#অপূর্ণ_ভালোবাসা
#পর্বঃ০৩
#লেখকঃরবিউল_হাসান

রাহীঃবাঁশটা সবার সামনেই দিতে হল তুকে(আমাকে বলল)
আমিঃকেলানোর সময় মনে ছিল না।
(তারপর কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে বাসায় চলে আসলাম)
আর হ্যাঁ, আমার সব ফ্রেন্ডদের জি এফ আছে শুধু আমার ছাড়া।
রাতে কিছুক্ষণ পড়ে, একটু ফেসবুকিং করে ঘুমিয়ে পড়লাম। এভাবে প্রায় দুই মাস চলে গেল।
সকালে একটু আগেই কলেজে গেলাম।হঠাৎ রাশেদ বলে ওঠল,বন্ধু গেইটের দিকে থাকা আকাশ থেকে পরী নেমে আসছে মনে হচ্ছে
আমিঃঐ হালা এই দিনে পরী কোথাথেকে আসবে। আমার কথা শুন…..
রাশেদঃআরে ভাই আগে তো থাকা(সাথে সাথে আমি বাদে সবাই থাকাল)
মাহমুদঃরবি ঐ দিকে থাকা সত্যি পরি আসছে মনে হয়।
আমিঃঐ শালা তুরা থামবি…..(পুরোটা বলতে পারি নি এই মাইয়া এখানে কেন?যাকে বাসে টাকা দিছিলাম)
রাহীঃএবার তো বিশ্বাস হল তোর?
সাকিবঃকিরে কি ভাবিস(হাল্কা ধাক্কা দিয়ে)
রাহীঃমনে হয় ক্রাশ খাইছিস(আমাকে বলল)
আমিঃদাড়া মজা দেখাচ্ছি(মনে মনে)
ক্রাশ খাইছিস মনে দাড়া আজ তোদের সবার ব্রেকআপ করিয়ে ছাড়ব,জি এফ থাকার পরেও অন্য মেয়ের দিকে থাকাস না?
সবাই দেখছি সাথে সাথে আমাকে ঘিরে ধরছে,ভয় পাইছি আমি যদি কেলিয়ে দেয়…..
রাহীঃঐ আমরা ক্রাশ খাইছি বলছি কখন?তুই খাইছিস বলছি যে….
আমিঃনা না তুরা খাইছিস বলছিস।

সবাইঃ দেখ বন্ধু তোর সাথে আর ফাজলামি করব না, তবু আকাম টা করিস না(তাদের ব্রেকআপ করিয়ে না দিতে বলছে)

ঐ দিকে বাসের মেয়েটা আর আমাদের কলেজের একটা মেয়ে ১ম বর্ষের রুমে ডুকে গেল।(বাসের মেয়েটা আমাদের দেখে নি)

ক্লাসের সময় হয়ে গেছে তাই কথা না বাড়িয়ে সবাইকে ব্রেকআপ করিয়ে দিব না বলে ক্লাসে চলে আসলাম।
রাশেদঃআচ্ছা চল।
এভাবে সারাদিন ক্লাস করে বাসায় চলে আসলাম।

একটা কথা মাথায় ঘুরছে খুব, ঐ মেয়েটা এখানে কেন (তবে আজ মেয়েটাকে ঐ দিনের থেকে বেশি সুন্দর লাগছিল)

সকালে আবারো কলেজে গিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলাম।হঠাৎ দেখি মেয়েটা আর কলেজের মেয়েটা গেইট দিয়ে ডুকতেছে।
আমি ওর দিকে থাকিয়ে তো ফিদা হয়ে গেছি হরিয়ে গেলাম ভাবনার জগতে……

মেয়েটা আমার সামনে এসে তুড়ি বাজাতে লাগল।(আমার তো সে দিকে খেয়াল নেই, সাদা কাপড়ে মেয়েটাকে পরির থেকে কম মনে হচ্ছে না)
পাশে মাহমুদ ছিল সে আমাকে হালকা ধাক্কা দিল তখন বাস্তবে ফিরলাম।
মেয়েটাঃএই যে মিস্টার রবি কোথায় হারালেন?(তার মুখে আমার নাম শুনে তো সবাই অবাক)
আমিঃনা মানে, কোথাও না।আপনি এখানে কি করে?
মেয়েটাঃএ হচ্ছে আমার ফুফাতো বোন তানিয়া(কলেজের মেয়েটাকে দেখিয়ে)ওর সাথে আসছি।তা আপনি এখানে কেন?
আমিঃআমি এখানেই পড়ি।ওহ্ হ্যাঁ পরিচয় করিয়ে দিয়।এ হচ্ছে রাশেদ…….(সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিলাম)
মেয়েটাঃআচ্ছা আপনি এমন কেন?
আমিঃআমি আবার কেমন?
মেয়েটাঃঐ দিন আমাকে এত হেল্প করলেন কিন্তু নামটাও জানার প্রয়োজন মনে করেন নি?
আমিঃসরি সরি মনে ছিল না, কি নাম আপনার?
মেয়েটাঃআমি জেসমিন সোমলতা মিম,আপনারা মিম বলে ডাকতে পারেন।আর হ্যা এই নিন আপনার টাকাটা।
আমিঃআরে কি বলছেন লাগবে না টাকা(বলে আমি সেখান থেকে চলে আসলাম তাকে কিছু বলতে না দিয়ে)
মিমঃকিরে মিম তুই রবি ভাইয়াকে কিভাবে চিনস?আগে থেকে চিনিস নাকি?
মিমঃরবি ভাইয়া এমনই। কখনো টাকাটা ফেরত নিবে না, চল ক্লাসে যায়।
মিমঃনা আজ আর ক্লাস করব না, চল ওইদিকে গিয়ে গল্প করি।
তানিয়াঃআচ্ছা চল।

এই দিকে আমরা ক্লাস করছি। অপর দিকে মিম আর তানিয়া গল্প করতেছে।
মিমঃ আচ্ছা তানিয়া রবি ভাইয়ার কি গার্লফ্রেন্ড আছে?
তানিয়াঃনা। কিন্তু তুই জেনে কি করবি?নাকি তুই রবি ভাইয়ার উপর ক্রাশ খাইছিস?
মিমঃআরে তেমন কিছু না।(ক্রাশ খাইনি শুধু সে দিন থেকে তো ভালোই বাসি—-মনে মনে)
তানিয়াঃনা খেলে ভালো, আর খেলেও পাত্তা পাবি না।কাউকে পত্তা দেয় না।
মিমঃতাই নাকি!!! তাহলে তো আমার জন্য ভালোই।
তানিয়াঃআচ্ছা তুই ওকে নিয়ে এত ভাবিস কেন? কাহিনি কী?
মিমঃকোনো কাহিনি নাই।রবি ভাইয়ার নাম্বার আছে তোর কাছে?
তানিয়াঃনাই। তুই চাইলে রাহী ভাইয়ার থেকে নিতে পারিস।

এইদিকে তিনটা ক্লাস করে করে সবাই বেরিয়ে আসলাম।
আমিঃচল ভালো লাগছে না, ঐ দিকে গিয়প বসি।
রাহীঃতোরা যা আমি ৫ মিনিটের মধ্যে আসছি।(সাদিয়া রাহীকে ইশারা করে ডাকল)
আমরা চলে গেলাম আড্ডা দিতে, রাহী চলে গেল তানিয়ার কাছে।
রাহীঃতানিয়া তুমি আমাকে ইশারা করে ডাকছিলে, কিছু কি বলবা?
তানিয়াঃআসলে ভাইয়া আমি না, মিম ডাকতে বলছে….
মিমঃআসলে রবি ভাইয়ার নাম্বার টা লাগত যদি কোনো সমস্যা না থাকে তো….
রাহীঃআরে কি সমস্যা থাকবে, যদি আপনি নাম্বার নেও ওর তাহলে আমরা প্যারা থেকে কিছুটা রক্ষা পাব….
মিমঃপ্যারা থেকে রক্ষা পাবেন মানে বুঝিনায়?
রাহীঃনা এমনি বললাম,নাম্বার নেন 019……………
মিমঃTnx ভাইয়া।
রাহীঃ welcome
(রাহী সেখান থেকে আমাদের আড্ডার জায়গায় চলে আসল)
মাহমুদঃকিরে কোথায় গিয়েছিলি?(রাহীকে বলল)
রাহীঃমিম ডাকছিল, রবির নাম্বার নিছে।
আমিঃমানে কি সে চাইল আর তুই দিয়ে দিলি?
রাহীঃকিরতাম বল, যে ভাবে চাইল না দিয়ে কি উপায় আছে?
রাশেদঃএসব বাদ দেয় আগে বল তুই মিমকে কিভাবে ছিনিস?
আমিঃতাহলে শুন(বাসের সব ঘটনা বললাম)
মাহমুদঃতাহলে তো ভাবি ডাকতেই হয়….
রাহীঃযাক অবশেষে সবার জি এফ হল…
আমিঃকয় কি এরা গাছে কাঠাল গোফে তেল?
রাহীঃআচ্ছা চল এখানে আর ভালো লাগছে না।
আমিঃআচ্ছা চল বাসায় যায় গা।
রাতে ঘুমাতে গেছি ফোনে একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসল।
কল রিসিভ করে সালাম দিয়ে বললাম কে বলছেন?
অপরিচিতাঃসালামের জবাব দিয়ে বলল আমি মিম বলছি।কেমন আছেন?
আমিঃআলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি?
মিমঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো। কি করেন?
আমিঃমাত্র ঘুমাতে আসলাম আর আপনি ফোন দিছেন….
মিমঃএখন কি ঘুমাবেন?
আমিঃকিছুক্ষণ পর ঘুমাব, তা আপনি কি আবারো টাকা দেওয়ার জন্য ফোন দিছেন?
মিমঃযদি দিয় তাহলে কি নিবেন?যতটুকু জানি আপনি তো নিবেন না?
আমিঃওমা এ দেখছি আমার ব্যাপারে খুঁজ খবর রাখে।
মিমঃতেমন কিছু না, তানিয়ার থেকে জানলাম এটা।আচ্ছা এখন রাখছি।সকালে কথা হবে।

ফোন কেটে দিয়ে ফেসবুকিং করে ঘুমিয়ে পড়লাম।

সকাল সকাল কে জানি ফোন দিয়ে ঘুমের বারোটা বাজাল।রিসিভ করে সলাম দিয়ে বললাম কে বলছেন?

অপরপাশ থেকেঃমিম বলছি।
আমিঃএত সকালে ফোন দিছেন যে?
মিমঃকলেজে আসবেন না? আপনার জন্য ওয়েট করেছি।
আমিঃমানে কি?
মিমঃআসলে বুঝতে পারবেন।তাড়াতাড়ি আসেন(আর কিছু বলার আগে ফোন কেটে দিল)
কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে কলেজে গেলাম।
গিয়ে দেখছি তানিয়া আর মিম দাড়িয়ে আছে।
আমি না দেখার ভান করে চলে যাচ্ছিলাম।কিন্তু মিম দেখে পেলছে, ডাক দিল তাই তার কাছে গেলাম।
আমিঃহুম বলেন, ফোন দিয়ে কেন আসতে বললেন?
মিমঃকেমন আছেন?
আমিঃএটাতো ফোনে বলছি তার জন্য আবার এখানে ডাকছেন?
মিমঃনা না এমনি ফোন দিয়ে ডাকছি।তাছাড়া আপনি তো কলেজে আসবেন ই।তাই একটু তাড়াতাড়ি আসতে বললাম।আর আপনি আমাকে আপনি আপনি করেন কেন?আমি তো আপনার ছোট,আমাকে মিম বলে ডাকবেন।
আমিঃআচ্ছা ঠিক আছে,ট্রাই করব।এখন আসি(আর কোনো কথা না বলে চলে আসলাম)

তানিয়াঃদেখছিস রবি ভাইয়া কেমন?কাউকে পাত্তাই দেয় না।
মিমঃসেটা পরে দেখা যাবে চল ক্লাসে যায়।

আমিঃঐ মাহমুদ কোথায় রে (সাকিব কে বললাম)
সাকিবঃসে আর কি বলব, তার গার্লফ্রেন্ড সাথে গেছে।আজ নাকি ক্লাস করবে না।
আমিঃএ জন্য আমি এই প্রেম টেম করি না।ঠিক মত ক্লাসটাও করতে পারে না।

ক্লাস শেষ করে বাসায় চলে আসলাম

অপর দিকে মিম রবি এমন কেন এত ট্রাই করছি একটু সুযোগই দিচ্ছে না

আমি কিছুক্ষণ শুয়ে থাকলাম।কিছুক্ষণ পর মাহমুদ ফোন দিয়ে নিচে যেতে বলল।
(আপনাদের বলে রাখি প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে আমরা ঘুমাই না পুরো শহরটা ঘুরে দেখি)

নিচে গিয়ে দেখি মাহমুদ আর রাহী বাইক নিয়ে দাড়ায় আছে।
তাদের দুই জনেরই বাইক আছে।

রাহীঃবস আমার পিছনে (আমাকে বলল)

আমিঃআজ পর্যন্ত কখনো কি পিছনে বসাতে পেরেছিস?(আমি বাইকের পিছনে বসি না)
রাহীঃঠিক আছে সামনে আয়।

সমানে বসলাম বাইক আমি চালাচ্ছি।

কিছুক্ষণ পর…..

রাহীঃতা মামা তোদের প্রেম কেমন চলতেছে(আমাকে বলল)
আমিঃপ্রেম কেমন চলতেছে মানে বুঝলাম না। তুই জানিস আমি প্রেম টেম করি না।(কারন আই অইলদে বালা পোয়া, চিটাংগের ভাষা)

রাহীঃতাই নাকি তাহলে মিমের সাথে কি চলতেছে শুনি?
(সাথে সাথে কষে ব্রেক মারলাম)
রাহীঃঐ তোর আবার কি হল?এত জোরে কেউ ব্রেক মারে?(আমাকে বলল)
আমিঃতুই কি বললি?মিমের সাথে আমার কি চলতেছে মানে কি?
রাহীঃমিম তো তোর নাম্বার নিছে।তুকে ফোন দেয় তাই বললাম(আমাকে যে মিম ফোন দিছিল সেটা আমি তাদের বলছিলাম)
আমিঃএতে তুই প্রেমের কি দেখলি?

হঠাৎ একটা বড় আওয়াজ শুনতে পেলাম।একটু সামনে গিয়ে দেখি এক্সিডেন্ট হয়ছে।
কেউ হেল্প করতেছে না।কেউ কেউ তো ফেসবুক লাইভে চলে গেছে এক্সিডেন্ট দেখানোর জন্য।মানবাতা আজ কোথায়….?

আরো হচ্ছে বাংলাদেশের আইন মানে তো বলতেই হবে না।কাউকে হেল্প করা মানে ঝামেলায় নিজেকে ঝড়ানো।

কুকুর আর পুলিশ দেখলে দৌড়ানে যেমন যায় না,দৌড়ালেই দৌড়াবে।তেমনে এক্সিডেন্টের জায়গায় কাউকে হেল্প করা মানে পুলিশের সাথে লেগে যাওয়া।তাদের তো প্রথম প্রশ্ন হবে….
আপনি বা আপনার দূর্ঘটনার সময় ওখানে কেন ছিলেন?অন্য কোথায়ও তো থাকতে পারতেন?নাকি আগে থেকে জানতেন এই গাড়ি এক্সিডেন্ট হবে……..(এমন তো হাজারো প্রশ্ন করবেই)

#To_be_continue…….
#RK9023DXWC
#অনুমতি_ছাড়া_কপি_করা_নিষেধ।
#গল্পটা_কেমন_হল_জানাবেন।
#ভালো_লাগলে_শেয়ার_করবেন।
#সবাই_নিয়মিত_নামাজ_আদায়_করবেন।

(ভুল হলে ধরে দিবেন।
সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন।মানুষ মৃত্যু থেকে বাচবার চেষ্টা করে,জাহান্নাম থেকে নয়।কিন্তু মানুষ চাইলে জাহান্নাম থেকে বাঁচতে পারে মৃত্যু থেকে নয়।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here