মেঘের_আড়ালে_মেঘ”৩০”
#জেরিন_আক্তার_নিপা

ইরফান অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হবার সময় তার নেভি ব্লু শার্টটা খুঁজে পাচ্ছে না। আলমারির সব শার্ট এক এক করে বিছানায় ছুঁড়ে ফেলছে।

“কোথায় রাখলাম শার্টটা? এখানেই তো থাকার কথা।”

ইরফান যখন শার্ট খুঁজতে খুঁজতে ঘর এলোমেলো করতে ব্যস্ত তখনই মেহরীন ঘরে আসে। বিছানার দিকে নজর গেলে তার চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। সে ছুটে এসে জিজ্ঞেস করে,

“কী হয়েছে? ঘর এলোমেলো করছেন কেন? কিছু খুঁজছেন? কী খুঁজছেন আমাকে বলুন। আমি বের করে দিচ্ছি।”

ইরফান মেহরীনের কথা শুনে বেডের দিকে আর আলমারির অবস্থা দেখে লজ্জায় পড়ে গেল। ঠিক আয়ামের মত একটা কাপড় খুঁজতে গিয়ে পুরো ঘরের চেহারা পাল্টে ফেলেছে সে। লজ্জিত কন্ঠে ইরফান বলল,

“আমার নেভিব্লু শার্টটা খুঁজছিলাম।”

কথাটা শুনে মেহরীন কিছুটা বিরক্ত হলো। মানুষটা ছোট বাচ্চা নাকি? একটা শার্ট খুঁজতে গিয়ে পুরো আলমারি অগোছালো করে রেখেছে। কপট রাগী কন্ঠে মেহরীন বলল,

“আপনার কি এই একটাই শার্ট আছে? এটা খুঁজে না পেলে অন্যটা পরে নিতেন। আর তা না হলে আমাকে ডাকতে পারতেন। পুরো ঘর এলোমেলো করে ফেলেছেন। আপনি তো আয়ামের মত বাচ্চা নন। এখনও একটা কাজ ঠিকঠাক ভাবে করতে পারেন না৷ আপনাকে নিয়ে যে কী করব।”

ইরফান বেচারা মাথা নিচু করে মেহরীনের ধমক শুনে যাচ্ছে। মেহরীন একজন বউয়ের মতই স্বামীর ভুলে তার সাথে রাগারাগি করছে।

“এই নিন আপনার শখের শার্ট। এটা পরে উদ্ধার করুন আমাকে।”

কথাটা বলে মেহরীন ইরফানের দিকে শার্ট এগিয়ে ধরলে এবার সে লক্ষ্য করল ইরফান খালি গায়ে আছে। এতক্ষণ কি সে খালি গায়েই ছিল! ইরফানের লোমশ যুক্ত বুকের দিকে চোখ গেলে মেহরীনের গাল লজ্জায় লাল হয়ে যায়। তার দুই কান দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ইরফানের হাতে শার্ট ধরিয়ে দিয়ে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে আসার সময় কার্পেটে হুঁচট খেয়ে পড়ে যেতে নিল মেহরীন। ইরফান পেছন থেকে এসে ওকে ধরে ফেলে। মেহরীন একটুর জন্য পড়তে পড়তে বেঁচে গেল। সে শক্ত করে চোখ বন্ধ করে রেখেছে। ইরফান এটা দেখে হাসল। তাকে সোজা করে দাঁড় করিয়ে দিয়ে অন্যদিকে ফিরে বলল,

“আপনি ঠিক আছেন?”

ফ্যাঁস ফ্যাঁসে গলায় মেহরীন বলল,

“হ্যাঁ, হ্যাঁ।”

কথাটা কোনরকমে বলেই সে দৌড়ে ইরফানের সামনে থেকে পালিয়ে এলো।
বাইরে এসে বুকে হাত রেখে জোরে জোরে দম নিচ্ছে সে।

“হতচ্ছাড়ি! আমাকে লজ্জায় না ফেললে তোর শান্তি লাগে না,না? উনার সামনে আমাকে অপদস্ত করে ভীষণ মজা পাস! দুই তিন বছরের বাচ্চা তুই? হাঁটতে শিখিসনি। উনার সামনে পড়ে যাস কেন?”

মেহরীন চোখ বুজে একটু আগের ঘটনা মনে করল। ইরফান তার কোমর জড়িয়ে ধরেছে। ইশশ! ইরফানের স্পর্শ অনুভব করেই তার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে।

“মানুষটা কী মনে করবে হ্যাঁ! এমনিতেই উনার চোখে কত বেহায়াপনা করেছি আমি। এতদিনে উনার মনে নিশ্চয়ই আমার চরিত্র সম্পর্কে প্রশ্ন উঠেছে। লাজলজ্জার মাথা চিবিয়ে খেয়েছি একেবারে। আজকের পর থেকে আমি আর উনার সামনেই যাব না।”

*অনন্ত কত ভাবেই মেহরীনের সাথে দেখা করার, কথা বলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোনোভাবেই সে মেহরীনের দেখা পায়নি। মেহরীন কথা দিয়েছে আজ তার সাথে দেখা করবে। অনন্ত ওর সাথে দেখা করার জন্যই আগেভাগে চলে এসেছে। মেহরীন তার জেদ না। সত্যিই সে তার মেহুকে ভীষণ ভালোবাসে। ইরফানের কাছে জেতার জন্য মেহুকে সে ফিরে পেতে চায়না। মেহুকে ছাড়া থাকা তার পক্ষে অসম্ভব বলেই তার জীবনে মেহুকে চায় সে।

“দূরে গেলেই হয়তো কাছের মানুষের মূল্য বোঝা যায়। আমিও বুঝতে পারছি, আমার জীবনে তোর মূল কতটা। আমি তোকে হারাতে পারব না মেহু। সত্যিই হারাতে পারব না।”

মেহরীন আজ কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছে। অনন্তর কথায় সে একবার ইরফানকে অবিশ্বাস করে ভুল করেছে। আজ সে অনন্তর কোন কথা শুনতে যাচ্ছে না। তার নিজের কথা অনন্তকে বলতে যাচ্ছে। ইরফান তার বর্তমান। অনন্ত এখন তার অতীত। অতীত ভুলে ভবিষ্যতে পা বাড়াতে চায় সে।
.
“তুই এসেছিস মেহু!”

অনন্ত দু’চোখ ভরে কতদিন পর আজ তার মেহুকে দেখছে। মেহুটা কি শুকিয়ে গেছে?

“কেমন আছিস তুই?”

“ভালো।”

অনন্তর মুখের দিকে তাকাতে পারছে না মেহরীন। অপরাধ বোধ তাকে ভেতরে ভেতরে দগ্ধ করছে।
অনন্তর কাছে এখনো সে-ই তার পৃথিবী। অথচ মেহরীন জীবনে এগিয়ে গেছে।

“আমি কেমন আছি জিজ্ঞেস করবি না?”

এবার সত্যিই কান্না পাচ্ছে তার। অনন্ত কেন তাকে অতটা ভালোবাসে? অনন্তর সামনে কাঁদতে চায়না সে। তাই কান্না চাপার চেষ্টা করে মেহু বলল,

“কেমন আছো তুমি?”

“তোকে ছাড়া কেমন থাকব বল। আমি তোকে ছাড়া ভালো থাকতে পারব! সে উপায় আছে? ঘুমের মধ্যে এসেও তুই আমাকে জ্বালাস। রাতের পর রাত তোর কথা ভেবে জেগে থাকি। খুব করে মন চাইলেও তোর সাথে কথা বলতে পারি না। তুই ফোন তুলিস না। জানি না তোর কী হয়েছে। কেন আমাকে ইগনোর করছিস। আগে আমি কোন ভুল করলে তুই অভিযোগের পাহাড় গড়ে তুলতি। রাগ করতি, অভিমান করতি। কিন্তু কখনও দূরে থাকতি না। এখন তো কোন অভিযোগ ছাড়াই দূরে থাকছিস।”

মেহরীন ছলছল চোখে অনন্তর মুখের দিকে চেয়ে আছে। যেকোনো সময় তার অশ্রু বাঁধ ভেঙে ঝরতে শুরু করবে। অনন্ত দীর্ঘশ্বাস ফেলল।

“তোকে ছাড়া একেকটা দিন যে কতটা দীর্ঘ তা শুধু আমিই জানি। আচ্ছা বাদ দে এসব কথা। তুই ভালো থাকলেই আমিও ভালো থাকব।”

অনন্তর চোখ লাল হয়ে উঠেছে। আজ কোন অভিনয় করছে না সে। মেহরীনের সামনে সত্যি সত্যিই মনের অবস্থা মেলে ধরেছে সে। মেহরীন ঝরঝরিয়ে কাঁদতে লাগল। অনন্তর হাত ধরে বলতে লাগল,

“তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও অনন্ত। আমি সত্যিই তোমার যোগ্য না। তোমাকে ঠকিয়েছি আমি। কিন্তু বিশ্বাস করো, আমি তোমাকে ঠকাতে চাইনি। মনকে আমি অনেক শাসন করেছি। তবুও আমি ব্যর্থ হয়েছি। মন আমার কোন বাধা মানেনি। সে অন্য একজনকে চাইতে শুরু করেছে। আমি অপরাধী। সেই জন্যই তোমার সামনে আসতাম না। তোমার সাথে কথা বলতাম না। কোন মুখে তোমার সামনে দাঁড়াব বলো? আমি যে তোমাকে ধোঁকা দিচ্ছি তা আমার থেকে ভালো কে জানত। আমি কখনও ভাবতেও পারিনি তোমার জায়গায় আমি অন্য কাউকে চাইব।”

মেহরীন কান্নার জন্য কথা বলতে পারছে না। অনন্ত স্তব্ধ হয়ে তার কথা শুনছে।

“মানুষটার সাথে থাকতে থাকতে কখন যে নিজের অজান্তে উনাকে ভালোবেসে ফেলেছি তা আমিও জানি না। মজার কথা কী জানো, আমি উনাকে ভালোবাসলেও উনি কখনও আমাকে গ্রহণ করবেন না। উনার কাছে তো উনার মৃত স্ত্রী হামনাই সব। তোমার কাছে আমি ফিরে আসতে পারতাম। কিন্তু মনে মনে অন্য একজনকে চেয়ে তোমার কাছে ফিরে, তোমাকে আমি ঠকাতে পারব না।”

মেহরীন অনন্তর হাত ধরে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। অনন্ত তাকে কিছু বলে সান্ত্বনা দিতে পারছে না। মেহুর কথা শুনে তার রাগ করা উচিত? উঁহু, আজ তার রাগ লাগছে না। বরং বুকের ভেতর ভেঙেচুরে যাচ্ছে। গলার কাছে কিছু একটা দলা পাকিয়ে উঠছে। কেমন অদ্ভুত ধরনের কষ্ট হচ্ছে। এমন কষ্ট তার কখনও হয়নি। এই অনুভূতির সাথে সে পরিচিত না।
খুব আগে একবার ঠিক এরকমই কষ্ট পেয়েছিল সে। তবে সেই কষ্টের সাথে এই কষ্টের কোন মিল নেই।

যখন সে ক্লাস নাইনে উঠে তখন তার বাবা মারা যায়। স্বাভাবিক মৃত্যু না। বাবা আত্মহত্যা করেন। কারণ তার বাবা একজন প্রকৃত ভদ্র লোক ছিলেন। যুগের সাথে তিনি সম্পূর্ণ অপরিচিত ছিলেন। সবাইকে নিজের মত সৎ ভাবতে ভালোবাসতেন।
বাবা অতি ধনী না হলেও সুখের অভাব ছিল না তাদের। বাবা, মা আর সে, সুখী পরিবার ছিল। হেসেখেলে তাদের তিনজনের জীবন কাটতে লাগল। অনন্তর বয়স তখন কত আর ছিল! পনেরো কিবা খুব বেশি হলে ষোলো। বাবা যে অফিসে কাজ করতেন সেখানের টাকার ভার উনার উপরই ছিল। ক্যাশিয়ার বলা যায় একপ্রকার। আসলে বাবাকে বিশ্বাস করেই উনার উপর দায়িত্ব দিতে ভরসা করতেন সবাই। সেবার বাবার কাছে রাখা টাকা থেকে এক লাখ টাকা হারিয়ে গেল। উঁহু বাবা টাকা হারায়নি। টাকাটা উনার ড্রয়ার থেকে চুরি গেছে। এই কথা বাবা জানলেও অফিসের কাউকে বিশ্বাস করাতে পারেননি তিনি। চুরির এই এক লাখ টাকা নিয়ে বাবার নামে মামলা হলো। পুলিশ এসে তার চোখের সামনে দিয়ে বাবাকে থানায় ধরে নিয়ে গেল। অনন্ত পুলিশের হাতে পায়ে ধরে কাকুতিমিনতি করেও বাবাকে রাখতে পারেনি। তিন দিন পর বাবার বন্ধু উনাকে ছাড়িয়ে আনেন। বাড়ি ফেরার পর বাবাকে দেখে অনন্ত দৌড়ে নিজের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে অনন্ত কেঁদেছিল। পুলিশ বাবাকে অনেক মেরেছে। বাবার সারা শরীরে, মুখে মারের দাগ। আঘাতে এক চোখ ফোলে বন্ধ হয়ে গেছে। বাবার সুন্দর মুখে আঘাতের দাগ কালচে হয়ে গেছে। বাবার এই অবস্থা দেখে মা যেন কেমন ঝিম মেরে গেছিল।
এতকিছুর পরও বাবা ওকে পাশে বসিয়ে দুপুরে ভাত খেলেন। খাওয়ার সময় বাবা কোনদিন কথা বলতেন না। সেদিন বলেছেন,

“বাবারে এই দুনিয়ায় সৎ মানুষের জায়গা নেই। চোর, বাটপার মানুষরাই এই সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচে। আমাদের মত মধ্যবিত্ত সৎ লোকেরা শত চেষ্টা করেও সম্মানের সাথে মাথা উঁচু করে জীবন কাটাতে পারে না। দেখ না, তোর বাবা চুরি না করার পরও মানুষ কেমন আমাকে চোর বানিয়ে দিল। বাবা অনন্ত, আমি কিন্তু সত্যিই টাকাটা চুরি করিনি। তুই তোর বাবাকে বিশ্বাস করিস তো?”

পনেরো বছরের অনন্ত সেদিন মুখে ভাত নিয়ে কান্না চাপার চেষ্টা করে বলেছিল,

“পৃথিবীর কেউ তোমাকে বিশ্বাস না করুক, আমি তোমাকে বিশ্বাস করি বাবা। তুমি চোর নও। তুমি চুরি করতে পারোই না। ওরা সবাই মিথ্যা বলছে। তুমি পৃথিবীর সবথেকে ভালো মানুষ।”

বাবা হয়তো তার থেকে এই কথাটাই শুনতে চাইছিলেন। তৃপ্তির হাসি হেসে বাবা তার কাঁধে হাত রেখে বলেছিলেন,

“বাবারে তুই তোর বাপের মত অতটাও সৎ হোসনা যে, কেউ তোর সততার সুযোগ নিতে পারে। এখন তুই অনেক ছোট। জীবন সম্পর্কে কোন অভিজ্ঞতাই নেই। বড় হলে তুই বুঝতে পারবি কেন তোর সাহসী বাবাটা ভীতু কাপুরুষের মতো একটা কাজ করেছে।”

সেইদিন সন্ধ্যায় ঘরের দরজা ভেঙে অনন্তর চোখের সামনে বাবাকে ফ্যানের সাথে ঝুলানো অবস্থা থেকে নামানো হয়েছে। অনন্তর কাছে সবকিছুই দুঃস্বপ্নের মতো লাগছিল। মনে হচ্ছিল সে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ভীষণ বাজে একটা স্বপ্ন দেখছে। ঘুম ভেঙে গেলে স্বপ্নটাও ভেঙে যাবে। আর সে তার হাসিখুশি বাবার মুখ দেখতে পাবে। কিন্তু না তার সেই দুঃস্বপ্ন কোনোদিনও ভাঙেনি। বাবা মারা যাওয়ার পর মা’ও বেঁচে থেকেও মরার মত হয়ে গেছে। বাবার যে বন্ধুটা বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে এসে অনন্তকে জড়িয়ে ধরে কাঁদল, এক সপ্তাহ পরই জানাজানি হলো টাকাটা ইনিই চুরি করেছেন। বাবার খুব কাছের মানুষ হওয়ার সুযোগ নিয়ে বাবার জীবনটাই নিয়ে নিলেন তিনি। বাবার মৃত্যুর কয়েক বছর পর অনন্ত জানতে পারে, বাবা জানতেন চুরি উনার বন্ধুই করেছেন। সব জেনেও বন্ধুকে সবার সামনে ছোট করতে চাননি তিনি। আসলে বাবার বিশ্বাসে আঘাত লাগার কারণেই বাবা নিজে থেকে কারো কাছে কিছু বলেননি। ভেবেছিলেন শেষ মুহুর্তে হলেও সত্যি স্বীকার করে বন্ধু উনাকে বাঁচিয়ে নেবেন।

আজ মেহুকে পুরোপুরি ভাবে হারিয়ে অনন্তর সেদিনের মতই কষ্ট হচ্ছে। হঠাৎ করে বাবার মুখটা ভীষণ মনে পড়ছে। পৃথিবীতে সবথেকে বেশি সে বাবাকেই বোধহয় ভালোবাসতো। অনেক বছর পর বাবার মতই সে মেহু নামের মেয়েটাকেও ভালোবাসতে শুরু করে। কিন্তু সেই ভালোবাসা কখনও প্রকাশ করেনি। প্রকাশ করলে যদি মেহুও বাবার মত তাকে ছেড়ে চলে যায়!
বাবার মত সৎ হয়নি সে। বাবার মত টাকাকে গুরুত্ব না দিয়ে ভুল করেনি। এই সমাজে চোর বাটপাররাই মাথা উঁচু করে বাঁচে। সে-ও এভাবেই বাঁচতে চেয়েছে। কই তবুও তো আজ তাকে কষ্ট পেতে হচ্ছে। মেহুও তো তাকে ঠকাল। তার কাছে এত এত টাকা থাকার পরও তো সে সুখ কিনতে পারল না। তাহলে মানুষ কেন এত টাকার পেছনে ছুটে?
মেহরীনকে ফেলে রেখেই অনন্ত হাঁটছে। আজ যেন জীবনের গন্তব্য হারিয়ে ফেলেছে সে। বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ভালোবাসার মানুষটাকে পেছনে ফেলে বৃষ্টির মধ্যে গন্তব্যহীন পথে হাঁটছে সে। মেহরীনও ভিজতে ভিজতে মায়াভরা দৃষ্টিতে অদ্ভুত মানুষটাকে দেখছে। যার রাগের সাথে তার ভালোই পরিচয়। কথায় কথায় হুটহাট অতিমাত্রায় রেগে যাওয়া মানুষটা আজ এত বড় সত্যের মুখোমুখি হয়েও একটুও রাগলো না। তাকে কিছুই বলল না। মানুষটা এতটা চাপা কেন? তার যে কষ্ট হচ্ছে এটা মেহুর থেকে ভালো আর কে জানবে? পৃথিবীতে কিছু কিছু মানুষ আছে যারা নিজের কষ্ট নিজের মধ্যে চেপে রাখতে পারদর্শী হয়। তাদের মধ্যে থেকে অনন্ত একজন।

চলবে___
বানান ভুল ক্ষমা করবেন।

গ্রুপ লিংক

https://www.facebook.com/groups/928548141001685/?ref=share

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here