছো এইসব কখনো বাস্তব হয় না।
___আমি দেখেছি রাদ কে(রাগে কথাটা বললো)
____ওকে ফাইন বিশ্বাস করলাম দেখেছো তো এখন কই সে আর বাসায় তো তুমি ছাড়া আর কাউকে দেখেনি রাজিনা আর আমি ও তো এসে সব চেক করলাম কিছুই তো পেলাম না। এখন শোনো এইসব বাদ চলো আমরা ঘুরতে যাই তাহলে হয়তো এইসব থেকে বের হয়ে আসতে পারবে…
___আমি কোথাও যাবো না স্বপ্ন
___প্লিজ দীবা না করো না
দীবা স্বপ্নের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে স্বপ্ন বাচ্চাদের মতো মুখ করে বলছে যেনো সে আবদার করছে তাই দীবা হেসে দিয়ে বললো ওকে যাবো এইবার খুশি (স্বপ্নের গাল টেনে)
___হুম খুশি বাট বেশি না
___কেনো কেনো এখন আবার কি হয়েছে?
___ওই যে মিষ্টি দিলে না তাই
___ কেনো রাজিনা কিছু দেয় নি তোমায়? ধারাও এক্ষনি আমি ওই মেয়েকে ডাকছি
দীবা যেই রাজিনা কে ডাকতে যাবে তার আগেই স্বপ্ন দীবার ঠোঁট জোড়া নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো….
কিছুক্ষন পর স্বপ্ন বললো…..
___এই মিষ্টির কথায় বলেছিলাম এই মিষ্টি কি রাজিনা দিতে পারবে
এই কথা শোনে দীবা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেললো স্বপ্নের চোখে চোখ রাখতে কেনো যেনো তার লজ্জা করছে তখনি স্বপ্ন বললো….
__ওরে আমার লজ্জাবতীরে লজ্জায় একদম রংধনু হয়ে যাচ্ছে এতো লজ্জা পেতে হবে না চলো নিচে যাই আর রাজিনা কে বলি আমরা বাহিরে খেয়ে নিবো……
অতঃপর স্বপ্ন আর দীবা ঘুরতে চলে গেলো…….. আর ওরা যাবার পরেই দীবার রুম যেনো বজ্রপাতের মতো জ্বলে উঠে আবার চুপ হয়ে গেলো……
চলবে……
#ফিরে_আসা
#ফারজানা
#পর্ব_১
