#জলছবি
#পার্ট_৩০
#কাজী_সানজিদা_আফরিন_মারজিয়া
.
লুবনার জ্ঞান ফিরলো অনেক পরে। চোখ মেলে সকলের উদ্বিগ্ন মুখের দিকে চাইলো। তারপই অভিমানে মুখ সরিয়ে নিলো। সাহানারা সেই কখন থেকে নিরবে কেঁদে যাচ্ছেন। মেয়ের জ্ঞান ফিরার পরও তার কান্না কমলো না। আমিনুল হক এসিতে বসেও দরদর করে ঘামছে। নিস্তেজ লুবনাকে দেখে প্রথমে খুবই ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। ভাগ্যিস তার ডাক্তার বন্ধুটির বাড়ি কাছেই ছিল। তিনি এসে চেইক করে জানালেন, মেজর কিছু নয়, জাস্ট সেন্সলেস! দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকার ফল। তার সাথে টেনশন।
আমিনুল হক লুবনার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
“এমন ছেলে মানুষী কেন করেছিস মা? এতক্ষণ কেউ না খেয়ে থাকে? তোর কি চাই সেটা আমায় বললেই তো হতো! আমি তোর কোনো ইচ্ছে অপূর্ণ রেখেছি? এত জেদ!”
লুবনা বাবার হাত মাথার উপর থেকে সরিয়ে দিয়ে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিল। ডাক্তার চলে যাওয়ার পর তাকে খাওয়ানোর জন্য অনেক জোর করা হলেও সে কোনোরূপ হেলদুল করলো না।
আমিনুল হক অসম্ভব বুদ্ধিদীপ্ত একজন ব্যক্তি। সবচাইতে বড় কথা, তিনি একজন বিখ্যাত বিজনেসম্যান। এই সফলতা তো আর এমনি এমনি আসেনি, তাই না? মানুষকে কনভেন্স করার কৌশল তার খুব ভালো জানা আছে। তিনি হাঁক ছেড়ে মেইডদের মধ্য থেকে একজনকে বললেন, এই জসিম? মকবুলকে বল, গাড়ি বের করতে। আমি আর আমার মা এখন হসপিটাল যাব। আমার মেয়ের বন্ধুটির জ্ঞান ফিরেছে শুনলাম, তাকে তো দেখতে যাওয়া প্রয়োজন। কী বলো মা?”
শেষের প্রশ্নটি তিনি লুবনার দিকে ছুড়ে দিলেন। লুবনা এক প্রকার উত্তেজনা নিয়ে বলল,
“বাবা? ফয়সালের জ্ঞান ফিরেছে? তুমি সত্যি বলছো, বাবা?”
তিনি হেসে পরম আদরে মেয়ের মাথায় হাত রেখে বললে,
“হ্যাঁ। জলদি খেয়ে নাও, আমরা হসপিটাল যাব।”
সাহানারা মিনমিনে স্বরে বললেন,
“এই মাঝরাতে না গিয়ে, কাল সকালে গেলে হয় না?”
আমিনুল হক তেঁতে উঠে বললেন,
“তুমি চুপ থাক, ইডিয়েট!”
লুবনার সকল রাগ, অভিমান গায়েব হয়ে গেল এক নিমিষে। খুশিতে আত্মভোলা হয়ে গেল। ফয়সালের জ্ঞান ফিরেছে শুনেই সকল ক্লান্তি, অসুস্থতা গায়েব। আরো বেশি খুশি লাগছে বাবা নিয়ে যাবেন শুনে।
লুবনারা যখন হসপিটাল এসে পৌঁছাল তখন রাত তিনটা অতিক্রম করেছে। আমিনুল হক বললেন,
“তুমি যাও, আমি নিচেই অপেক্ষা করছি। চলে এসো দ্রুত।”
লুবনা খুশি মনে সায় জানিয়ে হসপিটালের ভেতর ছুটে গেল। আমিনুল হকের মনের রাগটা, বুদ্ধিটা টের পেলো না কোনোক্রমেই!
কেবিনের সামনে এসে লুবনার গলা ধরে এলো। মনে হচ্ছিল কত যুগ পর দেখবে ছেলেটাকে!
সৃজন, নিষাদ তখনও সজাগ। যদি কিছুর প্রয়োজন হয় বন্ধুর? সে কারণেই থেকে যাওয়া। মেয়েগুলোকে পাঠিয়ে দিয়েছে, তারা থেকে গিয়ে।
কিন্তু এতো রাতে লুবনাকে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো দুজন। নিষাদ বলল,
“কিরে, এত রাতে তুই? ফোন অফ ছিল কেন? হুট করে এলি যে?”
সৃজন ক্ষীণ সন্দেহের স্বরে প্রশ্ন করলো,
“এই পালিয়ে-টালিয়ে আসছিস নাকি? বড়লোকেগো তো আবার পালানোর ব্যাতিক আছে। হাছা কইরা ‘ক তো, পালাইছিস-টালাইছিস নাকি?”
লুবনা এসবের উত্তর না দিয়ে খুশি ধরা কন্ঠে বলল,
“ফয়সালকে দেখবো।”
নিষাদ বলে,
“আর সময় পাস নাই, না? কয়টা বাজে দেখছিস? ও তো মেবি ঘুমাচ্ছে। জাস্ট দেখে চলে আয়।”
লুবনা খুব মেনে নেওয়ার মতন করে মাথা নাড়ায়। নার্স সব দেখেটেখে বেড়িয়ে আসার পরই লুবনা ভেতরে যায়।
সৃজন সন্দিগ্ধ হয়ে বলে,
“এই দুইটার কাহিনী কী ক’ তো? দুইটার মধ্যে কী চলে?”
নিষাদ হেসে ফেলে বলে,
“টেম্পু চলে।” একটু থেমে বলে, “ওদের কথা বাদ দে। নোলকের কাহিনী কিছু বুঝছিস? মাইয়া যে কেমন আওলায় গেছে!”
সৃজন গোয়েন্দা টাইপ ভাব নিয়ে বলে,
“হুম, গভীর চিন্তার বিষয়।”
নিষাদ পিঞ্চ মেরে বলে,
“সাবধান, বেশি গভীরে যাইস না আবার!”
সৃজন নিষাদের বাহুতে আলতো থাপ্পড় মেরে বলে,
“যাহ, শালা।”
“আমার বড় বোন নাই।”
সৃজন দুঃখে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলে,
“থাকলেও লাভ হইতো না। তখন আবার তুই ভিলেন ভাই হয়ে যাইতি। আমার আর এই জিন্দেগিতে মিঙ্গেল হওয়া হইলো না! বেদনার জীবন!”
নিষাদ একগাল হেসে নিশিতাকে টেক্সট করতে করতে বলে,
“আহ-হারে! স্যাড স্টোরি। দুক্কু পেলুম!”
সৃজন নিষাদকে ল্যাং মেরে নিজের চুল দু’হাতে আওলা-ঝাওলা করতে করতে কোথায় যেন যায়!
লুবনা নিঃশব্দে ভেতরে এসে ফয়সালের বেডের পাশে দাঁড়ায়। ফয়সালকে ঐ ঘুমন্ত অবস্থাতে দেখেই ঝড়ঝড় করে কেঁদে ফেলে। মনে হচ্ছে যেন কত কাল পরে দেখছে! আলতো করে ফয়সালের গালে হাত রাখার সঙ্গে সঙ্গে ফয়সাল জেগে যায়। ঘুম খুব পাতলা ওর। লুবনার দিকে চাইতেই চমকে উঠে। শান্তি অনুভূত হয়। লুবনার মুখপানে চেয়ে ঘুম জড়ানো দুর্বল কন্ঠে বলে,
“লুবু!”
ফয়সালের কন্ঠ শুনে লুবনার কান্নার বেগ বাড়ে বৈ কমে না। কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি উঠে যায়।
প্রথমে যেমন খুশি হয়েছিল এবার তেমন বিরক্ত হলো ফয়সাল। তার সেই চিরাচরিত কথার ধরনেই বলল,
“এই মাইয়া? তোর জামাই মরছে? কান্দস ক্যান? ফাউল!”
লুবনা কাঁদতে কাঁদতে হেসে ফেললো। ফয়সালের হাত নিজের হাতে নিয়ে বলল,
“খুব মিস করেছি ফয়সাল! কেমন আছিস, বেয়াদপ?”
ফয়সাল ভ্রু কুঁচকে বলে,
“আলালের দুলালি আমারে ভালো থাকতে দিল কই? মাঝরাইতে জ্বালাইতে চইলা আসছে। এই বড়লোকগুলার লাইগা দুনিয়ায় শান্তি নাই। ইশশ আমার কাঁচা ঘুমটা!”
লুবনার চোখ বেয়ে তখনও অশ্রুধারা বয়। যেন পুরো একখানা সমুদ্র তার চোখে!
ফয়সাল বিরক্ত হয়ে বলে,
“এই ফ্যাঁচফ্যাঁচ করবি না তো, একদম চোখ গেলে দিব।”
লুবনা নিজের চোখ মুছে দু’হাতে।
ফয়সাল মুগ্ধ চোখে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকে। তারপর চোখ বন্ধ করে বলে,
“এই মেয়ে? কাজ কর, একটু মাথাটা টিপে দে। কান্নাকাটি করে মাথা ধরিয়ে ফেলছিস। ঝটপট ভালো করে দিয়ে বিদায় হ। আমার চোখে এখন অনেক ঘুম, বুঝলি?”
লুবনা হতভম্ব! এই ছেলেটা এমন কেন? এত বড় একটা ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেও কি দারুন স্বাভাবিক! হায় আল্লাহ্! এই ছেলের জন্য কি-না পাক্কা একদিন একরাত দুঃখ বিলাস করে কাটিয়ে দিয়েছে?
.
রুম আবছা অন্ধকার। জানালার পর্দা ভেদ করেই পরন্ত বিকালের অল্পকিছু আলো কনার পদচারণ সমস্ত রুম জুড়ে। আলগা দরজার কপাট খুলতেই আরো কিছু আলোক রেখা হুঁ হুঁ করে প্রবেশ করলো রুমটিতে। এই যৎসামান্য আলোতেই স্পষ্ট দৃশ্যমান মানবটিকে পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর মানবদের একজন বলে আখ্যায়িত করলে বিশেষ ভুল হবে না। সুন্দর মুখখানার একপাশ আলো ছায়া অন্যপাশ অন্ধকার। চোখে চশমা নেই। কেন নেই চশমাটা? দুঃখ লাগে ভারী!
খাটের সাথে আধশোয়া অবস্থাতেই শুয়ে আছে চমৎকার মানুষটি। এক পায়ের উপর আরেক পা সমান করে রাখা। বন্ধ চোখ, বুকের উপর বন্ধ বই! সে কি ঘুমাচ্ছে?
নোলক কাঁপা হাতেই দরজার কপাট ধরল। গড়িয়ে নিচে নেমে এলো দু’খানা চুড়ি! কাচের চুড়ির ছন্দ খেলে গেল সঙ্গে সঙ্গে। পা নাড়াতেই লং-স্কার্টটি ফ্লোর ছুঁল, মৃদু আওয়াজ তুললো এক পায়ের নূপুরটা। টলমলে চোখ, নকশা আঁকা মুখ।
“নোলক! আসো, ভেতরে আসো। দরজায় দাঁড়িয়ে আছ কেন?”
নোলক চমকে উঠে, থমকে দাঁড়ায়। মাথা নিচু করতেই টলমলে অশ্রুকণা ফ্লোরে পড়ে। সে কি তবে দেখলে পেল? এক পা এক পা করে এগিয়ে যায় আদ্রর কাছে। বসে আদ্রর পায়ের পাশে। নিস্তব্ধ রুম ঝনঝন করে উঠে। নোলক খুব দরদ নিয়ে সুধায়,
“আপনি আমায় দেখতে পেলেন?”
আদ্র বলে,
“তোমায় দেখতে দৃষ্টি লাগে না মেয়ে!”
নোলক মায়া মায়া মুখ করে তাকায়। আদ্র’র দৃষ্টি অন্যদিকে। নোলক আর কোন প্রশ্ন করে না। আদ্র একটু থেমে বলে,
“তোমার পারফিউমের ঘ্রানটা খুব নাকে লাগে নোলক। তোমার মতোই ছটফটে ঘ্রানখানা। ঝট করে মস্তিষ্কে হানা দেয়। মাথা ধরে যায় আমার। কি সাংঘাতিক, ভেবেছ?”
“আর দিব না।”
“কী দিবা না?”
“এই বিচ্ছিরি পারফিউম।”
“কেন দিবা না?”
“আপনার অসস্তি হয় তাই!”
আদ্র হাসে। ইশশ, কি সুন্দর! ছেলেটা জানে? তার হাসি এত সুন্দর! সে হাসলে তার চোখ হাসে, হাসে সমস্ত মুখ! সে কী জানে, সে হাসলে হাসে অন্যকারো মন!
“আমার তো তোমার সব কিছু জুড়েই অসস্থি নোলক! তোমার হাতের চুড়ি, তোমার চোখে কাজল, তোমার পায়ের নূপুর, তোমার হাতের ছোঁয়া, তোমার চঞ্চলতা! এই সবকিছুতেই তো আমার অসস্তি নোলক! পুরো তুমিটাই তো আস্ত একটা অসুখ! কী করবে নোলক? কী হবে তোমার?”
কী ভয়ানক খারাপ লাগে নোলকের। টসটসে অশ্রুকণা এবার আদ্রর পায়ের পাতায় পড়ে।
কম্পন খেলে আদ্রর সমস্ত শরীর, মন জুড়ে। এ ব্যাথা, চোখের ব্যাথার কাছে খুবই নগণ্য। বুক চিড়ে বেড়িয়ে আসে করুন এক দীর্ঘশ্বাঃস। মিহি কন্ঠে বলল,
“কেন আসো বারবার নোলক? কেন বাড়াচ্ছ টান?”
“টান আছে আমার প্রতি আপনার? এই….এইটুকুনু? আছে, বলুন?”
চোখে হাত বুলায় আদ্র। একটা ঢোক গিলে বলে,
“তুমি আমায় পাথর ভাবো, নোলক? তোমার মতো দেখাই না বলে, আমায় তুমি পাথর ভাবো?”
“দেখান না কেন? একটু দেখান!”
একটু থেমে নোলক আবার বলে,
“আমায় আপনি আপনার কাছে রেখে দিবেন প্লিজ? আপনার মনের এইটুকুনু টান হয়ে থেকে যাই না, প্লিজ?”
আদ্র এবারও হাসে। আগের মতো থেকেই এক হাঁটু ভেঙে আরেক পা সমান রেখে বলে,
“তুমি খুব অবুঝের মতো কথা বলছ নোলক। বাচ্চাবাচ্চা আবদার!”
“আপনি তো খুব বোঝেন, আমায় বুঝতে পারেন না ক্যান?”
“কারণ আমি তোমার মতো অবাস্তব চিন্তা করি না। অবুঝ নই যে!”
এরপর বেশ খানিকক্ষণ নিস্তব্ধতায় কাটে দুটো মানুষ, দুটো মন। সইতে না পেরে নোলকই বলে,
“এই আবদারটা রেখে দিন। আর কিছু তো চাইছি না।”
“তুমি কী চাইছো তুমি তা নিজেও জান না নোলক। সব কিছু চাইতে নেই।”
নোলকের খুব অভিমান লাগে। নিরবে অশ্রু বিসর্জন দেয়। আদ্র তা বুঝতে পারে। খুব আদুরে স্বরে বলে,
“আমার চশমাটা একটু খুঁজে দিবা, নোলকরানী?”
নোলক নাক টেনে কান্না সামলায়, নিজেকে সামলায়। তারপর বলে,
“না। লাগবে না চশমা। আপনাকে চশমা ছাড়াই বেশি সুন্দর লাগে, বিশ্বাস করুন! প্লিজ চশমা পড়বেন না। চশমা পড়লে আপনায় ক্যাবলাকান্ত লাগে। সত্যি বলছি।”
আদ্র হেসে ফেলে। আওয়াজ করে হাসে। তারপর বলে,
“কিন্তু আমি যে চশমা ছাড়া একটুও দেখি না চঞ্চলাবতী! তোমার চঞ্চলতা দেখিনা কতদিন! মানুষ হাসির মায়ায় পড়ে, আমি তোমার কান্নার মায়ায় পড়েছি নোলকরানী। সেই কবে! আজ এমন নাক টেনে কাঁদছ, আর আমি দেখতে পাচ্ছি না। খুব আফসোস হচ্ছে নোলক।” বলেই তার সেই চমৎকার হাসিটা দেয়।
নোলক খুবই বিস্মিত হয়। হাতের উল্টোপাশ নাকে ঠেকিয়ে, কপাল কুঁচকে, দুঃখী হওয়ার মতন করে বলে,
“আবদার করে কান্না দেখতে চাচ্ছেন, ছিঃ! আপনি খুব নিষ্ঠুর, খুব।”
“তুমি আমার সামনে অথচ তোমায় দেখতে পাচ্ছি না। এই যে এসে, পাশে বসে কুটকুট করে কথা বলছ, কাঁদছ, অভিমান করছো, মায়া বাড়াচ্ছ। আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। এটা কী বড় শাস্তি নয়? এখন বল, কে বেশি নিষ্ঠুর?”
কাঁদতে কাঁদতেইই হেসে ফেলে নোলক। খুব জোর দিয়ে বলে,
“শুনুন? আমি এবার আর আপনার কোনো কথাই শুনবো না। আপনি আমায় রাখতে না চাইলেও জোড় করে থেকে যাব। সবসময় আপনার কথা হবে কেন? আপনি খুবই পঁচা, লেখক সাহেব! আপনার কথা আমি আর শুনব না।”
আদ্র নোলকের কাছে ঝুকে বলে,
“চোখে না দেখতে পাওয়ায় একটা ভালো হয়েছে, জানো?”
নোলক আদ্র’র ঐ হাসিহাসি মুখখানায় চায়। অন্যরকম চাওয়া!
আদ্র বলে, নিচু স্বরে বলে,
“আজকাল আমার চোখে একটা অতি চমৎকার ছবি ভাসে নোলক, রাত, দিন, সারাক্ষণ। একটা মেয়ের ছবি, একটা চঞ্চলাবতীর ছবি, চোখভর্তি কাজল, মুখভর্তি মায়ার ছবি! একলা আমি, আর দূরে দাঁড়ান সেই মেয়েটার করুন মুগ্ধতার এক জলছবি।”
নোলক ফ্যাঁচফ্যাঁচ কাঁদতে কাঁদতেই বলে,
“আমি আপনায় একবার জড়িয়ে ধরি, প্লিজ?”
“তুমি খুব বাচ্চা নোলক। বাস্তবতা একদমই বোঝ না। উদ্ভট কথা বল, অযৌক্তিক আবদার কর! কবে একটু ম্যাচিউর হবা, বলতো মেয়ে?”
“কখনোই না। আমার সকল অবুঝপনার ম্যাচিউরিটি যে আপনি!”
“হাতটা দাও তো নোলক, একটু ধরি।”
আদ্র’র দু’হাতে হাত রাখে নোলক। চোখের সকল পানি এবার আদ্রর হাতে পড়ে।
ইশশ, জলে আঁকা এই জলছবিটা বন্ধি করে রাখা যেত যদি, কেমন হতো তবে?…..(চলবে)