শুভ্রনীড়
পর্ব০৮
#Shamu_Choudhury
হাল্কা মৃদু বাতাসের সাথে শুভ্রার কেশগুলি দোল দোল দুলোনি খেলছে। শুভ্রা শ্রাবণের রুমের বারান্দার রেলিং ধরে বাহিরে তাকিয়ে আছে। বড্ড সামিহার কথা মনে হচ্ছে না জানি সে কোথায়? কেনই বা চলে গেল সে? চলে গেল কিন্তু ফিরে কেন আসলোনা?? তার কাছে সব থেকেও যেন সব নেই। এই সব ভাবতে ভাবতে সে নিচে ফুল বাগানে চলে গেল,,

_কয়েকটা ফুল তুলে দিবেন??
(শুভ্রা নিচে এসে দেখে আমান গাছগুলাতে পানি দিচ্ছে। ফুলের সৌন্দর্য দেখে সে নিজেকে আটকাতে পারেনা৷ তার পরেও সে জবাবের আশায় আমানের দিকে তাকিয়ে আছে।আমান ভাবেইনি তার ছায়াবিনী এখানে আসবে।সে তার থেকে চোখ ফিরিয়ে মুচকি হেসে বলল,,

__শুনেছি ফুল গাছে মানায়,ছায়াবিনী
হাতে মানায় না।
শুভ্রা কিছু বললো না, সে মুগ্ধ হয়ে আমানের হাসি দেখলো আজ তার হাসিটা যেন অন্য রকম ছিল। ডান গালে তার টোল৷ ইশশ ছেলেদের ও টোল পরে??? তার টোল পরলে কি হত? আমান তাকে বলত,,
ছায়াবিনী তোমার গালের টোল দুইটা আমাকে ভীষণ ভাবে টানে। আর তখন শুভ্রা লজ্জায় কুকরিয়ে উঠত।
এসব ভেবেই সে হেসে উঠে। আমান গাছের দিকে তাকিয়ে ছিল যার কারণে সে বুঝতে পারেনা। আর শুভ্রা এও ভাবলো আমান ভূল বলেনি আসলেই তো গাছ থেকে তুলে ফেললে অযাথা নষ্ট হবে তার থেকে গাছেই থাক।
শুভ্রা কিছু না বলেই রুমের দিকে রওনা দেয়। নিজে রুমে ঢোকার আগেই আমান তাকে জড়িয়ে তার বুকে আগলে নেয়। আর বলে,,,
__ছায়াবিনী, এ ফুলের সুগন্ধ উদ্যানটিকে কেবল আনন্দময় স্থান করে তোলে। আমার মন কে নয়। আমার মনস্থানের আনন্দের খোরাক শুধু আমার ছায়াবিনী মেটাতে পারে বৈকি আর কেউ না। সেজন্য এ ফুল শুধু তোমারি জন্যে। ফুলকে গ্রহণ করবেনা?

(এভাবে হঠাৎ জড়িয়ে ধরার শুভ্রা ভয় পেয়ে যায়।পরে আমানের কথা শুনে লজ্জায় লজ্জাবতী হয়ে যায়। আমানের কথা গুলো যেন তার মনে ধরে উঠে, কি বলবে বুঝতে পারেনা। সে শুধু ফুলটা নিয়ে নেয়। আমান তার লজ্জার আভা বুঝতে পেরে কিচেনে চলে যায় আর ভাবে, তার ছায়াবিনী এত লজ্জাবতী কেন? কোথায় সে নিজেথেকে তাকে রোমান্স শিখাবে তা না। নিজে তো রোমান্স পারেইনা বউটা তো নাই ই। পরে ভাবে সে শ্রাবণ এর থেকে শিখে নিবে এই ভাবতে ভাবতে কিচেনে যায়___

_____অপরদিকে,,,,
সামিহা লোকটিকে ভয় দেখিয়ে চলে আস্তে লাগলে লোকটি সামিহাকে ক্লোরোফর্মের রুমাল শুকিয়ে অজ্ঞান করে সুইসাইড হাউজের ভিতর নিয়ে যায়।
সামিহার জ্ঞান ফিরলে দেখে সে সুইসাইড রুম টার ভিতর পরে আছে। সে আগে এখানে অনেকবার এসেছে কিন্তু ভিতরে আসার সাহস সে করেনি৷ সামনে পরে থাকা মাথার খুলি দেখে তার হৃৎপিন্ড লাফিয়ে উঠে। সে এসব দেখায় দক্ষ হলেও এতদূর পর্যন্ত ভেবে দেখেনি সে শুধু লাশ গুম করতো। হাড়গুলো কে কাছে থেকে দেখেনি তাও একটা না হবে শ-খানেক।এত গুলো একসাথে দেখেই সে ভয় পেয়ে ঘাবড়ে যায়৷ তাকে ঘাবড়াতে দেখে পাশে টুলে বসে থাকা ইউভী ডেভিল স্মাইল দিয়ে বলে,,,
__হোয়াট হ্যাপেন্ড,বেইবি??

(হঠাৎ কারো কন্ঠে সে এমন ভয় পেয়ে চিৎকার করে উঠে, উচ্চস্বরে ইউভী আবার বলে উঠে)
_ভয় পেয়োনা জান এইগুলা সব লাশকে তো তুমি এখানে এনে তোমার প্রধান কে দিয়েছো।এখন সব এক জায়গায় দেখে ভয় কেন পাচ্ছো বলো??

__ আমার যা বলার আমি প্রধান কেই বলব তোমার এত সাহস যে তুমি কি আমানের বাসায় যাও???তোমার এত সাহস কিভাবে হলো? আর তুমি অই জায়গার খোঁজ কিভাবে পেলে?(সামিহা বলে উঠল)

__তোর সাহস দেখে অবাক হচ্ছি। তুই খোঁজা দিতে দিতে উধাঁও আর আমাকে বলতেছিস?? এই বলে ইউভী তার হাতে থাকা ছুরি সামিহার কাটা যায়গায় আবার চালিয়ে দেয়।

(পরপর তিনবার লাগায় সামিহা অনেক জোরে আর্তনাদ করে উঠে, পাশ থেকে রাগী কন্ঠে তাদের প্রধান বলে উঠে)
_ওকে ছেড়ে দে ভী(ইউভী),, তুই মনে হয় ভুলে যাচ্ছিস আমার কাছে তোর থেকে অই বেশি আপন আমার রক্ত তার শরীরে আছে।
আর বেটি তুই তাকে জানিয়ে দেসনি কেন? আমি বলেছিলাম তার জন্য অন্য গুপ্তচর খুজিঁ কিন্তু তুই বলেছিলি সে কাজ তুই নিজে করতে পারবি? তাহলে???

__আসলে প্রধান শ্রাবণ খুব চালাক। এই ইউভী ওখানে গিয়েছিল সে শুভ্রা কে বিয়ে করতে চায় তাই আমি চলে আসি এখানে আর তাছাড়া আমার কাছে কোন পথ ছিলোনা তাই খবর পাঠাতে পারিনি। মাফ করবেন।

প্রধান সামিহাকে জানায় ইউভী তার সাথেই ছিল সে কোথাও যায়নি।এইটা হয়ত শ্রাবণ দের কোন পরিকল্পনা।

(ইউভী সামিহাকে ঢাক্কা দিয়ে চলে যায়, আর ভাবে সামিহা আগে এসেছিল তাই সে আপন আর আমি এতকাজ করে দিচ্ছি এমন কি নিজের আপনজন দের মেরে ফেললাম আর এই ফল পেলাম৷ তোদের সবাই কে তুরী মেরে মেরে ফেলতে পারি কিন্তু মারবোনা কারণ তোদের মারলে আমার স্বার্থ হাসিল হবে না এই বলে ইউভী সুইসাইড হাউজ থেকে বেরিয়ে চলে যায়।

সে বেড়িয়ে গেলে তাদের প্রধান সামিহাকে বলে,,
_শোন বেটি,, ভী তোর পথের কাটা। তার থেকে আমাদের কার্য হাসিল হলেই তাকে মেরে ফেলবি। একদম বাচিঁয়ে রাখা যাবেনা তাকে
_আমি যে তাকে মারতে পারবোনা প্রধান,,
শত হলেও তাকে ভালোবাসি আমি।(সামিহা করুণ চোখে তার দিকে তাকিয়ে বলে)

_কি বলতে চাচ্ছিস তুই? এত দূর এসে নিজের স্বপ্ন কে বলি দিবি?? এইটা আমি তোর থেকে আশা করিনি(ক্রোধে প্রধান বলে)

_প্রধান,মার্জনা করবেন আমি বলেছি তাকে আমি মারতে পারবোনা,কিন্তু তাকে তো অন্যের সাহায্যে মারতে পারবো?? এইবার আমাকে অনুমতি দিন সেখানে আমাকে ফিরতে হবে জানতে হবে তারা কি পদক্ষেপ নিচ্ছে। এই বলে সামিহা রওনা দেয় শ্রাবণ দের উদ্দেশ্য,,,
____
অপরদিকে

___আমান এই নে ফুটেজ আগের টার প্রব্লেম হয়েছিল আমি ঠিক করে এনেছি। চালিয়ে দেখ কি দেখা যায়।

(সিসিটিভি ফুটেজ এ দেখায় খুনির শুধু পা উঠেছে খুনি এতদুর থেকে আলভী রাহমান কে ঝুলিয়েছিল যে সেখানে সাধারণ মানুষ দের উঠা অসম্ভম। সে আরো খুনের ফুটেজ দেখে সব গুলাতেই তাই। আলভী রাহমানের ফুটেজ আরেকবার দেখার সময় আমান খেয়াল করে খুনির পায়ের এক সাইড দেখা যাচ্ছে। আমান তা দেখে স্তব্ধ হয়ে যায়,, সে বার বার ফুটেজ টা দেখে সে ভূল দেখছেনা তো??? এক সময় আমান ডুকরে কেদেঁ উঠে। শ্রাবণ বুঝে উঠতে পারেনা আমান হঠাৎ এই রকম কেন করতেছে___

চলবে???

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here