‘সত্য পিঞ্জর’
পর্ব ৭.
তাবিনা মাহনূর

__________

হিশামের মৃত্যুর বেশ কিছুদিন পার হয়ে গেল। রিশতা অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে। আজমেরী এখন বাসায় নেই। তার বোনেরা জোর করে নিজেদের বাসায় নিয়ে গিয়েছে। রিশতাকে যেতে বলেছিল, সে যায়নি। তার এখন একঘেয়েমি জীবন চলে। এর মাঝে সে আলাদা কোনো স্বাদ আনতে চায় না।

অন্যদিকে, আজিমপুরের কেসটা নিয়ে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে আরশ। আফজালের বাড়িতে পুলিশ কোনো মাদকদ্রব্য পায়নি। আরশ গিয়েছিল ছদ্মবেশে লাবিবের বাড়িতে। সেখানে সে সংবাদকর্মীদের ড্রাইভার পরিচয়ে বাড়ির পেছনের অংশে ভোজ আয়োজনে সামিল হয়েছিল। কিন্তু এখানেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোনো তথ্য বের হয়নি। তবে লাবিবের একজন সহকারী আছে, যে লাবিবকে ছাড়া এক দণ্ড এদিক ওদিক যায় না। তাকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে। কেননা লাবিব যদি কোনো পরিকল্পনা করেই থাকে তবে এই লোকের তা জানার নিরানব্বই ভাগ নিশ্চয়তা আছে।

এছাড়া এরই মাঝে আফজালকে থানায় ডাকা হয়েছিল। যথারীতি, পানি খেতে দেয়া হলে আফজাল তা পান করেন। ইনজেকশনের ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর সাথে তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেলেনি। তাই কেসটা জটিল থেকে জটিলতর হয়ে যাচ্ছে। অতিরিক্ত চিন্তায় আরশের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছে। সিজদাহয় লুটে সে আল্লাহর সান্নিধ্যে গিয়ে শান্তি খুঁজে পায়। তবে ঘুমানোর সময় পাশের জায়গাটা শূন্য লাগে আজকাল। আনিকার বলা কথাগুলো তাকে বেশ ভাবিয়েছে।

শিমুলকে প্রত্যাখ্যানের পর আনিকা তাকে ডেকেছিল তার মনোভাব জানতে। উত্তরে সে বলেছিল, ‘আপু, মেয়েটার সাথে সেদিন কথা বলে এসে আমার মনে হয়েছিল এই মেয়ে অন্যদের চেয়ে আলাদা। কারণ, তাকে যখন বলেছিলাম আমার জীবন অনিশ্চিত, সে বলেছিল তার ইচ্ছে আছে শহীদের স্ত্রী হওয়ার এবং শহীদের মা হওয়ার। এমনকি সে নিজেও শহীদ হতে প্রস্তুত। এ কথা শুনে আমি ইস্তিখারা করার সিদ্ধান্ত নিই।’

– করেছিলি?
– হ্যাঁ।
– কি ফলাফল পেলি? অভিজ্ঞ কারো মতামত নিয়েছিলি?
– সেটার প্রয়োজন হয়নি। আমি কোনো স্বপ্ন দেখিনি।
– কয়বার করেছিস?
– দুইবার।
– মাত্র দুইবারে কি বুঝে গেলি নিজে নিজে? তুই কি আলেম? মুফতি?
– আপু, এমনিতেই আমার মনে অশান্তি কাজ করছিল। কোনো স্বপ্ন দেখিনি তবে সরাসরি একটা প্রমাণ পেয়েছি। মেয়েটা আমাকে ম্যাসেজ দিয়েছিল।

সেদিন লুকমানকে যা যা বলেছিল আরশ, তা আনিকাকে বলার পর আনিকা তাকে বলেছিল, ‘এখানে খারাপ কিছু দেখছি না আমি। তুই একটু বেশি বুঝিস।’

– আমার পুরো কথা শোনো আগে।
– বল শুনছি।

– মেয়েটা ওই ম্যাসেজ আনসেন্ড করার পরে লিখেছিল, আপনি এই সেক্টরে কেন কাজ নিলেন? আমি বলেছিলাম, আমার মতো দ্বীন মেনে চলার চেষ্টা করে যারা তাদের প্রত্যেককে প্রতিটা বিভাগে থাকা উচিত। আমি যেখানে আছি সেখানে সৎ বলতে কেউই নেই। একজন মানুষ যদি ঘুষ ছাড়া তার মামলা সৎভাবে সম্পন্ন করতে চায় তাহলে সে কোনো ন্যায়পরায়ণ লোক পাবে না। তাই আমাদের মতো যারা ন্যায়-অন্যায় পার্থক্য করার চেষ্টা করে, আল্লাহর কাছে সবসময় মুখাপেক্ষী থাকে নিজেদের চরিত্র ঠিক রাখার জন্য, তাদের উচিত সাহায্য করা। এই উদ্দেশ্যে আমি এখানে এসেছি।

আনিকা বলেছিল, ‘কথা খারাপ বলিসনি। অনেক মানুষের উপকার হবে যদি আল্লাহর সাহায্যে তুই সৎ পথে থেকে এই বিভাগে নিরাপদ থাকিস।’

– কিন্তু মেয়েটা অদ্ভুত এক কথা বলেছে।
– কি?
– সে বলেছে, তবু এ বিভাগে আপনার যাওয়া ঠিক হয়নি। এখানে আপনাদের মত মানুষদের প্রাণের নিরাপত্তা নেই। আমার মনে হয় আপনার দ্বিতীয়বার ভাবা উচিত ছিল।

আনিকা হেসে বলেছিল, ‘মেয়েরা অল্প স্বল্প আবেগী হয় রে। একদম যন্ত্রের মতো কাউকে পাবি না।’

– আমি তো যন্ত্র চাইনি। আমি চেয়েছি যেন আমার চাকরি নিয়ে আমার স্ত্রীর কোনো সমস্যা না থাকে।

আনিকা বুঝিয়ে বলেছিল, ‘ভাই, সব দিক দিয়ে পারফেক্ট কেউই হয় না। একটা দিক ছাড় দিতেই হয়। বিয়ের পর মেয়েরা এমনিই আবেগী হয়ে যায়। বিয়ের পর যখন দেখবি তোর বউয়ের মাঝে তোর জীবন নিয়ে কোনো আতঙ্ক কাজ করে না, তখন তোরই কষ্ট হবে। মনে হবে তোর বউ তোকে ভালোবাসে না।’

– হবে না এমনটা।
– হবে রে। এখন বুঝছিস না। তবে, আমি একটা প্রস্তাব দিই?
– কি?
– রিশতাকে বিয়ে করবি?

এ কথা শুনে চমকে উঠেছিল আরশ। সরাসরি রিশতার কথা চলে আসায় আরশ অনেকটা গম্ভীর হয়ে বলেছিল, ‘এটা কেন বলছো?’

– কারণ আমার মনে হয়েছে রিশতা অনেকটা তোর ভাবনার মতোই। আর তাছাড়া সেদিন জামিলের কথায় যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখালি তাতে মনে হলো তুই ডিভোর্সড কিংবা বিধবা বিয়ে করতে খুব আগ্রহী।
– তুমিই বিষয়টা জটিল করছো।
– নারে। আমি তোকে চিনি। তুই শিমুলকে পেতে চেয়েছিলি রিশতার মতো করে। তোর ধারণায় রিশতা আসেনি ঠিকই, কিন্তু তুই এমন কাউকেই চেয়েছিস। আমার কথাকে চাপ মনে করিস না। সম্পূর্ণ সিদ্ধান্ত তোর।

এখন আনিকার বলা কথাগুলো তাকে ভাবাচ্ছে। তার নিজের মন নিয়ে সে দ্বিধায় জড়িয়ে আছে। হঠাৎ সে উঠে দাঁড়ালো। ওযু করে এসে সালাতে দাঁড়িয়ে গেল।

_____

আফজালের কাজের ছেলে আতিকের ফোন জব্দ করা হয়েছে আজিমপুর কবরস্থানের একজন রক্ষীর কাছ থেকে। খুন হওয়া জায়গাটা থেকে সে ফোন সরিয়েছিল। সেটা বিক্রি করে টাকা পেতে চেয়েছিল সে। বিক্রি করার জন্য গুলিস্তান গিয়ে চোরাই মার্কেটে গেলে সেখানেই ধরা পড়ে সে। ফোনটা বেশ কিছুদিন বন্ধ রাখার কারণে সেটার অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাচ্ছিলো না। গুলিস্তান গিয়ে সেটা বিক্রি করার পর যখন ফোন চালু করা হয়, তখন সেটা ট্র্যাক করে পুলিশ সেখানে চলে আসে। তবে তখনই সেই লোককে পাওয়া না গেলেও তার বিবরণ শুনে কবরস্থানে এসে তাকে খুঁজে বের করা হয়।

লোকটা সাধারণত চোর নয়, ফোন সামনে পরে থাকতে দেখে চুরি করেছে। তাকে জেলে ঢুকিয়ে অল্প সাজা দেয়া হবে। ফোনের কললিস্ট চেক করে দেখা গেল, শেষবার আতিক ভুবনের সাথে কথা বলেছিল। কল রেকর্ড বের করে তেমন তথ্য পাওয়া গেল না। তাদের বেশিরভাগ কথোপকথন ইয়া-বা নিয়ে। এর আগে আফজালের সাথে তার কথা হয়েছে খুব সাধারণ। সে বাসার বাইরে কেন, কখন ফিরবে- এই ধরণের আলোচনা। এরপর আতিকের গ্রামের বাড়িতে থাকা পরিবারের সাথে কথোপকথন ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায়নি।

কিন্তু একটা ঘাটতি থেকে গেল, ভুবনের ফোন খুঁজে না পাওয়া। সেই ফোনটা ট্র্যাক করা যাচ্ছে না। রক্ষীকে রিমান্ডে নিয়েও যখন সে অস্বীকার করলো ভুবনের ফোন সে পায়নি, তখন তাকে এ নিয়ে আর সন্দেহ করা হয়নি।

আজ বৃহস্পতিবার। রিশতার মন এখন বেশ কঠোর। মর্জিনা খালার সাথে কথা বললেও আজমেরীর সাথে কোনো কথা বলে না সে। আজমেরী এখনো তাকে কিছু বলেননি। তবে দিন দিন তার রূপ প্রকাশ পাচ্ছে। এখন হয়তো তিনি নিজেকে গুছিয়ে নিচ্ছেন সামনের দিনগুলোর জন্য। তাই রিশতাকে নিয়ে আপাতত মাথা ঘামাচ্ছেন না। রিশতাও নিজের মতো চলছে। কাউকে নিয়ে তার কোনো চিন্তা নেই।

বেশ রাত হয়েছে। রাতের খাবার না খেয়ে রিশতা বিছানায় শুয়ে পুরোনো চিন্তায় ব্যস্ত। রুদ্রর সাথে সম্পর্কে যাওয়ার পরও সে পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। রুদ্র তাকে কখনোই কোনো ব্যাপারে জোর করেনি। তবে একবার সে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছিল না। রিশতাকে সে বলেছিল, ‘আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি।’

রিশতার হাসিমুখের জবাব, ‘জানি।’
তারপর রিশতার কানে কানে রুদ্র বলেছিল, ‘তোমাকে খুব করে চাই।’
রিশতা একটু সরে বসে বলেছিল, ‘এখন নয়।’
– কেন?
– বিয়ের পর। আমি একটা সমাজে বাস করি রুদ্র। সমাজকে মেনে চলতে হবে।

রুদ্র কিছুক্ষণ চুপ করে বসে ছিল। তারপর হেসে বলেছিল, ‘কোনো জবরদস্তি নেই। এখন যেটা চাইছি, বিয়ের পরে সেটাই হবে। শুধু তুমি থাকলেই হবে।’

এমন সুন্দর করে কথা বলা ছেলেটা যে কত নিকৃষ্ট তা রিশতা জানতো না। রুদ্র তাকে জোর না করার কারণ, অন্য নারী দিয়েই সে পুষিয়ে নিতো। সেটা সে কোনোভাবেই বুঝতে পারতো না। তবে তার সাথে বিয়ে হওয়ার পর রুদ্র তার প্রতি পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। যখন তার চাকরি সূত্রে তাকে প্রায়ই নরসিংদী থাকতে হচ্ছিলো তখন থেকে রুদ্রর আচরণ আবার আগের মতো হতে থাকে।

শেষ সময়ে রুদ্রর সাথে তার ঝগড়া হতো মিরু নামের এক মেয়েকে নিয়ে। ওই মেয়ের বাসায় রুদ্র একদিন থেকেছে জানার পর রিশতা অত্যন্ত রাগ করেছিল। রুদ্রকে এ বিষয়ে জেরা করলে সে বলে, ‘আমার স্বাধীনতায় তুমি হস্তক্ষেপ করছো কেন? তোমাকে আমি কিছু বলেছি? তুমি যে আমার থেকে দূরে আছো, আমি ঢাকায় তুমি নরসিংদী। এ নিয়ে আমি কিছু বলেছি? আমার জৈবিক চাহিদা পূরণে তুমি নেই, আমি কি করবো?’

রিশতা অবাক হয়েছিল অনেক, ‘মাত্র তিনদিন থাকি এখানে। এছাড়া প্রায়ই তুমি এসে থাকো। এই অল্প কিছুদিন সহ্য হয় না?’

– সবসময় ওই এক প্রয়োজনই সব নয়। মাঝে মাঝে একটু জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে। জড়িয়ে না ধরি, সামনে বসিয়ে গল্প করবো, সেই উপায়ও নেই! একা একা আর কত? তুমি দূরে থাকলে আমি যা ইচ্ছে করবো! মেয়ে ঘরে আনবো, মেয়েদের বাসায় যাবো। আর সেটার জন্য তোমার অনুমতি লাগবে না আমার। আমি তোমার কাছে বাধা নই, স্বাধীন।

রিশতার সেই দিনগুলো ছিল বিভীষিকাময়। তবু সে রুদ্রকে ছেড়ে যায়নি নিজের আশ্রয়ের কথা ভেবে। কে দিবে তাকে আশ্রয়? সে তখন বিশ্বাসী ছিল না। তার কোনো ভরসা ছিল না। রুদ্রর মৃত্যুর পর সে বেশি কষ্ট পেয়েছিল নিজের চিন্তা করে। স্বার্থপরতা তাকে ঘিরে ধরেছিল। আজমেরী সেসময় তাকে বের করে দেননি, এতেই রিশতা কৃতজ্ঞ।

তবে প্রতি শুক্রবার রুদ্রকে দেখতে যাওয়া তার অভ্যাস। প্রথম প্রথম নিজেদের ভালো সময়গুলো মনে করে সে সেখানে যেতো। রুদ্রর স্মৃতি ধরে রাখার একটা মাধ্যম এটা। পরবর্তীতে তা অভ্যাসে পরিণত হলো। এখন না গেলে শান্তি পায় না সে।

ফোনের আওয়াজে ধ্যান ভাঙলো তার। অপরিচিত নাম্বার দেখে ভ্রু কুঁচকে ফোন ধরলো সে। সালাম দেয়ার পর ওপাশ থেকে মেয়েলি কণ্ঠে কেউ বললো, ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম রিশতা। আমি আনিকা।’

– ওহ আনিকা আপু! আপনি ভালো আছেন?
– হ্যাঁ আলহামদুলিল্লাহ। তুমি?
– আমিও আলহামদুলিল্লাহ। আন্টি ভালো আছে?
– আলহামদুলিল্লাহ, মাও ভালো আছে। রিশতা, আমি কাল বাসায় যাবো। তুমি কখন আমার বাসায় আসতে পারবে?
– খুব জরুরি আপু? আপনি এখনই বলুন। কষ্ট করে আসার কি দরকার।
– না না, সামনাসামনি বলতে হবে।

ঠিক হলো, কাল বিকেলে রিশতা আনিকার বাসায় যাবে। রিশতা বুঝতে পারলো না কি এমন গোপন কথা যেটা তার বাসায় বলা যাবে না। এ নিয়ে সে বেশি চিন্তা করলো না।

তার চিন্তা না থাকলেও আরশের বাসায় মোটামুটি একটা ঝড় বয়ে গিয়েছে। ঝড়ের পর যেমন পুরো এলাকা স্তব্ধ হয়ে থাকে, এখন বাসার মানুষের অবস্থা ঠিক তেমনই। আরশ রিশতাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও সে বলেছে রিশতার সাথে কথা বলার পরে সে জানাবে তাকে বিয়ে করবে কি না। কিন্তু এতেই বাড়ির লোকজনের মাথা নষ্ট হওয়ার উপক্রম। নাজিফা বেগম আরশের সাথে কথা বলছেন না। আমান অবশ্য আরশের উপর কিছু চাপিয়ে দিতে চাইছে না। তার ধারণা, বিয়ে না করার চেয়ে এমন মেয়ে বিয়ে করে আনা ভালো। এই ফিতনাময় যুগে নিজেকে টিকিয়ে রাখা খুব কষ্ট। শয়তান সবসময় ওয়াসওয়াসা দিয়েই যায়।

আনিকা আর জামিল ছাড়া কেউ সাহায্য করছে না। আমান এ বিষয়ে ঢুকবে না। লুকমান কোন দিকে যাবেন বুঝতে পারছেন না। তিনি ভেবে দেখেছেন, আগে মেয়েটাকে দেখে আসুক। তারপর এ নিয়ে ভাবা যাবে। নাজিফা একবার বলেই ফেললেন, ‘আমার ছোট ছেলেটাকে ভদ্র ভাবতাম। সুন্দরী মেয়ে দেখে সেও বেঁকে বসলো।’

এই কথাটাই সহ্য হয়নি আরশের। সে শীতল কণ্ঠে বলেছে, ‘আম্মু, বাজে ধারণা করবে না দয়া করে।’

– কেন করবো না? মেয়েটাকে দেখে আমারও মায়া হয়েছিল। কিন্তু তাই বলে তোর সাথে ওকে ভাবতে পারি না! তুই যে বিয়ে ছাড়া থাকতে পারবি না এই কাহিনী দেখেই বুঝে গিয়েছি আমি।

নাজিফা চাইছিলেন ছেলে যেন রাগ করে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। তাই তিনি এসব বলছিলেন। কিন্তু হীতে বিপরীত হলো। খুব বাজে এই মন্তব্যের কারণে আরশ চেয়ার ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ঘরে গিয়ে দরজা আটকে দিলো। ছেলের মাত্রাতিরিক্ত রাগের কারণে লুকমানও ক্ষেপে গিয়েছিলেন। নাজিফা কাঁদতে কাঁদতে বলেছেন, বিয়ে করলে যেন সে একা একা করে।

বাসায় অশান্তি, আজিমপুরের ঝামেলা, ইলেকশন এগিয়ে আসা- সব মিলিয়ে আরশের জীবনটা এখন হতাশার কেন্দ্র। তার ইচ্ছে করছে সব ছেড়ে দিয়ে কোনো অজানা জায়গায় গিয়ে সারাক্ষণ আল্লাহর ইবাদত করতে। কিন্তু জীবনসংসারে জড়িয়ে গেলে তা থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন।

এমন অবস্থায় তার পাশে কেউ নেই। সে এখন দ্বিধায় আছে। সত্যিই কি রিশতার সাথে বিয়ের ভাবনাটা ভুল?

__________

(চলবে ইন শা আল্লাহ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here