“মায়ার_বাধঁন”পর্ব ৬

৬.★★★★
সন্ধ্যার সময় সায়ান আর আমার শশুর এসেছিলেন বাবার সাথে দেখা করতে।
সারাদিন বাবার সাথে সময় কাটানোর পর সন্ধ্যার পরেই উনাদের সাথে আমিও বাড়ি ফিরে এলাম।
কেটে গেছে আরো দুই সাপ্তাহ। এই দুই সাপ্তাহে অনেক কিছু পাল্টে গেছে।উনিও অনেকটা পাল্টে গেছেন।উনি আগের থেকে এখন অনেকটাই গম্ভীর হয়ে গেছেন।
আজ সানার আর উনার বিয়ে।
আমার মনটা আজ ভীষণ ছটফট করছে।এ এক অসহ্য যন্ত্রণা।
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে অতীতের ভাবনা থেকে ফিরে এলাম।কী দরকার
অতীত নিয়ে এত চিন্তা করার।তবে আমাদের অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।অতীতের খারাপ স্মৃতি না হয় বাদই দিলাম! সুন্দর একটা স্মৃতি কি দ্বিতীয় বার একইভাবে আনন্দিত করবে আপনাকে?না কখনো না!তাহলে এই খারাপ স্মৃতি মনে পুষে বর্তমানের সুন্দর সময়টা নষ্ট করার কোন মানেই হয় না।
একবার আল্লাহর দেয়া নেয়ামত সম্পর্কে ভাবুন না!ভেবে দেখুন না আপনার জীবনটা কেমন অস্বাভাবিক সুন্দর। হতাশা, unexpected crisis,unexpected incident এগুলা তো জীবনের একটা অংশ।তাহলে অতীতের দুঃখে কেনো বারবার কাঁদবেন?মনে করেন সময় নাই আপনার অতীত নিয়ে ভাবার!হ্যা এভাবেই ভাবেন আর আল্লাহর ইবাদতে মনোনিবেশ করুন দেখবেন আপনি কতটা সুখী।সব সময় নিজের সুখ-দুঃখের হিসেব না করে অপরের সুখ-দুঃখের হিসেব করুন!দেখবেন অনেকে আপনার থেকে আরো মানবেতর জীবন-যাপন করছে!এদিক থেকে আলহামদুলিল্লাহ আপনি অনেক ভালভাবে জীবন -যাপন করছেন।
আনমনে রুমে বসে এসবই ভাবছিলাম।
হঠাৎ আমার জা ‘রামিসা’ভাবি আমার পাশে এসে আমার কাঁধে হাত দিয়ে জিঙ্গেস করলেন,
-কী রে সাফা!কী এমন ভাবছিস!কখন থেকে তোকে ডাকছি সে দিকে তোর কোন খেয়াল আছে।
সানাকে নিয়ে ওরা বেড়িয়ে পড়েছে!যে কোন সময় ওরা চলে আসবে। আজকে তোর আর রান্না করার দরকার নাই শুধু সেমাইটা রান্না কর!তোর হাতের সেমাই তো জাস্ট অমৃত!
তাড়াতাড়ি যা না প্লিজ!বউ নিয়ে আসলে তো প্রথমে ওটা দিয়েই মিষ্টি
মুখ করাতে হবে।ভাবির কথা শুনে মুচকি হেসে রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ালাম!মনে মনে ভাবছি রামিসা ভাবির কথা!উনার মন মানসিকতা মুহূর্তেই বদলায়!এখন একটু ভাল তো একটু পর ভয়ানক খারাপ!আজকে সকাল থেকেই উনি রান্নার কাজে ব্যস্ত।অন্যান্য দিন তো মায়ের কারনে উনাকে না চাইতেও রান্নাঘরে আসতে হতো যদিও প্রায় সব রান্না আমিই করতাম। তবে আজ তো মা মন খারাপ করে বসে আছেন।এ বিয়েতে সবাই খুশী হলেও উনি মন থেকে খুশী নয়!
আজ কী জন্য যে ভাবি আজ সব রান্না করছেন!উনিই ভাল জানেন।যদিও এ বিয়েতে তেমন কাউকে দাওয়াত দেয়া হয় নি কিছু নিকটাত্বীয় ছাড়া!মলিন মুখে সেমাইটা রান্না শেষ করলাম।ভাবি আমার মলিন মুখ দেখে মনের ব্যাথাটা মনে হয় কিছুটা আচঁ করতে পেরেছেন।তাই হঠাৎ করে কিছুটা তেজ নিয়ে বলে উঠলেন,
-আজ অনেক দিন পর বাড়িতে একটা আনন্দমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হচ্ছে!তুই মন খারাপ করে এ আনন্দটা মাটি করিস না প্লিজ!আমি ভাবির দিকে অবাক হয়ে তাঁকিয়ে আছি।একটু আগে উনার টোন
কী রকম ছিলো আর এখন উনার টোনে এত পরিবর্তন।হায় রে মানুষ! মিনিটে মিনিটে মানুষ পরিবর্তন হয়।ভাবি যে কোন কাজ কিংবা উদ্দেশ্য হাসিল করার সময় একেবারে মোমের মত গলে যেতে পারেন!যেই
কাজটা হয়ে গেলো ওমনি উনি স্ব-রুপে ফিরে গেলেন।


চলবে ইনশাআল্লাহ,,
লেখনিতে-জান্নাত_রুবি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here