#অনুরক্তির_অনুভূতি
#আফসানা_মিমি
|অন্তিম পর্ব |
” আমার হবু স্ত্রীর সাথে সময় কাটাচ্ছি বলে আপনার কোন সমস্যা হচ্ছে?”
তিনজন মানব-মানবি অবস্থান করছে এক ঘরেতে। দুজন হতভম্ব আর একজন স্বাভাবিক। বোম ফাটান কথা বলে কোন ভাবান্তর ঘটেনি তার মাঝে। প্রিয়ম শান্ত দৃষ্টিতে রিয়ান এবং আরাতকে দেখছে। বর্তমানে তাদের অবস্থান বিছানার উপর এবং প্রিয়মের অবস্থান চেয়ারে। রিয়ানের হাতের বন্ধনীতে আরাতের হাত আবদ্ধ। প্রিয়মের অন্তরে তোলপাড় সৃষ্টি হচ্ছে আরাতের সাথে রিয়ানকে দেখে। রিয়ানের দৃষ্টি প্রিয়মের উপর নিবদ্ধ। উৎসুক দৃষ্টিতে প্রিয়মের উওরের আশায় তাকিয়ে আছে। আরাত নিশ্চুপ। রিয়ানের ঘরের দেয়ালে টাঙানো মেয়ের কথা ভাবছে।
আদৌও কী প্রিয়া নামক কেউ আছে পৃথিবীতে? যাকে দেখতে আরাতের মতো! প্রিয়মের ঝাঁঝ কথায় টনক নড়ে,
” আমার দায়িত্ব পালনে পিছপা হয়নি কখনও। আরাত আমার দায়িত্ব।”
” আমার আপনজন। অধিকার আছে হাত ধরার।”
” ছবির জন কে?”
বিকৃতি মস্তিষ্ক রোগীর সাথে কথা বলা আর সময় নষ্ট করা একই। প্রিয়ম উঠে দাঁড়ায়। রিয়ানের উওরের আশা করছে না। দেয়ালে বাঁধাই করা মেয়েটার প্রতিচ্ছবিতে গভীর দৃষ্টিপাত করল।
গায়ের রং সাদা। মাথার কেশব ঘন কালো। সাদা ধবধবে দাঁত দেখে বাঁধাই করা মনে হচ্ছে। এ যেন কোন চিত্র শিল্পীর নিখাদ শিল্প। উওর আসে রিয়ানের,
” আমার প্রিয়ার ছবি।”
প্রিয়ম নিজের ছবি দেখছি এক এক করে সব ছবি দেখা শেষ করে রিয়ানের উদ্দেশ্যে বলে,
“তোমার প্রিয় ঠোঁটের ওপর কালো কুচকুচে সুন্দর একটা তিল বিদ্যমান আছে। যা আরাতের ঠোঁটের উপর নেই।”
রিয়ান আরাতের দিকে তাকায়। ঠোঁটের উপর কোন কালো তিল বিদ্যমান নেই। রিয়ান প্রিয়ার এই তিলটা বড্ড পছন্দ করত। কখনো তিলের উপর আঙ্গুল ছুঁয়ে দিত আবার কখনো টুপ করে চুমু একে দিত। কিন্তু এখন সেটা কোথায়? রিয়ানের বিচলিত কণ্ঠস্বর শোনা গেল তৎক্ষণাৎ,
“তুমি কি তিল উঠিয়ে ফেলেছো? কেনো করলে এমন প্রিয়া! আমি তোমার ঐ তিলটাকে খুব পছন্দ করতাম। তুমি এই কয়েকদিনে সব ভুলে গেলে!”
রিয়ানের সাথে আরাতের দুই থেকে একটা কথা হয় দেখা হলে। আরাত প্রত্যুওরে বলল,
” আমি আপনার প্রিয়া না, আমি আপনার বন্ধু।”
” না তুমি আমার প্রিয়া, শুধু আমার প্রিয়া। কয়েকদিন পরেই আমাদের বিয়ে হবে, সংসার হবে, বাচ্চাকাচ্চা হবে। তুমি এসব কী বলছ প্রিয়া?”
বিষম খেলো প্রিয়ম। বিড়বিড় করে বলছে, পাগল ছেলেটা এত দূরে চলে গিয়েছে! আরাত রিয়ানের পাশ থেকে উঠে এসেছে। পানি এগিয়ে দিল প্রিয়মকে ঢকঢক করে পানি পান করে করুণ চোখে তাকাল আরাতের দিকে।
আরাত কিছু বলছে না প্রিয়মকে। কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না। কেন বলবে? প্রিয়ম তো আরাতের কিছু হয় না। সব সম্পর্ক তো কয়েক পলকেই শেষ করে ফেলেছে মানুষটা। তাহলে এখন কেন তার চোখে অসহায় চিহ্ন দেখা যায়!
” তোমরা কি দুজন দুজনকে ভালোবাসো?”
চমকে যায় দুজন, ছিটকে সরে যায় আরাত অপর প্রান্তে। প্রশ্নের উত্তর কী দিবে! আদৌ কি ভালোবাসে তারা দুজন দুজনকে?
” আমাদের বিচ্ছেদের কারণ কি এই ছেলে ছিল প্রিয়া?”
আরাত নিশ্চুপ বরাবরের মতো কিন্তু প্রিয়ম এবার চুপ থাকতে পারল না। এগিয়ে গেল রিয়ানের কাছে। আস্তে করে বসে রিয়ানের পাশে। মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় একদম ছোট ভাইয়ের মত করে। মিষ্টি হেসে বলে,
” ছাদে যাবে আমার সাথে?”
” যাব, তবে প্রিয়াকে সাথে যেতে হবে। আমার প্রিয়াকে ছাড়া এক মুহূর্ত চলে না।”
প্রিয়মের মুখশ্রীতে মুচকি হাসির রেখা। হেসে বলল,
“ঠিক আছে সবাই যাবে।”
——–
ঠান্ডা বাতাস বইছে। পাখির কিচিরমিচির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। হয়তো ছাদের কোণে কোন পাখির বাসা রয়েছে শব্দ সেখান থেকেই আসছে। গাছপালায় ভরা ছাদে। কিছু কিছু গাছ মৃত প্রায়। হয়তো রিয়ান যখন সুস্থ ছিল গাছগুলো পরিচর্যা করত কিন্তু এখন রিয়ান অসুস্থ পরিচর্যা করা হয় না। আরাত একপাশে দাঁড়িয়ে গাছ গুলো ছুঁয়ে দিচ্ছে। রিয়ান প্রিয়াম একসাথে দাঁড়িয়ে। রিয়ানকে এখন দেখতে বেশ স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। সে যে মস্তিষ্কবিকৃত রোগী দেখে বোঝা যাচ্ছে না।
প্রিয়মের দৃষ্টি আরাতের দিকে নিবদ্ধ। রিয়ানের উদ্দেশ্যে হেসে বলে,
” তোমাকে ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছে করছে। আমার মত একজন পাষাণের বুকে আগুন ধরিয়ে দিয়েছ। ভালোবাসার অনুভূতি জন্মিয়েছ। তুমি কি জানো তুমি ভীষণ ভালো ছেলে?”
” জানি, সবাই বলে আমি খুব ভালো ছেলে। যাকে ভালোবাসি মন দিয়ে ভালোবাসি। এজন্যই তো সবাই দূরে সরে যায় আমার কাছ থেকে।”
প্রিয়ম কিছুক্ষণ চুপ থেকে দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করে,
” একজন মেয়েকে খুব ভালোবাসতাম। একপক্ষীয় ভালোবাসা। এতই ভালোবাসতাম যে অন্য কোন মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকাতাম না। তখন আমার বয়স একুশ কি বাইশ ছিলো। সময়টা এমন ছিল যে যা দেখতাম তাই ভালো লাগতো। আমারও ভাল লেগেছিল একজন মেয়েকে। সেই মেয়েটির নাম তখন জানতাম না, জানতাম না তার পরিচয়। মন্টু চাচার দোকানে আড্ডা দিতাম সেই পথ দিয়ে হেঁটে যেত। আড্ডা দিতাম সকাল, সন্ধ্যা। একদিন হয়েছে কি! মেয়েটা হঠাৎ এসে আমায় বলল, ‘ভালবাসেন কি আমায়?’ কোথায় থেকে যেন সাহস সঞ্চয় হল নির্ভয়ে বললাম,’ হ্যাঁ ভালোবাসি, তোমার হাতটা ধরতে দেবে সারা জীবনের জন্য!’ মেয়েটির সেদিন কিছু বলল না। হেসে চলে গেল সেখান থেকে। আমি অপেক্ষা করছিলাম মেয়েটার জন্য। পরেরদিন, পরেরদিন, এরপরের দিন পর পর পাঁচ দিন অপেক্ষা করলাম মেয়েটির জন্য। মেয়েটি ঠিকই আসলো, ধোঁকা দিয়ে চলে গেল দূরে কোথাও। এরপর একদিনের ঘটনা, মেয়েটি একজন ছেলের হাত ধরে এগিয়ে আসে আমার দিকে। প্রিয়তমার হাত অন্য ছেলে ধরে আছে তা দেখলে যে কেউ রাগ করবে। অন্য ছেলের হাত ধরে রেখেছে সহ্য করতে পারলাম না। পানি পান করছিলাম তখন। রাগের শক্ত করে ধরলাম গ্লাস ভেঙে গেলো। মুহুর্তে নিজেকে সান্ত্বনা দিলাম। হয়তো ভাই হতে পারে। আসছে আমার বিচারের জন্য! কিন্তু আমার ধারণা ভুল কথিত বয়ফ্রেন্ড ছিল মেয়েটির সাথে। হৃদয় ভেঙে গেল। তখন থেকে মেয়েদের ঘৃণা করতাম। খুব ঘৃণা করতাম।
কয়েক বছর পরের ঘটনা, মা আমাকে না জানিয়ে একজন মেয়ের সাথে আমার বিবাহ ঠিক করে এবং সেদিনই আংটি পড়িয়ে দিয়ে আসে। বাসায় এসে যখন আমাকে বলে তখনই চলে এলাম বাড়ি ছেড়ে, মাকে ছেড়ে। শহরে গড়ে তুললাম নিজের বাসস্থান। এক বছর হতে না হতে মা চলে গেল পরপারে। রেগে গেলাম। সেই মেয়েটার জন্য মায়ের সাথে এক বৎসর সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলাম। জেদ চেপে ধরল অন্তরের গহিনে। সে মেয়েটার জন্য রাগ ক্ষোভ সৃষ্টি হল। তখনই পন করি মেয়েটা সামনে আসলে খুব কষ্ট দিব, যন্ত্রণা দিব বিষাক্ত যন্ত্রনা। যন্ত্রণার আগুনে পুড়ে ফেলব। মেয়েটি যখন সামনে আসলো চিনে ফেললাম। খারাপ ব্যবহার করলাম পদে পদে। অপমান করলাম মেয়েটাকে। শেষে কি করলাম, বাধ্য করলাম মেয়েটার সম্পর্ক ছিন্ন করতে। মেয়েটা তাই করল সম্পর্ক ছিন্ন করে মেয়েটা চলে গেল। তুমি কি জানো মেয়েটি কে, যাকে এত কষ্ট দিলাম!”
রিয়ানকে দেখে এখন স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। গভীর মনোযোগ সহকারে একজন ব্যর্থ মানুষের গল্প শুনছিল। জীবনের গল্প, প্রেমের গল্প। কথা শেষ হতে রিয়ান বলে, “কে সেই মেয়ে?
” তুমি যাকে প্রিয়া বলে ডাকো সেই মেয়ে। তবে এই মেয়ে তোমার প্রিয় না। প্রিয়া আরাতের মতো অনেকটা দেখতে।”
” আপনি কি কোন ভাবে বলতে চাচ্ছেন আমি তাকে ভুলে যাই! সম্ভব না। সে প্রিয়া হোক বা না হোক। তাকে নিয়ে আমি ভালো আছি। লোকে নাকি আমাকে পাগল বলে কিন্তু আমি পাগল নই আমি ভালবাসার কাঙ্গাল। তাকে আমি ভালোবাসতে চাই আজীবন।”
প্রিয়মের হঠাৎ কি যেন হল। রিয়ানের কলার শক্ত করে ধরে বলল,
” তার মানে তুই পাগল না। পাগলের অভিনয় করছিস। আমার কাছ থেকে আমার আরতকে দূরে সরিয়ে নিতে চাচ্ছিস?”
চিৎকার শুনে এগিয়ে আসে আরাত। অবস্থা বেগতিক দেখে প্রিয়মের হাত ছাড়িয়ে নেয়।
” কি করছো তুমি! মারছ কেন ছেলেটাকে? কি দোষ করেছে সে! একজন বিকৃত মস্তিষ্ক মানুষকে আঘাত করতে তোমার হাত কাঁপল না?”
“সে অসুস্থ না। সুস্থ হয়ে গিয়েছে। হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার বলছে সে সুস্থ নব্বই পার্সেন্ট। ভালোমতো দেখাশোনা করলে ঠিক হয়ে যাবে। রিয়ান তোমার আমার মাঝখানে চলে আসছে।”
আরাত থমকে গেল। কিছুক্ষণ ভেবে নিল প্রিয়মের কথার যথার্থতা। আদৌ কি তাদের মাঝখানে কোন সম্পর্ক আছে! যে সম্পর্কের জোরে প্রিয়ম বলছেন। রিয়ান তাদের মাঝে চলে এসেছে! আরাতের মুখশ্রী কঠিন হয়ে গেল। আঁখি পল্লব পিটপিট করছে। আরাত বলে,
“সম্পর্কের টান থাকলে অধিকারবোধ আসে। যেখানে সম্পর্ক নেই সেখানে অধিকার দেখানোর কোন মানে হয় না।”
রিয়ান হাসছে কিন্তু চোখে অশ্রু। আরাত যে প্রিয়মকে ভালোবাসে রিয়ানের চোখের সামনে তা স্পষ্টত ভেসে উঠেছে। রিয়ান মনোযোগ সহকারে দুজনকে দেখছে। মান অভিমানের পাল্লা হালকা হচ্ছে দুজনের মধ্যে।
” এই মেয়ে শুনো।”
আরাত ছিলো রেগে। প্রিয়মের খামখেয়ালী ডাক শুনে রক্তিম চোখে তাকাল। প্রিয়ম হাসছে। চোখে মুখে আনন্দের হাসি। আরাতের প্রত্যুওরের আশায় আছে। প্রত্যুত্তর করল আরাত,
” আপনি এখান থেকে চলে যান। আমি রিয়ানের সাথে থাকব।”
মানল না প্রিয়ম। হেসে বলল,
” এই মেয়ে শুনছো! পকেটে প্লিস্টিকের আংটি আছে। হাতখানা দিবে পরিয়ে দিবো!”
রিয়ান শব্দ করে হেসে উঠল। তবে চোখে পানি। আরাতের উদ্দেশ্যে বলি,
” নাই বা হলে আমার প্রিয়া, হবে তো কারোর প্রিয়া!
ভালো থেকো এভাবে, মনে রেখো আমাকে।”
চলে যাচ্ছে রিয়ান। পিছনে রেখে যায় হতভম্ব আরাতকে। স্তম্ভিত ফিরে আসল আরাতের। রিয়ান বলে পিছু ডেকে নেয়। উওর দেয় রিয়ান।
” আমি পাগন নই, পাগল ছিলামও না কখনও। একাকী থেকে প্রিয়াকে স্বরণ করতাম, স্মৃতিচারণ করতাম অতীতের মিষ্টি দিনগুলোর। বর্তমানে ঠিক আছি। তোমাদের জন্য দোয়া করছি।”
আরাতের বোধগম্য হল না। প্রিয়মের সাথে থাকতেও ইচ্ছে করল না। চলে আসার জন্য উদ্যোগ নিলো।
———–
কলিং বেলের আওয়াজে অতিষ্ঠ আমাদের জাম্বু। আয়েশ করে খাবার খাচ্ছিল। আরাতের মায়ের হাতে জাদু আছে। ঘাস, পাতা-লতা যাই রান্না করুক না কেন জাম্বুর খুব পছন্দের। দরজার ঐপাশের মানুষের যেন সহ্য হলো না। খাওয়া রেখে জাম্বু এগিয়ে গেল দরজার কাছে। ঘেউঘেউ আওয়াজে দুই-তিনবার ডাক দিল ওই পাড়ের মানুষকে বুঝাল যে আমি আছি। আরাতের মা এসে দরজা খুলে দিলেন। অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন দরজায় দাড়ানো মানুষদের দেখে। চিৎকার করে ডাক দিলেন রত্না বলে।
রত্না আচার খাচ্ছিল। আন্টির ডাক শুনে দরজার সামনে আসতেই হাত থেকে কাঁচের আচারের বৈয়াম ঠাস করে পড়ে যায়। দরজার ঐপাশে দাঁড়িয়ে আছে আরাত এবং প্রিয়ম। স্বাভাবিকভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে একটা কথা ছিল কিন্তু তারা দাঁড়িয়ে আছে একজন আরেকজনের কোলে চড়ে। দুজনের গলায় গোলাপ ফুলের মালা দেখে মনে হচ্ছে সদ্য বিবাহিত দম্পতি।
একজনের মুখে হাসি অপরজন বেজায় বেজার। হাসিমুখে মানুষ মানে প্রিয়ম আয়াতের মায়ের উদ্দেশ্যে বলল,
” ভেতরে আসতে বলবে না শাশুড়ি মা! তোমার মনের আশা পূরণ করে এসেছি। তোমার মেয়েকে জোর করে বিয়ে করে নিয়ে এসেছি। ঝামেলা কম, কাজ খতম।”
হতভম্ব সবাই। সকলের পাশ কাটিয়ে প্রিয়ম প্রবেশ করল। জাম্বু আরাতের বিষয়ে খুবই সতর্ক। আরাতকে কোলে দেখে ঘেউঘেউ করে আওয়াজ করে উঠল। যেন প্রিয়মকে এখনই কামড়ে দেবে। আরাতকে সোফায় বসিয়ে আয়েশ করে নিজেও বসল। জাম্বর দিকে তাকিয়ে দুষ্টু হেসে বলল,
“কিরে জাম্বুরা! আবার কি আমাকে কামড়ে দেবে? এবার শত কামড়ালেও লাভ হবে না। ইনজেকশন যা দেওয়ার দিয়েছে। তোর মতো আরো পঞ্চাশটা কুকুর যদি আমাকে কামড়ে দেয় তবুও আমার কিছুই হবে না। আজকে আমি খুবই খুশি। এই খুশিতে তোর জন্য একটা জাম্বুরী নিয়ে আসব। সুন্দর জাম্বুরী। জাম্বুরার জাম্বুরী।”
” তোদের কি হয়েছে রে! আর গলায় মালা দিয়ে ঘুরিস কেন?”
আরিতের মায়ের কথা শুনে প্রিয়ম বলল,
“বিয়ে করেছি তোমার মেয়েকে। এক সপ্তার জন্য তর সইছিল না। তাড়াতাড়ি কাজ সেরে ফেললাম। ভালো করেছি না!”
আরাতের মা খুশি হলেন। চলে গেলেন প্রিয়মের বাবাকে খুশির খবর জানাতে।
এদিকে আরাত চলে গেল নিজের ঘরে রাগ করে। থাকবে নাকি ছেলের সাথে! করবে না সংসার কোনক্রমে। তালাক দিয়ে দেবে। একদম তিন তালাক!
প্রিয়ম তাকিয়ে আছে আরাতের যাওয়ার পানে। মুচকি হেসে বলে উঠে,
“ভালোবাসার অনুভূতি তৈরি হয়েছে আমার মনে, তোমার মনেও তৈরি হবে! অপেক্ষা করছি সেদিনের যেদিন এসে বলবে হে প্রিয়তম! এসেছি স্ব-শরীরে, হৃদয় দিতে তোমার কাছে। আপন করে নিবে! অন্তরে অনুরক্তির অনুভুতি যে জন্মেছে তোমার জন্য, শুধু তোমার জন্য।
সমাপ্ত