#সংসার
লেখাঃরাইসা
পর্বঃ ২০ +২১(শেষ)
মৌ এর বুকটা ছ্যাঁত করে ওঠে!
– রিত্ত পাশ থেকে বলে’ আপনারা দো’আ করবেন, আগামী মাসে ভাইয়া আর তিশা আপুর বিয়ে হবে। কথাটা বলে হেসে দেয়।
– এমন সময় রিচি দৌড়ে এসে, তিশার হাতটা রাজের হাত থেকে ছাড়িয়ে দিয়ে বলে’ বাবাই তুমি মমকে রেখে বিয়ে করো না?’ মম তোমার জন্য কান্না করে। তোমার ছবি নিয়ে মম কাঁদে। বাবাই বলো না তুমি বিয়ে করবে না। বিয়ে বাড়িতে পিনপিনে নীরবতা। অফিসের সকল কর্মচারী রিচির দিকে তাকিয়ে আছে।
– কি হলো বাবাই তুমি মমকে ছেড়ে যেয়ো না।
– কি বলছো এসব মামনি?এই যে ম্যাডাম অফিসে অপমান করে শান্তি পাননি? এখন আবার কেন এমন করছেন? আর রিচি এসব কি বলছে?
– সরি রাজ কিছু মনে করো না। আমরা চলে যাচ্ছি।
– যাচ্ছেন ভালো কথা কিন্তু রিচি যা বলছে এসব কি সত্যি কথা?
-না সত্যি কথা না। রিচি মিথ্যা বলেছে। তবে রিচি একদিন, আমার ব্যাগে তোমার ছবি দেখে বলেছিল এটা কার ছবি? আমি সেদিন সব বলেছিলাম। আজ হয়তো, তোমার কাছ থেকে আমাকে আলাদা করতে চায়নি। আচ্ছা আমরা তাহলে আসি।
– হুমম তোমার স্বামীকে কে তো নিয়ে আসোনি। তিনি মনে হয় অপেক্ষা করছে।
– রাজের মুখে এমন কথা শুনে কেমন যেন কলিজাটা ছিড়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে। মৌ কোনমতে বিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়ি করে বাসায় এসে পড়ে। বাসায় আসার সাথে সাথেই রিচি মৌকে বলল’ মামনি তুমি মিথ্যা কেন বললে? বাবাইকে কেন বললে না।
– চুপ রিচি তুমি কোন কথা বলো না। উনি তোমার বাবা না। তোমাকে মিথ্যা বলেছিলাম।
– না না তুমি মিথ্যা বলোনি। জানো মম আমার বাবাটা অনেক ভালো। কিন্তু তুমি তো বাবা ডাকতে নিষেধ করেছো।
– আচ্ছা রিচি, উনিই তোমার কাছে ভালো হয়ে গেলো? আমি তোমার কাছে ভালো না?আচ্ছা উনি যদি তোমাকে নিতে চায় তাহলে আমাকে রেখে চলে যাবে?
– উহ্ মম তুমি কি বলো! আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না। তুমি না আমার মম। তোমাকে ছেড়ে যেতে পারি?
– এদিকে রিত্ত তার বরের সাথে চলে যায়। বাড়িতে কেউ নেই রাজ একাই। বুকের ভেতর নানান কষ্ট উঁকি দিচ্ছে। রিত্তকে খুব মিস করছে রাজ। বিপদে -আপদে মায়ের মতো স্নেহ দেওয়া বোনটাও আজ তার বাছে নেই। কানের কাছে বারবার রিচির কথাগুলো বারি খাচ্ছে। মনটা বারবার বলে উঠছে রিচি আমার মেয়ে। রিচি কেনই বা আমাকে বাবা বললো? তাহলে মৌ কি বাচ্চা নষ্ট করেনি। এছাড়া মো বিয়ে করলেও বিয়ের বয়স এতো হওয়ার কথা না। তাহলে কি মৌ আমার কাছ থেকে এসব লুকাচ্ছে? এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে রাজ ঘুমিয়ে যায় খেয়াল নেই। এদিকে সকালে কলিং বেলটা বেজে ওঠে। কলিং বেলের শব্দে, রাজ গিয়ে দরজা খুলতেই দেখে মৌ আর রিচি দাঁড়িয়ে আছে। রিচি রাজকে দেখেই বাবাই বলে জড়িয়ে ধরলো।
– মৌ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। রিচি একের পর এক কথা বলেই যাচ্ছে। রাজ হু হা করে উওর দিচ্ছে। হঠাৎ, রাজ রিচির কথা শুনে চমকে গেল। বাবাই তুমি নাকি আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলে? ও বাবাই তুমি মেরে ফেললে আমি বাবাই কাকে ডাকতাম? আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি বাবাই। রাজ রিচিকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগল ‘ মা’রে আমাকে ক্ষমা করে দে।আর তোকে কষ্ট দিবো না। তুই যে আমার মা আমার জীবন।
– বাবাই আমাকে সরি না বলে মম কে বলো। মমকে তুমি অনেক কষ্টট দিছো।
– মৌ তোমাকে কিভাবে যে বলি, তোমার প্রতি যে অন্যায় করেছি। হয়তো মানুষ পশুর উপরও এমন অন্যায় করে না। ক্ষমা করা যায় না আমায়? প্রমিজ করছি আর কোনদিন তোমাকে কোন কষ্ট দিবো না।
– মৌ কিছু বলছে না, মৌ এর চোখ থেকে পানি পড়ছে।
– কি হলো ক্ষমা করবে না আমায়?
– ক্ষমা করতে পারি এক শর্তে।
– কি শর্ত বলো?
– শর্তটা হচ্ছে আমাকে বুকে জড়িয়ে নিতে হবে সারাজীবনের জন্য। জানো যেদিন কবুল বলেছিলাম সেদিনই মনে প্রাণে গ্রহণ করে নিয়েছিলাম। তুমি আমার জীবন হয়ে আছো। তোমার বুকটাই আমার শেষ ঠিকানা। সত্যিই রাজ আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না। বড্ডবেশি ভালোবাসি তোমাকে। কতোগুলো বছর তোমার স্মৃতি আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছি। রিচি, সত্যিই আমার পরম পাওয়া। কি হলো ওভাবে তাকিয়ে আছো কেন? বুকে নিবে না আমায়? তোমার বুকে যাওয়ার জন্য কলিজাটাযে আমার ছটফট করছে।
-রাজ দু’টি হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলতে থাকে, আমি সত্যই আজ খুব খুশি। মহান আল্লাহ তায়ালা আমার কলিজার টুকরাকে আমার বুকে ফিরিয়ে দিয়েছে। আমিও যে তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না। আমার প্রতিটা স্পন্দন তোমার কথা বলে মৌ। বুকে আসো। আমার হৃদয়ের পিপাসা নিবারণ করি। তোমার ভালোবাসা দিয়ে। মৌ রাজের বুকে এসে সাগরের ঢেউয়ের মতো আছড়ে পরে। রাজ মৌকে বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। মৌ রাজকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে থাকে।রাজ মৌ এর কপালে আলতো করে ভালোবাসার স্পর্শ এঁকে দেয়। মৌ তার গোলাপী ঠোঁট জোড়া দিয়ে রাজের কপাল স্পর্শ করে। মৌ এর কাছে মনে হচ্ছে সে পেয়েছে তার আশ্রয়স্থল। যেখানে মরণ হলেও শান্তি। রাজ মৌ এর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। এদিকে মৌ চোখের পানি দিয়ে রাজের বুক ভিজিয়ে দিচ্ছে।
এমন সময় রিচি বলে ওঠে বাবাই, মম তোমরা আমাকে রেখে কি করছো?
– রাজ মৌকে ছেড়ে দেয়। রিচি হিহি করে হেসে ওঠে।
– হঠাৎ ফজরের আযান শুনে ঘুম ভেঙে যায় রাজের। রাজেরর ঘুম ভাঙতেই সে বুঝতে পারে এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলো সে। স্বপ্নটা এখনো চোখের সামনে জ্বলজ্বল করে ভেসে ওঠছে।
রাজ অযু করে ফজরের নামায পড়তে চলে যায়। ফজরের নামায শেষ করে বাসায় এসে ভাবতে লাগে, সত্যিই রিচি আমারি মেয়ে। যে করেই হোক সত্যিটা আমার জানতেই হবে। রাজ ঠিক করলো আজকেই সে মৌ এর বাসায় যাবে।
– সকাল এগারোটার দিকে রাজ মৌ এর বাসায় গিয়ে দেখে কাজের মেয়ে ঘর পরিষ্কার করছে। মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করতেই, মেয়েটা বলে মৌ শাওয়ার নিচ্ছে, আর রিচি তার রুমে পড়ছে। রাজ সরাসরি দু’তলায় চলে যায়। রাজ রিচির রুমে গিয়ে দেখে রিচি উপুড় হয়ে কার সাথে যেন কথা বলছে। রাজ একটু কাছে গিয়েই দেখে, রিচি তার ছবিটাককে বাবাই বাবাই করে ডাকছে। আর বারবার ছবিটার কপালে চুমু দিচ্ছে। চুমটা যেন রাজের কপালে এসে লাগছে। আর বাবাই ডাকটা মনে হয় কলিজায় এসে বিঁধছে।
– হঠাৎ মৌ পিছন থেকে বলে ওঠলো’ রাজ তুমি এখানো? তুমি এখানে কি করছো?
– রিচি রাজকে দেখেই বললো ‘ বাবাই তুমি কখন আসলে?
– মৌকে রিচিকে ধমক দিয়ে বললো’ মা এটা তোমার বাবা না। তোমার বাবা বিদেশে।
– মম তুমিই না বলেছিলে ছবির লোকটাই আমার বাবা? ছবির লোকটার সাথে উনাকে তো একই দেখা যায়।
– রিচি চুপ করো। আর রাজ তুমি এখানে কেন আসছো? প্লিজ চলে যাও। কি চাও তুমি?
– কিছু চাই না, তবে আমার মেয়েকে চাই। সত্যি করে বলো তো রিচি কে? আমার মেয়ে না?
– রাজ তুমি কি বলতে চাও? তুমি প্লিজ চলে যাও। আমার স্বামী দেখলে খারাপ ভাববে।
– মৌ চলো না আবার নতুন করে শুরু করি! আমি তোমাকে সত্যি সত্যি ভালোবাসি। আর কখনো কষ্ট দিবো না।
– রাজ মনে করে দেখতে চাই না অতীত। তুমি চলে যাও। তুমি আমার সুখ দেখতে পাচ্ছো না।
– আচ্ছা তোমার সুখের পথের কাঁটা হবো না। আমার রিচিকে দিয়ে দাও। আমার মেয়েকে দিয়ে দাও।
– রাজ বেশি হয়ে যাচ্ছে। রিচি আমার মেয়ে। তুমি প্লিজ চলে যাবে না দাড়োয়ান ডাকবো?
– মৌ চলো না, কেন মেয়েটাকে তার বাবার আদর থেকে বঞ্চিত করবে? আমাকে ক্ষমা করে দিয়ে বুকে টেনে নেওয়া যায় না? মৌ আমি তোমাকে বড্ডবেশি ভালোবাসি। তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না। প্লিজ আমাকে ক্ষমা করা যায় না?
বুকে টেনে নেওয়া যায় না?
– প্লিজ তুমি বের হয়ে যাও। তোমাকে দেখতে মন চাচ্ছে না। যখন গর্ভবতী থাকা অবস্থায় আমার পেটে চা ছুড়ে মেরা হয়েছিল তখন কোথায় ছিলে? দেখবে সে পোড়া দাগ? এই দেখ। মৌ কাপড়টা সরাতেই রাজের বুকটা কেমন যেন কেঁপে ওঠলো। কি হলো কিছু বলছো না কেন?চোখ কপালে ওঠে গেলো? আর মনে রেখো ভুলেও কখনো রিচিকে নিতে আসবে না। রিচি আমার আর তিশানের মেয়ে।
– মৌ প্লিজ অনেক হয়েছে আর না। চলো আমার সাথে এ বলে যখনি রাজ মৌ এর হাত ধরে ঠিক তখনি মৌ রাজের গালে চড় বসিয়ে দেয়। রাজ মৌ এর দিকে অসহায়রের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে’ তুমি আমাকে মারতে পারলে?
– হ্যাঁ পারলাম কারণ আমি অন্য জনের বিবাহিত স্ত্রী। আর তুমি পর পুরুষ! আমি চাই না আমার স্বামী ব্যতীত কেউ আমার গায়ে স্পর্শ করুক।
– রাজের কলিজাটা মনে হচ্ছে বের হয়ে যাবে। চোখের পানি ধরে রাখতে পাচ্ছে না। টপটপ করে চোখের পানি মৌ এর সামনেই চোখ থেকে গড়িয়ে পড়লো।
– মৌ চিৎকার দিয়ে বললো ‘ এই যাচ্ছিস না কেন? এখন আমার সুখের ঘরে আগুন লাগাতে আসছিস? নাকি আমার মেয়েকে নিতে এতো প্ল্যান?
-চলবে””””
#সংসার
#পর্ব ;২১ এবং শেষ
তাসনিম রাইসা
-রাজ অসহায়ের মতো করুন দৃষ্টিতে মৌ দিকে তাকিয়ে আছে। রাজ কোনো কথা বলতে পারছে না।
-এদিকে মৌ রাজকে চর মারায় মনে মনে অনেক কষ্ট পাচ্ছে। এখন যেনো তার কাছে কেমন লাগছে।
-রিচি তার মাকে বলতেছে বাবাইকে কেনো মারলে.?
– মৌ কোনো কথা বলছে না।
-রিচি দৌড়ে গেলো বাবাইয়ের কাছে,বাবাই তুমি কষ্ট পেয়ো না। মা তোমাকে ইচ্ছে করে মারে নি।
-রাজ কষ্ট গুলো চেপে রিচিকে কোলে নিয়ে বলতেছে না বাবাই আমার আবার কষ্ট কীসের। এসব আমার প্রাপ্ত।
-এদিকে মৌ তাদের কথা বার্তা নির্বাক হয়ে শুনে যাচ্ছে।
– রাজ রিচির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মৌ বললো আর তোমাদের বিরক্ত করতে আসবো না। আরাল থেকে তোমাদের ভালোবেসে যাবো। ভালো থেকো তুমি।
-এ বলে রাজ মৌয়ের ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। আর পিছনে তাকাচ্ছে।
– মৌয়ের মন চাইছে রাজকে আটকাতে। কিন্তু মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না ।
-রাজ চলে গেলো। মৌ রিচিকে বুকে নিয়ে কান্না করছে। রিচি তার মাকে বললো মা আমার বাবাইকে নিয়ে আসো। আমি তোমাদের এক সাথে দেখতে চাই।
-রাজ বাড়িতে ফিরে এসে এসব নিয়ে চিন্তা করতে লাগলো। যদি আজ রাতের স্বপ্নের মতো আমার জীবনের অধ্যায় সত্যি হতো। এদিকে রাজের শরীরে অনেক জ্বর উঠতে লাগলো। অচেতন অবস্থায় রাজ শুধু মৌ ডেকে যাচ্ছে।
-রাজের বোন রিওি রাজকে বার বার ফোন করছে। কিন্তু কোনো সাড়া শব্দ নেই। রাজ ফোন রিসিভ করছে না। তাই সে তাড়াতাড়ি বাড়িতে চলে আসুন।
– এসে দেখলো……
-রাজ বিছানায় শুয়ে আছে। রিত্তি যখন রাজকে ডাকতে গিয়ে গায়ে হাত দিলো দেখে জ্বরে গাঁ পুড়ে যাচ্ছে।
-মৌ মনটা যেনো কেমন করছে। সারারাত ঘুমাতে পারেনি। তার সাথে ওমন ব্যবহার করা ঠিক হয়নি,এসব নিয়ে চিন্তা করতে লাগলো। কারণ সেও তো রাজকে অনেক ভালোবাসে। রাজতো তার ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয়েছিল তাহলে কেনো আমি এমন করলাম ভাবতে ভাবতে সকাল হয়ে গেছে। মৌ খেয়াল করলো তার ফোনটা বাজঁতেছে। অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসছে। কল রিসিভ করতেই বোজতে পারলো এটা রিওির করেছে। রিওি বলে উঠলো রাজ ভাইয়ের অনেক জ্বর। ভাইয়া অচেতন অবস্থায় শুধু আপনার নাম বলে যাচ্ছে। আপনি পারলে একবার আসুন। এই বলে ফোনটা কেটে দিলো।
-মৌ কথাটা শুনে আর স্থির হয়ে থাকতে পারলো না। কোনো রকম ফ্রেশ হয়ে তার মেয়েকে নিয়ে বের হয়ে গেলো। খুব সকালে এভাবে যাওয়াতে তার মেয়ে বিচলিত হয়ে মাকে প্রশ্ন করলো মা আমরা কোথায় যাচ্ছি? মৌ তার মেয়েকে বললো মা আমরা তোমার বাবাইয়ের কাছে যাচ্ছি। রিচি বললো মা আমরা কী বাবাকে নিয়ে আসবো.? হা মা আমরা তাকে নিয়ে আসবো।
– এদিকে রাজের বোন রাজের মাথায় পট্টি দেওয়াতে কিছুটা জ্বর কমে আসছে।
– মৌ কিছুক্ষণের মধ্যে রাজের বাসায় চলে আসলো। রাজের পাশে মৌ কান্না করছে। রিচি বাবাইকে বলছে, বাবাই তোমার কী হয়েছে? চিন্তা করো না আমরা তোমায় নিতে আসছি।
-রাজ মৌ ও রিচিকে দেখে অবাক হয়ে গেছে। কারণ তাদের তো এখানে আসার কথা না। রাজ মৌ বলতেছে তোমরা এখানে.? আমি তো তোমাদের অনেক বিরক্ত করি। তাইতো কথা দিয়েছি আর বিরক্ত করবো না তোমাদের।
– মৌ রাজকে বলছে, প্লিজ এমন করে বলো না। আমি জেনে না জেনে তোমায় অনেক কষ্ট দিয়েছি। যা একজন আর্দশ্য স্ত্রী হিসেবে আমার করা ঠিক হয়নি। এক্সিডেন্টের পর আমি নিজেকে হাসপাতালে আবিষ্কার করি। এজন্য মনে মনে তোমাকে দোষারোপ করতে থাকি। আমি তোমার থেকে নিজেকে অনেক দূরত্বে রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তোমার ভালোবাসা আমাকে তোমার কাছে নিয়ে আসছে।
জানো প্রতিটা রাত তোমার জন্য আমার হৃদয় কেঁদেছে। যখন তুমি আমায় পেতে আমার কাছে আসছো, আমি তোমাকে নানাভাবে অপমান করে তাড়িয়ে দিছি। আজ আমি বুঝতে পারছি তোমাকে এভাবে তাড়িয়ে দেওয়া উচিত ছিল না। তাইতো তোমার কাছে ফিরে এসেছি। বড্ড ভালোবাসি তোমায়।
-রাজের চোখ দিয়ে পানি পড়ছিল মৌ কথাগুলো শুনে। মৌকে বলছে ভুল তোমার নয়। আমিই সেইদিন ভুল করে ছিলাম।তোমাকে বোঝতে পারি নি। কালসাপিনী কে পাওয়ার জন্য তোমাকে কষ্ট দিয়েছি। ওর জন্য তোমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিই নি। তাইতো আমার করুন অবস্থা। দুই হাত তুলে মৌয়ের কাছে ক্ষমা চাচ্ছে।
– মৌ রাজের হাত দুটো ধরে বললো কি বলছো এসব। আমাদের মাঝে যা হয়েছে তা আল্লাহ তায়ালা আমাদের ভালোর জন্যই করেছেন। এই বলে রাজকে জড়িয়ে ধরলো। রিত্তি ও রিচি দুজনেই খুশিতে আত্মহারা। রিচিও তার বাবাইকে জড়িয়ে ধরলো।
– রাজ বললো তোমরা আমার একেকটা কলিজা, ভালোবাসি তোমাদের। রাজ মৌকে বলতেছে আমরা আবার সংসার করবো☺
-মৌ বলছে হুম করবোই তো সংসার
-রিচি মাঝখান থেকে বলে উঠলো বাবাই মা আমাদের সংসারের নাম হবে সুখের সংসার😍😍
-কথাটা শুনে সবাই হেসে দিলো
সমাপ্ত__