তুমি_আমারই_রবে
বোনাস_পর্ব
#Nishat_Jahan_Raat (ছদ্মনাম)

সন্ধ্যা সাতটায় ঘুম ভাঙ্গল আমাদের। ফ্রেশ হয়ে আমি কিচেনে চলে এলাম চা বানাতে। ঘুম থেকে উঠে ধোঁয়া উঠা চা না খেলে আমার চোখ থেকে ঘুমের রেশ কাটতে চায় না। মাঝে মাঝে এক প্রকার মাথা ব্যাথা ও হয়।

চুলায় চা বসিয়ে আমি বেড রুমটা গুছাতে গেলাম। লামিয়া ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুমে ফ্রেশ হচ্ছে। নীলা ব্যালকনীতে দাঁড়িয়ে ফোন ঘাটাঘাটি করছে আর ঐখান থেকে আমাকে ডেকে বলছে,,,

“রূপা। তোর ফোনটা একটু দিবি? বাড়িতে ফোন করব। আমার ফোনের ব্যালেন্স শেষ।”

“পার্মিশান নেওয়ার কি আছে? তুই আবার কবে থেকে ফরমালিটি মেন্টেইন করছিস?”

“তোর ফোনে তো সবসময় ব্যালেন্স না ও থাকতে পারে তাই জিগ্যেস করলাম।”

“ভাবিস না আমার পরিবার নেই বলে ফোনে সবসময় রিচার্জ করব না। নিজের দরকারে ও রিচার্জ করতে হয়।”

কথাগুলো বলার সময় গলাটা ধরে আসছিলো আমার। নীলা আর নাবিলা যখন ওর পরিবারকে নিয়ে কোনো কথা বলে তখন আমার নিজে থেকেই গলাটা ধরে আসে৷ চোখে পানি টলমল করে। নিজেকে সামলে রাখতে পারি না তখন। নীলা ব্যালকনী থেকে এসে আমার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মলিন হেসে আমার কাঁধে হাত রেখে বলল,,,

“তোর ও পরিবার আছে রূপা। ইচ্ছে শক্তির অভাবে হয়তো তোর পরিবারের সাথে কথা হয় না, যোগাযোগ করা হয় না। শুধু পরিবার কেনো বলছি তোর তো আস্ত একটা সংসার ও আছে। দেখবি, হিমু জিজু একিদন এসে ঠিক তোকে নিয়ে যাবে। পুরো স্বপ্নের রাজকুমারদের মতো।”

“হিমু কখনো আসবে না নীলা। আসার হলে তো এই দুই বছরে চলেই আসতেন। এতগুলো বছরে কোনো না কোনোভাবে ঠিক উনি আমাকে খুঁজে নিতেন। আমার মনে জমে থাকা অভিমানের পাহাড়টা দুহাত দিয়ে ভেঙ্গে দিতেন। কিন্তু উনি তো আসেন নি নীলা। না কখনো আসবে! এসব অবান্তর কথা বলে আমাকে মিথ্যা স্বপ্ন দেখাস না প্লিজ। স্বপ্নটা হুট করে ভেঙ্গে গেলে আমি নিতে পারি না।”

চোখে জল নিয়ে আমি পিছু ঘুড়ে কিচেন রুমে চলে এলাম। নীলা আমাকে ডাকতে ডাকতে আমার পিছু পিছু কিচেন রুমে চলে এলো। আর আমাকে শান্তনা দিয়ে বলল,,,

“প্লিজ রূপা, কাঁদিস না। আমি তোকে আঘাত করতে চাই নি বা পুরনো কথা মনে করাতে চাই নি। জানি না আজ কেনো হঠাৎ মুখ দিয়ে ঐ কথাটা বের হয়ে গেলো। সামান্য ঐ কথাটার জন্যই তোকে কাঁদতে হলো।”

চোখের জল মুছে আমি মলিন হেসে নীলাকে কিছু বলার আগেই দরজায় খটখট আওয়াজ হলো। নীলা দৌঁড়ে দরজার কাছে চলে গেলো। দরজা খুলতেই মেহুল হুড়মুড়িয়ে বসার ঘরে ঢুকে পড়লেন। আর এক গাল হেসে নীলাকে বললেন,,

“হেই নীলা। কেমন আছেন?”

নীলা আমতা আমতা করে বলল,,

“ভালো আছি মিঃ মেহুল। আপনি কেমন আছেন?”

“ভালো আছি। রূপা কোথায়?”

“রূপা তো কিচেনে।”

আমি কিচেন রুম থেকে সব দেখছি। উনার এমন হুটহাট চলে আসাটা এই মুহূর্তে আমার ভালো লাগছে না। তাই ইচ্ছে করে উনার কাছে যাচ্ছি না। ধোঁয়া প্লেইট গুলো ও বেসিনে ইচ্ছে করে ধুচ্ছি। এর মাঝেই ভূমিকম্পটা দৌঁড়ে আমার কাছে চলে এলো। নিজেকে এতোটা ব্যস্ত রেখে ও শেষ রক্ষেটা হলো না। এরপরে ও আমি উনাকে দেখে ও না দেখার ভান ধরে প্লেইট গুলো নাড়ছি৷ মেহুল আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করে হালকা কেশে বললেন,,,

“রূপা।”

আমি চোখে, মুখে কিছুটা বিরক্তি নিয়ে উনার দিকে তাকালাম। উনি হালকা হেসে বললেন,,,

“আম্মু, আব্বু কুমিল্লা থেকে ফিরেছেন। তাই আম্মু তোমাদের সবাইকে আমাদের ফ্ল্যাটে ডাকছেন।”

“আন্টি, আঙ্কেল কখন ফিরেছেন?”

“এই তো একটু আগে।”

“আমাদের কেনো ডেকেছেন?”

“এই ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। জানতে হলে অবশ্যই আমাদের ফ্ল্যাটে যেতে হবে।”

“আপনি বসুন। চা খেয়ে যান। আমরা ও চা খেয়ে যাচ্ছি।”

“স্যরি রূপা। আমি এখন চা খাবো না। একটা কাজে আমাকে বের হতে হবে। আম্মু কষ্ট করে সিঁড়ি বেয়ে আসছিলো, তাই আম্মুকে কষ্ট না দিয়ে আমি নিজেই চলে এলাম তোমাদের খবরটা দিতে। স্যরি, আমার কারণে যদি তুমি বিরক্ত হয়ে থাকো।”

উনি পিছু ঘুড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলেন। আমি প্লেইট গুলো আগের জায়গায় সাজিয়ে কাপে চা ঢেলে নীলার হাতে এক কাপ চা ধরিয়ে দু কাপ চা নিয়ে বেড রুমে চলে এলাম। লামিয়া এখনো ওয়াশরুমে। হয়তো শাওয়ার নিচ্ছে। গরমে সবার জাজাবর অবস্থা। নীলা বেডের উপর বসে চা এ চুমুক দিচ্ছে আর আমাকে বলছে,,,

“তুমি কি সত্যিই বিরক্ত হস মিঃ মেহুলের এমন হুটহাট আসা যাওয়াতে?”

আমি ও চা এ চুমুক দিয়ে বললাম,,,

“অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না নীলা। আমার মনে হচ্ছে উনি অতিরিক্ত করছে।”

“হতে পারে। তবে উনি যা করছে সব মন থেকে করছে। হয়তো ভালো ফ্রেন্ড হিসেবে।”

“কেউ কখনো আমার জন্য মন থেকে কিছু করে নি নীলা। যা করেছে উপর থেকে করেছে। মেহুল ও তাই করছে। না হয় একদিনের পরিচয়ে কেউ কারো জন্য এতোটা করে না। যে সম্পর্কগুলো খুব তাড়াতাড়ি শুরু হয় সেই সম্পর্কগুলো খুব তাড়াতাড়ি শেষ ও হয়ে যায়।”

এর মাঝেই লামিয়া ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে এলো। তিনজনই চা খেয়ে মেহুলদের ফ্ল্যাটের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। ফ্ল্যাটের কলিং বেল চাঁপতেই আন্টি ফ্ল্যাটের দরজা খুলে দিলেন। আমাদের দেখে উনি এক গাল হেসে বললেন,,,

“কতোদিন পর তোমাদের দেখলাম। আমেরিকাতে ও তোমাদের খুব মিস করেছি।”

আমরা তিনজন খুব হেসে আন্টিকে বললাম,,

“আমরা ও আপনাকে খুব মিস করেছি আন্টি।”

আন্টি খুব ব্যতিব্যস্ত হয়ে বললেন,,

“এসো এসো রুমে এসো৷ বসে আমরা কিছুক্ষণ আড্ডা দেই।”

আন্টির সাথে আমরা ড্রইং রুমের সোফায় বসে পড়লাম। আন্টি আমার পাশে বসে আমার হাতটা ধরে বললেন,,

“কেমন আছো রূপা?”

“ভালো আছি আন্টি৷ আপনি কেমন আছেন?”

“এইতো ভালোই আছি। আসার পর থেকে আমার ছেলেটা হয়তো তোমাদের খুব জ্বালাচ্ছে তাই না?”

আমি আমতা আমতা করে বললাম,,,

“না আন্টি। জ্বালাবে কেনো? ঠিক আছে।”

“আসলে আমার ছেলেটা ইদানিং খুব চঞ্চল স্বভাবের হয়ে উঠছে। তাই জিগ্যেস করলাম। যদি তোমাদের কোনো ভাবে বিরক্ত করে থাকে।”

“কেনো আন্টি? উনি কি আগে থেকে এতো চঞ্চল ছিলেন না?”

“না। আমার ছেলে আগে খুব জেদি আর বদরাগী ছিলো। নতুন করে তার এই চঞ্চলতার স্বভাবটা উদয় হয়েছে। নতুন ভাবে ছেলেকে চিনছি। তা ও ভালো। ছেলে বেঁচে আছে! এটা বলে তো মনকে শান্তনা দিতে পারছি!”

আমি বেশ অবাক হয়ে আন্টিকে বললাম,,

“ছেলে বেঁচে আছে মানে? বুঝলাম না আন্টি।”

আন্টি চোখে জল নিয়ে কিছুটা থতমত খেয়ে বললেন,,,

“বাদ দাও এসব রূপা। মেহুল বলছিলো তোমাদের ঐ ফ্ল্যাটে থাকতে নাকি খুব অসুবিধা হচ্ছে?”

“না আন্টি। ঠিক আছে। তবে ঘর গুলো রিপেয়ার করে দিলে ভালো হয়। এই ধরুন প্রতিটা রুমের দরজা জানালা গুলো একটু শক্ত, পোক্ত করে লাগিয়ে দিলে।”

“অসব করতে হবে না রূপা। আমাদের ফ্ল্যাটে তো দুই ইউনিট৷ তাই মেহুল বলছিলো পাশের ইউনিটটাতে তোমাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিতে।”

আন্টির কথা শুনে আমি লামিয়া আর নীলা তিনজন তিনজনের মুখ চাওয়া চাওয়ি করছি। এতগুলো টাকা ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব না। আমি কাতর কন্ঠে আন্টির হাত ধরে বললাম,,

“আমরা যে ফ্ল্যাটটাতে আছি, ভালোই আছি আন্টি৷ কোনো রকমে দিন কেটে যাচ্ছে আমাদের। তবে, আপনাদের পাশের ফ্ল্যাটে উঠলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে আন্টি।”

“বোকা মেয়ে। আমি কি তোমাদের থেকে ফ্ল্যাট ভাড়া চেয়েছি? তোমরা তো আমার মেয়ের মতো। আমার মেয়ে থাকলে নিশ্চয়ই ওদের থেকে আমি ফ্ল্যাট ভাড়া নিতাম না।”

“না আন্টি। এটা হয় না। আমাদের জন্য আপনাদের লস হয়ে যাবে। আমাদের জায়গায় অন্য ভাড়াটিয়া এলে অন্তত মাস শেষে ১৫ হাজার টাকা তো পাবেনই।”

“সব সম্পর্ককে টাকা দিয়ে পরিমাপ করলে হয় না রূপা। যা বলছি তা শুনো। সামনের অফ ডে তে তোমরা আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে উঠে যাবে। এই নিয়ে আর কোনো কথা শুনতে চাইছি না আমি।”

আন্টিকে কিছুতেই মানাতে পারলাম না আমরা। আন্টি ঠিক আমাদের বুঝিয়ে শুনিয়ে রাজি করিয়ে নিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত আমরা বাধ্য হয়ে রাজি হলাম। এই রাতে আন্টির ফ্ল্যাটে রাতের ডিনার করে আমরা নিজেদের ফ্ল্যাটে ফিরে এলাম। রাত এগারোটা বাজার পরে ও মেহুল বাড়িতে ফিরেন নি। তাই উনার সাথে কোনো রকম দেখা সাক্ষাৎ ও হয় নি।

ফ্ল্যাটে পৌঁছেই আমরা ঘুমিয়ে পড়েছি। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে অফিসে যেতে হবে তাই। মেহুলের উস্কানিতেই আন্টি আমাদের উনাদের পাশের ফ্ল্যাটে উঠতে বলেছেন, তা আমি বেশ বুঝতে পেরেছি। আমি এটা ও বুঝতে পারছি মেহুলের চোখে আমি শুধু একজন ফ্রেন্ড নই হয়তো অন্য কিছু ও। যা আমি উনার চোখ দেখে বেশ বুঝতে পারি। তাই যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব উনাকে হিমুর ব্যাপারে সব বলতে হবে। উনাকে বলতে হবে “আমি বিবাহিত।”

,

,

সকাল ছয়টা। ঘুম থেকে উঠে আমি ফ্রেশ হয়ে বাড়ির বাগানে হাঁটতে বের হলাম। প্রতিদিন সকালে উঠে আমার একটু হাঁটা লাগে। না হয় সারা দিন চেয়ারে বসে থাকাটা আমার কোঁমড়ে খুব এফেক্ট করে। এক জায়গায় বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারি না আমি। কোঁমড়ের রোগটা দিন দিন বেড়েই চলছে। হাঁটতে হাঁটতে বাড়ির মেইন গেইটটার দিকে চলে এলাম। গেইটটা খুলতে নিলেই হঠাৎ কারো সাথে আমার মাথায় বেশ জোরে একটা ধাক্কা লাগল। মনে হলো একটা মজবুত বিল্ডিংয়ের সাথে আমি ধাক্কা খেয়েছি। এবার বুঝুন ঐ মানুষটার কপাল কতোটা শক্ত হবে। কপালে হাত দিয়ে আমি চোখ, মুখ কুচকে ব্যাথায় আর্তনাদ করে বললাম,,,

“উফফফ গেলো তো আমার মাথাটা ফেঁটে।”

অমনি মেহুলের গলার স্বর আমার কানে এলো। উনি বেশ পেরেশান হয়ে আমার দিকে ঝুঁকে বললেন,,,

“স্যরি রূপা। আমি একদম বুঝতে পারি নি, তুমি গেইট খুলে বের হচ্ছিলে। হঠাৎয়ের মধ্যে এই অঘটনটা ঘটে গেলো।”

আমি কপালে হাত রেখেই পিটপিট চোখে উনার দিকে তাকালাম। কাল সন্ধ্যায় উনি যে কালার শার্টটা পড়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন সেই শার্টটাই এখনো উনার গাঁয়ে আছে। কপালে ব্যাথা নিয়ে ও আমি কিছুটা কৌতুহলী হয়ে উনাকে বললাম,,,

“আপনি কি সারা রাত বাড়ি ফিরেন নি?”

উনি পেছনের চুল গুলো টেনে বললেন,,,

“না। আসলে একজন রিলেটিভসের বাড়িতে গিয়েছিলাম। উনারা আমাকে আসতে দেননি।”

আমি নিচের দিকে তাকিয়ে কপাল ঘঁষে বললাম,,,

“ওহ্।”

উনি হঠাৎ কপাল থেকে আমার হাতটা সরিয়ে আমার কপালের দিকে তাকিয়ে বেশ উত্তেজিত হয়ে বললেন,,,

“ইসসস কপালটা তো অনেকটাই ফুলে গেছে। এক্ষনি বরফ লাগাতে হবে। প্লিজ তুমি আমার সাথে চলো।”

“কিচ্ছু হবে না মেহুল। আপনি ফ্ল্যাটে যান। আন্টি হয়তো সারা রাত আপনার জন্য জেগে আছেন।”

উনি হঠাৎ আমার ডান হাতটা চেঁপে ধরে বললেন,,,

“ফ্ল্যাটেই যাচ্ছি আমি। আমার সাথে তুমি ও যাবে। কপালে বরফ ঘঁষতে হবে।”

আমি উনার হাত থেকে আমার হাতটা ছাড়ানোর চেষ্টা করছি আর বলছি,,,

“হাতটা ছাড়ুন মেহুল। আমি নিজেই বরফ লাগাতে পারব। আমাদের ফ্রিজে অনেক বরফ আছে।”

উনি আমার হাতটা আরো শক্ত করে ধরে চোখ রাঙ্গিয়ে বললেন,,,

“আমার রাগান্বিত ফেইসট টা তুমি এখনো দেখো নি রূপা। তখন কিন্তু খুব ভয়ঙ্কর লাগে আমাকে দেখতে। এই হাসিখুশি মেহুলের সাথে তখন তুমি এই রাগান্বিত মেহুলকে এক করতে পারবে না।”

আসলেই রাগলে উনাকে খুব ভয়ঙ্কর লাগে। চোখ, মুখ লাল হয়ে লাভার রূপ ধারণ করে। এই মুহূর্তে উনার রাগান্বিত চেহারাটাই আমি দেখছি। শুকনো ঢোক গিলে আমি উনার দিকে তাকালাম। উনি আমাকে টানতে টানতে উনাদের ফ্ল্যাটে উঠিয়ে নিলেন। সোজা তিন তলায়। উনার আলিশান রুমের সফট ফোমের বেডে উনি আমাকে বসিয়ে দিলেন। ব্যতিব্যস্ত হয়ে উনি ফ্রিজ থেকে কয়েক টুকরো বরফ বের করে হাঁটু গুজে আমার মুখোমুখি ফ্লোরে বসে পড়লেন। খুব মনযোগ দিয়ে উনি আমার কপালে বরফ ঘঁষছেন। উনার ফেসিয়াল রিয়েকশান দেখে মনে হচ্ছে আমার সাংঘাতিক কিছু হয়েছে। যা উনি আমার খুব আপনজন হয়ে সহ্য করতে পারছেন না। যেকোনো মূল্যেই হোক আমাকে উনার এই মুহূর্তেই সুস্থ করতে হবে!

আমি কিছুটা হেয়ালী হয়ে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,,,

“সত্যি করে বলুন তো আমি আপনার কতো দিনের চেনা?”

“কেনো? গতকালই তো তোমার সাথে আমার নতুন করে পরিচয় হলো!”

“নতুন করে পরিচয় হলো মানে?”

উনি হঠাৎ আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললেন,,,

“কিছু না রূপা। বাড়ি যাও। বরফ লাগানো হয়ে গেছে।”

উনি আমার সামনে থেকে উঠে দাঁড়ালেন। জানালার থাই গ্লাস। ধরে উনি নির্বিকারভাবে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি এক পা দু পা করে রুম থেকে বের হতে নিলেই মেহুল পেছন থেকে আমাকে ডেকে বললেন,,,

“পারলে আজই ফ্ল্যাটে উঠে যেও রূপা। আমি আমার দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করতে চাই!”

#চলবে,,,,😑

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here