#হৃদয়_জুড়ে_তুমি
#তিন, শেষ পর্ব
তটিনী একা একা কিছুক্ষণ বসেই অস্থির হয়ে ওঠে।
মনে প্রচন্ড অভিমান জমে৷
ভাইকে কথা দিয়েছে চেষ্টা করবে ছেলেটাকে বোঝার, জানার।
মূলত শোভন ভাইকে শিক্ষা দেয়াটা ছিল তার উদ্দেশ্য । কিন্তু এ লোকের তো কোনো নড়চর নাই। বিয়ে হয়ে গেলেও ভোন্দার মতো শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবে। এমন একটা মানুষকে কেন তটিনী পাগলের মতো ভালোবাসে জানে না।
কেনই বা অপেক্ষায় আছে সে? একবারও তো শোভন ভাই কোন ইঙ্গিত দেয় নি তাকে।
একবার মনে হয় ধুর! বিয়ে করে মজা বোঝাই শোভন ভাইকে। আবার মনে হয়, যাকে রাগ দেখাচ্ছে সে কি আদৌ তটিনীকে ভালোবাসে?
অস্থির মনে তটিনী চেয়ার ছেড়ে উঠে আসে ।
যাকে বিয়ে করবে না তার সাথে দুই মিনিটও কথা বলার ইচ্ছে নেই তার।
বেশি সময় হয়নি। শোভন ভাই আশেপাশে নিশ্চয়ই থাকবে। ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে কল দেয়ার জন্য।
হাতে নিয়ে বুঝে এটা তটিনীর মোবাইল নয়। তার মানে তখন শোভন ভাইয়ের সাথে মোবাইল অদল বদল হয়ে গেছে।
শোভনের মোবাইলে নিজের নাম্বারগুলো চাঁপতেই উঠে আসে নাম
আমার ফড়িং
মুহুর্তেই চোখে অবাধ্য জল উথলে ওঠে। বুকে আনন্দমিশ্রিত কান্নার ব্যাথা।
ভালোবাসি কথাটি একবার কেন মুখে আনেনি লোকটা?
অনবরত রিং বাজছে।
শোভন ফোন ধরছে না।
তটিনীর মোবাইল সাইলেন্ট মোডে। পকেটে ডুবে আছে বলে ওর আকুতি শোভন টের পায় না।
কি মনে করে উদাস শোভন মোবাইল বের করে। সেদিন চুপ করে তোলা তটিনীর ছবিটা আবার দেখবে বলে। চোখের সামনে তুলে দেখে মোবাইল আলো জ্বেলে জানান দিচ্ছে।
নাম লিখা
নীল আকাশ
তটিনীর মোবাইল এটা আবিষ্কার হতেই মনের ব্যাকুলতা উথলে ওঠে শোভনের। তারমানে তটিনীর নীল আকাশ সে নিজেই?
মোবাইল কানে ধরতেই দেখে কিছুটা দূরে অভিমানী চোখে চেয়ে আছে তটিনী।
শোভনের বুক চিড়ে গুপ্ত ভালোবাসাটি ডানা মেলে তটিনীর কাছে উড়ে যেতে চায়।
তটিনী হঠাৎ ছুটে এসে শোভনের বুকে আছড়ে পড়ে। হু হু করে কেঁদে উঠে।
দ্বিধাযুক্ত হাতে আলতো করে তটিনীকে জড়িয়ে ধরে শোভন। বড্ড কাঙ্ক্ষিত, বড্ড প্রতিক্ষীত এ মুহুর্ত। সময়টাকে বন্দি করতে ইচ্ছে করে। অপ্রত্যাশিত সুখ কি স্থায়ী হবে?
ঠোঁট ফুলিয়ে নাক টেনে তটিনী বলে, একবার কি বলা যেতো না আমায় ভালোবাসেন!
কিছুক্ষণ চুপ থেকে মৃদু কণ্ঠে শোভন বলে, আমার বাড়ির ছোট আঙ্গিনায় চঞ্চল ফড়িংটাকে বাঁধতে চাই নি।
–ফড়িং যদি অন্য আঙ্গিনায় চলে যেতো?
— হয়তো ওটাই তোমার যোগ্য জায়গা। আমাদের সীমিত আয়ের পরিবারে তোমার কষ্ট হবে তটিনী।
— আমাকে এতোটুকুই চিনলেন আপনি?
— তুমি তন্ময়ের ছোট বোন। তোমাকে আমি কিভাবে চাইতে পারি?
তটিনী অবাক চোখে তাকায়। শোভনের বুক থেকে নিজেকে সরিয়ে জিজ্ঞেস করে, আমাকে পাওয়ার কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই আপনার? আমাকে ভালোবাসলেও পেতে চান না?
–বাস্তবতা অনেক কঠিন ,তটিনী। তন্ময়ের বন্ধুত্ব আমার কাছে অনেক মূল্যবান।
— আর আমি?
কাতর চোখে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে শোভন বলে, আমার সমস্ত হৃদয় জুড়ে তুমি।
— তাহলে?
—কিন্তু তন্ময়ের চোখে কিভাবে চোখ রাখবো আমি?
— এতো ভীতু কেন আপনি? ভেবেছিলাম আপনি হয়তো আমাকে ভালোবাসেন না কিংবা লাজুক মানুষ। কিন্তু আপনি তো দায়সারা মানুষ?
— না তটিনী, সুন্দর স্বপ্ন দেখা সহজ কিন্তু সে স্বপ্ন পূরণ করতে হলে বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয় তখন স্বপ্নগুলো আর এতো রঙিন থাকে না।
— তাই বলে মানুষ স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দেয় না। সে স্বপ্ন পূরনের চেষ্টাও চালায়। আপনার মতো হাল ছেড়ে বসে থাকে না।
— এতো সহজ না সবকিছু ।
–এতোটাও কঠিন না যতটা আপনি ভাবছেন।
— তুমি তো চাইবার আগেই সব পেয়েছো। তুমি কি করে বুঝবে জীবনের সংগ্রাম!
— হ্যাঁ আমি চাইবার আগেই সব পেয়েছি তাই বলে কখনোও আত্মহারা হই নি।
— তটিনী, তুমি আমার সাথে ঝগড়া করছো।
— কেন করছি সেটা একবার ভাবুন।
— আস্তে বলো, আশেপাশের মানুষ শুনতে পাবে।
দীর্ঘ শ্বাস ফেলে আহত সুরে তটিনী বলে, আমি কেন আপনাকে এতো বোঝাচ্ছি?
আশেপাশের মানুষ শুনলে কি বলবে, তন্ময় ভাইয়া কি বলবে, আমার বাবা মা শুনলে কি বলবে, তাই তো?
আপনার ফড়িং আপনার বুকে আসার পরও বাস্তবতার দোহাই দিয়ে আপনি তাকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছেন। আপনার কিছুই করার নেই, সেটাই বোঝাতে চাইছেন আমাকে?
চোখে আসা জলগুলো মুছে অভিমানী তটিনী চলে যেতে উদ্যত হলে শোভন শক্ত করে হাত টেনে ধরে।
–তটিনী প্লিজ, যেও না।
—যার আমাকে পাওয়ার কোন আকাঙ্ক্ষাই নেই তার কাছে থেকে কি হবে! তাকে ভালোবেসেই বা কি হবে!
—গত রাত থেকে তোমাকে হারানোর অস্থিরতায় আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি, তটিনী।
আমি তোমাকে ছাড়া পারবো না থাকতে। তোমাকে পেয়েও হারাতে চাই না আর!
–তাহলে এতো চিন্তা কেন করছেন? সাহসী হয়ে উঠুন! বাস্তবতা, বন্ধুত্ব, জীবন সংগ্রাম সব দ্বিধা ছাড়িয়ে ভালোবাসাকে জয় করার চেষ্টা করুন। আমাকে একবারের জন্যেও অনুভব করান আমি আপনার কাছে কতটা কাঙ্ক্ষিত।
পারবেন?
–পারবো।
দুজন দুই রিকশায় ওঠে।
সামনের রিকশায় তটিনী থাকে উৎকন্ঠায়, ভীতু মানুষটা পারবে তো?
পেছনের রিকশায় শোভন দৃঢ় দৃষ্টিতে সামনের রিকশায় চেয়ে থাকে। কোনোভাবেই হারাতে দেবে না অভিমানী ফড়িংকে।
বাসায় ফিরে দেখে দরজায় তালা ঝুলছে। এসময় বাবা কোথায় গেল। বাবাকে যে বড্ড দরকার। কিছুক্ষণ চিন্তা করে ঠিক করে আগে তন্ময়ের মুখোমুখি হবে।
তন্ময়কে কল দিলে কণ্ঠে গাম্ভীর্যতা স্পষ্ট শুনতে পায়।
— হুম কথা বলা প্রয়োজন, শোভন। ঘণ্টা দেড়এক পর বাসায় চলে আয়।
তন্ময় এমন বন্ধু, যে কিনা হাসিমুখে জান দিয়ে দিবে শোভনের জন্য। আজ তারই মুখোমুখি হবে শোভন তার আদরের ছোট বোনকে ভালোবাসে বলে।
শুভর ছোট ছোট আবদার নির্দ্বিধায় তন্ময় পূরণ করে। কলেজে শান্তাকে অন্যপাড়ার এক ছেলে জ্বালাতন করতো। শোভনের কানে পৌঁছনোর আগেই তন্ময় গিয়ে সে ছেলের নাক ফাঁটিয়ে এসেছিল। পারিবারিক বিচারে তন্ময়ের এক কথাই ছিল, আমার বোন শান্তা, ওর দিকে চোখ তুলে তাকালে আমি চোখ উপড়ে ফেলবো।
তন্ময়কে বাবা শোভনের চেয়ে কম ভালোবাসেনি। তেমনি তন্ময়ের বাবা মাও সবসময় স্নেহের চোখে দেখেছে শান্তশিষ্ট এই তিন ভাইবোনকে। আজ তাদের সামনে দাঁড়াবে শোভন।
আজ হয়তো এ পরিবারের চোখে বিশ্বাস ভঙ্গের আক্ষেপ থাকবে তবুও তটিনীকে পাওয়ার জন্য আজ শোভন সাহসী হবে, হয়তো বা স্বার্থপর।
শোভন গলির মাঝে উদ্দেশ্যহীনভাবে হাঁটতে থাকে। সময়টা যেন থেমে আছে। বার বার ঘড়ি দেখে। মনের মধ্যে পাওয়া বা না পাওয়ার দ্বিধাযুক্ত মিশেল অনুভূতি।
আর অপেক্ষা না করে তন্ময়দের বাসায় গিয়ে কলিং বেল চাপে।
দরজা খুলে দেয় তন্ময়।
খুব স্বাভাবিক গলায় বলে, আয়, ভেতরে আয়।
বাসার পরিবেশ এমন দেখবে শোভন একদম ভাবেনি। তন্ময়ের আব্বা-আম্মার সাথে শুভ,শান্তা আর বাবা বসে আছেন।
শোভনকে গম্ভীর সুরে বসতে বলেন তন্ময়ের আব্বা। শান্তাটা কেন জানি ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদছে।
তন্ময়ের আব্বা বলতে শুরু করেন,
— দেখো শোভন, তোমাদের তিন ভাইবোন কে আমরা সবসময় স্নেহ করেছি। নিজের ছেলেমেয়ের মতো ভেবেছি।
তটিনী এ পরিবারের অনেক বেশি আদরের, আমাদের রাজকন্যা। ওকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন থাকতেই পারে। কিন্তু তোমার সাথে আমি আমার রাজকন্যার বিয়ে দিবো না এটা কেন ভাবলে?
বড় বড় স্বপ্ন আমরা সবাই দেখি শোভন। কিন্তু দিন শেষে তুমি, আমি, আমরা সবাই কিন্তু মধ্যবিত্ত!
জীবনে তো সুখটাই আসল, তাই না?
তোমার পরিবারে আমার রাজকন্যা যে সুখী হবে তা তো আমি নিশ্চিত হয়ে বলতে পারি। বাকি উপরওয়ালার ইচ্ছে।
শান্তার ফ্যাচফ্যাচ কান্না আরো বেড়ে যায়।
তন্ময় শান্তাকে ধমকে বলে, খুশির কিছু শুনলেই তোর খালি ফ্যাচফ্যাচানী শুরু। কিন্তু পরক্ষনেই চুপ মেরে যায় নিজের মা-র আঁচল চেপে আনন্দ অশ্রু দেখে।
শোভনকে টেনে নিজের রুমে নিয়ে আসে তন্ময়। চোখ মুখ উজ্জ্বল করে বলে, বিয়ের পর তটিনী আমাদের চোখের সামনে থাকবে, আঙ্কেলের মতো বাবা পাবে, তোর মতো বর পাবে আর কি লাগে রে, বোকা?
আর বেশি ঝামেলা করলে আমি তো আছিই তোর নাক ফাটানোর জন্য।
শোভন বোকার মতো তাকিয়ে মৃদু হাসে। কি আকাশ পাতাল চিন্তা করে এসেছিল আর এখানে কি দেখছে। সব যেন সিনেমা মনে হচ্ছে।
— কিরে? কিছু বলছিস না যে? আমার বোনকে বিয়ে করার ইচ্ছে আছে কি তোর? আঙ্কেল বললো, গত রাতে তুই নাকি হাউমাউ করে বাচ্চাদের মতো কেঁদেছিস?
বাবার কান্ডে বিব্রত হয় শোভন।
–তোদের দুজনকে গলির মাথায় ছেড়ে বেরুনোর পর আব্বা কল দিয়ে জরুরী ভিত্তিতে বাসায় ফিরতে বললেন। বাসায় এসে দেখি আঙ্কেল তার সৈন্য সমেত আমাদের রাজকন্যার জন্য বিয়ের পয়গাম নিয়ে এসেছেন।
তটিনী ফিরলে ওকে জিজ্ঞেস করি। সে তো কেঁদে কেটে অস্থির। আমার বোনটা একাই মরমে মরে যাচ্ছে তোকে ভালোবেসে। আর তুই কিনা নির্বিকার, শালা?
কিরে তুই কিছু বলছিস না কেন?
— তুই তো বলার সুযোগ ই দিচ্ছিস না।
তন্ময় হেসে শোভনকে জড়িয়ে ধরে। আমি অনেক
খুশি রে!
-তটিনীর সাথে কথা বলবি?
চোখ তুলে তাকায় শোভন।
— যা, ওর রুমে যা। আমি বরং তোদের বিয়ের আলোচনা সারি।
শোভন ধীর পায়ে তটিনীর রুমে ঢুকে। সাজানো পরিপাটি রুম। বারান্দার রেলিংয়ে ভর দিয়ে পেছন ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে আসমানী শাড়ি পরা ফড়িং।
আকাশ থেকে অঝোরে আনন্দ বৃষ্টি ঝরছে।
শোভনের হালকা ভয় হয়। তটিনীকে কথা দিয়েছিল যোদ্ধাবেশে রাজকন্যাকে ছিনিয়ে নেবে। কিন্তু এখানে উল্টো বিয়ের নিশান উড়িয়ে বৈঠক বসেছে।
— তটিনী!
তটিনী অন্যমনস্ক ছিল। খানিক চমকে তাকায়।
বৃষ্টির ছাট বিন্দু বিন্দু হয়ে তটিনীর মুখে ছড়িয়ে আছে। এ মুখপানে এখন নিশ্চয়ই অধিকার নিয়ে চেয়ে থাকা যাবে!
কিছুটা ইতস্তত করে কথা শুরু করতেই তটিনী ঝাঁঝের সাথে বলে, সত্যি করে বলুন তো, আমাকে কি আপনি ভালোবাসেন? নাকি আমিই জোর জবরদস্তি আপনার জীবনে ঢুকছি?
এমন অভিমানীর মুখোমুখি হতে হবে জানতো।
খানিক ঝুঁকে তটিনীর চোখে চেয়ে শোভন জিজ্ঞেস করে, অভিমান কতক্ষণ থাকবে?
— সারা জীবন থাকবে। আমাকে পাওয়ার জন্য কোনো চেষ্টা করেছেন কি আপনি? উল্টো ভেবেছেন আমি আপনার পরিবারে খাপ খাবো না। আমাকে তো আপনি চেনেনই না। তাহলে ভালোবাসলেন কিভাবে?
আমি আজ অন্য ছেলের সাথে দেখা করতে গেলাম। একবারোও কি বলেছেন, যেও না তটিনী!
কেমন ভালোবাসা আপনার? হু?
মনে রাখবেন, আমাকে পাওয়ার জন্য কোনো প্রচেষ্টাই আপনি করেন নি। আজ যে আমাদের বিয়ের কথাবার্তা হচ্ছে তার সকল কৃতিত্ব আমার। আপনার চার আনাও নয়।
শোভন ঠোঁট টিপে হেসে বলে হুম, সারাজীবন মনে রাখবো। আর কিছু?
শোভনের মুগ্ধ চাহনীতে তটিনীর গলা নরম হয়। চোখদুটো নত হয়ে আসে।
একে অপরের অব্যক্ত ভালোবাসা আজ বুঝে নেয়ার দিন। অথচ সে কিনা ঝগড়ার হিসেব নিয়ে বসেছে!
শোভন তটিনীর হাত দুটো পরম যত্নে নিজের হাতে ধরে বলে, জীবনে চলার পথে এমন ভীতু মানুষটাকে সারাজীবন সাহস দিবে তো?
চোখ থেকে গোটা গোটা মুক্ত ঝরে পড়ে তটিনীর।
ভেজা গালে আলতো করে ছুঁয়ে দিয়ে শোভন বলে, অনেক ভালোবাসি তোমাকে, আমার চঞ্চল ফড়িং!
কেঁপে ওঠে তটিনী। সারা শরীরে শীতল হওয়া বয়ে যায়।
শোভনের বুকে মাথা ঠেকিয়ে বলে, কিন্তু আমি আপনাকে ভালোবাসি না। একদম না। আপনি আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছেন।
বুকে চেঁপে ধরে কপালে আলতো ঠোঁট ছুঁয়ে শোভন বলে, চলবে। আমার বুকে এভাবে মাথা রেখে ভালোবাসি না বললেও চলবে।
সমাপ্তি।।
ঝিনুক চৌধুরী।।