তুমি আমার
পর্বঃ ০৩
লেখকঃ আদ্রিয়ান নাজমুল
“আমি” নাতাশার দিকে তাকালাম। ওকে লজ্জাসিক্ত ভাবে খুব সুন্দর লাগছে। গাল দুটো কেমন লাল হয়ে আছে। হঠাৎ ওর চোখে চোখ পরতেই আমি খাবারের দিকে তাকাই৷ ধুর ও এখন কি মনে করবে।
“এরপর” খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমার রুমে যাই। একটু পরই ইশা আসে আমার রুমে।
ইশাঃ “ভাইয়া”… ও ভাইয়া।
আমিঃ “হুম” বলেন।
ইশাঃ বিকালে কিন্তু ঘুরতে যাবো ঠিক আছে??
আমিঃ আজকেই তো আসলাম। আজকে বের হব না।
ইশাঃ “প্লিজ”। না করো না।
আমিঃ “যা” তো। জ্বালাস না।
ইশাঃ “ঠিক” “আছে”। তাহলে আমি আর নাতাশা আপুই যাবনে একা।
আমি একলাফে উঠে বসে ইশাকে উদ্দেশ্য করে বলি,
আমিঃ ও যাবে?
ইশাঃ এখন বলবো কেনো !
আমিঃ বল না আমার লক্ষী বোন টা।
ইশাঃ “হ্যাঁ”। “যাবে” তো। কিন্তু কি আর করার তুমি তো আর যাবা না। থাক।
আমিঃ একদম মজা করবি না। পিটা দিব কিন্তু। বল সত্যি ও যাবে??
ইশাঃ “বলছিত” যাবে নাতাশা আপু ।
আমিঃ “আচ্ছা” তাহলে আমিও যাবো। আমাকে ডাক দিস।
ইশাঃ “সত্যি”??
আমিঃ হুম সত্যি। তুই এতো করে বলছিস যখন যাই আর কি।
ইশাঃ “এহহ” “আসছে” । নাতাশা আপুর কথা শুনেই তো রাজি হইছ। না হলেতো আর যাইতানা।
আমিঃ “যা” এখন। “ঘুমাবো”। না হলে কিন্তু সত্যিই যাবো না।
ইশাঃ “আচ্ছা” যাচ্ছি।
আমিঃ “হুম”।
আমি ঘুমিয়ে পরলাম। ইশা হয়তো চলে গিয়েছে।
অন্যদিকে,
নাতাশাঃ কি তোমার ভাইয়া কি বলল??
ইশাঃ আর বলো না। প্রথমে রাজি হয়নাই। যেই কিনা তোমার কথা বলছি ওমনি একলাফে রাজি।
নাতাশাঃ “পাজি” ছেলে একটা।
ইশাঃ “হুম”। আপুনি একটা কথা বলি??
“নাতাশা” “ইশাকে” জড়িয়ে ধরে বলল,
নাতাশাঃ একটা কেন দুইটা বলো।
ইশাঃ এভাবে সবসময় আমাদের সাথে থাকবা??
নাতাশাঃ “তা” কি করে হয়?? আমার আব্বু যদি আমাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেয় তাহলে তো আমাকে যেতেই হবে।
ইশাঃ “না” “না”। তোমাকে কোথাও যেতে দিব না। তুমি আমার ভাবি হবা??
নাতাশাঃ “ওমা” !! মেয়ে বলে কি?? তোমার ভাইয়া শুনলে আবার লাফ দিবে। “হিহি” ।
ইশাঃ দেখো আমার ভাইয়াই তোমাকে আমার ভাবি বানাবে।
নাতাশাঃ “না” ময়না এ হয়না। আচ্ছা রাখো এসব। এখন ঘুমাও তারপর বিকেলে বের হবো নে।
ইশাঃ “ওকে” “ভাবি”। হিহি।
নাতাশাঃ “ঘুমাও” “দুষ্ট”।
ইশা নাতাশাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরল। আর এদিকে নাতাশার চোখের পাতা আটকে গেল ১০১ টা চিন্তায়। নাতাশা ভাবছে,
নাতাশাঃ আচ্ছা উনি আমার কথা শুনেই যেতে রাজি হলো কেন?? আর আমিও বা তখন উনাকে এভাবে দেখছিলাম কেন?? উনাকে দেখলেই আমার লজ্জা লাগে। কিন্তু উনি কি সুন্দর। উনার সুঠাম দেহ। “আহ”! ছি ছি আমি এসব কি ভাবছি। আল্লাহ মাফ কর মাফ কর। নাহ উনার কাছ থেকে দূরে দুরে থাকতে হবে। বজ্জাত লোক একটা৷ পঁচা। আমাকে খালি লজ্জা দেয়। আর এদিকে তার বোন আমাকে ভাবি মনে করে বসে আছে। যা সম্ভব নয় তাই মানুষ বেশি চায়৷
নাতাশা এসব ভাবতে ভাবতে একসময় ঘুমিয়ে পরে। এরপর আমরা সবাই ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে ঘুরতে বের হই গ্রামে। ইশা খুব খুশী আমাকে পেয়ে। বোনের কাছে তার ভাইটা সবসময়ই খুব প্রিয় হয়। আমি ইশার একপাশে আর নাতাশা অন্য পাশে। মানে আমাদের দুজনের মাঝে ইশা। আমি মাঝে মাঝে নাতাশার দিকে তাকাচ্ছি আর চোখে চোখ হলেই অন্যদিকে তাকাচ্ছি। মেয়েটার “হরিনী” চোখ নজর কাড়লো আমার । চোখের পাতা ফেলে ফেলে মেয়েটাও দেখছে আমাকে। অতঃপর -ইশাতো একা একা এটা ওটা বলেই যাচ্ছে। কিন্তু আমি চাচ্ছি নাতাশার সাথে একটু কথা বলতে। কিন্তু পারছিনা। মনে হচ্ছে নাতাশাই চাচ্ছে না।
আজ অনেক দিন পর এই গ্রাম বাংলার মেঠো পথে দুইজন পছন্দের মানুষের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছি। বেশ ভালোই লাগছে। হঠাৎ কাশফুল দেখলাম অনেক মাঠের মধ্যে। ব্যাস ইশাতো এক দৌড়ে সেখানে চলে গেল। আমি আর নাতাশা এখন একসাথে। আমি ওর পাশে আস্তে আস্তে হাঁটছি। ও কিছু বলছে না। আমি জানি মেয়েরা কখনো নিজ থেকে কথা বলে না। কারণ এটা তাদের ইগোতে লাগে। তাই আমিই প্রথমে বললাম,
আমিঃ ‘কেমন” আছো??
নাতাশাঃ “জ্বি” ভালো আপনি??
আমিঃ “ভালো”। আচ্ছা একটা কথা বলি??
নাতাশাঃ “জ্বি” বলুন??
আমিঃ আমরা বন্ধু হতে পারি??
নাতাশাঃ আজ একদিনেই বন্ধু হতে চাচ্ছেন??
নাতাশার কথাটা আমার ইগোতে লাগলো। তাই চুপ হয়ে গেলাম। অার অন্যদিকে তাকিয়ে হাঁটছি। এবার নাতাশা নিজ থেকে বলল,
নাতাশাঃ “রাগ” করলেন বুঝি?? আপনি চাইলে কিন্তু আমরা অবশ্যই বন্ধু হতে পারি।
আমিঃ আমি চাই বলেই তো তোমাকে বললাম। কিন্তু তুমিতো ভাব দেখালা।
নাতাশাঃ “বাব্বাহ”।
আমিঃ “জ্বি ” (মনে মনে বললাম মহারানি)
নাতাশাঃ আপনারতো অনেক রাগ। এতো রাগ রাখেন কই??
আমিঃ এই যে পকেট দেখছ না এখানে। মজা করে হাসি দিয়ে বললাম।
নাতাশাঃ “জায়গা” হয়?? মজা করে।
আমিঃ না হলে আজ থেকে বাকি রাগগুলো তোমাকে দিয়ে দিব নে।
নাতাশাঃ “হাহা”।
আমি ওর হাসি দেখছি শুধু “মুগ্ধ” হয়ে। মিষ্টি মুখখানায় কি মিষ্টি হাসি।
আমিঃ তোমার হাসিটা খুব সুন্দর। সবসময় হাসবে এভাবে।
নাতাশাঃ আমি পাগল নাকি যে সব সময় হাসবো?? হিহি।
আমিঃ পাগল না পাগলি তুমি। হাহা।
নাতাশাঃ আপনিও না।
আমিঃ আমি কি হুম??
নাতাশাঃ “পঁচা”। হিহি।
বলেই এক দৌড়ে নাতাশা ইশার কাছে চলে যায়। একদম বাচ্চা একটা মেয়ে। ইশা আমাকে জোরে ডাক দেয়। আমি ওদের কাছে যাই।
ইশাঃ “ভাইয়া”, আমার আ
বলেই এক দৌড়ে নাতাশা ইশার কাছে চলে যায়। একদম বাচ্চা একটা মেয়ে। ইশা আমাকে জোরে ডাক দেয়। আমি ওদের কাছে যাই।
ইশাঃ ভাইয়া, আমার আর আপুর একসাথে একটা ছবি তুলে দেওনা তোমার ফোন দিয়ে।
আমিতো সেই খুশী। ইশাকে মনে মনে অনেক ধন্যবাদ দিচ্ছি।
আমিঃ “অবশ্যই”।
নাতাশাঃ “আমি” কেন?? তুমি তোমার ভাইয়ার সাথে তুলো।
ইশাঃ “তুলব” তো। আগে তোমার সাথে কয়টা তুলি তারপর।
আমিঃ নে দাঁড়া তোরা।
আমি এরপর ওদের কয়েকটা ছবি তুললাম। মাঝে নাতাশাকে জুম করে শুধু নাতাশারও কয়েকটা ছবি তুললাম। নাতাশা বুঝতেই পারে নি। ছবি তুলে সেগুলো হাইড করে ফেললাম।
নাতাশাঃ “হয়েছে”। এখন তুমি আর তোমার ভাইয়া দাঁড়াও আমি তুলে দি।
ইশাঃ “আচ্ছা”।
এরপর নাতাশা আমার আর ইশার ছবি তুলে দিল। ছবি কেমন হয়েছে দুজনে মিলে দেখল।
ইশাঃ ভাইয়া চল নদীর পাড়ে গিয়ে বসি।
আমিঃ “আচ্ছা” চল।
এবার আমি একটু চালাকি করে আমি ইশা আর নাতাশার মাঝে বসি। ইশা ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বলে,
ইশাঃ “ভাইয়া” তোরা বস এখানে। আমি তোর ফোন দিয়ে নদীর কয়েকটা ছবি তুলি।
আমিতো সেই “খুশী”। মনে মনে হাসছি। কিন্তু নাতাশা,
নাতাশাঃ “ইশা”, আমিও আসি তোমার সাথে।
ইশাঃ “না” “না”। তুমি ভাইয়ার সাথে বস। কথা বল। আমি একাই ছবি তুলব।
এখন যে আমার কি মজা লাগছে না। বোন আমার বেশ চালাক। একদম কাজের কাজ করেছে একটা। এরকম বোন সব ভাইয়ের কাছে থাকলে কোনো ভাই আর সিঙ্গেল থাকবে না। আমি মুচকি হাসছি।
নাতাশাঃ “বেটা” কি “শয়তান”। আমাকে ফাসিয়ে এখন সে হাসছে। আমিও এর বদলা নিব নে৷ কেউ দেখলে কি মনে করবে আমাদের। মনে মনে বলল।
এবার আমি “নাতাশাকে” বললাম,
আমিঃ কি খালি আমার থেকে পালিয়ে যেতে চাও কেন?? আমি দেখতে “পঁচা”??
নাতাশাঃ “না” “না”। আপনিতো অনেক সুন্দর।
আমি নাতাশার মুখে এ কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে যাই। মেয়ে বলল কি এটা। আমি দেখি নাতাশা লজ্জায় মুখ ঢেকে আছে।
নাতাশাঃ “ইসস” !! এটা আমি কি বললাম। এভাবে কেউ বলে নাতাশা?? উনার কাছে আসলেই আমি কেমন জানি হয়ে যাই। “ধুর”। উনি এখন আমাকে কি ভাববে। মনে মনে বলছে।
আমিতো আজ সেই “খুশী”। এখন ওর সাথে মজা করব। তাই আমি ওকে বললাম,
আমিঃ হ্যাঁ আমি যে সুন্দর তাতো তুমি জানোই। আজ দুপুরেতো সব দেখেই ফেললা। কিরকম হা করে দেখছিলা। “বাবাহ”। আমিতো ভাবছি আমাকে আবার খেয়েই ফেলবে নাকি। মজা করে।
কথাটা বলেই নিজেই হাসছি “বেশুমার”। হাহা। আর অন্যদিকে নাতাশা লজ্জা মরে যাচ্ছে। হঠাৎই ও উঠে যেতে নিলে আমি ওর হাত ধরে ফেলি। আর ও…
চলবে………. ( ইনশাআল্লাহ )