#অভিশপ্ত_জীবন
পার্ট ৪
লেখিকা #Fabiha_Busra_Borno
মারতে মারতে আমাকে টেনে বের করে বাড়ি থেকে তারপর চুলের মুঠি এক হাতে ধরে অন্য হাতে নারকেলের কাচা ডাল দিয়ে হাটুতে জোরে করে মারে। আমিও চিল্লায় চিল্লায় বলতে লাগলাম দেবর ভাবির প্রেমলিলার কথা। এতে মুহিতের রাগ মনে হয় দশগুণ বেড়ে গেছে। যে দু চারজন এগোতে আসছিলেন তাদেরকে উপেক্ষা করে আমাকে লাত্থি ও কিল-ঘুষি মারে তারপর আমাকে ধাক্কা দেয় আর আমি পাশের পুকুরে পড়ে যায়। খুব উঁচু পুকুর পাড় ছিলো, পড়ার সময় একটা কিছুর সাথে বেঁধে পা কিভাবে যেন ঘুরে আমার শরীরের নিচে পরে আর হাটুতে মট করে শব্দ হয়। মনে মনে পা ভেঙে গেছে। চারিদিকের অনেক মানুষে ভীড় জমেছে। শাশুড়ী ছেলের পক্ষ নিয়ে আমার নানা রকম দোষ ত্রুটির জানান দিচ্ছে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে। কিন্তু প্রায় সবাই মুহিত ভাবি এবং ওর মা-কে ধিক্কার দিয়ে আমাকে নিয়ে উপজেলা মেডিক্যালে নিয়ে যায়। আমার পা মচকে গেছে, ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে। আগামী দুই মাস রেস্টে থাকতে হবে। মা বাবা আত্মীয় স্বজন সহ মুহিতের গ্রামের অনেকে বলেন আমি যেন নারী নির্যাতন মামলা করি। কিন্তু আমার প্ল্যান সম্পুর্ন আলাদা,, যা শুধু মনে মনে করে আছি।
মুহিত মামলার ভয়ে এবং লোক দেখানোর জন্য আমার খুব তদারকি করা শুরু করে। আব্বা নিয়ে যেতে চেয়েছিল আমাকে কিন্তু আমি যায় নি। বলেছি,, মেয়েদের বিয়ে একবারই হয়। এখান থেকে যাওয়ার পরে তো আবারও আমাকে বিয়ে দেওয়া হবে,, ওই স্বামী এর থেকে বেশি খারাপ হবে না তার গ্যারান্টি কে দিবে। মুহিত আমার এমন কথা শুনে মহা খুশি। আব্বা রাগ করে চলে গেছে। আমার সাথে আব্বা বা চাচারা, দেখা বা মোবাইলে কথাও বলে না। সম্পুর্ন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আমার সাথে। আমি শুধু সুযোগের সন্ধানে আছি। কেটে গেছে ৪ মাস।পা ভালো হয়ে গেছে। কেউ আমার সাথে কথা বলে না, দুটো ঈদ গেলো তাও বাপের বাড়ি যায় নি এইসব কথা বলে মাঝে মাঝে রাতে মুহিতের সামনে কান্না করতাম। মেঝো ভাসুর ভাবিকে নাকি তালাক দিবেন। কিন্তু সোনিয়া শিমলার জন্য এতো বড় কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। আমি জানি মুহিত এখনো মেজো ভাবির সাথে যোগাযোগ করে।
আমার খালার নাম্বারে কল দিলাম আজ,, ভাবছিলাম রিসিভ করবে না । কিন্তু খালা কল রিসিভ করলে কিছুক্ষণ কথা বলি। এভাবে মাঝে মাঝে রাতে মুহিতের সাথেও খালা কথা বলতো,, দীর্ঘদিন কোথাও যায় নি তাই মুহিতের সাথে বায়না করি খালার বাড়িতে যাওয়ার জন্য। মুহিত প্রথমে রাজি হয়নি কিন্তু আমার আকুল আকুতি মিনতিতে সে বাধ্য হয় যেতে। কিন্তু তার কথা, সে থাকবে না শুধু আমাকে রেখেই চলে আসবে। আমি ও আর কথা না বাড়িয়ে রাজি হয়ে গেলাম। আগামী কাল যাবো খালা বাড়ি। খালাকে কল দিয়ে সব কিছু বললাম এবং প্ল্যান অনুযায়ী ব্যাবস্থা করে রাখতে বললাম।
সকাল সকাল গোসল সেরে রেডি হচ্ছি। এই দিনের জন্য দীর্ঘ ছয় মাস অপেক্ষা করছি। সবুরে মেওয়া ফলে কথাটা সম্পুর্ন সত্য।যায়হোক এইমাত্র আমি আর মুহিত খালার বাড়ির পাশের রাস্তায়। মুহিত বাড়ির ভিতর যাবে না। কোন রকম ফুসলিয়ে ফাসলিয়ে বাড়ির ভিতর নিয়ে গেলাম। চুপিচুপি বাইকের চাবি সড়িয়ে রাখলাম এবং খালা আব্বাকে আসতে বললেন। ১০ মিনিটের মধ্যে পরিবেশ পালটে গেলো। মুহিত বুঝতে পারছে কি হতে চলেছে। বুঝুক সে, ধোঁকা খেলে কেমন লাগে। আব্বা সহ অনেকে মুহিতের হাত পা ভেঙে দিতে চাইছিল কিন্তু তা দৃষ্টিকটু তাই আপাতত মোটরসাইকেল টা রেখে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়।
আব্বা মোট টাকা দিয়েছিল ৬০,০০০ হাজার। কিন্তু গাড়ির দাম (২০০৮সালে) ৮০,০০০ হাজার। অনেক কষ্টের টাকা ছিলো আমার আব্বার। সেগুলো তো ওই দুশ্চরিত্র মানুষকে খেতে দিবো না।
আবারও স্কুলে ভর্তি হলাম। দুই বছর পরে ক্লাস নাইনে ভর্তি হলাম। মাঝে মাঝে লোক মুখে শুনি আমাকে তালাক দিয়েছে কয়দিন পরে তালাকের কাগজ আমার হাতে আসবে। কিন্তু এই কয়দিন আর এখনো আসেনি। রোকসানা আর নাহারের সাথে প্রতিদিন স্কুলে যায় প্রাইভেট পড়ি।মাঝে মাঝে প্রেমের প্রস্তাবও আসে।গ্রামের একটা ছেলে, নাম ইউসুফ। সব কিছু জানা সত্বেও পাগলের মতো আমার পিছনে ঘুরে। কোথাও ঘুরতে গিয়ে কিছু খেতে দিলে সেই খাবার ও আমার জন্য পকেটে করে নিয়ে আসে। আর প্রতিদিন চিঠি দেয় নাহারের মাধ্যমে। দুরন্ত মন আমার, অতীত ভুলে কেমন যেন আলাদা অনুভূতির প্রাদুর্ভাব হলো। এখন আর মুহিতের কথা মনে হয় না। সব সময় ইউসুফের করা বিভিন্ন পাগলামির কথা মনে করে মুচকি হাসি। ভালো লাগে ইউসুফ কে নিয়ে চিন্তা করতে।
ইউসুফের সাথে স্কুলে যাওয়া আসার সময় এবং পাড়ায় ঘুরতে ফিরতে দেখা হতো, দুই একটা কথাও হতো। মাঝে মাঝে নাহার কে পাহাড়ায় রেখে আধা ঘণ্টা এক ঘণ্টা ও কথা বলতাম। জানি ইউসুফের পরিবার আমাকে মেনে নিবে না তবুও মন বোঝে না। সম্পর্ক টা ভালোই গভীর হয়েছে। আজ ইউসুফ একটা চিঠি দিয়েছে তাতে লেখা আছে,, আজ রাতে তার সাথে দেখা করতে হবে। বিষয় টা আমি সহজ ভাবে নিতে পারলাম না। রাতে একা একা দেখা করা টা তো সহজ কথা না। তাহলে কি ইউসুফ আমার সুযোগ নেওয়ার ধান্দায় আছে। আমি মনে হয় আবারও ভুল মানুষকে বিশ্বাস করেছি। রাতে ইউসুফ আমার জানালায় কড়া নেড়ে আমাকে ডাকে। পপি আর আমি এক সাথে থাকি। পপি জেগে যায় আর ভয়ে চিল্লায় উঠে। আব্বা ওই ঘর থেকে ছুটে আসে, ইউসুফের পালানোর সময় দৌড়ানোর শব্দ শুনতে পায় আব্বা মা। নতুন কোন বদনামের ভয় জপে ধরে তাদের। আমাকেও সন্দেহ করে। মা নানান ভাবে জিজ্ঞেস করে কে আসছিলো কেন আসছিলো আমি কিছু জানি নাকি এইসব বিষয়ে।
আমি সম্পুর্ন অস্বীকার করি।
দুইদিন পরে মা ইউসুফের দেওয়া সব চিঠি হাতে পায়। মনে হয় আমার অবর্তমানে ঘর চিরুনি তল্লাশি চালিয়েছে। এখন আমার কোন কথা তারা বিশ্বাস করে না। খুব খারাপ ভাবা শুরু করে আমাকে। মা উঠতে বসতে বকাবকি করে এখন। নাহার পাড়ার অন্য একটা ছেলের সাথে সম্পর্ক করে। ছেলেটার নাম এনামুল। ইউসুফ নাকি এনামুলের সাথে গল্প করেছে,, যখন কোন মেয়ে বিয়ে হয় না তখন তার চাহিদা ভিন্ন রকম থাকে। পুরুষের স্পর্শ ছাড়া থাকা কোন ব্যাপার না। কিন্তু একবার পুরুষের স্পর্শ পেলে তার পক্ষে দূরে থাকা অসম্ভব। ডিভোর্সি মেয়েদের পটানো কোন ব্যাপারই না।
শুধু মজাই মজা,,,৷৷
এনামুল এইসব কথা নাহার কে বলে তাই নাহার আমাকে সতর্ক করে দেয়। আজ এই ইউসুফের লালসার দৃষ্টি পড়ার জন্য আমার ফ্যামিলি আর আমাকে বিশ্বাস করে না। অভিশপ্ত জীবনের কুল কিনারা সব শেষ।
বেশ কিছু দিন পরে শাশুড়ী আমার বড় ভাসুর মেঝো ভাসুর এবং দুই মামা শশুর সহ কয়েকজন মানুষ আসে আমাকে ফিরিয়ে নিতে। মুহিত নাকি উনাদের পাঠিয়েছেন। যেহেতু আমি ইউসুফের দেওয়া কলঙ্কে কলঙ্কিত তাই মা আব্বা আর তেমন বাধা দিয়ে আমাকে রাখলেন না। মেঝো ভাবি কে তালাক দিয়েছেন আমার ভাসুর। ভাবি নাকি বর্তমানে ঢাকা গার্মেন্টসে কাজ করে। এ বাড়িতে আসার পরে সবাই বলা শুরু করে একটা বাচ্চা নিলে এইসব ঝামেলা দূর হয়ে যাবে। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সব ভুলে যাবে।
তিন/চার মাস যেতে না যেতেই আবারও কন্সিভ করলাম। ভাবলাম এবার অন্তত সুখের দেখা পাবো। কিন্তু মাঝে মাঝে দেখি ইউসুফ মিস কল দেয় মুহিতের নাম্বারে। মুহিত কল দিলে কথা বলে না, শুধু রিসিভ করে রেখে দেয় নয়তো গানের সামনে রেখে দেয়। মুহিত বলতো কার নাম্বার এটা, কেন এইভাবে জ্বালায়। আমি ভয়ে স্বীকার করি না কিছু। মাসুদের নাকি কি যেন চাকরির পরিক্ষা হবে রাজশাহীতে। থাকতে হবে দুইদিন কিন্তু টাকা নাই এদিকে আমার কাপড়, বাজার কিছুই নাই। তাই একটা এনজিও তে আমাকে ঢুকিয়ে দিয়ে ২০,০০০ হাজার টাকা তোলে। কিছু মাছ তরকারি কিনে দিয়ে মুহিত রাজশাহীর উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ে। নামাযে বসে মুহিতের চাকরির জন্য এবং আমার সন্তানের জন্য দোয়া করলাম।
পরের দিন বিকালে পাড়ার একজন এসে বলে মুহিত কে নাকি ঢাকায় আটকিয়ে রাখা হয়েছে। উনার বোনও নাকি ভাবির পাশাপাশি বাসায় থেকে গার্মেন্টসে কাজ করে। মুহিতের সাথে বিয়ে হবে তাই গ্রামে কল দিয়েছে। এইসব শুনে বড় ভাসুর এবং চেয়ারম্যান কে সাথে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। আমাকে যেতে নিষেধ করছিলেন সবাই কিন্তু আমি শুনিনি। যেতে যেতে ওদের বিয়ে হয়ে গেছে। আমরা যাওয়ার পরে যে বাসায় ভাড়া থাকে সেই বাসাওয়ালা সহ যারা বিয়ে দিয়ে দিয়েছে তাদের সাথে কথা বলি। কিন্তু যেহেতু বিয়ে হয়ে গেছে তাই কোন কিছুই কাজে আসে না।
আমি ওদের ঘরে গিয়ে দেখি ভাবি বিছানা ঠিক করছে আর মুহিত আলনা থেকে শার্ট নিয়ে গায়ে দিচ্ছে। হয়তো ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত কিছুক্ষণ আগে শেষ করেছে। আমি তিরষ্কারের হাসি দিয়ে বললাম,, কি সুখ পাও এই দুই বাচ্চার মায়ের কাছে, যা আমি দিতে পারি না। কিভাবে পারলে গর্ভবতী বউকে রেখে মিথ্যা কথা বলে এখানে আসতে? সন্তানের জন্য কিছুদিন তোমার কাছে আসতে পারিনি তাই নিজের পুরুষত্বের আগুন নিভাতে এতো বাহানা। যে মেয়ে দুটি বাচ্চা স্বামী ছেড়ে তোমার সাথে এইসব করতে পারে, খোঁজ নিলে দেখতে পাবে তার আরো কতজন তোমার মতো ছেলেকে লাইন দিয়ে রেখেছে।
তারপর রাতের গাড়িতে বাড়ি আসলাম, ভাসুর এবং বড় জা খুব বোঝালেন, গ্রামের মানুষের মুখে একটা কথা খুব প্রচলিত আর তা হলো, ধান পানিতে ডোবালে তলিয়ে নিজের যায়গা তে-ই থাকে আর চিটা-ধান ভেসে চলে যায়। ধৈর্য্য ধরে থাকো মুহিতের ভুল ভেঙে গেলে ঠিকই ফিরে আসবে। ইচ্ছে করছে মুহিত কে তালাক দিয়ে আমিও গার্মেন্টসে চলে যায়। কিন্তু বাচ্চা পেটে তা সম্ভব না। বাচ্চার প্রতি আমার আলাদা মায়ার জন্ম হয়েছে এখনই।
কেটে গেলো দুইদিন,, রাত থেকে প্রচুর ব্যাথা করছে পেট,, এই অবস্থায় এতো দীর্ঘ পথ পারি দিয়ে আসা যাওয়া মোটেও ঠিক হয় নি। আবারও শুরু হলো রক্তপাত। আব্বা খালু বড় ভাসুর উনারা আমাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলে। নানান রকম চিকিৎসা দেওয়া হলো। শাশুড়ী পাট পড়া, পড়া পানি এবং নানা রকম তাবিজ এনে দিলেন। ব্লিডিং বন্ধ হয়েছে। কিন্তু ব্যাথা কোন ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। প্রায় ১৫ দিন চললো এমন অসহ্য যন্ত্রণা। পেটের নাড়ীভুঁড়ি মনে হয় কেউ চিপে চিপে খামছে ধরছে। গগন ফাটানো চিৎকার করি, মনে হয় চিৎকার করলেই এই বুঝি শান্তি মিলবে। গ্রামের অনেকে এসে বলেন ডাক্তার দেখাতে নয়তো মারা যাবে। বড় ভাসুর আর গুরুত্ব দেয় না, বিধবা শাশুড়ী কিস্তি পরিশোধ করতে হিমসিম খাচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে ৫০০ টাকা কিস্তি।
আমার দুটো খাসি(ছাগল) ছিলো। সেগুলো বিক্রি করে আব্বা আমাকে নিয়ে রাজশাহী মেডিক্যালে গেলেন। বাচ্চা নাকি অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু বের হতে পারছে না। এখন DNC করতে হবে নয়তো আমাকে বাঁচানো যাবে না। আবারও মুহিতের জন্য মা হতে পারলাম না। এই বাচ্চাকে অবলম্বন করে বাঁচার আশা করেছিলাম, কিন্তু তাও আল্লাহ কেড়ে নিলেন। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্য করেন কিন্তু এটা আমার কোন ভালো তার হিসাব এখনো মিলাতে পারিনি। DNC হয়েছে ৪ দিন হলো আজ আমাকে রিলিজ দেওয়া হবে। আব্বা মা-য়ের আর রাগ নাই আমার উপর। সারাক্ষণ কান্নাকাটি করে আর অতীত মনে করতে করতে দিন কাটতে লাগলো। ইউসুফ আবারও ঝামেলা করা শুরু করেছে। এবার আর কোন ভুল করলাম না। মা কে সব বলে দিলাম। মা ইউসুফের পরিবার কে বললেন তাদের ছেলে কে শাসন করতে। এতে ইউসুফের কোন পরিবর্তন হলো না। যদি তার কথা না শুনি তাহলে আমার দেওয়া আগের চিঠি গুলো সবাই কে দেখাবে বলে হুমকি দিতে লাগে। নিজেকে ধিক্কার দিতে লাগলাম কি জীবন আমার সবাই চোখের ক্ষুধা মেটায় আমাকে দেখে। আমি সবার চাহনি বুঝতে পারি। পাড়ার কিছু কিছু বড় ভাই যাদের বাচ্চারা প্রায় আমার সমবয়সী সেইসব ভাইয়েরাও ফাজলামোর সুরে বলেন, কিরে বন্দুকের বুলেটের মতো সাইজ তোর এমন বেলবাটম(গোলগাল) বউ রেখে কিভাবে অন্য মেয়ের কাছে যায় তোর বর। এইসব কথা দিয়ে কি বুঝাতে চাইতো তা বুঝেও না বুঝার ভান করে সেখান থেকে চলে আসতাম।
ইউসুফ মাঝে মাঝে আমাদের ঘরের চালে ঢিল দেয়, জানালায় টোকা দেয়। গ্রামের আরো দুষ্টু ছেলেও হয়তো ওর সাথে জরিত। এইসব পরিস্থিতিতে আমাকে খালার বাড়িতে পাঠানো হয়। খালার বাড়ি এসে ভালোই আছি। ৩/৪ মাস পরে মুহিত ভাবিকে রেখে চলে আসছে নাকি। বড় ভাবি মাঝে মাঝে আমার সাথে ফোনে কথা বলতেন। উনার মারফতে জানলাম, ঢাকায় আরো বেশ কয়েকজন ছেলের সাথে ভাবি খারাপ সম্পর্ক ছিলো। মুহিতের সামনে ও নাকি অনেক কিছু ধরা পরেছে। তাই মুহিত এখন ওকে তালাক দিবে। কিন্তু দেন মোহর বেঁধেছে দেড় লাখ টাকা। চাইলেও তালাক দেওয়া সম্ভব না। মুহিত মাঝে মাঝে বড় ভাবির মাধ্যমে আমার সাথে কথা বলে। মেয়েদের মন আসলে বেহায়া,,এমন দুশ্চরিত্র বেঈমানের কাছে যাবো না বলে দৃঢ় সংকল্প করার পরে ও আবার তা ভঙ্গ করি। মন থেকে কাউকে যদি ভালো বাসি আর এই শরীরে যদি কোনো পুরুষের ছোঁয়া পেয়ে থাকি সেটা একমাত্র মুহিত তাই সময়ের সাথে সাথে রাগ কমে যায়।
আমার পরিবারের কেউ আমাকে আর মুহিতের কাছে যেতে দিবে না। কোন ভাবেই না। কিন্তু আমার মন মুহিত কে ছাড়া কিছু বোঝেনা। খালার মোবাইল টা এখন আমার কাছে থাকে সব সময়। মুহিত একে ওকে দিয়ে আমাকে বোঝাতে লাগলো। রাজ্জাক নামের একটা বড় ভাই আছেন যিনি গণ্যমান্য একজন নেতা। উনিও আমাকে বোঝালেন। তিনি বলেন,, তুমি কাকে চাও, বাপ মা কে নাকি স্বামী কে? আমি বলি দুজনকেই চাই। ভাইয়া তখন সুন্দর করে বোঝালেন,, কিছু কিছু মুহুর্ত আসে যেখানে দুজনের আগমন ক্ষতিকর,, বাবা সারাজীবন তোমাকে কাছে রাখতে পারবে না কিন্তু স্বামী সাথে তুমি সারাজীবন থাকবে। দেখা যাবে কিছু দিন পরে তোমাদের সুখ দেখে তাদের রাগ ভেঙে গেলে আবারও ঠিক হয়ে যাবে সব।
এইসব কথা সহ আরো অনেক কিছু বোঝালেন, কেন যেন কথা গুলো খুব ভালো লাগছে আমার। মুহিত আমাকে বলে,, যেহেতু কেউ আমাদের মেনে নিবে না তাই আমরা পালিয়ে যাবো। আর সবার আগে ভাবিকে তালাক দিয়ে আমরা অনেক দূরে কোথাও চলে যাবো।
অনেক ভেবে আমিও সিদ্ধান্ত নিলাম যে,,,,,,,,
চলবে,,,,,,
[প্রিয় পাঠক পাঠিকা বন্ধুরা,, আপনারা আমার পেইজে ফ্রেন্ডদের ইনভাইট করুন, আপনাদের ছোট ছোট ইনভাইটে আমার পেইজ টা বড় হবে এবং অনেকে রেসপন্স পেলে গল্পটা শেষ করার অনুপ্রেরণা বাড়বে]