#আড়াল_কথা
#গুঞ্জন_চৈতি
#পর্ব_২৭(অন্তিম পর্ব)
পথিমধ্যে আসিফ সাহেব ফোন করেন। আড়ালের রুমে একটা চিঠি পেয়েছেন তিনি। চিঠিটার ছবি তুলে পাঠিয়ে দেন শুদ্ধকে। শুদ্ধ পড়তে শুরু করে চিঠিটা।
শুদ্ধ,
কি দিয়ে শুরু করবো বুঝতে পারছিনা। সালাউদ্দিন আহমেদ এর র’ক্ত বইছে তো শরীরে, তাই বে’ই’মা’নি না করে পারলাম না। আপনাদের সবার ভালোবাসা আর স্নেহের সাথে বেইমানি করে চললাম আমি অজানা উদ্দেশ্যে। আপনার টাকাগুলো থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়েছি, বাকিটা আলমারিতে তোলা আছে। এই টাকা দিয়ে সালাউদ্দিন আহমেদ এর শেষ করতে যাচ্ছি আমি। তবে নিজ হাতে নয়, আসলে ওনার মতো মানুষের অভাব নেই এই দুনিয়ায়, যারা কিনা টাকা ছাড়া কিছু চেনে না। ওনার মতো লো’ভী কারো হাতেই ওনার স’মা’প্তি ঘটবে আজ। এতোদিন অবধি এতোটাও পা’ষা’ন হয়ে ওঠতে পারিনি, পারিনি এমন ভ’য়ং’কর চিন্তা ধারণ করতে। কিন্তু আজ সকালে চাচার কথাগুলো আমায় নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে। মনে মনে প্রশ্নের আলোড়ন তুলেছে একটি নাম, ‘সিমা’। জানেন, এই নামটি আজ প্রথম শুনিনি, এর আগেও শুনেছি। আসলে ছোটবেলায় টুসুকে আমার খানিক অপছন্দ ছিলো। কারণ আমার সবথেকে কাছের মানুষ আমার মা আর চাচা ওকে খুব আদর করতো। আমার মনে হতো আমার আদরে ও ভাগ বসাচ্ছে। তাই প্রায় সময় ওর সাথে আমার কিছু না কিছু নিয়ে লেগেই থাকতো। যখন আমার বয়স ছিলো বারো বছর তখন একদিন এক বৃদ্ধা মহিলা এসেছিলো আমাদের বাড়ি। সেদিন বাড়িতে ছিলাম আমি, মা, বাবা আর টুসু। চাচি বাপের বাড়ি গিয়েছিলো তার মেয়েদের নিয়ে আর চাচা গিয়েছিলো শহরে। সেই বৃদ্ধা মহিলার সাথে মায়ের অনেক্ক্ষণ কথা হয়। টুসুর নামে কথা হচ্ছিল তাই কৌতুহল বসত লুকিয়ে শুনেছিলাম আমি কথাগুলো। টুসুর মায়ের মৃত্যু স্বাভাবিক ছিলো না। তাকে নাকি একটা লোক হ’ত্যা করার চেষ্টা করেছিলো। তখন ওই বৃদ্ধা মহিলা কোনভাবে বাঁচিয়ে নিয়েছিলো তাকে। কিন্তু পেটে আঘাত পাওয়ায় তখন আট মাস চলাকালীন সময়ে তৎক্ষনাৎ ডেলিভারি করাতে হয়। জন্ম হয় টুসুর, টুসু সুস্থভাবে জন্ম নিলেও টুসুর মা সিমা বা’চঁ’তে পারে নি। অতিরিক্ত র’ক্ত’ক্ষ’রণ এর কারনে দুনিয়া ত্যাগ করতে হয়েছিলো তার। ওই বৃদ্ধা মহিলা ছিলো টুসুর নানি। তিনি দেখেছিলেন তার মেয়ের হত্যাকারীর চেহারা। তিনি এই কথাটি তার স্বামী আর ছেলেকে বলেছিলেন কিন্তু তারা মানসম্মান এর ভয়ে এই কথা বাইরে বের করতে দেননি। এমনকি টুসুর জন্মের কথাও হাতে গোনা কয়েকজন জানতো। স্বামী সন্তান এর ভয়ে টুসুকেও নিজের কাছে রাখতে পারে নি ওই বৃদ্ধা। ফেলে রাখতে হয়েছে অনাথ আশ্রমে। ওইদিন মায়ের কাছে উনি এসেছিলো কিছু টাকা নিয়ে। তার ইচ্ছে ছিলো সেই টাকাগুলো দিয়ে যেনো টুসুকে ভালো ঘরে বিয়ে দেওয়া হয়। ওই বৃদ্ধা মহিলার টাকা মা সেদিন রাখেনি। মা নিজেই সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছিলো টুসুর। সেদিন শুধু আমি একাই লুকিয়ে লুকিয়ে কথা শুনছিলাম না, আরও একজন শুনছিলো। সে ছিলো সালাউদ্দিন আহমেদ। মা আমাকে লুকিয়ে কথা শুনতে দেখলে বকবে ভেবে টেবিলের নিচে বসে ছিলাম চুপটি করে। তাই দরজার পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা সালাউদ্দিন আহমেদ আমায় দেখতে পায়নি। আমি সেদিন ভেবেছিলাম উনিও হয়তো আমার মতই কৌতুহল হয়ে কথা শুনছে লুকিয়ে। ওনার কাছে নিজের ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে ওনাকেও জানতে দেইনি যে আমি ওনাকে দেখেছি লুকিয়ে কথা শুনতে। ওই বৃদ্ধা মহিলা বেরিয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই সালাউদ্দিন আহমেদ বেরিয়ে পড়েছিলো ওনার পিছু পিছু। আমিও বেরিয়ে এসে মায়ের সাথে বসেছিলাম উঠানে। ঠিক দশ মিনিট পড়েই কয়েকজন লোকের হুল্লোড় শুনে মা আমাকে নিয়ে বের হয় বাড়ির বাইরের মাটির রাস্তায়। আমাদের বাড়ির পিছন দিকে পড়েছিলো ওই মহিলার লা’শ। তাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছিলো। তখন আমাদের বাড়ির আশেপাশে কোন বাড়ি ছিলো না। ছিলো শুধু সারি সারি গাছের বাগান। তাই হয়তো খু’নী বেশ সাহস নিয়ে নিজের কার্য সিদ্ধি করতে পেরেছে। সেদিন যে বাবা বেড়িয়েছিলো তারপর প্রায় দুই বছরের ভেতর আর ফেরেনি। শুধু ফোন দিয়ে বলেছিলো সে বেড়িয়ে গেছে, জরুরি কাজ থাকায় জলদি যেতে হয়েছে তাকে। তারপর থেকে দেখতাম মায়ের সাথে ওনার খুব ঝ’গ’ড়া হতো। তখন না বুঝলেও এখন আমি বুঝেছি ওই মহিলা সালাউদ্দিন আহমেদ এর হাতেই খু’ন হয়েছিলো। কারণ ওনি যখনই ফোন করতো তখনই ওই মহিলার খুনের সুরাহা সম্পর্কে খোঁজখবর নিতো। জিজ্ঞেস করলে বলতো মানবিকতার খাতিরে জানতে চায়। ফোনে আমার সাথে কথা বলার সময় আমাকেও জিজ্ঞেস করতো, আমি যখন যেটুকু জানতাম বলে দিতাম। আজ চাচার মুখে সব ঘটনা শুনে অতীতের হিসেব মিলাতে খুব বেশি সময় লাগে নি আমার। আর কনফার্ম হওয়ার জন্য ছোট্ট একটা চেষ্টা করেছি । আজ হাসপাতালের এক নার্সের সাথে আসার সময় কথা বলে নাম্বার নিয়ে এসেছিলাম। বাড়িতে আসার পর তার সাথে যোগাযোগ করে প্ল্যান মতো সব বুঝিয়ে বলি, সে আমার কথামতো সন্ধ্যার পর সালাউদ্দিন আহমেদ এর সামনে গিয়ে দুটি কথা বলেছে। প্রথম কথা ছিলো, সে নারী পাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত আছে তা ওই নার্স জানে, এখন পুলিশদের সব বলে দেবে প্রমাণসহ। আর দ্বিতীয় কথা ছিলো সিমা আর তার মায়ের হত্যাকারী যে সে তা ওই নার্স জানে। তাও পুলিশদের বলে দেবে। প্রথম কথাটি শুনে সালাউদ্দিন আহমেদ কোন রিয়াকশন দেয়নি। শুধু ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে ছিলো কিন্তু দ্বিতীয় কথাটি শুনে সালাউদ্দিন আহমেদ উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলো। গোঙাতে গোঙাতে মুখ দিয়ে ফেনা উঠে গিয়েছিলো তার। আমার শিখিয়ে দেওয়া কথা অনুযায়ী ওনার করা সমস্ত অপরাধের কথাও একে একে নার্স বলে গেছে, দয়া দেখিয়ে থেমে যায়নি এক মুহুর্তের জন্যও। সবগুলো কথা শুনে আরও বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলো সালাউদ্দিন আহমেদ। ভেবে দেখুন ওই একটা মানুষের জন্য কতোগুলো মানুষের জীবন উজার হয়ে গেছে। কতোগুলো মানুষের র’ক্তে রাঙিয়েছে তার ওই কলুষিত হাত। এমন একটা মানুষ এর কি সত্যিই এতো যত্নের সাথে বেঁচে থাকা প্রাপ্য? নার্স বলেছে মধ্যরাতে সবার অলক্ষ্যে গিয়ে কি একটা ইনজেকশন পুশ করবে, তাতে নাকি হার্ট এট্যাক করে মারা যাবে সালাউদ্দিন আহমেদ। সবাই জানবে তার হা’র্ট এ’ট্যা’কে’র দরুন মৃ’ত্যু হয়েছে। এক ল’ক্ষ টাকার বিনিময়ে লোকটার মৃ’ত্যু নির্ধারন করেছি আজ। আমি নার্স এর সাথে কথা শেষ করেই ছুটে গিয়েছিলাম ছাঁদে। সেখানেই আপনার সাথে আমার শে’ষ দেখা হলো। আর কখনো আমাদের দেখা হবে না। আপনি আমাকে ভালোবাসেন, আমি তা জানি। আমি আপনাকে ভালোবাসি না আপনিও সেটা জানেন। তবে যেটা জানেন না সেটা জানাতে চাই। কবুল বলার সময় মন থেকেই উচ্চারণ করেছিলাম শব্দটি। মন থেকে আপনাকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ ও করেছিলাম। কিন্তু এখন যে কাজ করতে যাচ্ছি আমি, তা যে বড্ড নীচ কাজ। নিজের বাবাকে হ’ত্যা করতে যাচ্ছি টাকা দিয়ে লোক ঠিক করে। এতো নি’কৃ’ষ্ট একজন আপনাদের জীবনে বড্ড বে”মানা’ন। ও বাড়িতে থাকলে যে কারো চোখের দিকে চাইতেও বড্ড অপরাধী মনে হবে নিজেকে। তবে যাওয়ার আগে সব জানিয়ে গেলাম, যাতে নিজের মনটা খানিক হলেও হালকা হয়। আপনাদের বাড়ির প্রতিটা সদস্যের মন অনেক পবিত্র। আমি সেই পবিত্রতা ন’ষ্ট করতে চাই না। তাই চলে যাচ্ছি। টিকিট কেটেছি রেখেছি সিলেটের, বারোটায় বাস। ভালো থাকবেন।
.
শুদ্ধ চিঠিটার শেষ অংশ পড়ে মনে মনে পণ করলো সে একটুও হাসবে না। চেষ্টা করলো নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার। কিন্তু পারলো না। হেসেই দিলো শেষমেশ। বউটা তার চা’লা’কি করে আবার বাসের কথাও উল্লেখ করে গেছে। কিছুক্ষণ পর শুদ্ধ গাড়ি থামায় আড়ালদের বাড়ি থেকে খানিক দুরত্ব রেখে। গাড়ি থেকে নেমে মিনিট খানেক পায়ে হেঁটে এগিয়ে গেলো বাড়ির দিকে। ঘরের ভেতরে লাইট জ্বলছে। তারমানে আড়াল ভেতরেই আছে। বাইরে আবার সিএনজি ও দাড়ানে আছে। সিএনজিওয়ালা কে দেখে চেনা চেনা মনে হলো শুদ্ধের কাছে। তারপর মনে পড়লো লোকটার বাড়ি দুই বাড়ি পরেই। নাম রহমতুল্লাহ, বয়স আনুমানিক ত্রিশ পঁয়ত্রিশ এর মধ্যেই হবে। আড়ালকে বোনের নজরেি দেখে। এখানে থাকাকালীন সব খবরাখবর নেওয়া হয়েছিল ছেলেটার ব্যাপারে। আড়াল হয়তো ডেকে নিয়ে এসেছে পালানোর জন্য। শুদ্ধ মনে মনে বলে,
‘ছেঃ! সবগুলো কাজই কাচা কাজ। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখে দিয়েছো সবকটা কাজের ক্লু। এভাবে পালালে তো এক ঘন্টাও লাগে না খুজে বের করতে। সিআইডি অফিসারের বউ হয়ে এমন এঁ’ড়ে বলদামি করলে শেষমেষ। মান সম্মান দেখছি বিনা ডিটারজেন্টে ধুয়ে আবার শুকিয়েও ফেললে গো বউ।’
শুদ্ধ সিএনজিওয়ালার পাশে গিয়ে দাড়ায়। স’ন্দেহ’জ’নক ভাবে জিজ্ঞেস করে,
‘এখানে কি হচ্ছে?’
‘কই কিছু হচ্ছে না তো। আপনি কে মহাশয়? এতো রাতে এখানে কি মতলবে আগাছার মতো গোছা গাড়া হচ্ছে শুনি?’
‘আমার বউকে ভু’তে পেয়েছে তাই ওঝা হয়ে এসছি ভু’ত ছাড়াতে। এইযে আমার ওঝাগিরির আাইডি কার্ড। আপনাকেও ঝা’ড় ফু’ক কিছু দিতে হবে নাকি এমনি এমনি কে’টে পড়বেন?’
শুদ্ধর দেখানো এক হাতে আইডি কার্ড আর আরেক হাতে রিভলবার দেখে রহমতুল্লাহ শ’ঙ্কি’ত নজরে এক পলক দেখেই সিএনজি নিয়ে কেটে পড়ে। এদিক ওদিক আর ফিরে চায়না। শুদ্ধ এবার সরাসরি প্রবেশ করে ঘরের ভেতর। ঘরের দরজা চাপানো ছিলো। আশেপাশে খুঁজতে খুঁজতে আড়ালের মায়ের রুমে গিয়ে উপস্থিত হয় শুদ্ধ। চোখে পড়ে আড়াল তার মায়ের কিছু জিনিসপত্র ব্যাগে ভরছে। হাতে টুংটাং আওয়াজ করছে তার দেওয়া সেই সাদা পাথরের চিকন চুড়ি আর আড়ালের মায়ের মোটা বালা জোড়া। বালা আর চিকন চুড়ির ঘর্ষনে যে টুংটাং আওয়াজ হচ্ছে তাতে যেনো বেশ বউ বউ গ’ন্ধ পেলো শুদ্ধ। কি শ্রুতিমধুর আওয়াজ।
শুদ্ধ ভেতরে ঢুকে আড়ালকে সরাসরি কোলে উঠিয়ে নেয়। আড়াল চমকে ওঠে আচমকা আ’ক্রম’ণে। কিন্তু শুদ্ধের আ’গু’নের গোলার ন্যায় উ’ত্ত’প্ত চেহারা দেখে কিছু বলার দুঃ’সাহ’স করলো না। আড়ালকে কোলে নিয়ে দরজার বাইরে এসে আড়ালকে দিয়ে দরজা লক করায়। তারপর হেঁটে যেতে যেতে বলে,
‘এর আগে দুইবার আমার কোলে উঠেছো তবে তা জ্ঞা’ন হারানোর পর। কিন্তু আজ মনে হচ্ছে কোলে ওঠার পর জ্ঞা’ন হারাবে। যেভাবে চোখ বড় করে চেয়ে দেখছো আমায়! তবে যাই বলো চাল টা কিন্তু খারাপ চালো নি আড়ালবতী। বারোটায় বাস এর টিকিট কেটেছো তাই না? সেটা আবার চিঠিতে উল্লেখ ও করে এসেছো যাতে ওইদিকে আমরা খোজাখুজি করতে করতে এদিক দিয়ে তুমি বেরিয়ে যেতে পারো। বাহ! বেশ ভালো। তবে পালাবেই যখন ওই ছা’গল’টাকে সাথে নিয়ে কেনো পালাচ্ছিলে? আমাকে বুঝি চোখে পড়ে না তোমার? বলো কোথায় যেতে চাও? আজ দুজন মিলে একসাথে পালাবো। হা’নি’মুন’টাও এই ফাঁ’কে সেরে নেওয়া যাবে।’
আড়াল সবগুলো কথাই চুপচাপ শুনে যায় কোন প্রতিউত্তর করে না। তবে শেষের কথাটা ক’র্ণ’পা’ত হতেই অ’ক্ষি’যুগল বন্ধ হয়ে যায়। চেয়ে থাকার সামর্থ হারিয়ে বসে যেনো। শুদ্ধ গাড়ি পর্যন্ত চলে এলে আড়ালকে ভেতরে বসিয়ে দিয়ে নিজেও বসে পড়ে। আড়ালের সিট বেল্ট লাগাতে গিয়ে ল’ক্ষ্য করে আড়ালের দু-চোখ বেয়ে ঢল নামছে নোনা পানিদের। তৎ’ক্ষ’নাৎ গাড়ি স্টার্ট দেয় না শুদ্ধ। পকেট হাতড়ে ফোন বের করে বাবাকে টেক্সট করে দেয় আড়ালকে সে পেয়ে গেছে। তারপর ফোনটা পকেটে রেখে ধীরে সুস্থে আড়ালের দিকে ফিরে বলে ওঠে,
‘তোমার বাবা আর এই দুনিয়ায় নেই, খবরটা দিয়েছে তোমার নার্স?’
আড়াল সচকিত হয় শুদ্ধের কথায়। বি’স্ময়’কর দৃষ্টি ফেলে তাকায় পাশে বসা আপন পুরুষটার চোখে। সবে তো রাত একটা বেজেছে কিনা স’ন্দে’হ। কথা ছিলো রাত দুটো কি তিনটের দিকে ইন’জে’ক’শন পুশ করা হবে। তাহলে এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে? শুদ্ধ আবারও বলে ওঠে,
‘তোমার মায়ের মতো ওপরওয়ালাও বোধহয় চাননি তোমার দ্বারা এমন কিছু হোক। তাই তিনি নিজ দায়িত্বেই লোকটার নিঃশ্বাস কে’ড়ে নিয়েছে। ডাক্তার বলেছে ব্রেইন স্ট্রোক করেছিলো, তোমার নার্সের নিজ হাতে কিছুই করতে হয়নি। ওপরওয়ালা নিজেই তার জন্য ওপরের টিকিট কে’টে দিয়েছে। আর বাকিগুলোর শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য তোমার বর আছে তো। সে সামলে নেবে বাকিটা।’
শুদ্ধ কথা শে’ষ করে গাড়ী স্টার্ট দেয়। আড়াল নি’রু’ত্ত’র হয়ে সব কথা শুনে আবার নিরাবেগ হয়ে বসে রয়। গাড়ি চলতে থাকে নিরবতার পথের পথিক হয়ে। আধ ঘন্টা পর আড়াল এর খেয়াল হয় তাদের গাড়িটা বাড়ির রাস্তায় যাচ্ছে না। বিচলিত হয়ে পাশ ফিরে তাকিয়ে বলে ওঠে,
‘এটা তো বাড়ির রাস্তা নয়। কোথায় যাচ্ছেন আপনি?’
‘বউ নিয়ে পালাচ্ছি। বউ নাকি আমায় ভালোবাসে না। তাই বউ এর মুখ থেকে ভালোবাসি না শোনা অবদি বউ নিয়ে ফিরবো না। দা মিশন ইজ অন।’
সমাপ্ত