#তুমি শুধু আমার
#লেখিকাঃমোনালিসা
পর্বঃ১৩
দুইদিন পর মেঘ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পায়।মেঘ আর হাসপাতালে থাকতে আর চায় না তাই মেঘ কে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়,,,,মেঘ বৃষ্টি দুইজন গাড়ির পেছনে বসে আছে গাড়ি ড্রাইভ করছে ড্রাইভার আর ড্রাইভারের পাশেই আকাশ বসে আছে,,,,
বৃষ্টির;;ভাইয়া দাদি কে বলেছো তো আমরা মেঘ কে নিয়ে আসছি,,,
আকাশ;;হুম বউমনি বলেছি আর সাথে আঙ্কেল আন্টি দুইজন কেও বলেছি,,,,
বৃষ্টি;;কিইইই,কেনো ভাইয়া,,,আচ্ছা যাই হোক, মেঘ তোমার কি কোন কষ্ট হচ্ছে,,,
মেঘ;;না,,আমি একদম ঠিক আছি বলেই মুচকি হাসি দেয়।
বৃষ্টি;;আচ্ছা শোন,,,বাড়িতে যাওয়ার পর আমি যা বলবো সেটায় কিন্তুু তোমাকে শুনতে হবে,,,,,
মেঘ;;(সুইটহার্ট আমাকে তো খুব জ্বালিয়েছো এখন না হয় তোমাকে একটু জ্বালাই,মনে মনে বলেই মেঘ মুচকি হাসি দেয়)কেনো শোনবো আমি তোমার কথা।
বৃষ্টি;;কি বললে তুমি???শোন মেঘ, আমি তোমার স্ত্রী তাই আমার কথা শুনতে হবে।
মেঘ;;ওওওও আচ্ছা তাই(ইশশশশ আগে যদি জানতাম তোমার এতো টা পরিবর্তন হবে তাহলে আরও আগে এক্সিডেন্ট হওয়াটা উচিত ছিল)
আকাশ;;ও রোমিও জুলিয়েট দুইজনের বকবক বন্ধ করবে না কি আমার কান তো স্ট্রোক করবে।সেই কখন থেকে দুইজনের বকবক শুনতেছি।
মেঘ;;ভাই তুই বেচেঁ গেছিস তোর বউ নাই,,, বউ মানেই প্যারা,,,
বৃষ্টি;;ও আচ্ছা তাই না কি??আমি কি তোমাকে বলেছি যে সবাই সামনে এসে হিরো সেজে আমাকে বিয়ে করো।
আকাশ;;প্লিজ ঝগড়া করো না??
মেঘ বৃষ্টি সবাই মিলে বাড়িতে আসে,,,,মেঘ গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথেই বৃষ্টি যেই না মেঘ কে ধরতে যাবে সাথে সাথেই মেঘ বলে উঠে,,,,
মেঘ;;আমাকে ধরতে হবে না আমি একদম ঠিক আছি,,,বৃষ্টি তো মেঘের কথা শুনে পুরাই অবাক।মেঘ আকাশ কে ইশারা করতেই আকাশ এসে মেঘকে ধরে,,,বৃষ্টি মেঘের সামনে গিয়ে বলে??
—-বৃষ্টি,এই দাড়াও তোমার সমস্যা কি?আমাকে ধরতে দিলে না কেনো??আমি তোমাকে ধরলে কি গায়ে ফুসকা পরে যেতো নাকি।আকাশ ভাইয়া কে ধরতে দিলে আর আমাকে ধরতে দিলে না এর প্রতিশোধ তো আমি পরে নিবো,এই বলেই বৃষ্টি গাল ফুলিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে যায়।।
আকাশ,আরে বউমনি শোন তো?যা বাবা বউমনির আবার কি হলো? তোর এই কাজ টা করা একদম উচিত হয়নি।
মেঘ;;ও আচ্ছা তাই না কি?আচ্ছা এইসব বাদ দে,,তোর বউমনির চেহারাটা দেখার মতো ছিলো তাই না, এইটা বলে মেঘ আকাশ দুইজনেই হেসে দেয়।
আকাশ মেঘ কে ধরে ঘরে নিয়ে যায়।
এলিনা;;দাদু ভাই তুমি ঠিক আছো তো?তুমি যানো আমি কতো টা ভয় পেয়ে ছিলাম??
মেঘ;;দাদি আমার কিছু হয়নি আমি ঠিক আছি।
এইবার তোমরা যাও আমি একটু বিশ্রাম করবো,,,,
এলিনা;;আচ্ছা তুমি বিশ্রাম করো,,,এই বলেই মেঘের রুম থেকে বের হয়ে যায়।
আকাশ;;আচ্ছা মেঘ,আমিও আসি আর তোর সমস্যা হলে তো বউমনি আছেই।
বৃষ্টি;;ওকে ভাইয়া, তুমি যাও আমি তো এখানেই আছি।
আকাশ সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায়।
—-মেঘ,কি হলো তুমি যাচ্ছো না কেনো তোমাকে কি আলাদা করে বলতে হবে।
বৃষ্টি;;আমি কোথাও যাবো না।তোমাকে একা রেখে আমি এইঘর থেকে বের হবো না।চুপচাপ শুয়ে পরো কোন কথা বলবে না।
মেঘ;;তাহলে আমাকেই কিছু একটা করতে হবে।তুমি যাবে কিনা বলো?
বৃষ্টি;;তা না হলে কি? কি করবে তুমি?আমি যাবো না।এই বলেই মেঘের সামনে বসে মেঘ কে জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে বলে, আমাকে জ্বালানোর জন্য এইরকম করছো তাই না।আমি সব জানি?
মেঘ;;তারমানে তুমি বুঝে গেছো? কিন্তুু কি ভাবে?
বৃষ্টি,যখন তুমি গাড়ি থেকে নেমে আকাশ কে ইশারা করলে তখন বুঝলেন মিষ্টার:মাফিয়া হাসবেন্ড এইবলেই বৃষ্টি মেঘ কে জড়িয়ে ধরে।ভালোবাসি মেঘ তোমাকে ভিষন ভালোবাসি।
মেঘ;;বৃষ্টি কে জড়িয়ে ধরে, আমিও আমার জানপাখি কে খুব ভালোবাসি💖
দুইজনের কথা মাঝে রনির কল আসে,মেঘ রনির কল দেখে রিসিভ করে,,
রনি;;হ্যালো স্যার,,কেমন আছেন আপনি?
মেঘ;;হুম,এখন ভালো আছি,,,
রনি;;স্যার শফিকের সাথে যে থাকে রাতুল তাকে আমার ধরেছি?
মেঘ;;কোথায় রেখেছো তাকে??
রনি;;আপনার পুরান বাড়িতে যেইটার কথা আমি আপনি আর আকাশ স্যার ছাড়া আর কেউ জানে না।
মেঘ;; আমি আসছি,,,এই বলেই কল কেটে দেয়।কি দেখছো এমন করে বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে?
বৃষ্টি;;কার সাথে তুমি কথা বললে আর কে ছিলো ফোনে।
—মেঘ,রনি ছিলো,বললো যে এখন আমি কেমন আছি?আচ্ছা তুমি একটা কাজ করো আমার জন্য কিছু তৈরি করে নিয়ে এসো,,তারাতারি রান্না করতে গিয়ে আবার হাত যেনো না পুরে,,,
বৃষ্টি, আচ্ছা ঠিক আছে তুমি বিশ্রাম করো আমি আসছি, এই বলেই বৃষ্টি রুম থেকে বের হয়ে যায়।
বৃষ্টি রুম থেকে যাওয়া মাএই মেঘ উঠে দরজা টা লাগিয়ে দেয়,,,,
মেঘ তারাতারি করে রনি কে ফোন করে,,,,
মেঘ;;রনি সব কিছু রেডি আছে তো,,,
রনি;;জি স্যার,,কিন্তুু আপনি এই অবস্থায় এইখানে আসা টা কি ঠিক হবে আকাশ স্যার কে বললে হয় না।।
মেঘ,আমি আসবো,আকাশ কে বলতে হবে না।সি সি ক্যামেরা টা বন্ধ করেছো আর গার্ডদের সব কিছু বুঝিয়ে বলেছো তো যাতে বৃষ্টি আর দাদি আকাশ কেউ যেনো কিছু না বুঝতে পারে,,,,,
রনি;;জি স্যার আমি সব কিছু রেডি করে রেখেছি,,,
মেঘ;;ঠিক আছে তুমি একটা কাজ করো,বেলকনিতে একটা মই আনো,,,আমি এখনেই যাবো রাতুলের সাথে দেখা করতে,,,
রনি;;জি স্যার আমি এখনি আনছি,,,
মেঘ সাদা সার্ট কালো জ্যাকেট কালো প্যান্ট হাতে ঘড়ি পরে আর গান টা নিয়ে বেলকনিতে গিয়ে মই দিয়ে নিচে নামে,,,,
মেঘ;;রনি চলো,,,
রনি;;জি স্যার,,,,
মেঘ;;রনি এইদিক দিয়ে নয় পিছনের গেট দিয়ে বের হবো তুমি এক কাজ করো সামনের গেট দিয়ে বের হয়ে পিছনের দিকে গাড়ি নিয়ে আসো,,,,
রনি;;ওকে স্যার,,,
মেঘ পিছনের গেট দিয়ে বের হয়ে গাড়িতে উঠে বসে,,,,
রনি;;স্যার ওরা রুমে এসে যদি আপনাকে খুজে না পায় তাহলে তো অনেক ঝামেলা হয়ে যাবে,,,,আর যদি আকাশ স্যার বুঝে ফেলে যে আপনি এই অসুস্থ অবস্থায় বের হয়েছেন তাহলে তো খুব সমস্যা হবে,,,আপনার এখনো কপালের ক্ষতটা ঠিকমতো শুকায় নি।
মেঘ;;কিছুই হবে না,,,আর আমি একদম ঠিক আছি,,, আমাকে নিয়ে এতো চিন্তা করতে হবে না।
রনি;;ওকে স্যার,,,
মেঘ;;রাতুলের কি অবস্থা,,,
রনি;;গার্ডরা প্রচুর মেরেছে কিন্তুু মুখ খুলছে না,,,
মেঘ;;ঠিক আছে তারাতারি চলো,,,,
রনি;;জি স্যার(না জানি আজকে চোখের সামনে কি দেখতে হয়)
✨✨✨
শফিক;;রাতুল ফোন টা কেনো ধরছে না,,ওর কোন বিপন হয় নি তো,,,না না এই সব আমি কি ভাবছি,,বিপদ কি ভাবে হবে মেঘ তো এখনো সুস্থ হয়নি,,কিন্তুু রাতুল কেনো ফোন ধরছে না।।।
মেঘ রাতুলের সামনে বসে আছে ,,,,চোখ গরম করে তাকিয়ে আছে রাতুলের দিকে মেঘের মুখের চোয়াল শক্ত করে আছে আর হাতে পিস্তল,,,,
রাতুল;;তুই তাহলে বেচেঁ গেলি তাই তো,,,,
মেঘ;;তুই আর শফিক কি ভেবেছিলি আমি মারা যাবো।
রাতুল;;স্যার ঠিক বলে তোর জান টা কই মাছের জান এতো বড় একটা এক্সিডেন্ট হওয়ার পরেও তুই বেচেঁ গেলি।
মেঘ একটা বাকাঁ হাসি দিয়ে বলে,,,,
ঠিকেই বলেছে তোর স্যার আমার জান কই মাছের জান,,,কিন্তুু তোর কি কই মাছের জান নাকি চিংড়ি মাছের জান তুই যেটা বলবি আমি সেইটাই মেনে নেবো।
রাতুল;;শুধু একবার আমার হাতের বাধন খুলে দেখ তাহলেই দেখাবো আমার জান কইমাছের না কি চিংড়ি মাছের জান,,,,
মেঘ;;আমি কি এতো বোকা না কি যে তোর হাতের বাঁধন খুলে দিবো।তোকে এইখানেই থাকতে হবে এইটা বলেই রনি কে ইশারা করতেই একটা ধারালো ছুরি এনে মেঘের হাতে দেয়,,,,মেঘ রাতুলের সামনে ছুরিটা ঘুরাতে ঘুরাতে বলে আমাকে আবার মারার জন্য আর কি কি প্ল্যান করেছিস,,,,
রাতুল,হেসে মেঘের দিকে তাকিয়ে বলে,আমাকে মেরে ফেললেও আমি বলবো না,,,,আমি আমার স্যারের সাথে বেঈমানী করতে পারবো না।।
মেঘ,বাকাঁ হেসে বলে,,বাহ্ অনেক ভরসা করার মতো লোক তুই??তোর সাথে কি করা যায় বলতো,,,
রাতুল;;আমাকে কিছুই করতে পারবি না তুই??স্যার যদি একবার জানতে পারে যে আমাকে এখানে আটকে রেখেছি তাহলে তোকে মেরে ফেলবে,,,,রাতুলের এমন সাহস দেখে মেঘ রাগেই মাথা হাতে থাকা ছুড়ি টা রাতুলের বা পায়ের মাঝ বরাবর ঢুকিয়ে দেয়,,,সঙ্গে সঙ্গে রাতুল চিৎকার করে উঠে,,,রাতুলের এমন চিৎকার শুনে মেঘের রাগ আরও দ্বিগুন হয়ে যায়,,মেঘের ফর্সা চেহারা লাল হয়ে গেলে কপালের রগ গুলা ফুলে উঠেছে।চোখ দিয়ে যেনো রক্ত বের হচ্ছে এখন দেখতে মেঘকে পুরাই হিংস্র মানব লাগছে।মেঘের এমন চেহারা দেখে যেনো সত্যিই রাতুল ভিষন ভয় পেয়ে যায়।হাতে থাকা ছুড়ি টা দিয়ে মেঘ একের পর এক রাতুলের গায়ে আঘাত করতে থাকে,,মেঘের এমন হিংস্র চেহারে দেখে রনি আর গার্ডরা ভয় পেয়ে মাথা নিচু করে রাখে,,,,মেঘ রনি কে ইশারা করতেই রনি ফুটন্ত গরম পানি এনে সাথে সাথেই রাতুলের শরীরে ঢেলে দেয়ার মাএই রাতুল অন্তর-আন্তা ছেড়ে চিৎকার করে উঠে,,,সারা শরীর রাতুলের লাল হয়ে যায়,,,,মেঘ তার হাতের ছুড়িটা ফেলে রনির হাত থেকে স্টীলের কাটা কাটা ধারানো ব্রোজ প্যাচিয়ে নিতে নিতে রাতুলের দিকে এগিয়ে গিয়ে তার বুকে নিজের সর্বশক্তি দিয়ে ঘুশি মেরে দেয়।রাতুলের গায়ের সার্ট ছিড়ে শরীর কেটে যায়।রাতুল চিৎকার করার আগেই রনি মুখ চেপে ধরে।মেঘ পর পর আরও নিজের সমস্থ শক্তি দিয়ে রাতুলের বুকে বার বার আঘাত করতে থাকে।এইভাবে আঘাত করাতে রাতুল কোন ভাবেই চিৎকার করতে পারছে না।মেঘের এমন হিংস্রতা দেখে রনি আর সাথে থাকা গার্ডরা প্রচুর ভয় পেয়ে যায়।মেঘের সামনে থাকা লবন আর লাল মরিচ মিশ্রতো এনে রাতুলের গায়ে দিয়ে দেয়।রনি রাতুলের মুখ থেকে হাত সরাতেই রাতুল চিৎকার করে উঠে।
রাতুলের সমানে ঝুকে মেঘ ডেভিল হাসি দিয়ে বলে,,, এতো সহজে তোকে মারবো না বলেই মেঘ হাতে ছুড়িটা নিয়ে রাতুলের মাঝখানের একটা আঙ্গুল কেটে রনি হাতে দিয়ে বলে,,,,
মেঘ;;রনি এইটা পার্সেল করে শফিকের বাসায় পাঠিয়ে দিবে।
রনি;;ও,,ও,ওকে স্যার,,,,(এইভাবে কেউ কাউকে মারে মেঘ স্যার কে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না।সেইদিন ছিলো আকাশ স্যার আর এখন মেঘ স্যার🥶)
মেঘ;;রনি কে উদ্দেশ্য করে,,,কেউ যেনো জানতে না পারে যে রাতুল এইখানে আর হ্যাঁ আকাশ যেনো এই ব্যাপারে কিছু না জানে,,,ক্লিয়ার,,!!
এই বলেই মেঘ সেখানে থেকে বের হয়ে যায়,,,,
#চলবে,,,,,