#অপূর্ণ_ভালোবাসা
#লেখকঃরবিউল_হাসান
#পর্বঃ০৪

আপনি বা আপনার দূর্ঘটনার সময় ওখানে কেন ছিলেন?অন্য কোথায়ও তো থাকতে পারতেন?নাকি আগে থেকে জানতেন এই গাড়ি এক্সিডেন্ট হবে……..(এমন তো হাজারো প্রশ্ন করবেই)

মাহমুদঃকিরে এখান থেকে দেখবি নাকি ওখানে যাবি?
আমিঃহ্যাঁ, চল চল।

গিয়ে দেখছি তিনজন মানুষ গাড়ির নিছে।দুইটা মেয়ে একটা মাঝ বয়স্ক লোক। ভীড়ের কারণে ভালো করে দেখা যাচ্ছে না।
ভীড় ঠেলে সামনি গিয়ে যা দেখলাম তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
একটা হচ্ছে মিম আরেকটা তানিয়া আর মাঝবয়সী লোকটাকে চিনি না। হয়তো মিম,তানিয়ার আত্নীয় হবে।

রাহীঃকিরে চল এদের হসপিটালে নিয়ে যায়।
(ভীড়ের মাঝখান থেকে একজন লোক বলে উঠল আরে ভাই আপনারা পুলিশ ঝামেলায় পড়তে চান নাকি)
রাশেদঃকাউকে হেল্প করে যদি ঝামেলায় পড়তে হয় তা থেকে মুক্তি পেতেও বেশি সময় লাগে না(লোকটাকে বলল)
আমিঃরাহী চল এদের তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে যায় এদের অবস্থা খুব খারাপ(মিম সেই প্রথম থেকে বেহুঁশ)

একটা গাড়িতে করে তাদের হসপিটালে নিয়ে গেলাম, রাহী আর মাহমুদ বাইক নিয়ে আসতেছে আমি এই তিন জনের সাথে গাড়িতে।
হসপিটালে নিয়ে গিয়ে বাইরে অপেক্ষা করতেছি।

রাহীঃচল এবার চলে যায় আমাদের দায়িত্ব শেষ।
আমিঃপাগল হলি নাকি? এভাবে কাউকে রেখে কিভাবে যাব?
মাহমুদঃকিন্তুনএখানে থাকলে পুলিশ ঝামেলা করবে।
আমিঃসেটা পরে দেখা যাবে। আগে এদের কি অবস্থা হয় দেখি।
রাহীঃএখন কি এদের বাড়ির লোকদের জানানো উচিত নয়?(আমাকে বলল)
আমিঃহ্যাঁ জানানো দরকার কিন্তু নাম্বার কোথায় পাব?
মাহমুদঃএকটা কাজ কর তানিয়ার তো জ্ঞান আছে তার কাছ থেকে নেয়।
(তানিয়ার কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে তাদের বাসায় জানিয়ে দিলাম,বাসার লোকজন নাকি আসতেছে)
কিছুক্ষণ পর ডাক্তার বের হয়ে বলল রোগীর কে আছেন?
আমিঃআমি আছি, ওনাদের কি অবস্থা এখন?
রাহীঃএ হচ্ছে মিমের স্বামী, মানে যে জ্ঞান হারিয়ে পেলছে।(আমাকে দেখিয়ে)

আমিতো রাহীর বাচ্চার কথা শুনে আকাশ থেকে পড়লাম এ হালা কয় কি?

মাহমুদ ও রাহীর সাথে তাল মিলিয়ে আমাকে মিমের স্বামী বানায় দিল

(এদের কথা শুনে আমি অবাকের উপর অবাক হচ্ছি)
ডাক্তারঃআপনি কি ভাবছেন?(আমাকে ভাবতে দেখে বলল)
আমিঃআমি উবার স্বামী হতে যাব কে…..(বাকিটা বলতে পারি নি)
রাহীঃআসলে বিয়ে এখনো হয় নি, সব ঠিক করা সামনে মাসে ওদের বিয়ে।
আমিঃঐ তোরা কি করতে চাচ্ছিস?
রাহীঃএখন যদি স্বামী না বলিস ওরা ট্রিটমেন্ট করবে না(কানে কানে)
আমিঃহ্যাঁ বলেন ওদের কি অবস্থা? (ডাক্তার কে বললাম)
ডাক্তারঃদুই ঠিক আছে, কিন্তু আপনার হবু স্ত্রী বিপদে আছে।শরীর থেকে অনেক রক্ত বের হয়ে গেছে তাই ইমিডিয়েট রক্ত লাগবে।
আমিঃআপনি কি টাকার চিন্তা করতেছেন?টাকার চিন্তা করতে হবে না।যত টাকা লাগে আমি দিব।আপনাদের হসপিটাল থেকে ব্লাড দিয়ে দিন।
ডাক্তারঃআসলে টাকার চিন্তা না,আমাদের হসপিটালে ওনার সাথে মিলে এমন ব্লাড ১ ব্যাগ আছে।কিন্তু ওনার ৩ ব্যাগ দরকার।পাশের ৩টা ব্লাড ব্যাংক ছিল সেখানেও নাই।
তাড়াতাড়ি ব্লাডের ব্যাবস্তা করেন ১ ঘন্টার মধ্যে ব্লাড লাগবে।

আমিঃআচ্ছা আমি দেখছি কি করা যায়। ওনার ব্লাড গ্রুপ কি?
ডাক্তারঃO+(Positive)
রাহীঃতুর ও তো O+(Positive) তাই না।তাহলে তুই দিলেই তো হয়।
ডাক্তারঃআপনি ১ ব্যাগ দিলে হবে না, আরো এক ব্যাগ লাগবে।
আমিঃকিন্তু এখন ব্লাড না পেলে তো উনার কিছু হয়ে যেতে পারে।চলুন আমি দুই ব্যাগ দিব।
ডাক্তারঃআপনি কি পাগল হয়ছেন নাকি?একার পক্ষে দুই ব্যাগ দেওয়া সম্ভব নয়।
রাহীঃকি বলিস এটা এক ব্যাগ না হয় দেওয়া যায় কিন্তু দুই ব্যাগ কিভাবে।না না এটা হবে না।
মাহমুদঃহ্যাঁ দুই ব্যাগ দিতে পারবি না।
আমিঃদেখ দুই ব্যাগ দিলে আমি হয়তো সাপ্তাহ মতো অসুস্থ থাকব, কিন্তু মিমের কিছু হয়ে গেলে নিজের অপরাধী মনে হবে।
ডাক্তারঃনা আমি দুই ব্যাগ নিতে পারব না।
আমিঃদেখেন ব্লাড আমি দিচ্ছি তাতে আপনার সমস্যা কোথায়?
ডাক্তারঃআপনি দুই ব্যাগ দিলে আপনার অবস্থা খারাপ হতে পারে তাই এটা আমি করতে পারি না।
আমিঃআমাকে নিয়ে আপনার চিন্তা করতে হবে না। আর আমি লিখে দিব আমার কিছু হয়ে গেলে আপনারা কেউ দায়ী না।প্লিজ চলেন।

(ডাক্তার তাও না করেই যাচ্ছে অনেক জোরাজোরি পর রাজী হল)
আমার থেকে এক ব্যাগ ব্লাড নেওয়ার পর তেমন খারাপ লাগে নি।দ্বিতীয় ব্যাগ যখন নেওয়া শেষ তখন আমি জ্ঞান হারিয়ে পেলি।(আর কিছু মনে নাই)
যখন জ্ঞান পিরে নিজেকে বিচানায় আবিষ্কার করলাম।দেখছি মা আমার পাশে বসে আছে।
মা আমার জ্ঞান ফেরা দেখে তো কান্না করে দিল।
(একটা বিষয় মাথায় ডুকছে না আমি তো ছিলাম হসপিটালে বাসায় কিভাবে আসলাম?)
মায়ের কান্না থামানোর পরে বললাম…..
আমিঃমা আমিতো হসপিটালে ছিলাম এখানে কিভাবে আসলাম?
মাঃসেটা অনেক বড় কাহিনি, দাড়া তোর জন্য খাবার নিয়ে আসি।অনেক দিন ধরে কিছু খাস নি।
আমিঃঅনেক দিন ধরে কিছু খাই নি মানে বুঝলাম না?
মাঃওসব পরে বলব আগে রাহীকে ফোন দিয়।(মা রাহীকে ফোন দিয়ে আসতে বলল)
খাওয়া শেষে কিছুক্ষণ পরে রাহী,মাহমুদ, রাশেদ সবাই আসল।
সাথে সাদিয়া আর মিম কে দেখে তো আমি অবাক।
মিমের দিকে থাকিয়ে দেখছি আগের ছেয়ে শুখিয়ে গেছে,চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে।
রাহী এসে সোজা আমাকে জড়িয়ে ধরল।সবাই আমার জ্ঞান ফেরা দেখে অনেক খুশি।
সবার সাথে কথা বললাম শুধু মিম আর সাদিয়া ছাড়া।তারা শুধু আমার দিকে থাকিয়ে আছে।
আমি রাহীকে কানে কানে বললাম এরা এখানে কেন?রাহী বলল ফোন দিয়ে আমি এদের আসতে বলছি।
এখনো ভালোভাবে সুস্থ হয় নি তাই রাহী কথা বলতে নিষেধ করতেছে তাও কিছুক্ষণ কথা বলে সাদিয়া আর মিম ছাড়া সবাই চলে গেল।

একটু পর আপু আসল।(ওহ হ্যাঁ আপনাদের তো বলায় হয় নি আমার একটা বড় আপু আছে।
নাম রোবাইয়া নাসরিন আলো।আপু হসপিটালে জব করে। আমার জ্ঞান ফেরার কথা শুনে আপু তাড়াতাড়ি চলে আসছে)

আপু এসে সোজা আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিল।
আমিঃআরে আপু কাঁদছ কেন আমিতো এখন ঠিক আছি।
আপুঃকেমন লাগতেছে ভাই এখন?
আমিঃহুম ভালো, এখন কান্না টা থামাবে তো নাকি?(তারপর আপু কান্না থামাল আপু আমাকে অনেক ভালোবাসে তাই আমার সামান্য পেট ব্যাথাতেও আপুর কষ্ট হয়)
আরো কিছুক্ষণ আপুর সাথে কথা বললাম, সাদিয়া আপুর কানে কানে কি যেন বলল আপু আমার দিকে চেয়ে মুচকি হেসে চলে গেল…….

#To_be_continue…….
#RK9023DXWC
#অনুমতি_ছাড়া_কপি_করা_নিষেধ।
#গল্পটা_কেমন_হল_জানাবেন।
#ভালো_লাগলে_শেয়ার_করবেন।
#সবাই_নিয়মিত_নামাজ_আদায়_করবেন।

ভুল দেখলে ধরিয়ে দিবেন। নয়তো বার বার ভুল হতে পারে।মনে রাখবেন মূর্খের ভুল ধরিয়ে দিলে আপনি হবেন তার শত্রু,আর জ্ঞানীর ভুল ধরিয়ে দিলে আপনি হবেন তার বন্ধু।

#বিদ্রঃগল্পটা কি এখানে শেষ করে দিব নাকি আরো লম্বা করব জানাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here