দেখ আমি স্ট্রিটলি কথা বলি। এমনি যখন বুঝতে পারছ না তাই সরাসরি বলছি আজ ১৮ বছর পুর্ন হল তোমার। So now you are suitable for a physical relationship. বাংলায় যাকে শারীরিক সম্পর্ক বলে। It’s clear….. আশা করি এর চেয়ে সহজ ভাষা আমাকে ইউজ করতে হবে না আমাকে ব্যাপারটা বুঝাতে….. So you will be ready…. [ কথাটা শেষ করেই চলে গেল ]

লোকটার মুখে এমন কথা শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। জন্মদিনের এমন গিফট হয়ত কেউ কাউকে দেয়নি। এরকম পরিস্তিতিতে কি বলা উচিত বুঝে উঠতে পারলাম না। ৩ মাস ধরে বাধ্য হয়ে লোকটার সাথে আছি। কিন্তু কখনো তার নজর আমার খারাপ লাগেনি বরং ভয় লেগেছে । আমাকে এখানে আনার কারন আমি জানিনা কিন্তু আজকে আমার ১৮ তম জন্মদিনের গিফট হিসেবে সেই কারনটা আমাকে বলল। কিন্তু একটা জিনিস বুঝলাম না যদি আমার সাথে এসবি করার হত তাহলে ৩ মাস অপেক্ষা করল কেন?এই ৩ মাসের একমাত্র আজকেই সে আমার সাথে এতটা শান্ত আর স্থীর ছিল। কিন্তু এর আগে আমি তার অসম্ভব রাগী রুপটা দেখেছি যেটা আমাকে সহ্য করতে পারত না। তাহলে সেটা কি রাগ ছিল? নাকি ৩ মাস নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রচেষ্টা……..

আমি তায়্যিরাত ইবনে তুর। ৩ মাস আগেও একটা নরমাল মেয়ের মতই ছিলাম। কিন্তু আজ এই লোকটার #বন্ধ_দরজার🖤 অধিবাসীনি আমি। আর যার কথা বলছি মানে ওই লোকটি… লোকটি কেন বলছি?? কথা একটু হাস্যকর হলেও সত্যি বিগত ৩ মাসে লোকটির নাম আমার অজানা। ইনফেক্ট আমি নিজেও জানিনা সে আমার নাম জানে কিনা? ১ম দিন যখন আমাকে জোর করে আনা হয়েছিল তখন একবার জিজ্ঞেস করেছিল। কিন্তু আমি ভয় পেয়ে বলতে দেরি করি বিধায় সে আর শুনতে চায় নি। আর আমারো আর বলা হয়নি।

কাল রাত পর্যন্ত লোকটার সবকিছু ঠিক ছিল কিন্তু সকালের ঘটনাটা সবটা পাল্টে দিল….

সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজের রুমের দরজা খোলা দেখে মনটা খুশিতে ভরে গেল। বিগত ৩ মাস আমি বাইরের রুমের পা রাখেনি। বাইরের আলোটা দেখা তো দুরে থাক। কিন্তু ক্রিচেনে ফ্রেশ সবজি নজরে পরতেই বড্ড ইচ্ছে করল নিজ হাতে কিছু ফ্রেশ খাবার খেতে। শুকনো খাবার খেয়ে অস্থির হয়ে উঠেছিলাম কিন্তু স্যালাদ কাটার জন্য ছুড়িটা তুলতেই….. লোকটি এসে ছুড়িটা ফেলে দিয়ে আমার চুল গুলো খুব জোরেই ধরে…..

”প্লিজ ছাড়ুন আমাকে লাগছে আমার। আজকে কিছুই করিনি আর করে থাকলেও আর করব না। তবুও ছাড়ুন ব্যাথা লাগছে।”

কিন্তু লোকটির যেন আমার কোনো কথা কানেই গেল না। একহাতে চুল পেচিয়ে আমাকে নিজের মধ্যে পুরোপুরি মিশিয়ে তাই নড়তেও পারছি না। বুঝতে পারলাম ছারার কথায় তার রাগটা বেড়ে গেল। চুল গুলোর সাথে এবার গলার নরম হাড্ডিটা দু আঙুল দিয়ে চেপে ধরল। এখন আওয়াজ বের হওয়া মানেই লোকটাকে আরো রাগিয়ে দেওয়া। আর এর পরিনত খুব ভালো না তাও জানি। তাই শব্দ না করে শান্ত হয়ে গেলাম। চুলে প্রচন্ড ব্যাথা আর কণ্ঠনালী চেপে ধরার কারনে প্রচন্ড কষ্ট হলেও রিয়েক্ট করলাম না।৷ আমাকে শান্ত হতে দেখে লোকটি আমার কন্ঠনালি থেকে হাত আলগা করে গলার চারদিকে আঙুলের স্পর্শ আকতে আগল। খুব গভীর ভাবেই স্পর্শ গুলো আকছে আজ। যেন তার অপেক্ষাকৃত বস্তুকে পাওয়ার অপেক্ষা শেষ হতে চলেছে আজ। এর আগে এরকম করেনি কখনো। বেশ অস্বস্তি লাগছে।

—-কি করছেন বললাম তো আমি কিছু করিনি।

— হুসসস…

কিছুক্ষন পর গলায় চুমো খেয়ে রাগী কন্ঠে বলে উঠলেন।

— বলেছিলাম না আমার কথার অবাধ্য না হতে যা বলেছি, যেভাবে বলেছি ঠিক সেভাবে করতে তাহলে কেন করলি এমন?

— বিশ্বাস করুন আমি সেরকম কিছু করতে যায়নি। আমি.. আহহহ.. [ চুল গুলো আরো জোরে ধরার কারনে ব্যাথায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু সেটা যদি লোকটা জানে তাহলে হয়ত এখানেই পুতে দিয়ে যাবে। ]

— তাহলে কেন গিয়েছিলে?

— আসলে এসব খেতে ইচ্ছে করছিল না।দরজা খোলা ছিল আর ক্রিচেনে ফ্রেশ সবজি দেখে স্যালাদ খেতে ইচ্ছে করছিল তাই…..

আমার কথাটা শুনে মনে হলো লোকটি বিশ্বাস করেছে তাইত চুলের বাধন আলগা হয়ে এসেছে। এবার প্রশ্ন হতেই পারে সামান্য সবজি খাওয়ার কারনে এমন কেন করবে আসলে ব্যাপারটা স্যালাদের না। স্যালাদ কাটতে যে ছুড়িটা লাগবে তার। কারন সেটা দিয়ে আমি শসা না কেটে নিজের হাত টাও কাটতে পারি। যা আগেও করেছি। কেন? সেটা কিছুক্ষন পর জানতে পারবেন। লোকটি আমাকে ছেড়ে সোফার দুপাশে হাত রেখে পায়ের উপর পা তুলে বসল আমি কোনো মতে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম। কিন্তু প্রচন্ড রাগ লাগছে আমার। তাই সইতে না পেরে বলেই ফেললাম।

— কেন করছেন এমন আমার সাথে। কি মজা পাচ্ছেন বলুন তো আমাকে আটকে রেখে কি চাই আপনার। তার চেয়েও বড় কথা কে আপনি??

লোকটি মন দিয়ে আমার সব কথা শুনল। তারপর বলল.. Happy birthday.. আজ তোমার ১৮ বছর পুরন হলো।

লোকটির কথা শুনে বেশ অবাক হলাম। ওনি কিভাবে জানল। কারন ওনি আমার ফ্যামিলি দুরের কথা আমার নাম জানত না। কিন্তু পরে ব্যাপারটা বুঝলাম আমাকে এখানে আনার পর আমার নাম জানার আগে জন্মতারিখ জিজ্ঞেস করে পরে নাম।

— আমি এই দিনটার জন্য এতদিন অপেক্ষা করেছি। এবার তুমি বুঝতে পারবে কেন এনেছি আমি তোমাকে?

— মানে.. [ বেশ অবাক হলাম আমি ]

লোকটি আমাকে নিজের কাছে ডাকল। ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও যেতে হলো। কারন এই লোকটার কোনো বিশ্বাস নেই। কথা না শুনলে কি করবে বলা যায় না। তাই বাধ্য মেয়ের মত তার কাছে গেলে সে আমাকে টেনে পাশে বসিয়ে সোফায় দুপাশে হাত দিয়ে আটকে দেয়। আমার দিকে তার মুখটা আনতেই একটু চেপে গেলাম।

— Birthday girl কে গিফট না দিলে হয়। আর গিফট হিসাবে তোমাকে এখানে কেন আনা হয়েছে সেটা বলব।

— কেন এনেছেন?

— যেহেতু তোমার ১৮ বছর পুর্ন হয়ে গেছে… Now you fit for… বুঝতেই পারছ।

তার কথার ভঙ্গিমা আমার ভালো লাগল না। কারন এর আগে এরকম কথা বলেনি আর না এমন বিহেভ করেছে । রেগেছে ঠিকি কিন্তু এভাবে নয়। তবে আজকের সুরটা বেশ অদ্ভুত। দু-একটা ঢোক গিলে জিজ্ঞেস করেই ফেললাম…

— What…

লোকটি যেন একটু বিব্রত হলো আমার কথায়। তবুও বিরক্তি কাটিয়ে বলল…..

— এতদিন ছোট ছিলে এখন তো বড় হয়ে গেছ। এখনো কি তোমাকে ব্যাপারটা খোলসা করতে হবে।

কথাটা বুঝলাম না একটা মানুষ একদিনে কতটা বড় হতে পারে। যেটা গতকাল না বুঝলেও আজ বুঝবে। কারন তার ১৮ বছর পুর্ন হয়েছে বলে। কথাটায় ওনি কি বোঝাতে চাইল জানিনা কিন্তু আমি কিছুই বুঝলাম না। কিন্তু এটা বুঝলাম ওনি ভালো কিছু চাইছেন না।

—দেখ আমি স্ট্রিটলি কথা বলি। এমনি যখন বুঝতে পারছ না তাই সরাসরি বলছি আজ ১৮ বছর পুর্ন হল তোমার। So now you are suitable for a physical relationship. বাংলায় যাকে শারীরিক সম্পর্ক বলে। It’s clear….. আশা করি এর চেয়ে সহজ ভাষা আমাকে ইউজ করতে হবে না আমাকে ব্যাপারটা বুঝাতে….. So you will be ready

কথাটা কানের মধ্যে যেন এসে বাড়ি খেল। কি রিয়েক্ট করা উচিত বুঝতে পারলাম না। ৩ মাসে যে ভয়টা পেয়েছিলাম আজ তার কথা শুনতে ভয়টা আবার মনের মাঝে জায়গা দখল করে নিল। কারন তার মাঝে এরকম টা মনে হয়নি। তার মানে লোকটি আমার ১৮ বছর হওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।

— হ্যালো….

লোকটির ডাকে ঘোর ভাঙে। একটু সময় লাগল। বাস্তবটা বোঝা মুহুর্তেই ওনাকে ধাক্কা দিয়ে নিজেকে ওনার থেকে সরিয়ে দিলাম। ওনি যেন কিছু মনে করলেন না ব্যাপারটা স্বাভাবিক ভাবেই নিলেন। তারপর শান্ত গলায় বললেন….

— বুঝতেই পারছি তোমার জন্য ব্যাপারটা অনেক টাফ। একজন অবিবাহিত মেয়ে… সে যাই হোক আমার কিছু করার নেই। আমি এইজন্য তোমাকে এনেছি। I think আমার সাথে এতদিন থাকার পর তোমার ততটাও সমস্যা হওয়ার কথা না।

আমি কি বলব বুঝতে পারছি না। আমার নিরবতা দেখে সে আবার বলতে শুরু করল।

— দেখ… [ নামটা মনে করার চেষ্টা করে ] কি যেন বলেছিলে.. হ্যা তুর… [ ৩ মাস আগে একবার নামটা বলেছিলাম সেটা এখনো তার মনে আছে ] দেখ তুর আমার ঝামেলা ভালো লাগে না। আমি তোমার এডাল্ট হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম। আর আজ তোমার ১৮ বছর পুর্ন হয়েছে। সো তুমি নিশ্চয়ই তবে তোমার এতদিনের প্রশ্নের উওর পেয়ে গেছে যে তোমায় এখানে কেন আনা হয়েছে? তাও আবার জোর করে তোমার ফ্যামিলি থেকে। যাই হোক তৈরি থেক। Be ready…….

লোকটি কথাগুলো বলেই চলে গেল আর আমি ওখানেই ধপ করে বসে পড়লাম। লোকটি এমন ভাবে কথা গুলো বলল যেন এগুলো খুব স্বাভাবিক কথা। আমাকে জোর আমার ফ্যামিলি থেকে আলাদা করেছিল এসবের জন্য…. কিছুই বুঝতে পারলাম না মাথাটা ঝিম হয়ে ওখানেই জ্ঞান হারালাম…..

,

,

,

,

,

,

,

,

জ্ঞান ফিরে দেখি বিছানায় শুয়ে আছি। লোকটা আমার সামনে বসে ইনজেকশনে কোনো একটা মেডিসিন ইন করছে। আমাকে দেখে মৃদু হাসল….

— বলেছিলাম আজ তোমাকে নিজেকে তৈরি রাখতে। কিন্তু এতটা ভালো প্রস্তুতি হবে জানা ছিল না। [ ভুবন ভোলানো হাসি দিয়ে ]

এদিকে আমার গলা শুকিয়ে আসল। আশ্চর্য ভাবে লোকটি পানির গ্লাস এগিয়ে দিল। আমিও চুপচাপ খেয়ে নিলাম। কিন্তু কিছু বুঝে উঠার আগেই লোকটি আমার হাতে ইনজেকশন পুশ করে দিলেন।

— তুমি কি ভেবেছ এভাবে ছেড়ে দেব। উহুম যা বলেছি তাই কথার নড়চড় হবে না।

হঠাৎ করেই মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠল। আর লোকটা মুচকি হেসে আমার দিকে এগোতে থাকল। আমি পিছতে পিছতে বিছানায় পরে গেলাম।

—- দেখুন এরকম কিছু করলে ভালো হবে না। আমি কিন্তু চিতকার…..

আমার কথা শুনে লোকটা বেশ জোরেই হেসে দিলেন। আর আমি আহান্মক হয়ে রইলাম।

— এই মেয়ে বড় হয়ে গেলে তুমি কিন্তু এখনো বুঝতে পারছ না এই #বন্ধ_দরজার🖤 বাইরে তোমার ডাক কেউ শুনবে না। এইখানে কেন তুমি বাইরে গিয়ে গলা ফাটিয়ে চিতকার করলেও তোমার ডাকে সারা দেওয়ার মত কাউকে পাবে না।

বলেই লোকটি বাকা হেশে আমার আরো কাছে আসতে থাকে। হঠাৎ করেই সবকিছু ঘোলা হয়ে যেতে লাগল। আবছাতে শুধু বুঝতে পারছি লোকটা নিজের শার্টের উপরের বোতামগুলো খুলছে। আমার পাশে বসে এগিয়ে আসতেই বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু হঠাৎ অন্ধকার হয়ে সবটা হারিয়ে গেল। ন্সেসলেস হয়ে গেলাম। তারপর….

,

লোকটি বাকা হেশে আমার আরো কাছে আসতে থাকে। হঠাৎ করেই সবকিছু ঘোলা হয়ে যেতে লাগল। আবছাতে শুধু বুঝতে পারছি লোকটা নিজের শার্টের উপরের বোতামগুলো খুলছে। আমার কাছে আসতেই বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু হঠাৎ চারদিকে অন্ধকার হয়ে সবটা হারিয়ে গেল। নিজের বোধ শক্তিটুকু হারিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলাম। তারপর আর কিছু মনে নেই….

,
,
,
,
,
,
,
,
,সকালে শরীরে অসহ্য এক যন্ত্রণা অনুভব নিয়ে ঘুমটা ভেঙে গেল। চোখ মেলে তাকাতেও কষ্ট হচ্ছে কিন্তু ঘুমের ঘোরটা এখনো কাটেনি যেন কেউ নেশা করিয়ে দিয়েছে। তবুও অনেক কষ্টে নিজের পাশে ফিরতেই ঘুমটা যেন উড়ে গেল। আমার পাশে শুয়ে আছে সেই লোকটা। এর আগেও এটা দেখেছি তবে সেটা মাঝরাতে কারন সকালে তাকে দেখার দুভাগ্য আমার কখনো হয়নি। কিন্তু আজ দেখছি তাও আবার একটা পাতলা টি-শার্ট পরে। এবার নিজের দিকে খেয়াল যায় পুরো শরীর কাথা দিয়ে মোড়ানো। তখনি কালকের লোকটার সেই কথাটা মনে পরে যায়। আমি আর কিছু ভাবতে পারছি না তারমানে লোকটি সত্যি কাল রাতে……

ভাবতেই বুক ফেটে কান্না আসতে লাগল। নিজেকে সত্যি সামলানো দায় হয়ে পড়ল।অজান্তেই নিজের সবর্স হারানোর আক্ষেপে বুক ফাটা আর্তনাদ বেড়িয়ে এলো মুখ থেকে। অঝোরে কাদতে লাগল তুর। কান্নার আওয়াজে লোকটার ঘুম ভেঙে গেল। একরাশ বিরক্তি নিয়ে সে উঠে নিজের চোখে আঙুল বুলিয়ে ঘুম কাটানোর চেষ্টা করল। দেখে বুঝাই যাচ্ছে সারারাত একটু ঘুম হয়নি। তিনি রাগী কন্ঠে তুরকে থামতে বললেন কিন্তু তুর এখন কথা শোনার মত পর্যায়ে ছিল না। এবার লোকটির খুব বিরক্ত লাগল….

— সমস্যাটা কি তোমার একটুও কি ঘুমাতে দেবে না নাকি? সারারাত তোমার জন্য একটু ও ঘুমোতে পারিনি এখনো কি ঘুমাতে দিবা না নাকি?😡

তুর কোনো কথা বলল না। নিজের কত কাদতে লাগল। আর লোকটাকে দেখে মনে হচ্ছে যেন কিছুই ঘটেনি। এতটা নরমাল কিভাবে হতে পারে কেউ। তুরের যতটা না রাগ লাগছে তার চেয়েও বেশি ঘৃনা হচ্ছে…

তুরের এমন বিহেভে এবার একটু শান্ত হলো। নরম সুরে তুরকে জিজ্ঞেস করল…

— আরে বাবা আগে বলত তো কি হয়েছে? তারপর না হয় মরা কান্না কেদো? কেউ না করবে না।

— এখনো জিজ্ঞেস করছেন কি হয়েছে আমার? লজ্জা করে না। আপনার প্রতি একটু হলেও আমার সন্মান ছিল এতদিন যে আপনি একটা মেয়ের সাথে এতদিন থেকেও তাকে স্পর্শ করতে চাননি। বরং নিজেও দুরে সরে থেকেছেন। কিন্তু কাল ইনজেকশনের মাধ্যমে আমাকে বেহুশ করে নিজের কার্য হাসিল করেছেন। আবার বলছেন কি হয়েছে? লজ্জা করে না। [ জড়ো সড়ো হয়ে কাদতে কাদতে ]

— মানে… [ বেশ অবাক হয়ে ] মানে আমি তোমাকে… হা.. হা.. হা… আচ্ছা এইটা ঠিক আছে আমি এটা করতেই পারি কিন্তু এই ধারনা ভুল যে আমি তোমাকে ন্সেসলেস করেছি।

— ও আমি নিজে ন্সেসলেস হয়ে গেছি তাই না যাতে আপনার কোনো অসুবিধা না হয়😭

— দেখ আমি সেরকম কিছু বলিনি..

— চুপ করুন। আপনাদের মত লোকেরা কোনোদিন ভাল হতে পারে না। কারন পশুদের কাজ হচ্ছে এটা। আর আপনি তাদের মধ্যেই পরেন। দুনিয়ার সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব।

এতক্ষন নিজেকে শান্ত রাখলেও কথাটা শুনেই খুব রাগ লাগল ওর। ও তুরকে কাছে টেনে বিছানায় শুইয়ে একদম ওর মুখের কাছে গেল।

— তোমার এটাই মনে হচ্ছে আমি তোমাকে ন্সেসলেস করে এসব করেছি। ওকে এখন তো তুমি সজ্ঞানে আছো তাহলে দেখি কতটুকু প্রটেক্ট করতে পারো নিজেকে। 😡 [ বেশ রেগে ]

— প্লিজ নাহহহ..

কাদতে শুরু করল। নিজের গায়ের চাদরটা আরো শক্ত করে আকড়ে ধরার চেষ্টা করল। কিন্তু পারল না। লোকটা ওর হাতটা থেকে চাদর টা একপ্রকার ছিড়েই ফেলে দিল। ও হাত দিয়ে নিজেকে ঢাকার চেষ্টা করতেই লোকটা অট্রহাসিতে ফেটে পড়ল।

— আরে বোকা আগে তো নিজেকে দেখ তারপর নাহয় নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করো।

তুর লোকটার বিহেভে অবাক হয়। তারপর ও নিজের দিকে তাকায়। কাল রাতে যে ড্রেস পরা ছিল সেই ড্রেস। একটুও অন্যরকম হয়নি। লোকটি বিছানায় হেলান এক হাটু উঠিয়ে তার উপর হাত দিয়ে শান্ত গলায় বলল….

— কাল যখন আমি তোমাকে ন্সেসলেস দেখি তখন বুঝতে পেরেছি তুমি দুর্বলতা কারনে ন্সেসলেস হয়ে গিয়েছ। বিশ্রাম প্রয়োজন। তাই জ্ঞান ফেরার পর ইনজেকশন দিয়েছিলাম। আর তোমার মাথা ঘোরার কারন তোমার দুর্বলতা আর ঘুমের কারন ইনজেকশন। ওকে….

— তার মানে আপনি আমার সাথে…..

লোকটি ওর দিকে তাকিয়ে ওকে টেনে নিজের উপর ফেলে দেয়। শক্ত করে নিজের সাথে মিশিয়ে বলতে থাকে….

— তোমাকে কিছু করার জন্য তোমাকে ন্সেসলেস করার কোনো প্রয়োজন নেই। আর না আমি তা করব । যা হবে সেটা সজ্ঞানে। তাই তোমাকে এতদিন নিজের কাছে রেখেছি কামর্ফোটজোন দেওয়ার জন্য। তবে তুমি যদি রাজি না হয় তবে ব্যাপারটা আলাদা।

[ মুখের কাছ থেকে চুল গুলো সরিয়ে তুরে্র । ্ঠোঁট আলত স্পর্শ করল। লোকটার এমন কথা আর কাজে তুর আকাশ থেকে পরল। লোকটা আসলে কি করতে চায়। ও তুরকে সেচ্ছায় বাধ্য করতে চায় এর মানে কি? অবাক চোখে তাকিয়ে দেখতে থেকে লোকটা দিকে…. ]

— এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে থেক না। প্রেমে পরে গেলে কিন্তু তোমার ক্ষতি হবে। পরে কিন্তু ছেড়ে যেতে পারবে না।

ওর কথায় তুর নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চায়। কিন্তু লোকটা আরো জোরে ওকে ধরে বলে…

— বলছি বলেই ছেড়ে যাবে নাকি। চেষ্টা করেও লাভ নেই কারন এই বন্ধ দরজার ওপারে কোনোদিন যেতে পারবে না তুমি। কারন #বন্ধ_দরজায়_তুমি🖤। আর এখানেই আমার জন্য থাকতে হবে তোমাকে সারাজিবনের জন্য।

তারপর লোকটা তুরকে ছেড়ে বিছানার পাশে থাকা শার্টটা টি-শার্ট এর উপরে পরতে পরতে বলে….

— তোমার জন্য একটা সুসংবাদ আছে। আমি আবার কিছুদিনের জন্য চলে যাচ্ছি। তোমার যাবতীয় সবকিছু রাখা আছে। তবে এবার নিজেকে তৈরি করে রেখ। কারন ফেরার পর আমি নিজেরটা বুঝে নেব।

লোকটা ফ্রেশ হতে চলে যায় আমাকে এই #বন্ধ_দরজার ভিতরে লক করে। তাকে যাওয়ার জন্য এই রুমটায় আসার প্রয়োজন নেই। কারন এই রুমে আমার কিছু ছাড়া অন্যকিছু বলতে অন্য বলতে শুধু এই লোকটা। আর দরজার অপাশে কি আছে সেটা আমার অজানা। শুধু একটা কথাই ভাবছি যাওয়ার আগে কি সে একবারের জন্য এই রুমে আসবে। যাতে বাইরের একটু বাতাস এই রুমে আসতে পারে তার সাথে।

এসব কথা ভাবতে ভাবতে তুর দেখল লোকটি দরজা খুলে ভিতরে আসছে। তুর ফ্রেশ না হয়ে বিছানাই গুটিশুটি মেরে ছিল।

— আপনি কি এখনি চলে যাচ্ছেন?

— আমি কখন যাব সেটা তোমার না জানলেও চলবে শুধু জেনে রেখ আজ রাতে আমি থাকছি…. [ তুরের দিকে তাকিয়ে। কথাটা শুনেই তুরের মনে অদ্ভুত সেই ভয়টা সৃষ্টি হল ]

আর কিছু না বলে চলে যেতে চাইলো। তখনি পিছন থেকে ডাকল তুর… শুনুন.. তুরের ডাকে বেশ অবাক হলো লোকটা…

— কিছু বলবে?

— না মানে.. [ আমতা আমতা করতে লাগল ]

— বলে ফেল। আমি astrologer নই। তাই মন পরতে পারব না।

— আপনার নামটা কি বলবেন? আসলে এতদিনে আমি আপনার নাম জানিনা। [ বেশ ভয় পেয়ে ]

তুরের কথায় একটু অবাক হলো। মানে ৩ মাস ওর সাথে আছে অথচ নাম জানে না। পরক্ষনেই মনে পরল কিভাবে জানবে ও তো নিজের নাম ওকে জানতেই দেয়নি। ও একটু স্মিত হেসে বলল…

— এতদিন আমার সাথে আছ। আর যেহেতু আমার সাথেই থাকতে হবে। তাহলে তোমার রাইট আছে নাম জানার। তবে এখন না সময় হলে বলব কে আমি? তোমার নাম তো তুর…..

— হুমম।

— ওকে…

[ আর কিছু না বলে চলে যেতে চাইল। কিন্তু কি একটা মনে করে ফিরে এলো। তুরের আছে গিয়ে তুরকে ধরতে গেলে তুর একটু পিছিয়ে যায়। এটা দেখে সে ভ্রু কুচকে তুরকে টেনে নিজের কাছে আনে। তুর নিজেকে ছাড়াতে চাইলে সে তুরের কপালে চুমো একে তুরের চোখে কোনে জমানো জল মুছে দেয়…

— যেটা পারবে না সেটা করতে যেও না। আবারো বলছি যা করতে চাই করতে দেও আমাকে রাগিও না তাতে তোমার ক্ষতি।

তুরকে ছেড়ে দিয়ে চলে যাওয়ার সময় আবার বলে উঠল….

— আর হ্যা আমি শুনেছি বাইরে যাওয়ার সময় বউয়ের কপালে চুমো খেলে মন ভালো থাকে। ফলে নাকি বিপদ কম হয়। আমার তো বউ নেই। আর লাইফে থাকা মেয়ে বলতে তুমি আছো তাই একটু ট্রাই করলাম। বউ না হলেও বউয়ের কাজ গুলো তোমাকেই করতে হবে। তবে ভয় পেও না বিয়ে করব না।

তারপর ঠোঁটের কোনে মুচকি হাসির রেখা তুলে চলে গেলেন। তুর ওর কথার আগা মাথা কিছু খুজে পেল না। কি বলে গেল লোকটা। বউ না হয়েও বউয়ের কাজ করতে হবে। চাচ্ছে কি লোকটা….
,
,
,
,
,
,
,
,

,,

নিজের মত করে কাটতে থাকে সময়। দিন নাকি রাত সেটা জানা নেই। শুধু এটাই জানা লোকটা আসা মানেই তুরের বন্ধ জগতে রাত নামা। বেশ ক্ষিদে পেয়েছে তুরের খাবার বলতে সবকিছুই বাইরের শুকনো খাবার রয়েছে। ক্রিচেন আছে প্রবেশ অনুমতি নেই। তাই বাধ্য হয়েই ওই খাবার গুলো খায় তুর। শেষ রান্না করা খাবার খেয়েছিল প্রথম বার যখন লোকটি এসেছিল কিন্তু তারপরে…..

তুর ফ্রশ হয়ে খেয়ে শুয়ে পরে। কোনো কাজ নেই তাই ওই বদ্ধ দরজার ভিতর টুকটুক করতে থাকে। কখনো ঘুমায় কখনো নিজের মত বকবক করে। লোকটাকে বকে। যদিও লোকটা সব জেনে যায়। তাতে ওর কি?

এভাবে সময় কাটতে থাকে তুরের একসময় তুর আবার ঘুমিয়ে যায়। তখনি রুমের দরজা খুলে যায়। ঘুমন্ত তুর তা জানতেও পারে না।

তুর বিছানায় এলোমেলো ভাবে শুয়ে আছে। হাতে থাকা ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখে ১টা। হুমম রাত ১টা। এটা দেখে সে নিজের রুমে ফ্রেস হতে চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে এসে তুরের কাছে যায়। বেডহীন মেঝেতে পাতা নরম বিছনায় তুরের পাশে গিয়ে শুয়ে পরে। কিছুক্ষন এভাবে থাকার পর বড্ড ইচ্ছে করে তুরের মুখটা একটু দেখতে। ও তুরের দিকে ফিরে ডান হাতের পাতায় মাথার ভর দিয়ে তুরকে দেখতে থাকে। ফ্যানের বাতাসে তুরের সিল্কি খোলা চুল গুলো ওর মুখে পরছে যা লোকটাকে তুরের দিকে বড্ড টানছে….

ও তুরের মুখের চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে নিজের অজান্তেই ওর গালে আর ঠোঁটে হাত বুলায়। ওর ঠোঁট স্পর্শ করতে গিয়েও করে না বরং কপালে স্পর্শ আকে গভীর ভাবে।

— কে তুমি তুর? তুমি তোমার পরিবার কিছুই তো আমি জানিনা। তাহলে কেনই বা এভাবে আমার জীবনে এলে? যাকে আমি দুনিয়ার সবচেয়ে নিকৃষ্ট জায়গায় নিলাম করতে চেয়েছিলাম। তাকেই নিজের জন্য বন্ধ দরজার আড়ালে লুকিয়ে রেখেছি। নিজের পাশে সাজিয়ে রেখেছি। আমার সাথে কোনো অন্যায় না করেও আজ তুমি আমার কাছে সবচেয়ে বড় অপরাধী। আর তাই অপরাধের শাস্তি তোমাকে পেতে হবে। অভিশাপের সামনে যখন এসেছ অভিশপ্ত তো হতেই হবে। যার শুরু খুব শ্রীঘ্র হতে চলেছে। কারন তুমি নিজেও জানোনা তুমি কত বড় অন্যায় করে ফেলেছ আমার সাথে…. 😡 [ নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করতে না পেরে চলে যায়
এখন এখানে থাকলে ও কি করবে নিজেও জানেনা। ]

সকালে ঘুম ভেঙ্গে গেল তুরের। নিজের সামনে তাকাতেই একটা ছিড়কুট দেখতে পায়….

,,,,,,,,,,,, সবকিছু রেডি করা আছে। ফ্রেশ হয়ে খেয়ে মেডিসিনটা নিয়ে রেস্ট নেও। নাইলে আমার চেয়ে খারাপ কেউ হবে না। আরেকটা কথা আমি কিন্তু আমার পাওনা কিছুটা নিয়ে গেছি। পরে বলবে আমি বলিনি কেন? তারায় ছিলাম তাই ডাকিনি। আর হ্যা যাওয়ার পর আমার উপর অভিশাপ দেওয়াটা বন্ধ করো। কারন আমার যদি কিছু হয় এই দুনিয়ার কেউ তোমাকে খুজে বের করতে পারবে না। পচে মরতে হবে তোমাকে। তাই নিজের ভালোর জন্য হলেও আমার ভালোটাই চাও….

নাম জানতে চেয়েছিলে তাই না। ওকে বললাম তুমি আমাকে তীব্র নামে ডাকতে পারো তুর…..

— ওনার নাম তাহলে “তীব্র… ”
,

#বন্ধ_দরজা🖤

#Written_By_Mêhèriyâr_Mêhèr

#Part: 01+2

কাহিনিটা অনেকের কাছেই নেগেটিভ লাগবে। তবে পুরোটা না পরে বাজে কমেন্ট করবেন না। নিজের মতামত জানাতে পারেন।

আশা করি স্টোরি টা থেকে আপনারা নতুন কিছু পাবেন। এক রকম কাহিনী লিখতে আর পরতে বোর হয়ে গেছি। তাই নতুন কিছু ট্রাই করলাম। খারাপ লাগলে সরি।

ধন্যবাদ সবাইকে।।।।

Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here