ঘাস ফড়িং
.
২য় পর্ব
মিনুর গ্রাম থেকে এসে ভীষণ একাকীত্ব অনুভব করছে নীলাভ। সেখানে গিয়েও কোনো সন্ধান না পেয়ে পুরোপুরি হতাশ সে। রুমে এভাবে একা একা শুয়ে-বসে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। সিগারেটের প্যাকেট নিয়ে ছাদে এলো সে। সিগারেটে আগুন জ্বেলে একটা টান দিয়ে আকাশের দিকে তাকায়। তার চোখে কি ঝাপসা হয়ে আসা জল? থাকতে পারে। নীলাভের মাথায় এখন টুকরো টুকরো কত স্মৃতি উঁকি দিচ্ছে। কলেজে প্রথম ক্লাস। বোরকা পরা একটি অপরিচিত মেয়েকে দেখে সবাই বিস্মিত হয়ে যায়। ভ্রমণে যাবার সময় ভাগ্যক্রমে মেয়েটির পাশের সীটে বসা। বুকে জড়িয়ে নিয়ে ঘুমানো৷ প্রথম চুমু আরও কত কি…!
ভাবনায় ছেদ পড়লো কাঁধে কারও হাতের কোমল স্পর্শে।
অশ্রুভেজা ঝাপসা চোখে দেখতে পায় শ্রেয়া।

– ‘কী হয়েছে নীলাভ ভাই?’ এতো কোমল করে কথা বলে না চঞ্চল শ্রেয়া। আজ গলায় কেমন মমতা নিয়ে জিজ্ঞেস করছে।
নীলাভ নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে বলে-

– ‘শ্রেয়া তুমি এসময়ে ছাদে কী করছো?’

শ্রেয়া আচমকা দু’হাত বাড়িয়ে নীলাভের মুখটা ধরে বলে,

– ‘নীলাভ ভাই তোমার কী হয়েছে আমাকে বলো। কিছুদিন থেকে তোমাকে এমন লাগছে কেন? কী হয়েছে তোমার?’

নীলাভ লক্ষ্য করে শ্রেয়ার বয়স যেন এই মুহুূর্তে অনেক বেড়ে গেছে। সে কী বলবে ভেবে পায় না।
কেবল শ্রেয়ার হাতটা আলগোছে ছাড়িয়ে বলে,

– ‘কিছু হয় নি আমার। আমি ঠিক আছি।’

শ্রেয়া কিছুক্ষণ একমনে তাকিয়ে বলল,

– ‘আমি যাচ্ছি।’

নীলাভের আচমকা কী যে হল। হঠাৎ মুখ ফসকে বলল,

– ‘তুমি যেওনা শ্রেয়া, আমার ভীষণ একা লাগছে।’

শ্রেয়া তড়িৎ গতিতে ঘুরে তাকায়। নীলাভ ভাইয়া তাকে তুমি করে বলছে কেন? কার জন্য একাকীত্ব লাগছে?
শ্রেয়া জল টলমল চোখে বলে,

– ‘একাকীত্ব লাগবে কেন নীলাভ ভাই? আমি আছি না?’

নীলাভ আচমকা শ্রেয়াকে জড়িয়ে ধরে ফুঁফিয়ে ফুঁফিয়ে কাঁদতে শুরু করে। শ্রেয়ার পুরো শরীর কেঁপে উঠে। ভেতরকার সমস্ত অলিগলিতে একফালি শীতল বাতাস ভিজিয়ে দিয়ে যায়। নীলাভ ভাই এতোদিনে বোধহয় তার বুঝেছে।

সে ধরে আসা গলায় মাথায় হাত রেখে বলে,

– ‘আজ তোমার কী হয়েছে নীলাভ ভাই?’

– ‘শ্রেয়ারে আমার মিনু হারিয়ে গেছে। যাকে আমি ভালোবাসতাম। যাকে নিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত একসাথে থাকার স্বপ্ন দেখতাম। সে আমাকে ছেড়ে কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। ভীষণ একা লাগছে শ্রেয়া। আমি ভীষণ একা।’

শ্রেয়ার মাথায় আসমান ভেঙে পড়ে। খানিক আগে সূর্যের দেখা মিলেছিল। এখন আবার মেঘ এসে সূর্যটাকে ঢেকে দিয়ে গেল। ভেতর গুলিয়ে কান্না আসে। দু’জনের কান্না প্রিয়জন হারানোর।
শ্রেয়া কান্না আঁটকে বলল,

– ‘তুমি একা নও নীলাভ ভাই। আমি আছি তো। চলো নীলাভ ভাই রুমে চলো।’

নীলাভকে হাত ধরে রুমে নিয়ে আসে শ্রেয়া। বিছানায় শুইয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। খানিক পর আদুরে শিশুর মতন ঘুমিয়ে যায় নীলাভ। শ্রেয়া গভীর মমতায় চেয়ে থাকে৷ ঘন ভ্রু। অল্প অল্প দাড়ি উঁকি মারছে। কালো চুল। গায়ের রঙ শ্যামলা। লাল টুকটুকে একটা সেন্টু গেঞ্জি পরনে। শ্রেয়ার চোখ ফেটে কেন যেন জল আসে। চোখ যেন এক অবাধ্য নদী। যখন তখন ঢেউ উঠে। শ্রেয়া। ঘুমন্ত নীলাভের মুখে গাঢ় মায়ায় হাত বুলিয়ে এনে ঠোঁট ছোঁয়াল।
শ্রেয়া কি আজ অনেক বড় হয়ে গেছে? কেমন পরিপক্ব বয়সী মেয়েদের মতন ব্যবহার৷ আঘাত পেলে বোধহয় মানুষের বয়স চোখের পলকে বহু বছর বেড়ে যায়। মস্তিষ্ক পরিপক্ব হয়৷ চঞ্চল মানুষ চুপচাপ, নীরব, ভাবুক হয়ে যায়। নীলাভের গায়ে চাদর টেনে দিয়ে শ্রেয়া বাইরে চলে যায়। নীলাভের কেবল এই দেহ বিছানায় পড়ে আছে। চোখবুঁজে থাকা এই দেহকে দেখলে যেকেউ ঘুমন্ত ভেবে প্রতারিত হবে।
অথচ তার মনের অলিগলিতে যে ঝড় বয়ে যাচ্ছে এতে ঘুম আসবার কথা নয়। তার মন এখন মিনুর সঙ্গে কাটানো প্রতিটি টুকরো টুকরো স্মৃতি হাতড়ে বেড়াচ্ছে। মানুষের মন অধীনস্থ মানে না। সে বড়ই স্বাধীন৷ আমরা তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। দীর্ঘ জীবন কাটাতে যেয়ে মানুষ কত স্মৃতি যে ভুলে থাকতে চায়। তবুও বিলের পানার মতন পুরো জীবনভর স্মৃতিগুলো বুকের ভেতর ভেসে বেড়ায়। নীলাভও মিনুকে এক মুহূর্তের জন্য ভুলতে পারছে না।
বয়স তার সহপাঠীদের থেকে বছর দুয়েক বেশিই ছিল। ছোটবেলায় মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে আবার স্কুলে আসার কারণে দু’টা বছর পিছিয়ে যায় সে। মিনুর সঙ্গে পরিচয় ইন্টার থেকেই। সে এবার অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে। ইন্টারে মিনুর রেজাল্ট তার থেকেও ভালো হয়েছে। কিন্তু সে ভার্সিটিতে ভর্তি না হয়ে কোথায় হারিয়ে গেল! ইন্টারের দু’টা বছরে মিনুর সঙ্গে তার একটা জীবন বয়ে বেড়ানোর মতন স্মৃতি জমে গেছে। মিনু বৃষ্টিদের বাসা থেকে পড়ালেখা করতো। বৃষ্টি মিনুর ফুফাতো বোন। ছেলেদের নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরানোর স্বভাব ওর। নীলাভ, মিনু, তামিম, বৃষ্টি তারা সহপাঠী। তামিমের সঙ্গেই কেবল বৃষ্টির সম্পর্ক টিকে আছে বটে৷ টিকে থাকার কারণ হয়তো তামিমের একতরফা ত্যাগ।
তামিম সহ সবাই জানে বৃষ্টি কোনো বাছ-বিচার ছাড়াই ছোট বড় সবার সঙ্গে বেস্ট ফ্রেন্ডের নামে লটরপটর চলায়। তবুও সে কেন জানি বৃষ্টিতে মাতাল হয়ে আছে। বৃষ্টির একটা মুদ্রাদোষ হচ্ছে “বা’ল”। কথায় কথায় এই শব্দটি ডেলিভারি দেয়। নীলাভ, মিনু, তামিম সহ সবাই মিলে একদিন শাসিয়েছে সবার সামনে এসব খারাপ শব্দ ব্যবহার না করতে। বৃষ্টি মাথা পেতে মেনে নেয় ঠিক আছে আর এমন হবে না।
কিন্তু সে এই গালিটা ছাড়েনি। এই গালি সহ আরও কান গরম করা খারাপ ভাষা সবার কানে কানে ফিসফিস করে বলতো। শেষ পর্যন্ত বান্ধবীদের ফিসফিস করে কিছু বলতে গেলেই সবাই দৌড়ে পালাতো। বৃষ্টির ফিসফিস মানেই যেন আতংক। সবার বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে ওর খারাপ মন্তব্য থাকবেই। নীলাভকে দেখিয়ে একদিন মিনুর কানে ফিসফিস করে বলল-

– ‘তোর নীলাভটা অনেক সেক্সিরে, বা’লটার সঙ্গে তোর আগে থেকেই আমার পরিচয়, কিন্তু পটাতে পারিনি।’

মিনুর কান গরম হয়ে গেল। ওর মুখে কিছুই আটকায় না। ছেলেদের মতো কথাবার্তা। রাগে বৃষ্টির পিঠে কিল-ঘুসি মারে। কিল-ঘুসি খেয়ে যেন বৃষ্টি বরং মজাই পায়। খিলখিল করে হাসে। মিনুর কি এক কপাল। এই বিরক্তিকর মেয়ের সঙ্গেই তার এক বিছানায় থাকতে হয়। সারারাত ছেলেদের সঙ্গে লুতুপুতু ফোনালাপ করে সে। মিনু চিন্তা করে পায় না। এরা সারাক্ষণ ফোনে কথা বলার মতো আলাপ কোথা থেকে পায়। সে তো কিছুক্ষণ কথা বলে আর খুঁজেই পায় না কি বলবে।

নীলাভ গা থেকে চাদর সরিয়ে উঠে বসে। বৃষ্টিকে একটা ফোন দিয়ে দেখবে মিনুদের কোনো খবর-টবর পেয়েছে কি-না৷ যা হবার তাই হলো। বৃষ্টির ফোন ব্যস্ত। কোনো ছেলের সঙ্গে হয়তো জমে গেছে প্রেমালাপে। সে এখন কি করবে? টেবিলের দিকে পা বাড়ায়। ডায়েরি কি লিখবে? তার অবশ্য ডায়েরি লেখার অভ্যাস অনেক আগে থেকেই। মিনুর সঙ্গে কাটানো সমস্ত বিশেষ বিশেষ মুহূর্তগুলো এতে লেখা। নীলাভ আনমনে ডায়েরির পাতা উল্টায়। চোখের সামনে ভেসে উঠে একটা লেখার শিরোনাম-
-“আমার ঘাস ফড়িং একদিন আমাকে স্বর্গ সুখ এনে দিয়েছিল।”
মিনুকে নীলাভ ঘাসফড়িং ডাকতো। এর পেছনের ইতিহাস খুবই মজার। কিন্তু এই মুহূর্তে নীলাভের মন সেই ইতিহাসে নেই। তার ভীষণ মনে পড়ছে সেই স্বর্গ সুখের সুনালী দিন। সেদিন বিকেলে তামিম, বৃষ্টি, মিনু আর নীলাভ গিয়েছিল শহরের খানিক বাইরে খোয়াই নদীর পাড়ে। এদিককার চারপাশে কাশফুল। তামিমকে নিয়ে বৃষ্টি ওদের আড়ালে চলে যায়। নীলাভ আর মিনু বসে নাম না জানা ছোট্ট একটি গাছের নিচে। সেই গাছে দু’টা চড়ুই পাখি কিচিরমিচির করছে। পশ্চিম আকাশে লাল সূর্যের আভা তখন পিছলে টলোমলো করছে নদীর জলে। নীলাভ একটু ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায় মিনুর দিকে। মিনুর বড় অস্বস্তি লাগে। কেউ ওর দিকে এভাবে তাকালে কি করবে ভেবে পায় না সে। এ যাত্রায় পায়ের কাছে ঘাস পেয়ে আলগোছে ছিঁড়তে থাকে। নীলাভ তাকিয়ে থাকে একমনে। গালের মধ্যখানে একটা কালো তিল আছে মিনুর৷ এসব তিলে অন্যকে কেমন লাগে নীলাভ জানে না। কিন্তু মিনুকে বেশ লাগছে। চুল বোধহয় বড় বিরক্ত করে তার ঘাস ফড়িংকে৷ একটু পর পর আলগোছে কানে গুঁজতে দেখা যায়।

নীলাভ আস্তে আস্তে বলল-

– ‘তোমার হাতটা একটু ধরে বসি?’

মিনু ঘাস ছিঁড়া থেকে হাত নিজের কোলে এনে বলল

– ‘না।’

নীলাভ আনমনে বলল,

– ‘তো।’

মিনু গাছের দিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বলল,

– চড়ুই পাখিরা যা করবে আমরাও তাই করবো।’

নীলাভ আশা নিয়ে তাকায় সেদিকে। ছোট্ট চড়ুই পাখিরা অবশ্য মাঝেমধ্যে জনসম্মুখে বড় বড় কাজ করে বসে৷ কিন্তু এই মুহূর্তে নীলাভকে আহত করে কেবল কিচিরমিচির করল। তারমানে নীলাভকে এখন কেবল গল্প করেই কাটাতে হবে। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল তার। লক্ষী ছেলের মতো নানান গল্প জুড়ে দিল।
হঠাৎ সে লক্ষ্য করে মিনুর মাঝে কেমন অস্থিরতা। সুন্দর মুখটা ঘেমে গেছে ওর।
জিজ্ঞেস করে,

– ‘এই কি হলো?’

মিনু লজ্জায় মাথা নীচু করে ফেলে। নীলাভ তাকিয়ে দেখে পশ্চিম আকাশে লাল হয়ে আসা সূর্যের মতন লাল হয়ে গেছে ওর মুখ।
মিনু ভাবছে এই দৃশ্য বুঝি ভালোবাসার মানুষের সামনেই ঘটতে হলো? এখন যদি নীলাভ দেখে ফেলে৷ থুতনি বুকের সঙ্গে লাগিয়ে মাথা নীচু করেই জবাব দেয় মিনু,

-‘কিছু না।’

নীলাভ এতোক্ষণে দেখে ফেলে চড়ুই পাখি দু’টোর মিলন। সবুরে বুঝি মাঝে মাঝে সত্যিই মেওয়া ফলে। সে মিনুর কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বলে,

– ‘প্রকৃতি চায় এই চড়ুই পাখির মতন মিনু নীলাভের মিলন হোক।’

মিনুর বুক ধুকপুক করে উঠে৷ নীলাভের ফিসফিস করে কথা বলার গরম বাতাস যেন কানের ভেতর দিয়ে পুরো শরীরময় আগুন ধরিয়ে দেয়। বুকের ভেতর কি কেউ বসে বসে হাতুড়ি দিয়ে কংক্রিট ভাঙছে? বুকে হাতুড়ি পেটাচ্ছে কেন? এ কেমন ভয়ংকর অনূভুতির মুখোমুখি হলো সে। বড় অপরিচিত অনূভুতি৷ মিনুর মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হলো না। সে চোখ দিয়ে প্রেমিককে শাসন করার বৃথা প্রচেষ্টা চালিয়ে তাকাল।

নীলাভ দুষ্টু হাসি দিয়ে বলল,

– ‘চোখ দিয়ে শাসন করলে হবে না ম্যাডাম। তুমি নিজেই বলেছো চড়ুই পাখিরা যা করবে আমরাও তাই করবো।’

এ যে বড় বেপরোয়া প্রেমিক৷ মিনু তাকে কীভাবে সামলাবে জানে না। এমন পচা পচা কথায় বুঝি মিনুর লজ্জা করে না।
সে মাথা নীচু করে ফেলে,

-‘এগুলো বিয়ের পরে হবে।’

– ‘এটা তো হয় না৷ নিজের কথারই খেলাপ করা হচ্ছে। ভারি অন্যায়।’

মিনু এবার দু’হাতে নিজের মুখ ঢেকে বলল,

– ‘প্লিজ এবারের মতো মাফ করে দাও। আমার লজ্জা করছে ভীষণ।’

নীলাভের বুঝি আজ লজ্জা দেবারই ইচ্ছে।
সে নাছোড়বান্দা হয়ে বলল,

– ‘এইটা তো হবে না। প্রকৃতি আমার পক্ষে। তুমি অবিচার করবে কেন। আমাকে খুশি করা উচিত তোমার।’

মিনু নিজেকে স্বাভাবিক করে মাথা তুলে বলল,

– ‘কীভাবে খুশি করবো শুনি।’

নীলাভ দূরের ঐ লাল হয়ে আসা আকাশের দিকে তাকাল। শিশুদের চোখে যে আকাশ দূরের কোনো গ্রামে নেমে গেছে৷ তারপর খুব গহিন থেকে বের হয়ে আসা তীব্র ইচ্ছেটার কথা বলল,
– ‘আমি তোমাকে একবার খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে চাই ঘাস ফড়িং।’

প্রেমিকের প্রবল আগ্রহী চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারে না মিনু। বুক শিরশির করে। মাথা নীচু করে ফেলে।

– ‘বৃষ্টির কাছে জেনেছি ছেলেরা প্রথমেই ঠোঁটে কিংবা কপালে চুমু খেতে চায়। তুমি জড়িয়ে ধরতে চাও কেন?’

মিনুর এক হাত নীলাভ তার হাতের মুঠোয় নিয়ে বলল,

– ‘কারণ ভালোবাসার মানুষকে জড়িয়ে ধরার চেয়ে শান্তি আর কিসে থাকতে পারে? যেখানে প্রিয় মানুষটির পুরো শরীরের স্পর্শ উষ্ণতা পাওয়া যায়।’

মিনু তাকাতেই পারছে না। কি যে মনের ভেতর ঘটছে আজ। সে অন্যদিকে তাকিয়েই বলল,

– ‘আমার লজ্জা করবে।’

নীলাভ অভিমানী গলায় বলল,

– ‘তাহলে থাক।’

মিনু জানে নীলাভের এই ইচ্ছেটা পূরণ না করলে নিজেই কষ্ট পাবে। বদ রাগী নদীর পাড় ভাঙার মতো নিজেই ক্ষণে ক্ষণে ভেঙে পড়বে অতল মায়ার সমুদ্রে। বারংবার মন বলবে,

– ‘আহারে মানুষটা চেয়েছিল। আমি মানা করে দিলাম।’

হাজার লজ্জা আর পাপকে চাপিয়ে প্রেমিক-প্রেমিকারা এটাই করে আসছে। প্রেমের অঘোষিত নিয়ম। সে আস্তে আস্তে বলল,

– ‘থাকবে কেন। তোমার ইচ্ছেটা পূরণ হোক। বৃষ্টিরা প্রতিদিন ক্লাসে আগে যায়। কাল আমরাও আগে ক্লাসে যাব। এখন ডাকো ওদের, প্লিজ বাসায় চলে যাই।’
——চলবে–
লেখা: MD Jobrul Islam

বি:দ্র: এই উপন্যাস যেহেতু আমার লেখা আছে৷ তাই এভাবে দুই তিন ঘণ্টা পর পর পোস্ট করে দেবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here