প্রিয়ঃ _আপডেট পর্ব ৫
মোর্শেদা রুবীঃ
প্রিয়াকে দেখে শারদের বাবা উৎফুল্ল হয়ে ওকে কাছে ডেকে বসালেন।
-“এসো মা,এখানে বসো!”বলে প্রিয়ার দিকে একটা চেয়ার এগিয়ে দিলেন।
-“ঘুম কেমন হলো।”
-“জ্বী,ভালো!”
-“শুনলাম তোমরা বউ শ্বাশুড়ী দুজনে মিলে কাল বেশ গল্প করেছো?”
প্রিয়া হাসলো।সাজেদা নাস্তার হটপটটা এগিয়ে দিয়ে বললেন-
-“নাও,দুজনে একসাথে নাস্তা করো।”
প্রিয়া অবাক হয়ে বললো-“বাবা,নাস্তা করেন নি এখনো?”
-“নাহ্,তোমার শ্বশুড় তোমার সাথে নাস্তা করবে বলে বসে আছে!”
-“সেকি…?”
প্রিয়া নিজের হাতেই নাস্তা সার্ভ করলো।কিন্তু পরোটা আর ভাজিতে অতিরিক্ত তেল দেখে কিছুটা দ্বিধার সুরে বললো-
–“আম্মা,নাস্তা কি বাইরে থেকে আনানো হয়েছে?”
-“হ্যাঁ,কেন কিছু হয়েছে?”
-“না, মানে সব গুলো খাবারেই তেলের আধিক্য এতো বেশী। এগুলো খেলে তো গ্যাসট্রিক হবার সম্ভাবনা।”
-“কি করবো রে মা!এই বুড়ো শরীরে আর পারিনা।ছুটা বুয়াটা সাতদিনের কথা বলে দেশে গেছে এখনো আসেনি।পাশের বাসার কাজের মেয়েটাকে দিয়ে ঠেকার কাজ চালাচ্ছি তাই নাস্তা দোকান থেকে আনাতে হলো!”
প্রিয়া এতো তেল চুপচুপে পরোটা একটার বেশী খেতে পারলোনা।উঠে গিয়ে শ্বশুড়ের জন্য নিজেই চা বানিয়ে আনলো।
শ্বাশুড়ীর কাছ থেকে জেনে নিলো দুপুরের কি আয়োজন।
সাজেদা বাধা দিয়ে বললেন-“মাত্র এসেছো।এখনি এতো কাজ করতে হবেনা।দুপুরের জন্য একটা ব্যবস্থা হবে।”
প্রিয়া কোনো কথা শুনলো না।কোমড়ে আঁচল পেঁচিয়ে কাজে লেগে গেলো।শ্বাশুড়ীর কাছ থেকে জেনে নিয়ে শ্বশুড় আর শারদের পছন্দমতো কয়েকপদ রান্না করলো।এর মধ্যেই প্রিয় উঠে গেলে ওকে সাজেদাই সামলালেন।
প্রিয়া চট করে এসে একফাঁকে প্রিয়র হাত মুখ ধুয়ে দিয়ে ওকে গরম গরম ভাত চটকে রান্না করা টাটকা মাছ আর সব্জি নিয়ে খাওয়াতে বসলো।
সাজেদা হেসে বললেন-“দেখো পারো কিনা।আমি তো বলে বলে হয়রান।খাবার মুখেই তুলতে পারিনা।মাখিয়ে টাখিয়ে একাকার করে ফেলে।এক ফিডার খেয়েই বেঁচে আছে!”
-“না মা…ওকে এখন থেকেই খাবারের অভ্যাস না করালে পরে সমস্যা হবে!”
প্রিয়া নানান কথা বলে এটা ওটা দেখিয়ে প্রিয়র মুখে খাবার তুলে দিতে লাগলো।প্রিয় অর্ধেকটা খেলো আর অর্ধেকটা কোনোভাবেই খাওয়ানো গেলোনা ওকে।”
প্রিয়া আর জোর করলোনা। প্রথমেই এতোটা জোর করা ঠিক হবেনা।আস্তে আস্তে অভ্যাস করতে হবে!তবে প্রথম দিন হিসাবে যা খেয়েছে যথেষ্ট।
প্রিয়কে খাইয়ে ওকে সাজেদার কাছে দিয়ে প্রিয়া গোসলে গেলো।নামাজ পড়তে হবে।
শারদের ঘরে উঁকি দিলো।শারদ ঘরে নেই বাইরে গেছে কোথাও।প্রিয়া ভাবলো, এই সুযোগ।চট করে গোসলটা সেরে নেয়া যেতে পারে।লাগেজ থেকে থ্রিপীস বের করে বাথরুমে ঢুকে গেলো ও।
প্রায় সাথে সাথেই হুড়মুড়িয়ে বেরিয়ে এলো প্রিয়া।
লজ্জায় সংকোচে ওর মুখ টমেটোর মতো লাল হয়ে আছে।কয়েক সেকেন্ড স্থাণুর মতো দাঁড়িয়ে থেকে হঠাৎ সম্বিত ফিরতেই দ্রুত হাতের কাপড়গুলো আঁকড়ে বেরিয়ে যেতে নিলে পেছন থেকে ডাক পড়লো-
-“এ্যাই মেয়ে দাঁড়াও….!”
চোখ মুখ কুঁচকে স্থির হয়ে দাঁড়ালো প্রিয়া।
শারদ বাথরুমের গেটের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।ওর মাথায় একরাশ সাদা ফেনা। সে কিছুটা রূঢ় স্বরে বললো-“বাথরুমে ঢুকতে হলে যে নক করতে হয়,এই জ্ঞানটা কি নেই?”
প্রিয়া লজ্জায় একটুকু হয়ে মুখ না ফিরিয়েই বললো-“স্যরি,আমি ভেবেছি আপনি বাসায় নেই।তাছাড়া বাথরুমের গেট তো খোলা ছিলো, তাই বুঝতে পারিনি যে কেউ ওখানে আছে।”
-“আমার বাথরুম আমি লক করি চায় খোলা রাখি,কাউকে জবাবদিহী করার তো প্রয়োজন দেখিনা।এরপর থেকে বাথরুমে ঢোকার আগে চেক করে নেবে! ”
-“কিভাবে চেক করবো?দরোজা খোলা থাকলে……!”
-“তুমি তো ভারী পাজী মেয়ে দেখছি।কিভাবে চেক করবে মানে?বাইরে থেকে টোকা দেবে,তারপর ঢুকবে।এটাও কি শিখিয়ে দিতে হবে?”
প্রিয়া কোনো জবাব না দিয়ে মাথা নেড়ে দ্রুত রুম ছেড়ে বেরিয়ে গেলো।
প্রিয়া শ্বাশুড়ীর বাথরুমে গিয়ে গোসল করে আসলো।তারপর ভেজা চুলে তোয়ালে পেঁচিয়ে প্রিয়’র পাশে চুপ করে বসে রইলো।সাজেদা ঘরে ঢুকে ওকে দেখে অবাক হলেন!
-“তুমি এখানে কেন,যাও শারদকে ডেকে নিয়ে এসো।ভাত খেতে হবেনা!”
প্রিয়া সসংকোচে মৃদুস্বরে বললো-“আমি ডাকতে যাবো?যদি রাগ করে?”
-“অযথা রাগ করবে কেন।আর তুমি হলে ওর স্ত্রী।এখন থেকে ওর সবকিছুর খেয়াল তোমাকেই রাখতে হবে।এভাবে ভয় পেয়ে লুকিয়ে থাকলে তো হবেনা।যাও,চুল মুছে ওকে নিয়ে খেতে এসো।বলো,আমি ডাকছি।যাও,ভেজা চুলে ঠান্ডা লেগে যাবে।আর ও যদি বেশী রাগ দেখায় তাহলে আমাকে বলবে!”বলে সাজেদা বেরিয়ে গেলেন।
প্রিয়া ধীর পায়ে শারদের ঘরে এলো।ততক্ষণে শারদের গোসল হয়ে গিয়েছে।সে চুপচাপ তার পিসি’র সামনে বসে আছে।একমনে কি যেন একটা দেখছে।প্রিয়ার উপস্থিতি টের পেয়েও তাকালোনা।একমনে
ভিডিও দেখতে লাগলো।
প্রিয়া কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে আস্তে করে চুল থেকে টাওয়েল নামালো। দুহাতে টাওয়েল ধরে চুলগুলো হালকা চাপড়ে ঝাড়তে লাগলো।
চুল ঝাড়া শেষ করে শারদের কাছে এসে বললো,
-“মা আপনাকে খেতে ডাকছেন!”
শারদ মুখ না ফিরিয়েই গম্ভীর স্বরে বললো-“পরে আসছি।”
-“জ্বী…..আচ্ছা!”
বলে প্রিয়া চলে আসতে গিয়েও কি মনে হতে বাথরুমের দিকে গেলো।ভাবছে,শারদের ভেজা কাপড়টা সাথে সাথে ধোয়া হয়েছে কি!
ভাবতে ভাবতেই বাথরুমের গেট খুলে উঁকি দিলো। যা ভেবেছিলো তাই,শারদ ওর পরনের ট্রাউজারটা মাটিতেই ফেলে রেখে এসেছে।এছাড়াও পুরো বাথরুম এলোমেলো করে রেখে এসেছে সে।ফ্লোরে জায়গায় জায়গায় ফেনা জমে আছে।
প্রিয়া ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে কাপড় গুছিয়ে পা টিপে টিপে সাবধানে বাথরুমে ঢুকলো।তারপর পরনের ওড়নাটা হ্যাঙ্গারে তুলে রেখে শারদের ট্রাউজারটা প্রথমে ফ্লোর থেকে তুলে বালতিতে রেখে সেটা কলের নিচে দিয়ে কল ছেড়ে দিলো ধোবার জন্য।তারপর মগে পানি নিয়ে সারা বাথরুমে ঢেলে দিতে লাগলো যেন জমে থাকা ফেনা গুলো সরে যায়।কাজ শেষে কামিজের হাতা কনুই পর্যন্ত গুটিয়ে শারদের ট্রাউজারটা পানিতে কয়েকবার ভালো করে ধুয়ে চিপে নিলো।
কাজ সেরে ট্রাউজার হাতে বেরোবার সময় হঠাৎ কোনো কিছুর উপর পা পড়তেই সাঁৎ করে উল্টে পড়ে গেলো প্রিয়া।দড়াম করে আছাড় খেয়ে বাথরুমের ফ্লোরে পড়ে গেলো সে।
প্রচন্ড ব্যথায় কঁকিয়ে উঠলো প্রিয়া।
====
গতকালই মাত্র ডাউনলোড করেছে মুভিটা। একটা জাপানী মুভি।শারদ খুব মনোযোগ দিয়ে একমনে দেখছে।পেটে প্রচন্ড খিদে লেগেছে কিন্তু মুভিটা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে করছেনা।তাছাড়া বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা সিন চলছে।এমন সময় আচমকা দুম করে ভারী কিছু পড়ার শব্দে লাফ দিয়ে উঠলো শারদ।
কিসের শব্দ এটা?শব্দটা বাথরুমের ভেতর থেকেই এসেছে।
হঠাৎ মনে পড়লো, মেয়েটাকে তো একটু আগে বাথরুমে ঢুকতে দেখেছে।সেখানে কিছু হলো না তো।
শারদ কি মনে হতে ভিডিও পওজ করে দ্রুত উঠে বাথরুমের দিকে গেলো।
গেটে নক করে বললো-“এটা কিসের শব্দ!কিছু পড়েছে?”
ভেতর থেকে প্রিয়ার গোঙানীর শব্দ পেয়ে দ্রুত গেট ধাক্কা দিয়ে খুলে ফেললো শারদ।প্রিয়া বাথরুমের ফ্লোরে কাত হয়ে পড়ে কাতরাচ্ছে।ওর হাতে শারদের পরনের ট্রাউজারটা ধরা।যা বোঝার বুঝে ফেললো শারদ।হঠাত খেয়াল করলো ফ্লোরে সাবানটা গড়াগড়ি খাচ্ছে।তারমানে এটাতেই পা পড়েছে মেয়েটার।হয়ত শারদের হাত থেকেই কোনোভাবে পড়ে গেছে সাবানটা শারদ খেয়াল করেনি।
শারদ দ্রুত এগিয়ে গিয়ে প্রিয়ার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো-“একি,পড়লে কিভাবে?আমার হাত ধরে উঠে এসো।”
প্রিয়ার চোখে পানি।
ব্যথায় মুখ কুঁচকে বললো-
-“নড়তে পারছিনা।উহ্, মাগো…!”
শারদ প্রিয়ার হাত থেকে ট্রাউজারটা নিয়ে নবের উপর রেখে এক মিনিট ইতস্তত করলো।তারপর দুহাতে অনায়াসে প্রিয়াকে পাঁজাকোলা করে কোলে তুলে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো।প্রিয়া এখনো ফোঁপাচ্ছে।সম্ভবত ব্যথাটা একটু বেশীই পেয়েছে।
ওকে বিছানায় নামাতে গেলে প্রিয়া কাতর স্বরে বললো-“আমার কাপড় ভেজা।বাথরুমের ফ্লোরের পানি দিয়ে জামা ভিজে গেছে।এই জামা নিয়ে বিছানায় বসা কি ঠিক হবে?”
শারদ একটু বিপাকেই পড়লো।চিৎকার করে যে মা’ কে ডাকবে তারও উপায় নেই।সে কি ভেবে বললো-“কিছু হবেনা।চাদর পাল্টে ফেললেই হবে।তোমাকে এভাবে নিয়ে সারাদিন দাঁড়িয়ে থাকবো নাকি আমি!”
বলে প্রিয়াকে বিছানায় নামিয়ে রাখলো সে।
তারপর পাশে বসে বললো-“খুব বেশী লেগেছে?”
প্রিয়া ঠোঁট চেপে মাথা নাড়লো।
শারদ উঠে দাঁড়িয়ে বললো-“আমি মা’কে পাঠিয়ে দিচ্ছি।আর একটু দেখেশুনে চলতে পারোনা?এতো বড় মেয়ে হয়ে পড়লে কিভাবে? ”
-“আপনি ফ্লোরে সাবান ফেলে রেখে এসেছিলেন,ওটা খেয়াল করিনি!”
শারদ এবার কিছুটা দমে গিয়ে বললো-
-“ওহ্,তাই নাকি!আচ্ছা,তুমি থাকো মা এসে তোমার পোষাক পাল্টে দেবে।আমি মা’কে পাঠাচ্ছি। ”
শারদ বেরিয়ে গেলে তার কিছুক্ষণের মধ্যেই সাজেদা ছুটে এলেন-
-“একি,পড়লে কিভাবে?”
-“পা স্লিপ করেছি মা!”
-“আহ হা…একটু খেয়াল করবেনা।শারদটা বরাবরই এরকম।ও গোসল করলে আরেকজনকে এসে বাথরুম গুছাতে হয়।বিয়ের পরপর নীরাও ওরকম আছাড় খেয়ে কোমড়ে ব্যথা পেয়েছিলো!”
-“জামাটা বদলাতে হবে মা।কিন্তু নড়তে পারছিনা।কোমড়ে প্রচন্ড টান লাগছে!”
-“নড়ো না,দাঁড়াও আমি ব্যাগ খুলে জামা বের করে দিচ্ছি!”
সাজেদা জামা এনে দিলে প্রিয়া বহু কসরত করে পরনের জামাটা বদলে নিলো।
আধাঘন্টা পড়ে শারদ এসে দুহাত কোমড়ে রেখে দাঁড়ালো!
-“এখন কি অবস্থা?”
-“জ্বী,আলহামদুলিল্লাহ!”
-“ব্যথা কমেছে?”
-“বুঝতে পারছিনা,নড়তে গেলেই জানটা বেরিয়ে যেতে চায়!”
-“বসো,আমি তোমার ভাত নিয়ে আসছি।আম্মা একটু ব্যস্ত।কে যেন এসেছে তার সাথে কথা বলছে!”
-“না থাক্,আপনাকে কষ্ট করতে হবেনা।ব্যথা সহনশীল হলে আমি নিজেই গিয়ে খেয়ে আসবো!”
-“এতো তাড়াতাড়ি উঠতে পারবে বলে তো মনে হয়না।তাছাড়া তুমি তো আমার জন্যই ব্যথা পেলে…!”
-“না না এটা আমার ভাগ্যে ছিলো।অযথা নিজেকে দোষারোপ করছেন কেন?”
প্রিয়ার এ কথায় শারদ এবার ভালো করে ওর দিকে তাকালো।নীরাও একদিন এরকম বাথরুমের ফ্লোরে পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছিলো।সে কি কান্নাকাটি হুলুস্থুল।নীরা অবশ্য এতো জোরে পড়েনি কিন্তু ওটুকুতেই হৈ চৈ করে শারদের জান কাহিল করে ফেলেছিলো।এই মেয়েটি বেশ সহনশীল মনে হচ্ছে।এতোজোড়ে পড়ার পরও মাথা ঠান্ডা রেখে কথা বলছে।
পুরোনো কিছু কথা মনে পড়ে যাওয়ায় শারদের মনটা হঠাৎ খারাপ হয়ে গেলো।সে উঠে বাইরে চলে গেলো।
সাজেদা খাবার নিয়ে এঘরে এলেন।
প্রিয়ার হাতে তুলে দিয়ে চিন্তিত স্বরে বললেন-“কি কান্ড হলো বলো তো! কাল তোমার চাচারা এলে যখন এসব দেখবে, কি ভাববে বলো তো।বিয়ের পরদিনই এমন একটা ঘটনা ঘটে গেলো।নাও,ভাত খেয়ে ঔষধটা খেয়ে নাও।খেয়ে বিশ্রাম নাও।”
-“আম্মা, প্রিয় কি করছে?ও এখনো ঘুম থেকে উঠেনি?”
-“না,আজ বাবু গোসল করে ভাত খেয়েছে না।টানা ঘুম দিচ্ছে।ওকে নিয়ে ভেবো না।ও
আমার কাছেই থাক।তুমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠো।”শেষ কথাটা প্রিয়ার গালে হাত রেখে বললেন সাজেদা।তারপর বেরিয়ে গেলেন।
রাত বাড়ার আগেই জ্বর এসে পড়লো প্রিয়ার।রাতে সে কিছুই খেলোনা।জ্বরের ঘোরে বেহুঁশের মতো পড়ে রইলো।সাজেদা কয়েকবার এসে ওকে দেখে গেছেন।শারদ পিসির সামনে চুপচাপ বসে ভিডিও দেখছে।
রাত গভীর হলে প্রিয়ার কাতরানির শব্দে শারদ চেয়ার ছেড়ে উঠে ওর কাছে গেলো।আস্তে করে ওর কপালে হাত ছুঁইয়ে মনে মনে চমকে উঠলো।তারপর ড্রয়ার খুজে একটা বড় রুমাল বের করে সেটাকে ভিজিয়ে ওর কপালে ভাঁজ করে দিয়ে রাখলো।
কিছুক্ষণ পপর, প্রিয়া মৃদুশব্দে পানি চাইলো।শারদ একগ্লাস পানি ঢেলে ওকে বারকয়েক ডাকলেও প্রিয়া সাড়া দিলোনা।সে পানি চেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছে।
শারদ কয়েক মিনিট অপেক্ষা করে
পানির গ্লাসটা একহাতে নিয়ে আরেক হাতে প্রিয়ার মাথাটা তুলে ধরলো-“এইযে,পানি খাও….!শুনছো, পানি খাও!”
বারকয়েক ডাকার পর প্রিয়া ঘোর কেটে কোনরকমে একটা চুমুক দিয়েই মুখটা সরিয়ে নিলো।
শারদ ওর ঘুমন্ত মুখের দিকে চিন্তিত ভঙ্গিতে তাকিয়ে রইলো!
চলবে….