#ভাগ্যবতী
#লাবিবা_তানহা_এলিজা
#পর্ব_১৬

রেস্টুরেন্টের মেইন শেইফের সাথে কথা বলছে শুভ্র। রেস্টুরেন্ট টি অন্য প্লেসে শিফট করায় আরো চারজন শেইফ লাগবে তার। এরমধ্যে ওয়েইটার এসে বললো, ‘স্যার আপনার ব্রেকফাস্ট দেওয়া হয়েছে। ‘
‘ আউটডোরে দাও। ‘ বলেই আবার কথা বলতে শুরু করলো। কথা শেষ করে এসে টেবিলে বসে। আকাশটা আজো মেঘলা। রোদের ছিটেফোঁটা নেই। মাথার উপর বড় একটা ছাতা। ঠান্ডা একটা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। এমন পরিবেশে কারো মন হয়ে উঠে চঞ্চল কারো মনে নেমে আসে বিষাদ। শুভ্রর কোনটাই ফিল হচ্ছে না। সে দিব্যি ভালো আছে। বেশ ফুরফুরা লাগছে। ফ্রক দিয়ে মুখে ওমলেট পুরে নিয়ে দূরে চোখ মেলে। আবার মুখে পুরে চারপাশে চোখ বুলাতেই কর্ণারের টেবিলটায় চোখ আটকে যায়। মাথা নীচু করে সুপের বাটিতে চামচ নাড়ছে একটি মেয়ে। মাথায় সাদা শিপনের ওড়না দেওয়া। ড্রেসটাও সাদা। মেয়েটার মুখের অনেক টাই দেখা যাচ্ছে। গায়ের রং এর সাথে ড্রেসের রং মিলেমিশে একাকার। কপালের উপর লালচে চুল গুলো যেনো আরো সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে। চোখ নামিয়ে নিয়ে খেতে থাকে শুভ্র। খাওয়া শেষ করে ম্যানেজারকে পরে আসবে জানিয়ে দেয়। বের হতে যাবে তখন ই একজন ওয়েইটার সালাম দিয়ে কথা বলার জন্য এগিয়ে আসে। শুভ্র মুচকি হেসে সালামের জবাব নেয়। ওয়েইটার বলে, ‘ স্যার একটা কথা বলার অনুমতি দিলে বলতে পারি। ‘
‘ বলুন। ‘
‘ আমাদের রেস্টুরেন্টে চাইনিজ এবং ইটালিয়ান ফুড এভেইলেভেল। যেহেতু আমরা বাঙালি সেহেতু আমরা কি বাঙালী এক দুই টা আইটেম রাখতে পারি স্যার? ‘
‘ ব্যপারটা কি বলুন তো? আজকাল রেস্টুরেন্টে আসে মানুষ চাইনিজ ইতালিয়ান খাবারের জন্যই। বাঙালী খাবার গুলোর জন্য তো নরমাল হোটেল গুলো আছেই।’
‘ কেউ কেউ বাঙালী খাবার রাখার জন্যও সাজেস্ট করে স্যার। স্পেশালী খিচুড়ি। ‘
‘ খিচুড়ি? সিরিয়াসলি? নো নিড। ‘
ওয়েইটার মাথা নাড়ায়। শুভ্র চলে যায়। সারাদিন অফিসে করে সন্ধ্যার দিকে আবার রেস্টুরেন্টে আসে। একজন আর্কিটেক্ট এর সাথে মিটিং রয়েছে। নয়টা অব্দি মিটিং চলে। ডিনারের টাইম হওয়ায় সেখানেই ডিনার করে। আর্কিটেক্ট কে বিদায় দিয়ে আউটডোরের দিকে আসে। বিকাল দিকে বৃষ্টি হয়েছে। ওয়েদার এখন ঠান্ডা । ডিনার টাইমে অনেকেই এসে ডিনার করছে। কিছুটা ভিড় আউটডোরেও দেখা যাচ্ছে। সকালে দেখা মেয়েটাকে ঐ একই টেবিলে এখনো বসা দেখে শুভ্র অবাক হয়। একজন ওয়েইটারকে ডেকে বলে, ‘ ঐ হুয়াইট গার্ল কে আমি সকালে দেখেছি। এখনো দেখছি। এখানে কি এভেইলেবল? ডু ইউ নো হিম? ‘
‘ স্যার উনি আমাদের রেগুলার কাস্টমার। কখনো কখনো এখানে ফুল ডে স্টে করেন। আজো করছেন।’
‘ ওহ আই সি। স্ট্রেঞ্জ। ফুল ডে কিভাবে স্ট্রে করেন? ‘
‘ ইয়েস স্যার। মাঝে মাঝে উনি বাঙালী ফুড রাখার জন্যও বলেন। আমি এখানে আসার পর থেকেই তাকে দেখছি। ‘
‘ বাঙালী ফুড! খিচুড়ি? ‘
‘ ইয়েস স্যার। খিচুড়ি উইথ শুকনো মরিচ, বেগুন ভাজা। ‘
শুভ্র অবাক হয় সাথে কিউরিসিটিও ফিল করে। দূর থেকেই তাকিয়ে দেখতে থাকে। মেয়েটার সু জোড়া পর্যন্ত হুয়াইট। খুব ইন্টারেস্টিং লাগছে মেয়েটাকে। দেখতে দেখতেই মেয়েটা উঠে দাঁড়ায়। ঝিনুকের মতো হুয়াইট ব্যাগটা কাধে ঝুলিয়ে ওড়নাটা বামপাশে টেনে ঠিক করে নেয়। মাথার কাপড় টা আরেকটু টেনে সামনের দিক নিয়ে আসে। শুভ্র যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সেদিক দিয়েই বেরোনোর রাস্তা। মেয়েটা যখন শুভ্রের সামনে এসে যায় তখন শুভ্রের চোখ কপালে। পা থেকে মাথা পর্যন্ত পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে স্ক্যান করে। সে যদি ভুল না করে থাকে তাহলে এই হুয়াইট গার্লকে কিছুদিন আগে দেখেছে সে। রাস্তায় সাদা জামায় ভেজা শরীরে হাটতে। বৃষ্টিতে ভিজে তার দেহের প্রত্যেক টি ভাজ দৃশ্যমান হয়ে উঠেছিলো সেদিন। দু চোখকে সংযত না করতে পেরে নিজের ছাতাটা ছুড়ে দিয়েছিলো যাতে শরীর না ঢাকতে পারলেও ছাতার আড়ালে মুখটা অন্তত ঢাকে। মানুষের হাতে হাতে স্মার্ট ফোনের ছড়াছড়ি। কখন কে কোনদিক থেকে ভিডিও করে নেট দুনিয়া ছড়িয়ে দিবে বলা যায়না। টাইটেলে হয়তো লিখে দিবে ‘ঢাকার রাস্তায় দেখা মেললো বৃষ্টিস্নাত শরীরের এক সুন্দরী হট রমনীর।’ মুখটা ঢাকা পড়লে সম্মানটা বেঁচে যেতেও পারে। মেয়েরা এমন উদ্ভট কাজগুলো কেনো যে বুঝা যায় না। কেউ জেনে বুঝেই করে আবার কেউ না জেনেই করে। আজকাল জেনে বুঝেই বেশী করা হয়।

ডিনার শেষে রুকু লাইব্রেরীতে ঢুকেছে। কোমড়ে হাত দিয়ে মনোযোগ দিয়ে বইয়ের নাম গুলো পরখ করে যাচ্ছে। যেটা দেখে মনে হচ্ছে পড়া হয়নি সেটাই তুলে নিয়ে একজায়গা জড়ো করে রাখছে। একে একে দশটা বই তুলে নিয়েছে সে। আগে এগুলো পড়া হোক তারপর নাহয় আবার আসা যাবে। বইগুলো প্যাকেট করতে বলে পেমেন্ট করে খাতায় সাইন করে । কেউ একজন কানের কাছে এসে নিজের নামটা উচ্চারণ করে, জান্নাতুল ফেরদাউস রুকু। চকিতে তাকায় রুকু। পাশেই একটা ছেলে দাঁড়িয়ে তার সাইন করা খাতায় তাকিয়ে রুকু নাম আওড়াচ্ছে। রুকুকে ঐভাবে তাকিয়ে দেখে একটু সরে দাঁড়িয়ে ছেলেটি হাত বাড়িয়ে দেয়।
‘ হাই। আ’ম শুভ্র চৌধুরী। ‘
‘ হ্যালো।’ বলেই রুকু অন্যদিকে তাকায়। শুভ্র মুচকি মুচকি হাসছে। তার কেনো যেনো হাসি পাচ্ছে। সেদিনের হুয়াইট গার্ল আর আজকের হোয়াইট গার্লের মধ্যে কতোটা পার্থক্য তা লক্ষ্য করেই হয়তো হাসি পাচ্ছে। শুভ্র এবার কাছ থেকে রুকুকে খেয়াল করছে। মেয়েটা পুরোটাই হুয়াইট। দূর থেকে চুলগুলো লালচে লাগলেও এখন মনে হচ্ছে কালো লালচে। চিকন লম্বা একজোড়া ভ্রু। ভরাট ঠোঁট ‌। চেহারায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে নাকের উপর একটি তিল। রুকু যেদিকে তাকিয়ে আছে সেদিকেই গিয়ে দাঁড়ায় শুভ্র। রুকুর সাথে চোখে চোখ পড়ে যায়। শুভ্রের হাসির রেখা প্রশস্ত হয়। রুকু অন্যদিকে তাকায় । শুভ্র বলে,
‘এদিকে তাকান মিস। ‘
রুকু তাকায়। বিনয়ের সাথে জিজ্ঞাসা করে ,
‘ কিছু বলবেন? ‘
শুভ্র মাথা নাড়িয়ে না করে দু পকেটে হাত রেখে মুচকি মুচকি হাসছে। রুকু ভ্রু কুঁচকে ফেলে।
‘ অনেকক্ষণ থেকে দেখছি আপনি মুচকি মুচকি হাসছেন। কোন সমস্যা? ‘
শুভ্র হো হো করে হেসে ফেলে। মুখে হাত রেখে হাসি থামানোর চেষ্টা করছে অনবরত। অচেনা একটি মেয়েকে বিব্রত করতে দারুন লাগছে তার কাছে। তার উপর আবার সুন্দরী। হোক কোন বাড়ির মেয়ে বউ বা অন্য জাতের সুন্দরী তো। রুকু বিরক্তি নিয়ে বলে, যত্তসব। বইগুলো নিয়ে সিড়ির দিকে হাটা দেয়। শুভ্র ডেকে বলে, ‘ হেল্প লাগবে? চাইলে রিকশাও ডেকে দিতে পারি। ‘ রুকু রাগ চোখে একবার তাকিয়ে আবার হাটা দেয়। শুভ্র হাসতে হাসতে বলে, ‘ ম্যাম আবার আসবেন। ‘ কথাটি রুকু অব্দি পৌঁছায় না। তার আগেই সে গাড়িতে উঠে বসেছে।

২০.
সাদ বাড়ি ফিরেছে দু ঘন্টা হলো। বেচারা এসেই বিছানায় পড়ে ভুস ভুস করে ঘুমুচ্ছে। গায়ের শার্ট ও খুলে নি। সাতটা রাত চোখে ঘুম নেই। মমতা দেখেই যেনো কেঁদে দিবে ভাব। যখনি ক্যাম্পিং এ যাবে তখনি বিদ্ধস্ত চেহারা নিয়ে ফিরবে । প্রথম দিকে মমতা আপত্তি করলেও এখন মেনে নিয়েছে। ছেলে বাবার মতো বড় ডাক্তার হতে চায়। সেই বা তার কাজে আটকায় কিভাবে। প্রচন্ড মাথা ব্যথা নিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়েছে সাদ। পূরবীর কানে এই খবরটি আসতেই দৌড় দিয়েছে উপর তলার দিকে। মাঝপথে মমতা ডাক দিতেই থেমে যায় পূরবী। মমতা রেগে বলে, ‘এভাবে দৌড়ে কোথায় যাচ্ছ ? পরে গিয়ে দাত মুখ ভাঙলে কি হবে? ‘ পূরবী কি উত্তর দিবে বুঝতে পারেনা। সে কি বলবে মি. ডাক্তারের কাছে যাচ্ছে? যদি বলে কেনো যাবে? মাত্র ফিরলো এখন ওকে ডিস্টার্ব করোনা তখন? পূরবীকে অবাক করে দিয়ে মমতা বলল, ‘ সাদ এসেছে। ওর রুমটা গোছানো হয়নি।একটু গিয়েছে গুছিয়ে দাওতো। ওর ঘুমের যেনো ডিস্টার্ব না হয়। ‘ পূরবী মাথা দুলিয়ে স্বাভাবিক ভাবে হাটা দেয়। কয়েকপা ফেলে আবার ফিরে এসে বলে, ‘বড়মা মি. ডাক্তার তো আমি কিছু ধরলেই রেগে যায়। যেটাতে হাত দেয় সেটাতেই স্প্রে করে তাহলে কিভাবে গুছাবো? ‘
‘ সাদ এখন ঘুমিয়ে আছে। দেখবে কে? ‘
‘ তাও ঠিক। আচ্ছা যাচ্ছি। ‘
দরজার সামনে এসে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে বসে, মি. ডাক্তার এসেছো তো কি হয়েছে? আমিই বা কেনো তার কাছে ছুটছি? প্রশ্নকে একপাশে রেখে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে পূরবী। বিছানায় সাদকে উবু হয়ে ঘুমুতে দেখে। ফরমাল ড্রেস না ছেড়েই শুয়ে আছে। সাদা শার্ট টা বডিতে খাপে খাপ লেগে আছে। যেনো এখনি ফেটে যাবে। শুধু মুখটা শুকিয়ে গেছে। চোখের নিচে ডার্কসার্কেল পড়েছে। পূরবীর মুখ থেকে একটি শব্দ বেরিয়ে আসে, ‘ আহারে….’। ফ্লোরে মোজা পড়ে আছে। লাগেজটাও পড়ে আছে। দুটো ব্যাগ ও পড়ে আছে। পূরবী চটপট সেগুলোকে তুলে নেয়। সঠিক জায়গায় রেখে দেয় । বিছানা তেও ফোন ,চার্জার ,ওয়ালেট, গলাবন্ধনী, দুইটা শপিং ব্যাগ ও আছে। পূরবী সাবধানে সেগুলো কে একসাথে গুছিয়ে নেয় যাতে সাদের ঘুম না ভেঙে যায়। ব্যাগে হাত দিতেই দেখে ভেতরে পলি খচ খচ করছে। পলি বের করতেই খুশিতে চোখ দুটো চক চক করে উঠে। ঝটপট বাধন খুলে একগাদা টাটকা চা পাতা দেখতে পায়। আজ সকালেই মনে হয় তুলা হয়েছে এগুলো। নুইয়ে যায়নি এখনো। আরেকটা ব্যাগের দিকে চোখ পড়তেই ঘুরে না গিয়ে সাদের উপর দিয়ে ব্যাগ নেওয়ার জন্য হাত দেয়। ব্যাগটা ধরতেও পারেনি এরমধ্যেই একটা অসম্ভাবনাময় ঘটনা ঘটে যায়। সাদ ঘুমের ঘুরে পূরবীর কোমড় জড়িয়ে ধরে। পূরবী সরাসরি সাদের বুকের উপর পড়ে । হুটহাট কি হলো বুঝতে কিছুটা সময় লাগে পূরবীর। সাথে সাথেই উঠার জন্য চেষ্টা করে। ধাক্কা দিয়ে হাত ছাড়িয়ে উঠে দাঁড়ায়। চোখ বড় বড় হয়ে গেছে পূরবীর। সাদ ও ধাক্কা খেয়ে চোখ মেলে তাকিয়েছে। পূরবীকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ঘুমু ঘুমু ভয়েজে দেয় এক ধমক,’ এই বজ্জাত মেয়ে, কি করছো তুমি এখানে? চোখ দিয়ে গিলে ফেলবে নাকি আমাকে? আমাকে দেখো নি কখনো? ঘুমের তেরটা বাজিয়ে দিলো। ‘
ধমক খেয়ে পূরবী চোখ বন্ধ করে ফেলে। আল্লাহ আমাকে বাচিয়ে নিলে। তোমার দরবারে লাখ লাখ শুকরিয়া। মি. ডাক্তার তাহলে ঘুমের ভিতর ছিলো। কিছু মনে নেই । নয়তো যে কখনো মুখটাই দেখাতে পারতাম না। তবে আপনার বউ লাগবে মি. ডাক্তার। সপ্নের মাঝে আপনি দুষ্টুমি করেন এটা আমি জেনে গেছি। আর কখনো আপনার ঘুমের সময় আমি আসবোনা। বিরবির করে বলেই উল্টো ঘুরে দেয় দৌড়। দরজায় পা বেজে ধপাস করে পড়ে যায়। দৌড়ের সময় তো চোখ খুলতেই ভুলে গিয়েছিলো। যার দরুন এই এক্সিডেন্ট। ‘ওমা কি ব্যাথা’ বলে চোখ খুলে পূরবী। সাদের দিকে তাকায় চোখ ভরা জল নিয়ে। সাদ শোয়া থেকে উঠে বসেছে। পূরবী যে ব্যথা পেয়েছে এতে তার কোন হেলদোল নেই। পূরবী কান্না মাখা স্বরে বলে, ‘ মি. ডাক্তার আমি ব্যাথা পেয়েছি। ‘
‘আমি দেখতে পাচ্ছি ‘। সাদ এমন উত্তর দিবে জানা ছিলোনা পূরবীর। উঠে না আসুক বলতেতো পারতো পূরবী আস্তে আস্তে উঠো। অথবা বজ্জাত মেয়ে বলে বকাও দিতে পারতো। জমিলা পূরবীকে দেখে তাড়াহুড়ো করে আসে। ‘ ওমা কেমনে পড়লা? দেখি দেখি। আল্লাহ ব্যথা পাইছো কোমড়ে। উঠো দেখি। ‘ পূরবীকে টেনে দাড় করায়। ‘ ও ছোট সাহেব মেয়েটারে তুলবেননা আপনে? কেদে দিছে কেমন করে। আহারে. ..’ সাদ কোন উত্তর দেয়না। পূরবীকে নিয়ে যখন যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়েছে তখন বলে , ‘জমিলা ওকে এখানে রেখে যাও । আমি দেখছি কোথায় ব্যথা পেয়েছে। ‘
জমিলা পূরবীকে এনে ডিভানে বসায়। পূরবী কোমড়ে হাত দিয়ে দাতে দাতে চেপে ধরে রাখে। ব্যথায় যেনো ছিড়ে যাচ্ছে। সাদ জমিলাকে আইস ব্যাগ আনতে বলে। জমিলা কিচেনে চলে যায়। সাদ ধীরে ধীরে উঠে এসে পূরবীর সামনে হাটু মোড়ে বসে। নিজের মাথায় একবার হাত বুলায়। পূরবীর দিকে তাকিয়ে বলে,
‘ আম ফিলিং বেড। আমাকে জাগানোটাকি খুব দরকার ছিলো? ‘
‘ আমি পাষাণ। যান ঘুমান। ‘
‘ এভাবে দৌড়াও কেনো তুমি? এখন ব্যথাটা কে পেলো? আমি নাকি তুমি? ‘
‘ ব্যাথা শেষ। ‘
‘ হাতে পায়ে বড় হয়েছো কিন্তু ছেলেমানুষী এখনো ছাড়েনি। দেখি দেখতে দাও কোথায় ব্যথা? ‘
‘ না দেবো না। জমিলা খালা দেখবে। ‘
‘ জমিলা খালা কি ডাক্তার? ‘
‘ না। আপনি দেখবেন না। ‘
‘ ওকে। ‘
জমিলা এলে সাদ জমিলাকে বলে, ‘ একে নিয়ে যাও এক্ষুনি এখান থেকে। আমি ঘুমাবো। ‘
‘ তাড়িয়ে দিচ্ছেন? ‘
‘ পূরবী তোমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করছেনা যাও এখান থেকে। ‘
পূরবী জমিলার সাথে তার রুমে চলে আসে। মনে মনে বলে, ‘একবার কোমড় ছুয়ে হয়নি আবার ছুতে দেই আপনাকে হুহু….।

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here