‘ধূম্রজাল’
সপ্তম পর্ব

তাবিনা মাহনূর

___________

আজ সাদির সাথে গুলবাহারের তৃতীয় দিনের সাক্ষাৎ। অথবা হতে পারে এটাই শেষ সাক্ষাৎ। কারণ দ্বিতীয় দিন বাহারের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য না পাওয়ায় শাওন এবং শুভ্রত স্যার বাহারকে নিয়ে আশাহত হয়েছেন। তারা বাহারকে সন্দেহ করা শুরু করেছেন। তারা ভাবছেন, হয়তো বাহার নিজেই কথাগুলো গোপন করছে যেহেতু তারা পূর্বে একে অপরের পরিচিত ছিল।

বাহার অনেকবার বুঝিয়ে বলেছে তাদের পরিচয় ছিল মাত্র কিছু মুহূর্তের জন্য। এরপর তাদের আর কখনো যোগাযোগ হয়নি। তবু শাওন স্যার বাহারকে এই শেষবার চেষ্টা করতে বলেছেন। বাহার নিজেকে প্রস্তুত রেখেছে। নিজের মনকে বুঝিয়েছে, কোনোভাবেই সাদির জগতে বিচরণ করা চলবে না। নাহলে সাদি হবে তার মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রক, সে হবে শুধুই পুতুল।

গুলবাহার সেই কামরায় বসে অপেক্ষা করছে। তার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সাদি এলো ধীর পায়ে। এবারও সাদির দৃষ্টি নিচের দিকে। বাহার তাতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে। সে মুচকি হেসে বললো, ‘আসসালামু আলাইকুম।’

সাদি উত্তর দিলো, ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম।’

বাহার সরাসরি প্রসঙ্গে না গিয়ে নিজের সাজানো পরিকল্পনা অনুযায়ী চললো। সে প্রশ্ন করলো, ‘আপনাকে ভালো সেলে রাখা হয়েছে?’

– হুম।
– ঠিকমতো খাবার দেয়া হচ্ছে?
– হুম।
– আলহামদুলিল্লাহ। এবার ঠিক বলেছি তো?

সাদি চুপ করে আছে। বাহার মুচকি হেসে বললো, ‘এবার অবশ্যই ঠিক বলেছি। যেহেতু আপনার কারাগার আগের তুলনায় উন্নত, তাই আলহামদুলিল্লাহ বলাটা ভুল হয়নি। আচ্ছা যাক সেসব কথা। আপনার সাথে একটু গল্প করি। জানি আপনি উত্তর দিবেন না। আমি একাই বলতে থাকি। কোনো ভুল পেলে আপনিই ধরিয়ে দিবেন।’

সাদি এর পৃষ্ঠে কিছুই বললো না। বাহার হাতে থাকা কিছু কাগজ আর মোবাইলে রাখা তথ্যগুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে সাদির দিকে তাকিয়ে বললো, ‘এটা একটা গল্পের মতো। সুদর্শন এক যুবকের গল্প, যেখানে রয়েছে ভালোবাসা, যত্ন, হতাশা আর প্রত্যাবর্তন। ছেলেটা হলো প্রিয়ংশু ব্যানার্জি।’

সাদি হালকা হেসে উঠলো, কেউ সূক্ষ্ম দৃষ্টি দিয়ে না তাকালে সেই হাসি দেখতে পাবে না। কিন্তু বাহার দেখেছে। কারণ সাদির গালের খাঁজ একটুখানি গভীর হয়েছিল সেসময়। কিন্তু প্রতিবারের মতো এবার বাহার ভেঙে পড়েনি। সেও হেসে বলে উঠলো, ‘প্রিয়ংশু ব্যানার্জি বেশ নামকরা কোম্পানির মালিকের প্রিয় ছেলে। তিনি তার স্ত্রীকে খুব ভালোবাসতেন। কিন্তু তাদের মধ্যে হঠাৎ ঝামেলা শুরু হলো। তার স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্য, ঝগড়া বাড়তে বাড়তে সমাপ্তিতে পৌঁছে হয়ে গেল বিচ্ছেদ। এরপর তিনি পরিবারের সাথে থাকা বন্ধ করে দিলেন। বেসরকারি এক সংস্থা ও ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানির দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা প্রিয়ংশু দেশ বিদেশ ঘুরতে শুরু করলেন কাজের প্রয়োজনে। দুবাই গিয়ে তিনি পেয়ে গেলেন অমূল্য রতন। সেখানকার এক বন্ধুর সাহায্যে তিনি জানতে পারলেন ইসলামকে, চিনতে পারলেন আসল সত্তা সম্পর্কে। গ্রহণ করলেন ইসলাম। প্রিয়ংশু বদলে নাম দিলেন সাদি হাসরাত।’

সাদির কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। সে এমনভাবে বসে আছে যেন বাহারের উপস্থিতি তাকে বেশ বিরক্ত করছে। যেন সে এই ব্যাপারে উদাসীন। বাহার তা উপেক্ষা করে বলেই গেল।

– এরপর সাদিকে কোন কারণে কোম্পানির চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

এসময় সাদি বলে উঠলো, ‘দাড়ি রাখার কারণে। টাখনুর উপর প্যান্ট পরার কারণে।’

বাহার ভেতরে ভেতরে অনেক খুশি। সাদি ধীরে ধীরে সব ধোঁয়াশা পরিষ্কার করবে বলে সে বিশ্বাস করে। এর জন্য একটু পরিশ্রম তাকে করতেই হবে। সে আবার বললো, ‘এরপর সাদি দেশে ফিরে রিসার্চ সেন্টারে যুক্ত হলেন।’

– ভুল বলেছেন, আমি আগে থেকেই যুক্ত ছিলাম সেখানে।

বাহার ইচ্ছে করেই ভুল বলেছিল যেন সাদি সাড়া দেয়। সে মুখ শান্ত রেখে বললো, ‘হুম, আগে থেকেই ছিলেন সাদি। তবে কাজের চাপে রিসার্চ সেন্টারে বেশিক্ষণ সময় দিতে পারতেন না। কাজ যেহেতু হারিয়ে ফেললেন, তাই তোহা সেন্টারে তিনি নিয়মিত হয়ে গেলেন। কারণ তোহা স্যার তাকে খুব ভালোবাসতেন। তার বেতনের পরিমাণ বাড়তে থাকলো আর ধীরে ধীরে তিনি এতোটাই বিশ্বস্ত হয়ে গেলেন যে তোহা স্যারের গোপন ঘরের খবরও জেনে গেলেন।’

সাদি বিরস ভঙ্গিতে মুখ দিয়ে শ্বাস ফেলে বললো, ‘আমার ঘটনা আমাকে শোনানোর কারণ?’

বাহার মুচকি হাসলো। এ সবকিছু সে অরিত্রীর কাছ থেকে জেনেছে। অরিত্রীকে সে আরো প্রশ্ন করেছিল কিন্তু সেগুলো অরিত্রী এড়িয়ে গিয়েছে। যেমন, সাবিত্রীর সাথে প্রিয়ংশুর বিচ্ছেদের কারণ, দুবাই গিয়ে কার সাথে দেখা হয়েছিল, পরিবার থেকে আলাদা কেন থেকেছে ইত্যাদি নানান কারণ অরিত্রী জানে না বলে এড়িয়ে গিয়েছে। তবে যতটুকু জানা গিয়েছে তাতেই চলবে।

– সাদির সাথে তোহা স্যারের সম্পর্ক ছিল বাবা ছেলের মতো। তাহমিদ ইকবাল বলেছেন, সাদি তোহা স্যারের বাসায়ও গিয়েছে। তারা দুজন খুব চিন্তিত ভঙ্গিতে গল্প করতেন যেন ভবিষ্যতের কোনো ব্যাপারে তারা চিন্তায় ব্যস্ত। তারপর তোহা স্যারকে প্রায়ই বিমর্ষ দেখা যেতো। শেষ যেদিন স্যার নিখোঁজ হলেন, সেদিন সকালে সাদি স্যারের সাথে লম্বা আলোচনায় বসেছিলেন।

সাদি বলে উঠলো, ‘যেই পেপারগুলো আপনারা খুঁজে পাচ্ছেন না, সেগুলোর ব্যাপারে কথা হয়েছিল সেদিন।’

ধরা দিচ্ছে সাদি। বাহার নিজের উত্তেজনা চেপে বললো, ‘তারপর সাদি দুপুর বেলা নিজের বাড়ি গেলেন। বিকেলে আবার এলেন রিসার্চ সেন্টারে। গোপন কক্ষে গেলেন তোহা স্যারের সাথে। তারপর বেরিয়ে এলেন একা। বাইরে থেকে দরজা আটকে দিলেন যেন ভেতরে কেউই নেই!’

– আমি সেসময় বাসায় ছিলাম। আমি দুপুরে বেরিয়ে যাওয়ার পর সেন্টারে আর যাইনি।
– তাহলে চেকইন কে করেছে? সিসিটিভি ফুটেজে আপনার চেহারা ও পিস্তলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট মিললো কিভাবে?
– সবই ঠিক আছে, কিন্তু মানুষটা আমি না।

বাহার চোখ ঘুরিয়ে বিরক্ত প্রকাশ করে কেমন হেসে উঠলো, ‘সাদি, আপনি কি বলছেন জানেন?’

সাদিও হেসে উঠে শ্বাস টেনে বললো, ‘জানি জানি! ইটস্ লাইক আ মেজ।’ (এটা একটা গোলকধাঁধার মতো)

– অ্যান্ড ইউ ওয়ান্ট টু সলভ ইট বাই মি? (আর আপনি এটা আমার দ্বারা সমাধান করতে চাইছেন?)

এর প্রেক্ষিতে সাদি কিছুই বললো না। বাঁকা হাসিটা তার মুখে এখনো বিদ্যমান। বাহারের রাগ উঠে যাচ্ছে। কিন্তু সে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে নিজের ক্রোধ সংবরণের চেষ্টা করে কিছু বলতে যাবে, তার পূর্বেই সাদি বলে উঠলো, ‘আমি সাধারণ একজন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ার। আমার কাছে পিস্তল কিভাবে থাকবে?’

বাহার থমকে গিয়েছে। তার ঠোঁট দুটো ফাঁকা হয়ে আছে কিছু বলার জন্য, কিন্তু সে যেন মূর্তিতে পরিণত হয়েছে। সাদি আরো বললো, ‘আর পিস্তল দিয়ে গুলি করে মেরে সেখানেই কেন সেটা রেখে আসবো আমি? এছাড়াও আমার রুম সার্চ করে দেখতে পারেন। কোনো প্রকার পিস্তল বা এ জাতীয় বস্তুর লাইসেন্স নেই আমার।’

বাহার ভ্রু কুঁচকে বসে আছে। তার কানে থাকা ব্লুটুথ হেডফোনে ভেসে আসা কণ্ঠস্বর শুনে সে চুপ করে বসে থাকলো। তার হাত কাঁপছে। চোখের পাতা ঘন ঘন পলক ফেলছে। হঠাৎ সে উঠে দাঁড়িয়ে বললো, ‘সাদি, হয়তো আপনার সাথে আজ আমার শেষ দেখা। কারণ আপনি যা বলেছেন তা ইতিমধ্যে ওসি গালিব, সিআইডি সাগর স্যার জেনে গিয়েছেন।’

সাদি চোখ বন্ধ করে বললো, ‘জানতাম, আজ আপনি নিশ্চয়ই রেকর্ডার সঙ্গে নিয়ে এসেছেন? কারণ এতদিন আপনার কানে ব্লুটুথ হেডফোন দেখিনি। আজ দেখেছি। এবং আমি বোকা নই যে না জেনে বুঝে বকবক করবো আপনার সাথে। আলহামদুলিল্লাহ, নারীর সাথে কথোপকথনের যন্ত্রনা আর পোহাতে হবে না আমায়।’

হতবাক বাহার বিস্ময় নিয়ে বললো, ‘আপনি! আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না।’

সাদির নির্বিকার চাহনি। বাহার এক পলক তাকে দেখে বেরিয়ে আসার মুহূর্তে রেকর্ডার বন্ধ করে দিলো। তারপর সাদির দিকে তাকিয়ে সে বলে উঠলো, ‘আপনার কাছে অন্য মহিলা পাঠাবো। যেন সবকিছু দ্রুত স্বীকার করেন। আপনি একটু বোকামিই করে ফেললেন।’

_________

ফোনটা অনবরত বেজেই যাচ্ছে। সালমা বাহারের ঘরে ঢুকে বিছানায় বসে আছেন। এই রাতে বাহার গোসল করতে বাথরুমে ঢুকেছে। সালমা তার বের হওয়ার অপেক্ষায়। কিন্তু ফোনের শব্দটা বেশ কড়া হওয়ায় তিনি বিরক্ত হলেন। কে ফোন করেছে, দেখবেন না ভেবেও উপর থেকে উঁকি দিয়ে দেখলেন অচেনা নম্বর। তিনি ফোন সাইলেন্ট করতে জানেন না। তবে তার বিরক্ত মনোভাব কমিয়ে দিতে বেরিয়ে এলো বাহার।

তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে মুছতে বাহার সালমার দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ফুপি, একটু দেখবে কে ফোন করেছে?’

সালমা ফোন হাতে নিয়ে বললেন, ‘অচেনা নম্বর। এই নিয়ে তিনবার করলো। দেখছেই তো ফোন ধরছিস না। এতোবার করার কি আছে?’

অন্য সময় হলে বাহার ফুপির রাগের পৃষ্ঠে হেসে ফেলতো। কিন্তু আজ তার মন কোনোভাবেই ভালো নেই। সে চিরুনি হাতে নিয়ে বললো, ‘পরে ধরবো। তুমি কিছু বলবে?’

– তুই রাতের খাবার খাসনি। এখন খেতে যাবি চল। আর রাতের বেলা গোসল করলি কেন?
– খুব গরম লাগছে ফুপি। সন্ধ্যায় বাইরে থেকে এসে ক্লান্ত শরীরটা চলছিল না। তাই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। এখন গোসল না করলে আমার ঘামের গন্ধে বমি করে ফেলতাম।

সালমা মুখ কুঁচকে বললেন, ‘এই অনিয়ম করে আর কতদিন চলবি? রাতের বেলা গোসল, কাজ। সন্ধ্যায় ঘুমানো। বিকালে কাজ, সকালে কাজ। কি যে করিস তুই!’

বাহার মৃদু হাসলো। পরক্ষণেই অন্যমনস্ক হয়ে বসে রইল আয়নার সামনে। তার কাঁধে হাত রেখে সালমা বললেন, ‘এখন খেতে যাবি চল।’

বাহার আহ্লাদ নিয়ে বললো, ‘এখন না ফুপি। ক্ষুধা পেলে আমি গিয়ে খেয়ে নিব। কিন্তু এখন একদম শক্তি নেই।’

– আমি খাইয়ে দিব?

এবার না করবে কে? ফুপির হাতে খেতেই এতো অভিনয় চলছিল বাহারের। দেরি না করে মাথা দুলিয়ে হ্যাঁ বলে দিলো সে। সালমা মুচকি হেসে খাবার আনতে চলে গেলেন। বাহার বারান্দায় তোয়ালে রেখে এসে ফোন হাতে নিলো। অচেনা নম্বরে ফোন করলো সে। শুরুতেই ভেসে এলো পুরুষের কন্ঠ।

– হ্যালো!

বাহার ভ্রু কুঁচকে বললো, ‘আসসালামু আলাইকুম, কে বলছেন?’

– ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আমি সিয়াম। চিনেছেন আমাকে?

বাহার চিনতে পারেনি। এসময় আবিরের ফোন করার কথা ছিল। আবিরকে সে জানাতে বলেছিল সাদির জন্য কোন সিআইডি আর পুলিশ নিয়োজিত করা হয়েছে। কিন্তু আবির ফোন করেনি। তারমানে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বড় স্যাররা। কিন্তু সিয়াম কে? বাহার বলে উঠলো, ‘কে সিয়াম?’

সিয়াম যেন হতাশ হলো, ‘আহা! চিনতে পারেননি? আমার মা, মিসেস হাফসা আপনাদের বাসায় গিয়েছিলেন।’

এবার চিনেছে বাহার, ‘ওহ! জি চিনেছি। কিন্তু আপনি আমার নম্বর কোথা থেকে পেলেন?’

বাহার কখনোই এতোটা সরাসরি কথাবার্তা বলে না কারো সাথে। আজ সিয়ামের অপ্রত্যাশিত ফোন তাকে আরো বেশি বিরক্ত করছে। সিয়াম অবশ্য ঠিক তার উল্টো। তার কণ্ঠের উচ্ছ্বাস বাহার টের পেয়েছে।

– আপনার মা আমার মাকে নম্বর দিয়েছিলেন। তিনিই এসে আমাকে দিয়ে বললেন আপনাকে যেন ফোন করি। আপনি মনে হয় খুব ব্যস্ত?
– জি একটু ব্যস্ত ছিলাম।

সালমা খাবার নিয়ে বাহারের সামনে বসলেন। সিয়াম আরো কিছু বলছিল, কিন্তু বাহার তাকে থামিয়ে দিয়ে বললো, ‘কিছু মনে করবেন না, আমি এখনো ডিনার করিনি। আমি এখন খেতে বসেছি। একটু পড়ে ফোন করি?’

সিয়াম আন্তরিকভাবে বিদায় নিয়ে নিলো। বাহার ফোন কেটে রাগ দেখিয়ে বলে উঠলো, ‘অদ্ভুত তো! আমাকে না বলেই ফোন নম্বর দিয়েছে মা!’

– কে?
– যার সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছে। মেজাজ গরম হয়ে যাচ্ছে।

সালমা কিছুই বললেন না এ ব্যাপারে। তিনি এসব বিষয়ে কথা বলা বন্ধ করে দিবেন বলে ভেবে রেখেছেন। তবে গতকাল বাহারের চাকরি হালাল হওয়ার প্রশ্ন ওঠায় তিনি বিশ্বাস করেন বাহার একদিন ইসলামের আলো খুঁজে পাবে। তাই একটুখানি বললেন, ‘ছেলে মানুষের সাথে কথা না বলাই ভালো। এখনো বিয়ে হয়নি তোদের।’

বাহার খাচ্ছে আর রাগ দেখাচ্ছে, ‘সেটাই তো! বিয়ে হয়নি, অথচ উনার খেজুরে আলাপের ইচ্ছে জেগেছে। অসভ্য!’

বাহারের রাগের কারণ বুঝতে পারছেন না সালমা। এরকম অনেক ছেলের সাথে বাহার প্রয়োজনে কথা বলে। আজ নাহয় অপ্রয়োজনেই বলতে হয়েছে। তাতে বাহার এতো বেশি রেগে যাচ্ছে কেন বুঝলেন না সালমা।

সালমা খাইয়ে দিয়ে চলে গেলেন। বাহারকে নির্দেশ দিলেন তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যেতে। বাহারও বেশ ক্লান্ত হওয়ায় আজ কোনো কাজ হাতে রাখলো না। লাইট বন্ধ করে বারান্দার আলো জ্বালিয়ে দিয়ে বিছানায় শুয়ে চোখ বন্ধ করলো সে। সাদির কথাগুলো ভেসে আসছে কানে। সত্যিই, পিস্তল কোথায় পাবে সে? এরই মাঝে ফোনের আওয়াজ এলো।

বাহার কাঙ্খিত কলের আশায় ফোন হাতে নিয়ে হতাশ হলো। আবির নয়, সিয়াম আবার ফোন করেছে। সে ফোন সাইলেন্ট করে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলো। আপাতত কারো কথাই তার ভালো লাগছে না।

________

(চলবে ইন শা আল্লাহ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here