গল্প :- #অবহেলা_না_ভালোবাসা ♥
পর্ব :- ০৫ এবং শেষ
Writer :- Kabbo Ahammad
.
.
.
:- তারপর নীলা আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরার পড় আমি বাইক স্টার্ট করে রিয়ার সামনে দিয়ে চলে আসলাম।
আর আসার সময় বাইকের লুকিংগ্লাসে তাকিয়ে দেখলাম যে রিয়া তখনও এক নজড়ে আমাদের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নীরবে চোখের পানি ঝরাচ্ছে॥আমার তখন ওর চোখের পানি দেখে হঠাৎ করে বুকের বাম পাশটাই কেনো জানি ব্যাথা অনুভব করতে শুরু করলাম॥
ওর কান্না দেখে কেনো জানি আমারও চোখের কোণে পানি চলে এসেছিলো॥ কিন্তুু সেটা রিয়াকে বুঝতে দেইনি॥

এরপর বাষায় চলে আসলাম বাসায় এসে নীলাকে নামতে বললাম॥
তারপর ওকে জিজ্ঞাসা করলাম যে সে রিয়াকে কিভাবে চিনলো?
আর সে আমার প্রশ্নের জবাবে বললো “সে নাকি রিয়ার
ছবি একবার আমার রুমে একটা ডায়েরীর ভিতরে দেখেছিলো॥
আর সে এও বললো যে”সে নাকি আমার আর রিয়ার সম্পর্কের কথা টাও যানে॥
তাই আমি আর বেশী কিছু জিজ্ঞাসা না করে ওকে বাসার ভিতরে যেতে বললাম॥
আর আমি বলার সাথে সাথেই নীলা বাসার ভিতরে ঢুকে গেলো॥
আর ভিতরে ঢুকেই আগে আম্মুকে খালা আম্মু বলে জড়িয়ে ধরলো॥ তারপর বললো:-

–খালা আম্মু কেমন আছো তুমি!!! ছোট আম্মু কেমন আছে!! আর তুমি তো আমাকে ভুকেই গেলে॥
একটি বার আমায় ফোন দিয়ে আমার খবরও নিলে না তুমি॥ (নীলা)

–আলহামদুলিল্লাহ্‌ আমরা সবাই ভালো আছি॥
(আর তুই কি জানি বলছিলি নীলার কান ধরে)
আমরা তকে ভুলে গেছি তাই না॥ আমরা ভুলে গেছি
নাকি তুই আমাদের সবাই কে ভুলে গেছিস॥
একটি বার তুই তো আমাকে ফোন দিয়ে আমার খরব নিলি না॥ আর এখন এসে উল্টো আমাকে দোষারোপ করছিস তাই না। (আম্মু)

–আউ্ ‘ আউ্ ‘ খালা আম্মু কান ছাড়ো প্লিজ আমার প্লিজ॥ আচ্ছা আমি মানছি আমারি দোষ॥ আমিই তোমাদের খবর নেই নি॥ প্লিজ এখন তো আমার কান ছাড়ো প্লিজ॥(নীলা)

আম্মু তখন নীলার কান ছেড়ে দেয়॥ তারপড় তারা আরো কিছুক্ষণ কথা বলে নীলা ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে চলে গেলে আমি আম্মুর সাথে অল্প কিছু কথা বলে আমার রুমে চলে গেলাম॥ তারপর রিয়ার কথা গুলো ভাবতে লাগলাম॥
সে আজ হয়তো নীলাকে আমার সাথে দেখে অনেক কষ্ট পেয়েছে। আর তখন আমার এমন ব্যাবহারেও হয়তো কষ্ট পেয়েছে মনে॥
কিন্তুু এতে আমার কিছু করার নেই। এক সময় আমিও ওর জন্য অনেক কেঁদে ছিলাম। কিন্তুু সে তো আমার কষ্ট টাকে বুঝেনি তখন॥ তাহলে আমি কেন এখন এতো তাড়া-তাড়ি ওকে ক্ষমা করে দেবো॥
আমিও ওকে বুঝাবো কারো ভালোবাসা নিয়ে অবোহেলা করলে তখন কেমন কষ্ট লাগে॥ ঠিক যেমন এখন সে আমার অবোহেলায় কষ্ট পাচ্ছে॥ তবে ওকে এমন কষ্ট পেতে দেখে আমিও যে ঠিক থাকতে পারছি না। আর আমারও যে খারাপ লাগছে না তা কিন্তুু না । ওকে এমন কষ্ট পেতে দেখে আমিও মনে মনে অনেক কষ্ট পাচ্ছি॥ কিন্তু……………
.
.
.
এমন ভাবেই কেটে যায় কিছুদিন। তো একদিন আমি আমার রুমে বসে কি যেনো একটা কাজ করছিলাম’ আর তখনি হঠাৎ টেবিলে রাখা আমার ফোনটা বেজে উঠলো॥ তাই আমি কাজ বাদ দিয়ে আগে ফোনটা ধরতে গেলাম॥ আর ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি রিয়ার আম্মু আমায় ফোন করেছেন। তাই তাড়া-তাড়ি করে ফোন টা ধরে আগে তাকে সালাম দিলাম॥ তারপর:-
আমি:- আস্সালামুয়াইকুম’ আন্টি..॥

–আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু। (আমি)

–ওয়ালাইকুম’সালাম বাবা॥ বাবা কাব্য তুমি কোথায়
আছো এখন!!!
(কথা গুলো অনেকটা কান্নার সুরে বললেন আন্টি)

–আন্টি আমি এখন বাসায় আছি॥ কিন্তুু কেন কি হয়েছে? আর আপনার কন্ঠশ্বর এমন শুনাচ্ছে কেন?

–কাব্য বাবা এত কথা বলার সময় নাই তুমি কি এখন একটু হাসপাতালে আসতে পারবে?

—হাসপাতাল!!
‘”হঠাৎ হাসপাতালে কেন যেতে বলছেন আন্টি। সব কিছু ঠিক আছে তো!! আর আপনার গলা টা এমন কেন কাঁদার মতো কেন মনে হচ্ছে!!! সব কিছু ঠিক আছে তো॥ প্লিজ আন্টি আমাকে সব কিছু খুলে বলুন॥

–নাহ্ বাবা কাব্য কিছুই ঠিক নেই॥
আর তোমাকে আমি এই জন্য হাসপাতালে আসতে বলছি। রিয়াকে আজকে আমরা হাসপাতালে ভর্তি করালাম।

–কিহ্ বলছেন আন্টি আপনি।
হঠাৎ করে রিয়াকে কেনো হাসপাতালে ভর্তি করালেন? আর রিয়ার কি হয়েছে? ও ঠিক আছে তো॥

–বাবা “রিয়ার অবস্থা তেমন একটা ভালো না॥
মেয়েটা আজ থেকে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করতো না॥ আর সারাক্ষণ শুধু নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে কান্না করতো॥ আমি ওকে কিছু জিজ্ঞাসা করলে আমাকেও কিছু না বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে শুধু কান্না করতো অার বলতো যে ‘আম্মু আমাকে আর একটি বার ক্ষমা করা যায় না। আমি কি এতোটাই ক্ষমার অযোগ্য? এসব বলেই শুধু সারাক্ষণ আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতো। আর আমিও ওর কথার কিছুই বুঝতাম না॥ কিন্তুু আজ হঠাৎ করে সকাল থেকে রিয়া ওর রুমের দরজা খুলছিলো না॥ আমি ওকে অনেক বার ডেকে আসি কিন্তুু ভিতর থেকে ওর কোন আওয়াজি পাওয়া যাচ্ছিলো না॥ তাই আমি পরে তারা-তারি করে তোমার আঙ্কেল কে নিয়ে ওর
রুমের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখি রিয়া বিছানায় পরে আছে॥ কিন্তুু আমি পরোক্ষণে আবার আরেকটু ভালো করে লক্ষ করে দেখি যে ওর হাত দিয়ে তখন রক্ত গড়িয়ে পরছিলো॥ তাই সাথে সাথে ওর হাত টা ঘু্রিয়ে দেখি যে ওর হাতের অনেক খানি কাটা॥ তখন আমরা আমি আর তোমার আঙ্কেল সাথে সাথেই রিয়াকে নিয়ে হাসপাতালে চলে আসি॥ আর হাসপাতালে নিয়ে এলে ডাক্তার আমাদের বলে রিয়ার
শরীরের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়॥ ওর শরীর দিয়ে নাকি অনেক রক্ত বেরিয়ে গেছে তাই এখন নাকি ওরা sure”ভাবে আমাদের কিছু বলতে পারবেন না ৬ ঘন্টা না যাওয়ার আগে॥
আর জানো বাবা মেয়েটাকে এখানে আনার পড় সে শুধু তোমার নাম নিয়ে মাঝে মাঝে চিত্কার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলো তাই আমি এখন সে কারনেই তোমাকে ফোন দিলাম॥ আচ্ছা বাবা তুমি কি একটি বার হাসপাতালে আমার মেয়েটাকে বাচানোর জন্য হলেও আসবে বাবা প্লিজ? কেন-না আমার মনে হয় তুমি যদি এখন ওর পাশে না থাকো তাহলে হয়তো আমার মেয়েটা আর বাঁচবে না বাবা॥

(এই বলেই আন্টি আবারো ফোনে কাঁদতে শুরু করলেন)

এদিকে আন্টির কথা শুনে আমার তখন মনে হচ্ছিল যে কেউ যেনো আমার বুকে ছুরি চালিয়ে দিয়েছে॥ আমার যেন তখন আর মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছিল না আর॥
আমি নিজেকে কোন রকমে শান্ত রেখে আন্টিকে বললাম আমি আসছি। আর এটা বলেই ফোন রেখেদিলাম॥
ফোনটা কাটার পরে আমার চলার শক্তিটাও মনে হচ্ছিল আমার আর নেই॥ আমি বাসায় কাউকে কিছু না বলেই আগে সোজা হাসপাতালের দিকে ছুটলাম॥ আর আমার হাসপাতালে পৌঁছাতে ১৫ মিনিটের মতো সময় লাগলো॥ তবে তখন আমার কাছে এই ১৫ মিনিট প্রায় ১৫ দিনের মতো মনে হচ্ছিল॥ বারে বার শুধু রিয়ার কথা মনে হচ্ছিল॥ ওর এমন অবস্থার জন্য হয়তো আমিই নিজে দাই॥ ওর কিছু হয়ে গেলে হয়তো আমি আর নিজেকে কখনোই ক্ষমা করতে পারবো না॥
আমিও নিজেকে শেষ করে দেবো…এই সব কথা ভাবতে ভাবতে আমি হাসপাতালে চলে আসলাম॥ সেখানে গিয়ে আগে রিয়াকে কোন ওয়ার্ডে
ভর্তি করানো হয়েছে সেটা জেনে নিলাম॥ তারপর রিয়া যেখানে আছে সেখানে আগে ছুটতে লাগলাম॥ সেখানে গিয়ে দেখলাম যে আন্টি বাইরে ডাক্তারের সাথে কি যানি কথা বলছে আর আমাকে দেখার সাথে সাথেই আন্টি আমাকে জড়িয়ে ধরে বাচ্চাদের মতো কান্না করতে করতে বললেন যে :-

–বাবা “কাব্য তুমি এসেছো!
বাবা আমার মেয়েটার অবস্থা বেশী ভালো না।
আচ্ছা বাবা আমার মেয়েটা বাঁচবে তো!!
সে ছাড়া এই দুনিয়ায় আমাদের আগলে ধরে বেঁচে থাকার কেউ নেই বাবা॥ আমার মেয়েটা আবার বাঁচবে তো বাবা!! বলোনা বাবা কাব্য আমার মেয়েটা আবার বাঁচবে তো??

আন্টির কথা গুলো শুনে আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না॥ আমিও আন্টির সাথে চোখেত বাধ ছেড়ে দিলাম। তারপর কান্না করতে করতে আমি বললাম:-

–নাহ্ আন্টি রিয়ার কিছুই হবে না॥ আমি ওর কিছুই হতে দিবো না॥ ওর কিছু হয়ে গেলে আমিও যে আর বেঁচে থাকতে পারবো না॥ তাই আমার জন্য হলেও ওকে আবারও বাঁচতে হবে॥ দেখবেন রিয়া ঠিক হয়ে যাবে॥ কেন-না আমি এসে গেছি ওর কাছে॥
সে এখন আর আমার কথা ফেলতে পারবে না॥
দেখো ওর কিছুই হবে না!!বওর কিছুই হবেনা……..

এই বলেই আমিও আন্টিকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলাম॥

তারপর আন্টির সাথে আরো কিছু কথা বলে বাইরের গ্লাস দিয়ে রিয়াকেভদেখতে লাগলাম॥ আর রিয়াকে তখন এই অবস্থায় দেখে আমার চোখের পানি যেন আরো বেশি করে ঝরতে লাগলো॥ কেন-না মেয়েটার পুরো শরীর টাই না খেয়ে’ না ঘুমিয়ে ‘ একদম শুকিয়ে কাঠ করে ফেলেছে॥ চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে॥ আর হাতে অনেক বড় ধরনের ব্যান্ডিজ।
ওর এসব দেখে আমি আর নিজেকে সামলে রাখতে পারছিলাম না॥ বার বার শুধু আমার এটাই মনে হচ্ছিলো যে ওর এমন অবস্থার জন্য আমিই নিজেই দাই॥ আমি এসব কথা ভাবছিলাম আর কাঁদছিলাম। আর ঠিক তখনি একজন ডাক্তার এসে বলতে লাগলো:-

–শুনুন আপনাদের আর চিন্তা করতে হবেনা॥
আল্লাহ ‘র রহমতে এবারের মতো আপনাদের মেয়ে বেচে গেছে॥ ওর আর কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্ঞান ফিরবে আপনারা চাইলে তখন গিয়ে ওর সাথে দেখা করতে পারবেন॥ তবে একটা ব্যাপার মনে রাখবেন এমন কিছু আবার হলে নেক্সট টাইম আমরা আর হয়তো কিছুই করতে পারবো না॥ তাই “বি ‘কেয়ার’ ফুল”॥ এই বলেই ডাক্তার সাহেব চলে গেলেন॥
এদিকে ডাক্তারের কথা শুনে খুশিতে আমি আঙ্কেল-আন্টি আবারো কান্না শুরু করে দিয়েছি॥
আর হ্যাঁ সেটা একটা সুখের কান্না॥

কিছুক্ষণ আগে তুবার জ্ঞান ফিরেছে॥
তাই আঙ্কেল-আন্টি আগে গেলেন তাদের মেয়ের সাথে দেখা করতে॥ এদিকে আমিও বাসায় ফোন করে রিয়ার কথা বলে দিয়েছি”আর কিছুক্ষণ পরেই আম্মু আর নীলা হাসপাতালে চলে আসে॥ তাই আমি আর ভিতরে না গিয়ে বাইরেই তাদের সাথে দাড়িয়ে রইলাম॥

আঙ্কেল-আন্টি রিয়ার সাথে দেখা করার পর আমাকে ভিতরে যেতে বললেন॥ কেন-না রিয়া নাকি আমায় ডাকছে। তাই অামি আর এক মুহূর্ত বাইরে দাড়িয়ে না থেকে সোজা ওর কাছে চলে গেলাম॥ ওর কাছে গিয়ে ওর মাথার কাছে দাড়িয়ে রইলাম। আর সে আমাকে আসতে দেখে আমার প্রতি অভিমান করে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে রাখলো॥ তাই আমি আগে ওর কাছে বসে আমার দিকে মুখ করে তাকাতে বললাম।:-

–তুমি এখানে কেন এসেছো.!!! আমি বেচে আছি নাকি
মারা গেছি তা দেখতে!! তবে তুমি চিন্তা করো না আমি এবারের মতো বেচে গেলেও এর পরের বার আমার মুখ আর তোমায় দেখতে হবে না আমি তোমায় কথা দিচ্ছিইইই..

(ঠাসসসস) ওর কথা শেষ করার আগেই রিয়া আবারো মরার কথা শুনে নিজের রাগটাকে আর সামলে রাখতে পারলাম না॥ তাই ওর কথা শেষ করার আগেই ওর গালে( ঠাসসস ) করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলাম॥ আর ওকে থাপ্পড় মারার সাথে সাথে সে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।

–আর একবারও যদি তুমি মরার কথা বলনা তাহলে আমি নিজেই তোমার আগে নিজেকে শেষ করে দেবো॥ আমার আর এতো কষ্ট সহ্য হচ্ছে না॥
কি করে পারলে তুমি এই কাজ টা করতে! কি করে পারলে একাই এতো বড় একটা সীদ্ধান্ত নিতে!
আমার কথা কি তোমার একটি বারোও মনে পড়েনি। একটি বারো কি তোমার এটা মনে হয়নি যে তোমার কিছু হয়ে গেলে আমার কি হবে॥
আমি তোমাকে ছাড়া কিভাবে বেচে থাকতাম রিয়া॥ কি নিয়ে বাচতাম আমি॥
নাহ্ তোমার সেসব কিছুই মনে পড়েনি|
আর তোমার মনে পড়বে কেনো! আসলে তুমি তো আমায় কখনো ভালোই বাসো নি॥ আমায় যদি তুমি সত্যি ভালোবাসতে তাহলে তুমি কখনই এই কাজ টা করতে পারতে না॥ এই বলেই আমি ওর হাতটা ধরে কাঁদতে শুরু করলাম॥

এদিকে আমার কথা শুনে রিয়া আরো কান্না শুরু করে দিলো॥ তারপর বললো :-

–তো ‘এমন করবো না তো কি করবো!! তুমি তো নাকি আমাকে আর ভালোই বাসতে পারবে না। আমাকে নাকি আর একটিবার ক্ষমাই করতে পারবে না। তার উপর তুমি আবার আমার সামনে অন্য একটা মেয়েকে নিয়ে ঘুরে বেড়াবে তা দেখেও আমি কেন আর এমন কাজ করবো না। আর তুমি এখানে কেন এসেছো যাও তোমার সেই নতুন প্রমিকার কাছে যাও’ আমার কাছে কেন এসেছো! যাও তোমার সেই প্রমিকার কাছে যাও॥ যাকে আদর করে নিজের হাতে ফুচকা খাইয়ে দিয়ে বাইকে করে ঘুরে বেড়াচ্ছিলে যাও ‘ যাও তার কাছেই যাও॥ আমার কাছে কেন এসেছো তুমি এখন যাও ওর কাছে যাও॥
এই বলেই রিয়া আবারো কাঁদতে কাঁদতে আমার উপরে অভিমান করে অন্য দিকে নিজের মুখ গুরিয়ে রাখলো॥

–আরে দেখো আমি তোমার সাথে যা করেছি একদম ঠিক করেছি। তুমি কি আমায় সেদিন কম কষ্ট দিয়েছিলে! তোমার ব্যাবহারে আমার সেদিন খারাপ লাগেনি॥ আর জানো তুমি তোমার বলা সেদিন কার কথা গুলোতে আমায় কত খানি কষ্ট দিয়েছিলো?
নাহ্ তুমি সেদিন আমার কষ্ট টাকে বুঝোনি॥
তাই আমিও তোমার উপরে অভিমান করে তোমার সাথে একোদিন খারাপ ব্যাবহার করেছি॥

আর থাকলো নীলার কথা। তুমি জানো নীলা আমার কে হয়?
আরে নীলা আমার বড় খালার মেয়ে॥ তুমি যে সে দিন আমাকে আর নীলাকে একসাথে দেখেছিলে।
সে দিন আমি নীলাকে স্টেশন থেকে আমাদের বাসায় আনতে গেছিলাম॥ আর ওকে সেদিন আমি তোমায় দেখার পর তোমাকে রাগানোর জন্য ইচ্ছে করেই ওকে আমি নিজের হাতে তুলে ফুচকা খাইয়ে দিচ্ছিলাম॥
যাতে তুমি আমাকে ওর সাথে দেখে অনেক রেগে যাও’ আর তুমি সেদিন অনেক রেগেও গেছিলে॥

কিন্তু এখন সত্যি টা বলার পরেও যদি তুমি আমার সাথে অভিমান করে কথা না বলো তাহলে আমার আর কিছুই করার নাই।
আমি নাহয় এখন এখন নীলার কাছেই ফিরে যাই’ মেয়েটা আবার আমাকে অনেক লাইক করে
কি বলো॥
আচ্ছা তুমি থাকো তোমার অভিমান নিয়ে আমি এখন নীলার কাছে গেলাম॥

এই বলে আমি শুধু রিয়ার কাছ থেকে উঠতে যাবো ঠিক তখনি সে ঝড়ের গতিতে আমার দিকে ফিরে আমার শার্টের কলারটা চেপে ধরে॥ তারপর বলে:-

–কি বললি তুই !!
তোর সাহস আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে তাই না?
তোর সাহস থাকলে এখান থেকে এক পা সামনে বাড়িয়ে দেখা দেখি॥ তখন দেখবি তোর আমি কি অবস্থা করি। আর তুই যদি এখান থেকে একপা সামনে বাড়াস না তাহলে তকে এখান থেকে সোজা হাসপাতালের ছাঁদে নিয়ে যাবো॥ তারপর সেখান থেকে সোজা নিচে ফেলে দিবো বলে দিলাম॥
এতো দিন তুই আমায় অনেক কষ্ট দিয়েছিস এবার আর তোকে ছাড়বো না॥ মগের-মুলুক পেয়েছিস তাই না তোর দেয়া কষ্ট সহ্য করবো আমি’ আর কোথাকার কোন “নীলা না টিনা” এসে তোকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নেবে.। বললেই হলো তাই না॥
আর ওকে যদি তোর সাথে আর দেখি না তাহলে দেখবি আমি ওর কি হাল করি॥ আমার মনের মানুষের সাথে ওর লুতুফুতু করার শখ বের করবো॥
আর আমি যদি আবার তোকেও ওর ধারের কাছেও দেখী না সেদিন তোর দুনিয়ার শেষ দিন করে ছাড়বো দেখবি॥ এখন চুপচাপ আমায় জড়িয়ে ধরে আমার পাশে শুয়ে থাকবি তারপর এখান থেকে সোজা কাজী অফিসে গিয়ে আমায় বিয়ে করবি॥
কেন-না তকে বা তোর ওই বড় খালার মেয়ে নীলাকে.”কারো উপরে এখন আমার ভরসা নেই॥
তাই তুকে আর ছাড়ছি না॥
অ‍াগে শুধু একবার বিয়েটা করে নেই তারপর তোকে আমি জিনিস তা বুঝাবো॥ এখন চুপচাপ আমায় জড়িয়ে ধর॥
.
.
.
এদিকে আমি রিয়ার মুখে হঠাৎ তুই তুকারী শুনে আর ওর এমন গুন্ডীর মতো ব্যাবহার দেখে ওর আগের পুরোনো সব ব্যাবহারের কথা মনে পড়ে গেলো॥
মেয়েটা আগে আমায় অনেক শাস্তি দিতো। আমি কোন ভুল করলে শাস্তি তো দিতোই সাথে তুই তুকারী তো ফ্রি আছেই॥ তাই আমি আর ওকে ভয়ে কিছু না বলে চুপচাপ ওর পাশে গিয়ে ওকে আমার বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরলাম॥

আর সেও আমাকে জড়িয়ে ধরাতে দুজন কিছুক্ষণের মধ্যেই শান্ত হয়ে গেলাম॥ তারপর আমি বললাম:-

–এই রিয়া।

–হুম বলো।

–আমি বলছিলাম কি আমার না এখন মিষ্টি খেতে খুব ইচ্ছে করছে॥ আমায় কি একটু মিষ্টি খেতে দেবে?

–হুম বুঝলাম॥
আচ্ছা ঠিক আছে এখানে তো আর মিষ্টি নেই তুমি বরং আব্বুকে ডাকো॥ আমি আব্বুকে বলে বাজার থেকে মিষ্টি কিনে আনছি। দাও আব্বুকে ডাক দাও॥

–আরে এর মাঝে আবার আঙ্কেল কে ডাকার কি দরকার॥ তার শরীর এমনিতেই ভালো নেই। তাই তাকে অযথা এখানে মিষ্টি থাকা সত্ত্বেও কেন বাইরে বাজারে মিষ্টি আনতে পাঠাবে বলো’ তার চেয়ে বরং তুমি আমায় তোমার মিষ্টি গুলো খেতে দিলে ভালো হয় না॥

–কিন্তুু এখানে তো আমার কাছে সত্যিই কোনো মিষ্টি নেই॥ তাহলে তুমি খাবে কি? (রিয়া)

–কেন আছে তো তোমার ওই মিষ্টি ঠোঁট দুটো॥
ওগুলো থাকতে আবার বাজারে মিষ্টি কিনতে যেতে হতে কেনো॥

আমার এই কথাটা বলার সাথে সাথে রিয়া আমার দিকে কেমন যানি একটা রাগি লুক দিলো॥
তারপর আমাকে বললো:-

–তোমার তো সাহস কম নয়॥ তুমি এখন এসবের কিছুই আমার কাছে বিয়ের আগে পাবে না॥
আগে আমাকে বিয়ে করো তারপর নাহয় ভেবে দেখা যাবে॥ কিন্তুু তার আগে আর একটি বারো যদি তুমি আমার কাছে আর উল্টো-পাল্টা কিছু বলছো তো তোমার খবর আছে বলে দিলাম॥ (রিয়া)

–ওকে’ আমি আর তোমার কাছে কিছু চাইবো না॥ আমার এখন থেকে যা চাওয়ার আছে এখন থেকে সব আমি নীলার কাছে গিয়ে চাইবো॥
আর আমি জানি সে আমার চাওয়া কখনোই অপূর্ণ রাখবে না॥ আচ্ছা তুমি এখনে শুয়ে থাকো আমি নাহয় একটু নীলার কাছ থেকে মিষ্টি খেয়ে আসিইইইই ……॥

তারপর আমি আর আমার কথাটা শেষ করতে পারলাম না তার আগেই রিয়া ওর দুটো মিষ্টি ঠোঁট দিয়ে আমার মুখ বন্ধ করে দিয়েছে॥ এখন আমরা………………


আরে আরে প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনারা এখন আপাতত চোখ বন্ধ করে চলে যান, আমরা একটু রোমান্স করি, আর হ্যাঁ বিয়ের দাওয়াত রইলো, সবাই আসবেন কিন্তু বিয়েতে।
তবে হ্যাঁ খালী হাতে না,হাত একটু বাকা করে আসবেন।
.
……………♥সমাপ্ত♥……………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here