#খুনসুটি_প্রেম

writer : সুরমা
part: 6

১০মিনিট পর দুজন রিসোর্টে ফিরে ফ্রেস হয়ে নেয়।সারাদিনের ক্লান্তিতে দুজনেই টায়ার্ড হয়ে যায়।রাতের ডিনার শেষ করে দুজনেই ঘুমিয়ে যায়।

সকালে,,,,

খুব সকালে মিতুর ঘুম ভেঙ্গে যায়।পেটে হালকা পেইন ফিল করছে।মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখে ভোর ৪টা বাজে।মিতু কিছুক্ষণ চুপ করে শুয়ে থাকে।কিন্তু ব্যথাটা ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে।

মিতু একবার ভাবলো রাকিবকে বলবে।পরে আবার ভাবলো না,ওকে বলা ঠিক হবে না।তাহলে রাকিব অনেক টেনশন করবে।মিতু বিছানা
থেকে উঠে বেলকুনিতে গিয়ে দাঁড়ালো।অনেক চেষ্টা করছে নিজেকে স্বাভাবিক করতে।বাট পারছে না।

১ঘন্টা পর পেইনটা কিছুটা কমে আসে।বেলকুনিতে রাখা চেয়ারটায় বসেই মিতু ঘুমিয়ে যায়।৫.২২ এর দিকে রাকিবের ঘুম ভাঙ্গলে চোখ খুলে দেখে বিছানায় মিতু নেই।

রাকিব বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে দেখে রুমের দরজা ভেতর থেকে লাগানো।রাকিব বেলকুনিতে গিয়ে দেখে মিতু চেয়ারে বসেই
ঘুমিয়ে পড়েছে।রাকিবের ভীষণ রাগ পায় মিতুকে এখানে এভাবে ঘুমাতে দেখে।কিন্তু পরক্ষণেই রাকিবের রাগটা হাওয়া হয়ে যায় মিতুর বাচ্চা বাচ্চা চেহারাটা দেখে।সকালের হালকা রোদের ঝিলিক এসে পড়ছে মিতুর মুখে।এতে মিতুর ঘুমন্ত চেহারাটা আরো মায়াবী লাগছে।

হালকা হালকা বাতাস মিতুর চুল এলোমেলো করছে।চোখে মুখে এসে লাগছে।রাকিব মিতুর দিকে তাকিয়ে দেখতে থাকে।রাকিবের মিতুর চুল গুলো খুব প্রিয়।মিতুর চুলের ঘ্রান বরাবরেই রাকিবকে মাতাল করে দেয়।

রাকিব আগে কখনও জানতো না মেয়েদের চুলে এতো নেশা থাকতে পারে।রাকিব মিতুর পাশে বসে মিতুর চুল গুলোর সাথে খেলতে থাকে।মিতু ঘুমন্ত অবস্থায় রাকিবকে জড়িয়ে ধরে।রাকিব মিতুর চুলে নিজের নাক ডুবিয়ে কিছুক্ষণ চুলে ঘ্রান নেয়।তারপর নিজের মুখটা মিতুর কানের কাছে এনে কানের লতিতে আলতো করে একটা কামড় দেয়।সাথে সাথেই মিতু জেগে উঠে।

মিটমিট করে তাকিয়ে দেখে রাকিব তার পাশেই বসে আছে।মিতু একটু হাসি দিয়ে রাকিবকে আবার জড়িয়ে ধরে।

-কি ম্যাডাম,আজকে হঠাৎ এতো পিরিতি?ব্যাপারটা কি?
-হুম
-হু কি,এবার উঠো।ঘুরতে যাবে না?
-না,আমি এখন ঘুমাবো।
-সূর্যদয় দেখবে না??
-হু
-তাহলে চলো।নয়তো এতো সুন্দর একটা দৃশ্য মিস করবে।
-আর একটু পরে
-না,দেখতে হলে এক্ষুনি যেতে হবে।উঠো।

রাকিব মিতুকে ছাড়াতে গেলে মিতু আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।রাকিব মিতুকে কোলে তুলে নিয়ে ওয়াশরুমে ডুকে বাথটপে থাকা পানিতে ফেলে দেয়।পানিতে ভেজার কারনে মিতু হুরমুর করে উঠে।

-এটা কি হলো?তুমি আমাকে এভাবে বাথটপে ফেলে দিলে কেন?
-তুমি ঘুমাচ্ছিলে তাই।
-ঘুমাচ্ছিলাম তো কি হইছে?ঘুমাচ্ছিলাম বলে কি এভাবে ফেলে দিবে?
-এভাবে না ফেললে তো তুমি জাগতে না তাই।
-আজিবতো?তুমি যখন ভাল্লুকের মতো পড়ে ঘুমাও তখন কি আমি তোমাকে এভাবে ফেলে দেই?
-জান পাখি,তুমি পারো না বলেই ফেলো না।পারলে তাই করতে।আমি তো কোনোদিন তোমাকে জাগানোর সুযোগ পাই নি।আজ পেয়েছি তাই কাজে লাগালাম।

রাকিবের কথা শুনে মিতু রাগে কিড়মিড় করতে থাকে।আর মনে মনে রাকিবকে বকা দিতে দিতে গোষ্ঠি উদ্ধার করে ফেলে

-( হারামি,কুত্তা,হুলু বেড়াল,খরুশ,সজারু,আমার এতো সুন্দর ঘুমটার বারোটা বাজালি?আবার দেখো দাঁত বের করে হাসা হচ্ছে?ইচ্ছে তো করছে কষে একটা থাপ্পড় মেরে তর মুখটা বাকা করে দেই। )

রাকিব মিতুর এমন লোক দেখে হাসতে হাসতে বাইরে বের হয়ে আসে।মিতু ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে দেখে রাকিব রুমে নেই।মিতু গাল দুটি ফুলিয়ে বিছানায় বসে থাকে।

রাকিব কিছুক্ষণের মধ্যেই রুমে এসে দেখে মিতু বিছানায় বসে পা দুলাচ্ছে।

-কি হলো পাখিটা,চলো।আর দেরি করলে কিন্তু সূর্যদয় উপভোগ করতে পারবে না।
-তুই গিয়ে উপভোগ কর।আমি যাবো না।
-এটা কেমন কথা।এতোদূরে এসে এতো সুন্দর মোমেন্টা মিস করবে তা কি করে হয়।আসার পর থেকে তো তুমিই আমাকে অতিষ্ঠ করে দিয়েছো ঘুরার জন্য।তাহলে আজ যাবে না কেন?চলো
-আমি যাবো না,যাবো না,যাবো না।
-সিউর তুমি যাবে?
-হু
-ওকে তোমাকে যেতে হবে না।রাকিব গিয়ে মিতুকে কোলে তুলে নেয়।মিতু রাকিবকে অনেকবার নামাতে বললেও রাকিব মিতুকে নামায় নি।মিতুকে এনে একদম সমুদ্রের পাড়ে নামায়।তখন সূর্যটা সোনালি রং ধারণ করেছে।মাথার উপরে সূর্যের এতো সুন্দর দৃশ্য দেখে মিতু খুশিতে লাফাতে শুরু করে।মিতুর কাছে মনে হচ্ছে গভীর সমুদ্র থেকে মাত্র উঠে এসেছে এই সোনালি আলোটা।
-ওয়াও!!!এতো সুন্দর দৃশ্য।এর আগে কখনও আমি এতো সুন্দর সূর্যদয় দেখিনি।
-কি ম্যাডাম কি বলেছিলাম?তাহলে এবার কি আমার উপর থেকে রাগ কমেছে?
-হু,
মিতু আর রাকিব পাশাপাশি দুজন অনেক্ষণ সমুদ্রের পাড়ে বসে গল্প করে।রাকিবের কাঁধে মিতুর মাথাটা রাখে।আজ মিতু অন্য রকম এক ভালো লাগা কাজ করছে।এর আগে তার এতো সুখ অনুভব হয় নি।৯টার দিকে তারা রিসোর্টে ফিরে আসে।

দুজনে একসাথে সকালের নাস্তা করে নেয়।রাকিব মিতুকে রুমে পাঠিয়ে দিয়ে নিজে একটা কাজে একটু বাহিরে চলে যায়।মিতু রুমে এসে শুয়ে থাকে।অনেক্ষণ হওয়ার পরও রাকিব আসছে না।মিতু একা একা রুমে বুরিং হয়ে যাচ্ছে।হঠাৎ আবার সেই পেইনটা শুরু হয়।

কয়দিন আগেও পেইনটা কম ছিল।কিন্তু ইদানিং খুব তাড়াতাড়ি পেইনটা শুরু হতে থাকে।আর অনেক্ষণ তা স্থায়ী থাকে।কিসের পেইন এটা মিতু বুঝতে পারছে না।রাকিবকে বলবে বলেও বলতে পারছে না।রাকিব যদি জানতে পারে আবার সেই পেইনটা লাগছে তাহলে মিতুকে খুব করে বকা দিবে।আর এক মুহুর্তও অপেক্ষা না করে মিতুকে নিয়ে বাসায় ফিরে যাবে।তাই এখন মিতু এই বিষয়টা রাকিবকে জানাতে চাইছে না।

মিতু বিছানায় শুয়ে ব্যথায় চটপট করতে থাকে।সে এতোটা পেইন ফিল করছে যে,তার কাপড় এলোমেলো হয়ে গেছে সে দিকে কোনো খেয়াল নেই।পায়ের দিক থেকে কাপড়টা কিছুটা উপরের দিকে সরে এসেছে।মিতুর সাদা ধবধবে ফর্সা পেটটাও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

রাকিব রুমে এসে দেখে মিতু বেসামাল হয়ে বিছানায় শুয়ে আছে।মিতুকে এমন অবস্থায় দেখে রাকিবের মধ্যে ঘোর লেগে যায়।তার চোখে এখন শুধু মিতুর এই বেসামাল শরীরটাই ভেসে উঠছে।নেশা লেগেছে রাকিবের মধ্যে।হ্যাঁ,সব নেশা কেটে গেলেও ভালোবাসার নেশা সহজে কাটে না।

রাকিব একপা দুপা করে এসে মিতুর পাশে বসে মিতুর পায়ে হাত দিয়ে স্লাইট করতে থাকে।রাকিবের হাতের স্পর্শে মিতু পাটা একটু বন্ধ করে ফেলে।রাকিব মিতুর পায়ে কিস করে।সাথে সাথে মিতুর সারা শরীর কেঁপে উঠে।রাকিব হাত দিয়ে মিতুর পেটে চাপ দিতে থাকে।নিজের গা থেকে টি শার্টটা খুলে ফেলে দিয়ে মিতুর পেটে অসংখ্য কিস করতে থাকে।

একদিকে অসহ্য পেইন আর অন্যদিকে রাকিবের পাগল করা স্পর্শ।মিতু রাকিবের চুল গুলো খুব শক্ত করে মুঠোয় নিয়ে রাকিবের মাথাটা নিজের পেটের সাথে চেপে ধরে।আরেক হাত দিয়ে রাকিবের বাহু কামছে ধরে।মিতুর হাতের নখ গুলে রাকিবের শরীরে বসে যায়।সেই দিকে যেন রাকিবের কোনো খেয়াল নেই।

রাকিব ধীরে ধীরে তার ভালোবাসার স্পর্শ মিতুর সারা শরীরে পৌঁছে দিতে থাকে।মিতুর বুকের উপরে থাকা আঁচলটা সরিয়ে মিতুর গলায় ডুবে যায় রাকিব।দুজনেই ভেসে যায় ভালোবাসার সাগরে।এক অন্যরকম সুখের রাজ্যে।যেখানে আছে শুধু সুখ আর সুখ।
(ছি,ছি আপনাদের লজ্জা করে না অন্য কাপলের কথা গুলো এভাবে পড়তে?সবাই এতো লুচু কেন?আর কি জানতে চান?এবার ওদের একটু একা ছাড়ুনতো মশাই।ওরা যা ইচ্ছে করুক।আপনাদের কি?এবার যান,ঘরে ফিরে যান।এখানে আর তাকিয়ে থাকবেন না।আর থাকলে থাকুন।আমার কি?আমি আবার এসবে নেই।আমি লক্ষী মেয়ে।ওরা দুনিয়াতে আসলে আমিও আবার ফিরে আসবো।এখন যাই।টাটা)

চলবে😍😍

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here