#এক_চিলতে_রোদ।
#লেখকঃরবিউল_হাসান।
#পর্বঃ০৫

–এটা তো সেই মেয়ে যাকে আমরা রেস্টুরেন্টে থেকে বের হওয়ার সময় দেখেছিলাম আর রিকশায় চড়ে মেয়েটা চলে গেছিল।মানে রিহি মনে হয় এটা?

রবিঃহুম এটা রিহি।যাকে তুমি দেখেছিলে।
–তাহলে সে এখানে কি করছে?
রবিঃতা আমিও জানি না।

রিহি সবার পাশ দিয়ে হেঁটে প্রিন্সিপাল স্যারের রুমের দিকে চলে গেল।সবাই অবাকের উপর অবাক।রিহি নামের কালসাপ টা কখন কি করে হিসেব নেই।তাই রবি,রাশেদ, অহনা আর ইশিতা ক্লাস না করে বাসায় চলে গেল।ভাবছিল আজকে অহনার সাথে কিছু টা ভালো সময় কাটাবে রবি কিন্তু তা আর হলো কয়…

বাসায় এসে নিজের রুমে চলে গেল রবি আর অহনা।একটু পর আপু আসল।রবি বের হয়ে হয়ে আপুর সামনে দাঁড়ালো। আপুর চোখ দেখে রবির সন্দেহ হচ্ছে এই বুঝি ভয়ঙ্কর কিছু বলবে আপু।
রবি যা ভাবল তাই হলো আপু বলল….
আপুঃরিহি ভার্সিটিতে কেন গেছিল?
–আমি কেমনে জানব কেন গেছিল?
আপুঃমনে হয় না ভালো কিছু করতে সেখানে গেছে তেরা সাবধানে থাকিস।
–আমার মনে হয় না সে আমাদের সাথে আবার ঝামেলায় জড়াবে।
আপুঃতাও বলা তো যায় না।

অহনাকে নিয়ে পার্কে যাওয়া, রিকশায় চড়া,ভার্সিটিতে গিয়ে বাদাম খাওয়া এসবে চলে গেল প্রায় তিন মাস।রবি নিজদের ব্যবসায়ও মনোযোগ দিছে।কাল ভার্সিটির এক্সাম তাই আজ রবি ভার্সিটিতে যাবে।কয়েক দিন অহনাকে একা যেতে হয়েছে।তবে আজও অহনা নিজে থেকে চেলে গেল।রবি ভার্সিটিতে যাবে তা সে বলেও ছিল।কিন্তু অহনা এমন অদ্ভুত ভাবে চলে যাব তা ভাবে নি।

অহনা নিজের মতো করে চলে গেলো।রবি রাশেদকে ফোন দিয়ে জানতে পারল অহনার সাথে সানির খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়েছে।দুই জন সব বিষয়ে শেয়ার করে।শুনে রবির খারাপ লাগলো।অহনা নিজের পার্সোনালিটি নিয়ে রবিকে কখনো বলে নি।সেখানে সানির সাথে ভালোই তাল মিলিয়ে চলছে।

রবি রিকশায় চড়ে ভার্সিটিতে গেল।রাশেদ এসে রবিকে ভার্সিটির পেছনে নিয়ে গেল।যেখানে অহনা আর সানি বসে গল্প করছে।এই সময় ভার্সিটির সবাই পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্থ কাল এক্সাম।কিন্তু অহনা আর সানি গল্পে পড়ে আছে।রবি রাশেদকে ক্লাসে পাঠিয়ে দিল।রবি অহনার কাছে গেল।রবিকে সেখানে দেখতে পেয়ে অহনার চোখ কপালে ওঠে গেল।সানির কপাল দিয়ে ঘাম পড়ছে।অহনা বলে ওঠল৷…..
—তু….তু…তু..তুমি এখানে?
রবিঃআমি না আসলে কি তোমার প্রেমের কাহিনি কি দেখতাম।
–কি বল এসব?ও আমার জাস্ট ফ্রেন্ড।
রবিঃকাল না এক্সাম?
–হ্যাঁ কালই।
রবিঃতাহলে ক্লাস না করে এখানে কি?
–না মানে পড়াশোনা নিয়ে আলোচনা করছিলাম।
রবিঃওহ পড়াশোনা নিয়ে আলোচনা?
–সত্যি বলছি।
রবিঃএক চড়ে সব দাঁত ফেলে দেব মিথ্যাবাদী।
–তুমি এভাবে রেগে যাচ্ছ কেন।আমরা জাস্ট ফ্রেন্ড।
রবিঃহ্যাঁ এখন তো জাস্ট ফ্রেন্ড হবে।যৎসব নষ্টামি। স্বামী থাকতেও অন্য ছেলের সাথে বসে প্রেম করতে লজ্জা করে না তোমার?
–প্লিজ একটু শান্ত হও আমার কথা শুনো।
রবিঃরাখো তোমার কথা।আর কখনো আমার সামনে তোমার ঐ কালনাগিনীর চেহারা নিয়ে আসবে না।

অহনাকে রবি আর কিছু বলতে না দিয়ে ক্লাসে চলে গেলো।অহনা রবির পেছনে পেছনে গেল।কিন্তু রবি একটুও ফিরে তাকায় নি।কাল এক্সাম তাই এক্সামের সব ফি দিয়ে রবি বাসায় চলে এলো।তার ঘন্টা খনেক পর অহনা আসল।রবি অহনাকে দেখেও না দেখার মতো করে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিল তখনই অহনা রবির হাত ধরে ফেলে।সাথে সাথে রবি অহনাকে ঠাস করে একটা চড় মেরে বসে।আপু পাশ দিয়ে যেতে ঘটনা টি দেখে ফেলে।আপু দৌড়ে অহনার কাছে আসে রবি আরেকটা চড় মারতে যাবে তখনই আপু রবির হাত ধরে ফেলে।

আপুঃকি হয়েছে এভাবে মারছিস কেন?

আপুর কথার কোনো উত্তর না দিয়ে রবি বাসা থেকে বের হয়ে গেল।আপু অহনাকে জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে?
–অপরাধ করেছি তাই মেরেছে।
আপুঃকি এমন অপরাধ করেছ যে গায়ে হাত তুলতে হবে?
–আপনার ভাইয়ের কাছে সেটা অনেক বড় অপরাধ।

অহনাও আপুকে কিছু না বলে নিজের রুমে চলে গেল।এইদিকে রবি চলে গেল রাশেদের কাছে।রাতে বাসায় আসে নি আপু ফোন দিলে রাশেদের বাসায় আছে আর এক্সামের পরে বাসায় যাবে বলে।এইদিকে অহনা রবিকে ফোন দিলেও ধরে না।শেষে বাধ্য হয়ে রাশেদকে ফোন দিল।রাশেদের সাথে কথা বললো কিন্তু রবির সাথে কথা বলতে বললে ফোন কেটে দেয়।
রবি রাশেদের বাসা থেকে এক্সাম শেষ করে আর অহনা রবির বাসা থেকে।দুই জনের মধ্যে দূরত্ব যেন বাড়তে থাকে। এক্সাম শেষ তাই আজ রবি বাসায় আসে।শান্তিতে এক্সাম দিতে পেরেছে।কলিং বেল চাপ দিতে অহনা এসে দরজা খুলে দেয়।রবিকে দেখে জড়িয়ে ধরে।কিন্তু রবি তাকে ছাড়িয়ে নিজের মতো করে আপুর রুমে চলে যায়।প্রায় পনেরো দিন পর রবি বাসায় আসছে তাতেও যেন রাগ কমে নি তার।

আপু রুমে শুয়েছিল রবির আসা দেখে ওঠে বসল।রবিকে বলল…

আপুঃকিরে কখন আসলি?
রবিঃমাত্র এলাম। কি কর?
আপুঃশুয়ে আছি।তুই বস কফি বানিয়ে আনছি।
রবিঃনা কফি খাব না।পেট ব্যথা করতেছ একটু৷
আপুঃঅহনার সাথে কথা বলছিস?
রবিঃবাদ দাও ওই মেয়ের কথা।
আপুঃঅনেক রাগ করেছিস এবার থাম।মেয়েটা কেমন হয়ে গেছে একটু দেখ।এই পনেরো দিনে মেয়েটা ঠিক মতো কিছুই করতে পারে নি।এবার তোদের এসব বন্ধ কর।
রবিঃকি করছি আমি?
আপুঃতুই কিছুই করিস তাই সমস্যা। সেদিন মেয়েটাকে চড় না মেরে বুঝাতে পারতি।মারলি ভালো কথা বাসা থেকে কেন বের হয়ে গেলি?
রবিঃযাতে ওর সামনে যেতে না হয় এক্সামটা ঠিক মতো দিতে পারি।
আপুঃশুন অহনা তোর চলে যাওয়ায় খুব কষ্ট পেয়েছে। এখন আর তাকে অবহেলা করিস না।মেয়েটা সারাক্ষণ মন খারাপ করে বসে থাকে।এখন হলেও ক্ষমা করে দেয়।তুই সানিকে নিয়ে যা ভবছিস আসলে তেমন কিছু না।ওরা শুধুই ফ্রেন্ড আর পড়াশোনা নিয়ে আলোচনা করছিল দুই জন।
রবিঃতাহলে অহনা তোমাকে সব বলেছে?
আপুঃহুম বলেছে। যা এখন গিয়ে তুই অহনাকে সরি বল।
রবিঃদোষটা আমার নয়।সরি বলার কথাও আমার নয়।আর পড়াশোনার ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য সেখানে আরো অনেকে ছিল তাদের সাথে করতে পারতো তাও সানি কেন?রাশেদ ছিল অহনার মামাতো বোন ইশিতা ছিল কয় তাদের সাথে তো আলোচনা করে নি?

আপুঃসামান্য বিষয়টি নিয়ে তুই এত কিছু ভাববি তা অহনা বুঝতে পারে নি তাই এমন হলো।আর অহনা তোকে সরি বলতে অনেক বার ফোন দিছে কিন্তু অহনার সাথে তুই কথা বলিস নি।এখন সব বাদ দিয়ে মাফ করে দেয় তাকে।

রবি কিছু না বলে আপুর রুম থেকে বের হয়ে নিজের রুমে গেল।অহনা ওয়াশরুম থেকে বের হচ্ছে চোখ গুলো লাল হয়ে আছে বুঝাই যাচ্ছে একটু আগেও কান্না করেছে।রবি রুমে যেতেই অহনা রবির পায়ে পড়ে গেল।শব্দ করে কান্না শুরু করল আর বলল…
–প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও আমি তোমাকে ছাড়া আর থাকতে পারছি না।
রবিঃ……(নিশ্চুপ)
–প্লিজ একটা সুযোগ দাও।আর কখনো তোমার কথা ছাড়া কারো সাথে মিশব না।প্লিজ একবার সুযোগ দাও…

অহনার কান্নার আওয়াজ যেন বেড়েই চলছে।রবি আর নিজেলে সামলাতে পারলো না।অহনাকে নিজের পায়ের কাছ থেকে তুলে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নিলো।অহনাও রবিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।যেন কখনো ছাড়বে না। অহনা রবিকে কানে কানে বলল…
–সরি আমার ভুল হয়ে গেছে আর কখনো এমন হবে না।
রবিঃমনে থাকবে তো?
–হুম অনেক মনে থাকবে। প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না আর কোথাও।
রবিঃযাব না।

মান অভিমান শেষ করে আবারো ভালোবাসার দু’টি মানুষ এক হয়ে গেল।মিশে গেল ভালোবাসার এক অপূর্ব রাজ্যে…….

অহনা এখন রবিকে খুব ভালোবাসে।তার কথার বাইরে কিছুই করে না।সপ্তাহে দুই দিন করে দুই জন দুই জনকে সময় দেওয়া। বাইরে ঘুরতে যাওয়া, চটপটি কিংবা ফুচকা খাওয়া নিয়ে খুব ভালো চলছে তাদের দিন।হঠাৎ রবিকে ব্যবসার কাজে শহরের বাইরে যেতে হচ্ছে।সপ্তাহ খানেক তো থাকতেই হবে।অহনাও রবির সাথে যেতে চাইলো কিন্তু অহনাকে নিয়ে সেখানে থাকা একটু রিস্ক তাই অহনাকে বাসায় রেখে রবি চললো নতুন শহরের উদ্দেশ্যে।

আজ তিন দিন রবির শহরের বাইরে আছে।তবে নিয়ম করে অহনার সাথে কথা বলা কখনো থেমে থাকে নি।আজও কথা বলছে হঠাৎ অহনা কেন যেন ভয় পেল অহনার হাত থেকে ফোনটা পড়ে গেল।অহনা কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা ওঠালো।ওপাশে রবি অহনাকে ডেকেই যাচ্ছে। কাঁপা কাঁপা গলায় অহনা বলল…
–হ্যালো…
রবিঃকি হল হঠাৎ কোথায় হারিয়ে গেলে আর কিছু একটা পড়ে যাওয়ার আওয়াজ হলো কেন?
–আমার হঠাৎ কেন যেন ভয় হচ্ছে।
রবিঃআরে কি বল হঠাৎ ভয় হবে কেন তোমার শরীর ঠিক আছে তো?
–হ্যাঁ কিন্তু আমার মনে হচ্ছে খারাপ কিছু একটা হতে যাচ্ছে আমাদের সাথে।
রবিঃ চিন্তা করো না কিচ্ছু হবে না।আর তোমার বেশি ভয় লাগলে আপুর কাছে যাও।

রবি অহনার সাথে কথা বলছে হঠাৎ কতগুলো লোক রবির হোটেল রুমে ঢুকে গেল।অহনা কিছু বলার আগে ফোনটা কেটে দিল।লোক গুলোকে দেখে রবির কেমন খারাপ মনে হচ্ছে আর কোনো ভালো লোক এভাবে কারো রুমে পারমিশন ছাড়া ঢুকার কথাও নয়।

রবিঃকারা আপনার এভাবে কিছু না বলে এখানে ঢুকে গেলেন কেন?
–আমরা কারা তা জানতে হবে না।শুধু শুনে রাখ এখানে যে উদ্দেশ্যে আসছিস তা কখনো পূর্ণ হবে না।ভালো চাস তো চলে যা এখান থেকে।
রবিঃকে পাঠিয়েছে তোদের আমাকে হুমকি দিতে সেটা বল।
–সেটা তোকে জানতে হবে না।যদি ভালো চাস তো আজই চলে যাবি নিজের শহরে।
রবিঃআর যদি না যায়?
–তোর লাশটা আমরা পাঠিয়ে দেব পার্সেল করে।
রবিঃওকে লাশটা পাঠিয়ে দিস।আমিও দেখব তোদের কত ক্ষমতা?

–ওকে দেখে চলিস।নয়তো হাঁটতেও পারবি না।

লোক গুলো রবিকে হুমকি দিয়ে চলে গেল।রবি বসে বসে ভাবছে লোক গুলো কে বা কার লোক হতে পারে?তার বিজনেসের পথে কেউ শত্রু বলতে নেই তবে কেন লোক গুলো হুমকি দিল?

রবি এসব নিয়ে এতকিছু না ভেবে রাতে আপুকে ফোন দিয়ে লোক গুলোর হুমকি দেওয়ার কথা জানলো।আপু নিশ্চয় লোক গুলোকে চিনতে পারে কারণ আপু এই বিজনেস অনেক বছর ধরে দেখে আসছে সে হিসেবে আপুর একটু ভালো ধারণা থাকতে পারে।

আজ সাত দিনের ছয় দিন শেষ লোক গুলো আর হুমকি দিতে আসে নি।এই দিকে কাজও শেষ তাই আজ রাতে রবি নিজের শহরে ফিরে যাবে।রাত আটটা রবি একটা রিকশা নিয়ে আগে স্টেশনে যাবে সেখান থেকে বাস নিবে তারপর নিজের শহরে ফিরে যাবে।

রবি রিকশা নিয়ে এগিয়ে চললো।হঠাৎ একটা গাড়িতে রিহিকে দেখতে পেয়ে অবাক হলো।রিহি তো এখন এখানে থাকার কথা না তাহলে সে কোথথেকে এখানে আসলো?কয়েক দিন আগে ভার্সিটিতে ছিল আজ এখানে?

রিকশা আরেকটু সামনে যেতেই রিহির গাড়িটা রবির রিকশার সামনে পথ আঁটকে দাঁড়ালো।রিকশা থেমে গেল।হঠাৎ কিছু লোক এসে রবিকে পেছন থেকে কি যেন দিয়ে মুখ বেঁধে ফেললো সাথে কিছু মেশানো ছিল রবি অজ্ঞান হয়ে গেল।

রবিকে হোটেলে হুমকি দেওয়া লোক গুলো এরাই ছিল।আর এরা সবাই রিহির লোক।রবিকে তারা রিহির গাড়িতে তুলে নিয়ে গেল।রবিকে নিয়ে রিহি চলে গেল একটা পুরনো গোডাউনে সেখানে রবির মুখের কাপড় খুলে দিয়ে ফেলে রাখলো।

রবির চোখ খুলে দেখে সে এক পুরোনো গোডাউনে পড়ে আছে একটু আলো বিভিন্ন ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করতেছে।রবির গলা শুকিয়ে গেছে একটু জল হলে কত ভালো হতো।আস্তে ধীরে শুয়া থেকে ওঠে বসল।চারপাশে দেখছে যদি একটু জল পাওয়া যায়।

একটু দূরে একটা পানির বোতল দেখা যাচ্ছে রবি গিয়ে পানির বোতল টা হাতে নিতে দরজা খুলে কেউ সে গোডাউনে প্রবেশ করলো।মুখটা ভালো করে দেখা যাচ্ছে না।চারপাশে অন্ধকার তবে দেখেই মনে হচ্ছে একটা মেয়ে।লম্বা চুল গুলো বাতাসে ওড়ছে।

মেয়েটা রবির সামনে আসতে রবি বুঝতে পারল এটা আর কেউ নয় স্বয়ং….

#To_be_continue…….
#RK9023DXWC
#অনুমতি_ছাড়া_কপি_করা_নিষেধ।
#গল্পটা_কেমন_হল_জানাবেন।
#ভালো_লাগলে_শেয়ার_করবেন।
#সবাই_নিয়মিত_নামাজ_আদায়_করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here