বন্ধ_দরজায়_তুমি🖤Part: 41.
#Written_By_Åriyâñà_Jâbiñ_Mêhèr [ Mêhèr ]
…..
তুরের রাগী কথায় আবার হাসে তীব্র। একহাতে তুরকে শক্ত করে জড়িয়ে সকালে থাপ্পাড় দেওয়া গালে আলত করে হাত ছোয়ায়। আলত করে চুমো একে দেয়। অদ্ভুত এক মোহিত কন্ঠে বলে উঠে,
—— ” কতবার বলব নিজের পায়ে কুড়াল মারার মত বোকা আমি নই। তুমি আমার। তোমার রাগ, জেদ, ভালোবাসা, ঘৃনা, প্রেম সব আমার। তোমাকে মেরে ফেলে কোন লাভ দেখিনা আমি। আর নিজের ভালো তো পাগলেও বোঝে। তাই নিজের একমাত্র যন্ত্রনার ভালোবাসাকে শেষ করে তার যন্ত্রনার সুখ থেকে বঞ্চিত করতে চাই না নিজেকে। ভালোবাসার সবকিছু ভালোবাসাই হয়। আর সেটা জোর করে তুর নামের কাউকে তীব্রের #বন্ধ_দরজার_তুমি🖤 করে হলেও…..
তুর রাগে বড় বড় নিশ্বাস নিয়ে তীব্রের দিকে তাকায়। এটা দেখে তুরকে আরো রাগানোর জন্য দুষ্টুমির সুরে,
—– ” এভাবে তাকিও না অবাধ্য পাখি। ভালোবাসতে ইচ্ছে করে। তুমি তো বলেছিল তুমি ছাড়া আর কাউকে ভালোবাসা আমার দ্বারা সম্ভব না। সো বুঝতেই পারছ। শেষে তোমার রাগ দেখে আবার না প্রেমে পরে যাই। আর তোমাকে এবার এমনি এমনি না, ডানা ভেঙে খাঁচায় পুঁড়ে রাখব । যাতে ভুল করে ছাড়া পেলেও আমাকে ছেড়ে না পালাতে পারো। ” জড়িয়ে ধরা অবস্থায় তুরের নাকে নাক ঘষে।
তুর ওর কথার প্রেক্ষিতে কঠোর গলায় বলে,
—— ” আপনি বার বার নিজেকে হেরে আমার কাছে ফিরে আসেন লজ্জা লাগে না। ”
কথাটা শুনে তীব্র শব্দ করেই হাসতে শুরু করে। তারপর বলে,
—— ” অবাধ্য পাখি, তুমি জানো না মেয়েদের কাছে লজ্জা পেতে নেই। নিজেরী লস। আর হারার কথা বলছ সেটা আমি তোমাকে জেলে বসেই বলেছিলাম,
দ্বিধা ও দ্বন্ধ ভাঙছে ছন্দ বুকেতে অজানা ভয়।
জানি যেকোন শর্তে লুকিয়ে রয়েছে আমার পরাজয়।
সেদিনও তোমার জন্য হেরেছি। আজও হারব। আর সারাজীবন হেরেই যাব। কারন প্রকৃত পুরুষ সেই যে নিজের স্ত্রীর কাছে হারে। নিজের ভালোবাসার কাছে হারে। নিজের ভালোবাসার জন্য হারে। শরীয়ত মোতাবেক ও স্ত্রীর কাছে হেরে যাওয়া সুন্নত। হয়রত মোহাম্মদ ( স. ) নিজে বিবি আয়েশার কাছে ইচ্ছে করে হেরে যেতেন। আর আমি তোমার কাছে পারব না। বেশ পারব। ”
কথাটা শুনে মুখ ফিরিয়ে নেয় তুর । যা ভেবেছিল তার উল্টো গান গাইছে তীব্র। এটা দেখে তীব্রের বেশ হাসি পায়। মনে মনে তীব্র বলতে শুরু করেছে, “ যে যেমন তার সাথে তেমন টাই করতে হয়। মাছ ধরতে এসে পানিতে ভয় পেলে হবে তুর পাখি। উফফ… যা লাগছে না তোমাকে এই রূপে চোখ সরানো দায় হয়ে পরেছে। গালে থাপ্পড় পরেছে বলে লাল হয়েছে। জানি এখন লজ্জা দিয়ে লাল করানোর মত পরিস্থিতি নেই । তবে রাগ দিয়ে বাকি গালটা লাল হয়েই যাবে। “
তীব্র তুরকে আরো রাগাতে চাইল । তাই রসিকতার ছলে বলে উঠল,
—- “ একটা কথা কী জানো তুর পাখি সেসব ছেলেরা মেয়েদের থেকে জেতার চেষ্টা করে তারা বোকা হয়। কারন মেয়েদের মত কথা অন্য কোন প্রানী প্যাঁচাতে পারে না। মানে একজন সুস্থ্য মতিষ্কের মানুষের পক্ষে তো নয়। তাই তাদের কাছে যত সহজে হারা যায় নিজেকে তত তাড়াতাড়ি যুদ্ধবিজয়ী হিসেবে মনে করা যায়। এটা আমার না বিখ্যাত বিজ্ঞানী সক্রেটিসের কথা। সো আমি বোকা নাকি তোমার থেকে জিততে চাইব। তাছাড়া তুমি যা জিনিস,,, “
— “ কী বললেন? “ রাগী চোখে ।
— “ কিছু নারে পাগলি। তোরে কিছু বলতে পারি। শুধু এটাই বলব আগের অনেকক,,,,”
তুর ঝারা মেরে ওকে সরিয়ে চোখ পাকিয়ে তাকায়। তীব্রের এসব কথায় ওর গায়ে আগুন ধরে যাচ্ছে। ও প্রচন্ড রেগে বলে.
— “ এসব আল্লাদী কথা আমাকে বলবেনা। আমি কিন্তু….”
আঙ্গুল তুলে তীব্রকে ধমকায়। এটা দেখে তীব্র হাসি দিয়ে ওর আঙ্গুল নিজের আঙ্গুলে গেঁথে নেয়। যেন সই পাতাচ্ছে। ওইটা দেখে হতবাক তুরের মুখ হা হয়ে অবাক দৃষ্টিতে তীব্রের দিকে তাকায়। তীব্র চোখ মেরে ইনোসেন্ট ফেস করে বলে,
—- “ সুন্দরকে সুন্দর বললে আমার কী দোষ বলো। আমার চোখে তুমি ছাড়া আর কোনকিছুই ভালো লাগে না। এখন আমি কী করি। তাছাড়া তুমি আমার বউ। সুন্নত অর্জন করছি বউয়ের প্রশংসা করে। ( কিছুটা থেমে ) যাই বলো তুমি কিন্তু আগের চেয়ে অনেক …. “
—-“ চুপ আর একটা কথাও না। নাইলে কিন্তু এখানে আপনাকে খুন করব। “
তুর ওর মুখ চেপে ধরে। তৎক্ষনাৎ তীব্র ওর হাতে চুমো দেয়। আর সঙ্গে সঙ্গে তুর নিজের হাত সরিয়ে নেয়। এটা দেখে তীব্র বলে,
— “ বরকে ছুঁতে চাও। তার জন্য এত বাঁহানা করার কী আছে? না তো করিনি। আচ্ছা লজ্জা পেলে আমি আসছি… “
তুরের দিকে এগিয়ে যেতেই তুর ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তীব্র চাঁপা ঠোঁটে হাসে। আর তুর রাগে তীব্রের গলা টিপতে যায়। কিন্তু না করে নিজের চুল টানতে শুরু করে।
—“ আচ্ছা চুল ছিঁড়তে হবে না লজ্জায় । আমি বুঝতে পারছি। “
— “ আমি…. “ নিজের চুল ছিড়তে ছিড়তে ।
— “ জানি তো তুমি…. ”
আর কিছু বলার আগেই তুর খুব জোরে গাড়িতে আঘাত করে। তীব্রকে চেঁচিয়ে বলে,
—— ” আরেকটা বাজে কথা না। আমি কিছু না। আমি… ”
তখনি তুরের হাতে বাড়িতে গাড়িতে থাকা রেডিও বেজে উঠে….
💘 তু চিজ বারি হে মাস্তে মাস্তে….
….. তু চিজ বারি হে মাস্ত….
এটা শুনে নিজের অজান্তেই মুখ থেকে বেড়িয়ে আসে,
—— ” অ্যা…. ”
তুর রাগী, অসহায় চোখ নিয়ে একবার তীব্র আরেকবার রেডিওর দিকে তাকায়। এটা দেখে তীব্র শব্দ করে হেসে উঠে। তুর কিছু বলতে পারছে না। সময় খারাপ হলে যা হয় আর কী? রাগে এবার রেডিওর দফা টাই রফা করে দেয়।
—— ” দেখলে সত্যি বললেই দোষ। আমাকে কিছু করতে পারলে না বরং গাড়ির রেডিওটাই ভেঙে দিলে। বলিহারী তোমার। ”
—– ” কী বললেন? নাক ফুঁলিয়ে।
—— ” কই কিছু না। তুমি ঠিক করেছ। আমার বউকে যা বলার আমি বলব। টিজ করব, বকব, আদর সব আমি করব। এই রেডিও কেন বলবে? ভুল করে ফেলেছ। ”
বলেই ভাঙা রেডিও আবার ভেঙে দিল। তুর গম্ভীর হয়ে রইল। তা দেখে তীব্র হালকা হেশে গাড়ি স্টার্ট দিল।
কিছুদূর যাওয়ার পর তুর আনমনেই বলে উঠল,
—– ” রিদমের কোন দোষ নেই। ”
—– ” সেটা আমি তোমার থেকে শুনতে চাইনি। ” সামনের দিকে ড্রাইভ করে।
তুর আবার রেগে যায়।
—– ” আপনি আমার জন্য একটা নিরাপরাদ ছেলেকে মারবেন আর আমি চুপ করে থাকব তাতো হয়না না। ”
নিশ্চুপ তীব্র।
—— ” দেখুন তীব্র, ও যা করেছে আমার কথায়। আমি যা বলেছি ও তাই শুনেছে। আর ড্রাগস & যা যা কিছু সব আমার কথায়…. ”
কথাটা শুনে তীব্র গাড়ি ব্রেক করে।
—— ” আর ইউ সিউর? ও তোমার কথা শুনেছে? ”
তীব্রের কথার মানেটা বুঝল না। ও ভ্রু কুঁচকে আমতা আমতা করে বলল,
—– ” হ্যা, কিন্তু, কেন? ”
তীব্রের চোখ মুখ মূহুর্তেই শক্ত হয়ে এলো। ও মোবাইল বের করে কল দিল।
—– ” ইয়েস স্যার। ”
—– ” যে ছেলেটাকে নিয়ে গেছ ( তুরের দিকে তাকায় ) শুধু মার না, হাড্ডি গুলো ভেঙে দেও। যাতে কয়েকবছরের জন্য নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারে। বাকিটা রিদ্ধের থেকে বুঝে নিও। ”
—– ” তীব্র…. ” মোবাইলটা তীব্রের হাত থেকে নিতে চাইলে তীব্র তা সরিয়ে তুরের গাল চেপে ধরে মুহুর্তেই শক্ত মুখে একটা টেডি স্মাইল ফুটিয়ে বলে,
—— ” আরে বোকা পাখি আমার বউয়ের কথা শুধু আমি শুনব। অন্যকেউ কেন শুনবে? আর এটাই ওর দোষ। ”
—– ” এতে ওর দোষ কই? ”
—– ” ও তোমার কথা শুনেছে বলেই তুমি ওকে বলেছ। ও না শুনলে তো তুমি বলতে না। তোমার সবকথা শুধু আমি শুনব। বুঝলা বোকা পাখি। ”
বলেই তুরকে ছেড়ে দিয়ে আবার সেই হাসি।
—— ” আপনি আসলেই খারাপ। ”
—— ” তোমার কাছে কোনদিন ভালো ছিলাম যে আজ হবো। ”
গাড়ি স্টার্ট দিতে যাবে তখনি তুর বলে,
–_– ” আমাকে নামিয়ে দিন। ”
—– ” তাহলে কী পুরোটা রাস্তা কোলে করে যাবা। কারন তোমাকে তো আমি ছাড়ছি না। ”
—— ” আমার যেখানে যাওয়ার আল্লাহ দু’টো পা দিয়েছে। হেঁটে হেঁটে ঠিক যেতে পারব। ”
—– ” ঘড়িতে দেখ ১২টা বাজে। এই নির্জন রাস্তা তোমার জন্য সেইভ না। ”
এটা শুনে তাচ্ছিল্যের হাসি দেয় তুর।
—– ” আপনি ভুলে গেছেন। আমি আপনার রেখে যাওয়া অবলা সেই মেয়ে নই। নিজেকে সামলাতে জানি আমি। এইসব দুধভাত হয়ে গেছে। ”
তীব্র অবাক চাওনী দেয়। তুর ওর চাওনিতে ডান ঠোঁটে তাচ্ছিল্যের হাসি দেয়। তীব্র চুপ হয়ে আছে। কিছুক্ষন বাদে রাস্তায় খাবারের হোটেল বাঁধে। তীব্র ওকে নিয়ে গ্রামের দিকে যাচ্ছে। গ্রামের হোটেল যেমন হয় । এটা দেখে তীব্র গাড়ি থামায়। বুঝতেই পারছে তুরের ক্ষিদে পেয়েছে। ওর জানা মতে আজ কিছুই খাওয়া হয়নি।
—— ” থামলেন যে? ”
—— ” থেমেছি। ছেড়ে যাচ্ছি না। যাত্রা পথে মাঝে মাঝে প্রয়োজনে থেমে যেতে হয়। যাতে পরবর্তী পথচলা আরও সুন্দর করে। ”
ওর কথায় রিয়েক্ট করল না। তীব্র ওর উত্তরের আশা না করে চলে যেতে চাইল তুর ওকে ডাকল,
—— ” আমি কী এখানে নামতে পারি। ”
আলত হাসল তীব্র।
—– ” অনুমতি তো চাইছ না। ”
—— ” গাড়িতে লক করা না থাকলে হয়ত চাইতাম না। ”
তীব্র কিছু না বলে দরজা খুলে দেয়। তুর গাড়ি থেকে বের হয়ে খাবারের হোটেলটাকে দেখে। ভিতরে বসার সাথে সাথে বাইরেও বসার জন্য কিছু বেঞ্জ আর চৌকি পাতা। ও পাশে থাকা পানির একটা ড্রাম দেখে এগিয়ে যায়। ড্রামের থেকে একমগ পানি তুলে চেহারায় ছিটিয়ে দেয়। তখনি ওর কানে কিছু কথা আসে। তুর কথাগুলো লক্ষ্য করে সেদিকে তাকালে দেখে কয়েকজন লোক ওর দিকে দেখছে। কেউ ষাঁড়ের মত, তো কেউ পাঠখড়ি। ওদিকে খেয়াল না দিয়েই মুখ ধুঁতে থাকে। তখনি তাদের মুখে বাজে কথা শুনতে পায়। বুঝতে বাকি থাকে না ওরা ওকে নিয়েই বলছে। তুরের পরনে কালো জিন্স, টি-শার্ট আর তার উপর একটা ব্লাক জ্যাকেট। চুল গুলো ঝুটি। তুর শুনেও না শোনার মত করে নিজের কাজে যেতে লাগল।
—- “ হে ফুলটুঁসি এভাবে কোমল দুলাইয়া কই যাও। “
কথাটা শুনে তুর থেমে যায়। “ রিলাক্স তুর। কুকুর ঘেঁউ ঘেঁউ করবেই তারমানে এটা না যে তার সাথে তোকেও তা করতে হবে। “ নিজেকে শান্ত করে চলে যেতে নেয়। কিন্তু তখনি খাঁটো মতন লোকটা বাজঁঘাই গলায় গেয়ে উঠে,
“ চুমকি চলেছে একা পথে সঙ্গী হলে দোষ কী তাতে? ” বলেই বিশ্রি হাসি দেয়। তখন ওই ষাঁড়ের মত লোকটা মাতাল কন্ঠে দাঁড়িয়ে বলে ,“ আরে এইটা চুমকি নারে মূর্খ এইটা আলিয়া ভার্ট। ফিগারটা দেখছোস না শালা। আর ওইটা একা পথে না একা রাতে হবে। তাই না মামনি। “
লোকটার কথায় বাকি ৩জন ঠিক ঠিক বলে সম্মতি জানাল। তুর বার বার নিজেকে শান্ত করে নিচ্ছে । চাচ্ছে ইগনোর করতে কিন্তু কোথাও একটা বাঁধছে। বার বার অতীতের কিছু সামনে ভেসে আসছে। তখনি ষাঁড়ের মত লোকটা বলে উঠল,
—- “ একা নাকি মামনি। যদি একা থাক তাহলে আমাদের বলো কাম্পানি দিব মামুনি, কাম্পানি দিব। আমাদের সাথে তোমার ও ইনজয় হয়ে যাবে। “
বলে ৪জন হাই ফাই করে দেশি মদ খেতে লাগল। তুর এবার সহ্য করতে পারল।
তীব্র খাবার গাড়িতে রেখে তুরকে খুঁজতে লাগল। দেখল পিছনে ফিরে দাঁড়িয়ে আছে তুর । কয়েকবার ডাকল কিন্তু সাড়া পেল না। রাগ উঠে গেল।
—- “ এই মেয়েটা … ”
তীব্র তুরের কাছে গিয়ে সামনে খেয়াল না করেই তুরের বাহু ধরে নিয়ে আসতেই তুর অনড় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ও ভ্রু কুঁচকে তুরের দিকে তাঁকাতেই সামনে থেকে একটা কর্কশ গলার বিশ্রি কথা কানে আসে,
—- “ এরে চিপকা [ চিকন লোকটার উদ্দেশ্য করে ] তোর চুঁমকির আগে থেকেই নাঁগর আছে। আমাগো আর দরকার নাই। এখন চুঁমকির ভাগ তার নাগর থেকে চা। যদি দেয়। “
বলেই আবার হাসি। কথাটা শুনে তীব্রের মাথায় আগুন জ্বলে উঠল। কিন্তু পরক্ষনেই তুরের দিকে নজর যায়। তুর অদ্ভুত ভাবে লোকগুলোকে দেখে কাঁপছে।ও কিছু একটা ভেবে থেমে যায়। বেশ তাচ্ছিল্যের সুরে তুরকে উদ্দেশ্য করে বলে,
—- “ এইজন্য বলেছিলাম মেয়েদের এতবাড় বাড়তে নেই। হালকা বিপদে পড়লেই সব শেষ। নিজেকে যার প্রোটেক্ট করার ক্ষমতা নেই সে আবার আমার সাথে… । যাই হোক চলো। “
গাড়ির দিকে ফিরে যেতে ,,,কিন্তু তুর ওর কোন কথা শুনল বলে মনে হয় না। তখনি লোকগুলোর একজন বলে উঠে,
— “ লে খোকা… হিরোইনের আগে দেখি হিরো ভয় পাইয়া গেল। মামুনি এইসব দিয়ে তোমার কাজ হবে না। তুমি বরং…”
তীব্র তুরকে কিছু বলতে ওর দিকে তাকাতেই দেখে সাথে তুর নেই। পরক্ষনেই হৃদয় কাঁপানো আত্মচিৎকার শুনতে পায়। তীব্র সামনে তাকাতেই দেখে তুর পানি ভর্তি মাটির কলস ওই ষাঁড় মত লোকটার মাথায় মেরে দিয়ে বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছে। রাগে কাঁপছে ওর শরীর। দাঁড়িয়ে থাকা চিকন লোকটা তুরের কাছে আসতেই পাশে থাকা মাঝারি সাইজের বাঁশ নিয়ে ওর মাথার বাম পাশে এত জোরে বাড়ি দেয় যে, শুকনো বাঁশটাই ফেটে যায়। লোকটা মাথায় হাত দিয়ে ওখানেই বসে পরে। তখনি তুর চেচিয়ে বলে,
—- “ তুরের কাউকে দরকার নেই। না কোন হিরোর… [ তীব্রকে উদ্দেশ্য করে ] আর না তোদের মত কাপুরুষের। যারা অসহায়ত্বের সুযোগ নেয়। তুর নিজের রক্ষা নিজে করতে জানে। “
তখনি ষাঁড়ের মত লোকটা মাথায় হাত দিয়ে চেচিয়ে বলে,
—-“ সালি তুই আমারে .. “
লোকটা উঠতে নিলেই তুর ওদের সামনে থাকা হালকা টেবিলটা হাত দ্বারা উঠিয়ে ওদের দিকে ছুড়ে মারে। তীব্র এতক্ষন অবাক চোখে তুরকে দেখছিল। ও ভেবেছিল ওর তাচ্ছিল্যে হয়ত তুর রেগে লোকগুলোকে কিছু বলবে । কিন্তু ও এমন ভাইলেন্ট কিছু করবে ভাবতে পারেনি। আসলেই এই তুর অচেনা। যে সামান্য জিনিসেই কেঁদে ভাসাতো সে আজ….। অদ্ভুত লাগছে সবকিছু। কিন্তু হঠাৎ যেন অদ্ভুত ভালোলাগাও উঁকি দেয়।নিজের অজান্তেই ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠে। বেশ ভালোই লাগছে তুরকে এভাবে দেখতে। কোন অসহায়ত্বের ছাপ নেই। অজানা দাম্ভিকতা ফুটে উঠেছে আত্ন-অহংকারের। তুর আজ ওকে হেলা করলে কিন্তু তাতে খারাপ লাগা নেই। তৃপ্তি আছে।
6
তবে একটা ব্যাপার স্পষ্ট তুর উত্তেজিত হয়ে কিছু করছে না। ও রাগলেও নিজেকে কৌশলে সামলাচ্ছে। কারন কোন মেয়ের পক্ষে গায়ের জোরে ৪জন পুরুষকে থামানো সম্ভব না। আর তুর যে গায়ের জোরে কিছু করছে না ওর স্কিল দেখে বোঝা যাচ্ছে। ব্যাপার গুলো যেন তুরের কাছে দুধভাত। লোকগুলো আঘাত করা দুরস্ত ওর কাছেই যেতে পারছে না। ৩জনকে সামনে ফেলে তুর কাঁপতে কাঁপতে বলে,
—“ সব মেয়েরা একসমান হয় না। আর না সবাই এটা ভাবে তাকে বাঁচানোর আকাশ চিড়ে , মাটি ফুড়ে কেউ আসবে। আমি তাদের মত নই। ভাগ্যকে অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছি। যা করি নিজের এবিলিটিতেই করি….“
কথাটা বলে তুর পিছে ফিরতে নিলেই খাঁটো লোকটা যে লুকিয়ে পরেছিল, সে পিছন থেকে হঠাৎ তুরের মাথায় বারি মারে, এটা দেখে তীব্র খুব জোরেই ওর নাম ধরে চিতকার করে,
—– ” তুর… ”
—- “ আহহ,,, “ চিৎকার করে উঠে তুর । মাথায় হাত দিয়ে ওই লোকটার দিকে তাকাতেই লোকটা ঢোগ গেলে । তুর খুব জোরে চেচিয়ে বলে,
—- “ জানোয়ারের বাচ্চা । কাপুরুষ কোথাকার । পিছন থেকে মারা হচ্ছে। ”
লোকটাকে একটা লাথি দিয়েই সরু একটা সুচের মাথা বিশিষ্ট লাঠি নিয়ে লোকটার গলায় বিধিয়ে দিতে ধরলেই তীব্র আটকায়। তবুও খোঁচা লেগে লোকটার গলা থেকে রক্ত বের হতে শুরু করে। তীব্র লাঠি তুরের হাত থেকে জোর করে নিয়ে ফেলে দিতেই,
—- “ ছাড়ুন আমাকে। ওকে আজ মেরে ফেলব। আমি,,, “
—- “ তুর,,, “
আর কিছু বলতে পারল না। লুটিয়ে পরল তীব্রের বুকে। জ্ঞান হারায়। তীব্র আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা করল না। দ্রুত ওকে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিল…..
★—————————-★————————-★
হঠাৎ জোর কোন আওয়াজ কানে বারি খেতেই ঘুমের মাঝে চোখ-মুখ খিঁচে নেয় তুর। যেকোন মানুষই বোধহয় এরকমটা করবে। ঘুমো ঘুমো চোখে চোখ খোলে। এতক্ষন গভীর ঘুমে থাকার কারনে চোখ মেলে তাঁকাতে বেগ পেতে হচ্ছে। ঘুমটা যেন কাঁটতেই চাইছে না। শব্দটার জন্যই ঘুম ভাঙ্গা । কিন্তু সেটা বোঝার অবকাশ নেই সদ্য ঘুম ভাঙ্গা তুরের। অবচেতন মন শরীরের অবস্থা বোঝাতে “ উমহ.. উমহ” ভারী শব্দদ্বয় উচ্চারিত করতে থাকে তুরের বন্ধ মুখ থেকে।ও বিছানা খাঁমচে মাথাটা এপাশ-ওপাশ করতেই হঠাৎ পুরোপুরি চোখ খোলে। এতক্ষন পর বোধহয় মতিষ্ক কাজ করা শুরু করেছে তুরের। নিজের আশ-পাশটা দেখেই দ্রুত উঠে বসে। পুরো রুমটা অন্ধকার। নিজের ডান দিকে তাঁকাতেই দেখে জানালার পর্দা উড়ছে। জানালার পর্দা বাতাসে বারবার সরে যাওয়াতে বাইরেটা দেখতে পাচ্ছে। বাইরে আবছায় কতগুলো ছায়ামত দানব দেখতে পাচ্ছে। কোথাও আলোর রেখা নেই তাই বোঝা যাচ্ছে না। কিন্তু ঝাপসা আঁধারের মাঝে প্রগাঢ় কালো প্রতিকৃতি দেখে তুরের বুঝতে ভুল হচেছ না ওগুলো গাছের প্রতিকৃতি। প্রতিকৃতির উপরের দিকে চোখ যেতেই গুটি কয়েক জ্বলজ্বল তারা দেখতে পায়। তারমানে আকাশ হালকা মেঘলা । আর অতিরিক্ত অন্ধকারের কারন স্বরুপ এটাই বলা যায়, আজ চন্দ্র-বিলুপ্তির রাত । মানে অমাবস্যা। তাই প্রকৃতির ধারণকৃত রুপ এতটা কালো ।
হঠাৎ ওর খেয়াল আসে কোথায় আছে ও? প্রশ্নটা মনে আসা মাত্রই একপ্রকার ভয় আর অস্থিরতা পেয়ে বসে মনে। বাইরেটা আবছা বোঝা গেলেও ভিতরটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। রুমের ভিতরের কিছু দেখা যাচ্ছে না। তখনি মাথায় আসে কোন বিপদ…. পর মুহূর্তে মনে পরে, এত বছর একা থাকলেও আজ তো তীব্র ওর সাথে ছিল। একা থাকার অভ্যাস তো তাই চেতন মতিষ্ক সেটা বুঝতে সময় নিল যে , ও তো একা নয়। তীব্র আছে। মুহূর্তেই মনের মাঝে সৃষ্ট ভয়, অস্থিরতাটা কেঁটে গেল। একটা স্বস্তির নিশ্বাস নিল। ও নিরাপদে আছে।
কিন্তু পরক্ষনেই আবার একটা প্রশ্ন মনে উঁকি দিতে লাগল, বিকট শব্দটা কিসের ছিল? আর তীব্র? তীব্র কই? ও বিছানায় হাঁতরে দেখল । না নেই তীব্র। তাহলে কী তীব্র কোন… আর কিছু ভাবতে পারল না। ঠোঁটের আঁগায় তীব্রের নাম রেখেই ও গায়ের কাঁথা সরিয়ে দ্রুত নিজের ডান দিক দিয়ে বিছানা থেকে নিচে নামে। কিন্তু অন্ধকারের মাঝে দিক ঠিক করতে না পেরে সামনে এগোতেই সজোরে কিছুর সাথে বারি খায়। “ আহহ “ শব্দে চিৎকার করে উঠে তুর। বারিটা ডন কাঁধে খাওয়ার কারনে বাম হাত দিয়ে চেপে ধরে। ডান হাতের ডানাটা ঝিনঝিন করছে। প্রচন্ড রাগ লাগল। উত্তেজনা আর বিরক্তিতে ও সজোরে ডান হাতটা ঝারা দিতেই লাইট জ্বলে উঠল। বাম হাতে ডানাটা চেপে ধরে সামনের দিকে তাঁকাতেই তীব্রকে দেখতে পায়। মূহুর্তের মনের ভয়টা মিশে স্বস্তি ফিরে আসে। ও হাত দুটো ছেড়ে দিয়ে তীব্রের দিকে তাঁকিয়ে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে। তুরের ব্যাপারটা তীব্রের ঠিক বোধগম্য হলো না। ও জিজ্ঞাসাসূচক দৃষ্টি দিয়ে তুরের কাছে জানতে চাইবে “ তুর কি হয়েছে ? “ কিন্তু তা বলার সুযোগ দিল না তুর। তীব্র শুধু ‘’ তুর … “ শব্দটা উচ্চারন করতে পারল। সেই মূহুর্তে তুর অনেকটা দৌড়ে তীব্রের দিকে এগিয়ে গেল। তীব্র সামনে একটা টেবিল দেখল,
—- “ তুর সাবধান।”
কিন্তু তুর কিছু বুঝে উঠার আগেই টেবিলের সাথে প্রচন্ড জোরে ধাক্কা লেগে আঘাত পায় হাঁটুতে। সাথে সাথে এক হাঁটু গেড়ে বসে ব্যাথায় হাঁটু চেপে ধরে। প্রচন্ড লেগেছে। এটা দেখে তীব্র বলদের মত তাকায় তুরের দিকে। ও কী করবে? বা তুর কী করতে চেয়েছে কোনটাই ওর বোধগম্য হয়নি । বোঝার চেষ্টা করছে। নিজের ব্যাথাটা সামলে বড় বড় নিশ্বাস নিয়ে ছলোছলো চোখে তীব্রের দিকে তাকিয়ে কয়েকটা ঢোক গেলে। কিছু বলতে চেয়েও পারল না । কোন কিছু যেন গলায় দলা পাকিয়ে ভারি হয়ে আটকে আসছে। ঠোঁট কাঁমরে কান্নাটা আঁটকানোর চেষ্টা করল। খুব রাগ লাগছে নিজের আর তীব্রের প্রতি । তীব্রের কিছু হলো কিনা? এমন অদ্ভুত ভাবনা আনল কিভাবে? আর ওকে দেখে কিভাবে ওর বুকে ঝাপিয়ে পরতে চাইল। আর তীব্রের প্রতি রাগ লাগছে ও কেন ওকে থামতে বলল? নাহলে ঠিকি তো চলে যেতে পারত ওর বুকে। উভয়ের কারনে রাগ লাগল। কিন্তু কেন? জানা নেই।নিজেকে সামলে দ্রুত উঠে দাঁড়ালো । নিজেকে ঝারতে ঝারতে আড়চোখে তীব্রের দিকে তাঁকিয়ে আবার নিজের দৃষ্টি ওর থেকে লুঁকাতে চাইল। চোখে যে পানি। তীব্রের কাছে সেটা শরীরের ব্যাথার মনে হলেও আসলে কী তাই?
তীব্র বলদের মত তাকিয়ে থাকলেও এবার অট্টহাসিতে ফেটে পরে। হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। তীব্রের প্রতি রাগ আর বিরক্তি দু’টোই আসছে। ও রেগে বলল,
—“ পাগলের মত হাসছেন কেন? “
—– ” আসলে… ( হাসির জন্য জবাব দিতে পারল না। ) আসলে আমি… ”
—– ” চুপ করুন। ”
—– আচ্ছা ঠিক আছে। ( কিছুটা হাসি থামালেও হাসির রেশ না। ) তা তুমি এভাবে দৌড় দিচ্ছিলে কেন? নিশ্চয় পালানোর জন্য। ”
বলেই আবার হাসি শুরু। এমনি তুরের ভালো লাগছে না তার উপর তীব্রের গা জ্বালানো এসব কথা।
_—- ” হ্যা, ঠিক। আপনাকে মেরে এখান থেকে পালাতে চাইছিলাম। ”
বলেই রাগে গজগজ করতে থাকে। তীব্র আরেক ধাপ হাসি দিয়ে বলল,
—– ” বড়দের সাথে বেয়াদবির ফল। উচিত শিক্ষা হয়েছে। ”
তুরের কথাটা সহ্য হলো না। যে টেবিলের সাথে বাড়ি খেয়েছে তা লাথি দিয়ে ফেলে দিল। কিন্তু তাতে তীব্রের হাসি বেড়ে গেল। তুর আরো রাগী দৃষ্টি দিল তীব্রের দিকে দিকে।
—— ” কীহল এভাবে দেখছ যে খুন করবে নাকি? যে রুপ দেখিয়েছেন আপনি তাতে এইটা স্বাভাবিক। এমনিতেও আমাকে মারার জন্য অনেক কারন আছে তোমার। ”
কথাটা শুনে রাগে উত্তেজিত হয়ে তুর নিজের আশ-পাশটা দেখল। কিন্তু তেমন কিছুই পেল না। ওদিকে তুরকে আরো রাগানোর জন্য কটাক্ষ বাণী ক্রমাগত উচ্চারণ করে যাচ্ছে তীব্র। ও চাইছে তুর রাগুক। আর হচ্ছেও তাই। নিজের রাগকে কন্ট্রোল করতে না পেরে পাশে থাকা ড্রেসিং টেবিলটাই ফেলে দিল তুর। আর সঙ্গে সঙ্গে তার আয়নার কাচ তীব্রের পায়ের কাছে গেল… এটা দেখে তীব্র চোখ বড়বড় করে বলে উঠে,
—– ” বাবরে এত তেজ! গ্রেট ইয়ার! ( পরক্ষনেই দুষ্ট হাসি দেয়। ) ঠিকি আছে তীব্রের বউয়ের যদি এইটুকু তেজ না থাকে তাহলে মানায় না। আফটার অল.. ঝাল মরিচে তেজ থাকলেও মানুষ সেটাই বেশি পছন্দ করে। আর তুমি তো এখন সবদিক দিয়েই নাগা মরিচ। লুক, বিহেভ, ( তুরকে আপাদমস্তক পর্যবেক্ষন করে ) ফিগার… সবদিক দিয়েই জাস্ট…. ওয়াও… 👌 ” ( আঙুল দিয়ে ইশারা করে।
—— ” আপনি….. ”
প্রচন্ড রেগে তীব্রের দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু পরক্ষনেই নিচের কাচের দিকে চোখ যেতে, তীব্রের কাছাকাছি গিয়েও থেমে যায়। পা আর সামনে বাড়াতে পারে না। কোন কাচে পা দেবে তা খোঁজার চেষ্টা করে। কোনটাই যেন তুরের পা রাখার জন্য প্রস্তুত না। আবারো নিজের মাঝেই অশান্ত হয়ে পরে। তীব্রের একহাত দূরত্বে তুর। তুরের থেমে যাওয়ার কারন জানার লক্ষ্যে নিচে তাকায় । কাচগুলো ভেঙে আছে। ও একবার তুরের নিচে নামানো চোখের দিকে আরেকবার কাচের প্রতিবিম্বের দিকে নজর দেয়। তুরের চোখ-মুখে পা কাঁটার ভয় নয় বরং অস্বস্তি। অদ্ভুতময় শ্বাস উঠা-নামার অস্বস্তি। কী করবে বুঝতে পারছে না তুর! তুরের পা উঠিয়ে; কাচে পা না রাখার কারন আবিষ্কার করতেই ঠোঁটের কোনে বাঁকা হাসি ফুটে তীব্রের। এই কাচে পা রাখলে পা কাঁটার সম্ভবনা নেই। কারন প্রতিটি টুকরো বড়। কিন্তু তবুও তুর পা না রেখে নিচের দিকে তাকিয়ে, নিজের ডান পা রাখার জায়গা খুঁজছে। কারন, কাচের আয়নার প্রতিটি টুকরোতে তীব্রের মুখের ছবি প্রতিফলিত হয়েছে। তাই তুর পা উঠিয়ে তাতে পা রাখতে পারছে আ। বাঁধছে বলতে ভুল হবে। পা দেওয়ার কথা ভাবতেই পারছে না।
তীব্র ওর অবস্থা বুঝতে পেরে নিজেই কাচে পা দিয়ে তুরের দিকে এগিয়ে গেল। তুর মাথা তুলে তীব্রের চোখে চোখ রাখে। তুরের চোখে স্বস্তির আভা দেখতে পায়। গভীর চোখের প্রণয়ী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তীব্রের দিকে। বেশিক্ষন নিজের দৃষ্টি স্থীর রাখতে পারে না তীব্র, ওই চোখে । চোখ বন্ধ করে নেয়। পরক্ষনেই চোখ মেলে তুরের গাল নিজের দু’হাতে আবদ্ধ করে মোহিত কণ্ঠে বলে,
—– ” যেহেতু তোমার কাছে হাজারবার মরতে চাই। তাই আমাকে মারার ব্যবস্থা আমি করে দিচ্ছি। এই কাচগুলো জন্য পারছ না। তাই না। ”
নিশ্চুপ তুর তীব্রের স্পর্শে চোখে বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে। এমতাবস্তায় তুরকে দেখে আর কিছু না বলেই কোলে তুলে নেয় তীব্র। হঠাৎ তীব্রের এমন আক্রমণে হুশ ফেরে তুরের। তুর ছটফট করতে থাকে আর তীব্র মুগ্ধ নয়নে ওকে দেখতে থাকে।
—– ” ছাড়ুন আমাকে। কোলে নিলে কাউকে মারা যায় নাকি? ”
নিজেকে ছাড়ানোর এমন বোকা কথায় তীব্রের হাসি পায়।
—– ” এই মেয়ে তুমি আমাকে যেভাবে মারতে চাও না কেন? আমি যেভাবে মরতে চাই তার জন্য এটাই পারফেক্ট। ”
_— ” আমাকে নামান বলছি। নাহলে কিন্তু… ”
এটা শুনে তীব্র ওকে ছেড়ে দিতে নেয়। কিন্তু পরে যাওয়ার ভয়ে তুর ওকে জড়িয়ে ধরে।
——- ” কী করছেন? আমার কোমর ভাঙতে চান নাকি? ”
তীব্র ইনোসেন্ট ফেস করে বলে,
—— ” আমার কী দোষ? তুমি নিজেই তো বললে? ”
—— ” দেখুন ছাড়ুন আমাকে। ”
সঙ্গে সঙ্গে তীব্র দাঁড়িয়ে যায়। সন্দেহের দৃষ্টিতে তুরের দিকে তাকায়। তুর আমতা আমতা চোখে তীব্রের দিকে তাকায় আবার চোখ সরিয়ে নেয়। তীব্রের প্রকাশ ভঙ্গি ভালো ঠেকছে না তুরের। ও ঢোক গিলে অস্বস্তি নিয়ে বলল,
—— ” ক–ক-কী এ..ভাবে… এভাবে কী দেখছেন? ”
—— ” ব্যাপার কী বলত তুরমনি? তখন ৪টা লোককে কত সুন্দর কৌশলে ধরাসাই করে দিলে; আর এখন সামান্য আমার থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারছো না। ”
তুর আমতা আমতা করে বলল,
—– মানে..”
—— ” মানে ( হালকা হেসে তুরকে ঝাকি দিয়ে নিজের মুখের কাছে নিয়ে এলো। একবার তুরের ঠোঁট আরেকবার ওর চোখের দিকে তাকিয়ে সন্দেহের দৃষ্টিতে বলল) আমার থেকে নিজেকে ছাড়াতে চাইছ। নাকি এটা বুঝাতে চাইছ, ( ঘরে আজ একা আছি আপনি কিন্তু ভুলেও আসবেন না। একদম আসবেন না। আমি একা আছি কিন্তু…) এরকম কিছুই বলছ নাকি? ” ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে।
তুর অবাক হয়ে উত্তর দেয়, ” মানে… ”
আলত হাসে তীব্র, ” ওইযে তুমি ঘরে একা আছো। আর সেটা আমাকে জানিয়েও দিচ্ছ। কারন তুমি একা থাকলে তো আমি যাবই। এর সারাংশ এটাই, তুমি নিজে থেকেই আমার কোল থেকে নামতে চাইছ না। ”
কথাটা শুনে তুর তীব্রের শার্টের কলার খাঁমচে ধরে বলে,
—— ” আমি নিশ্চয় ওই লোকগুলোর কোলে উঠে কিছু করিনি। আর আপনি আমাকে যেভাবে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে কোলে নিয়ে আছেন তাতে…. “বিরক্তির হাসি দিয়ে।
তীব্র আরো শক্ত করে জড়িয়ে নেয় ওকে। আর পরে যাবার ভয়ে গলা জড়িয়ে ধরে তুর। তখনি তীব্র বলে,
—— ” আমি ছেড়ে দেওয়ার পর যদি তুমি নিজেকে আমার থেকে ছাড়াতে না পারো তাহলে কিন্তু এখান থেকে যেতে পারবে না। আর আমার কথা শুনতে হবে। আমি যা বলব তাই। রাজি…”
তুর বেশ চিন্তায় পরে যায়। এই লোককে কোন বিশ্বাস নেই। মানুষটি প্রতিপক্ষ হিসেবে জন্য ঠিক নয়। প্রতিপক্ষের সাথে লড়াই মানেই যুদ্ধ। আর এই লোকের সাথে যুদ্ধ মানে মানসিক লড়াই। অন্য প্রতিপক্ষে শারীরিক ভাবে আঘাত করলেও এ মানসিক ভাবে শেষ করে দেবে ওকে। ও আঘাত করতে গেলে তীব্র ওর সাথে লড়াই নয় খেলা খেলবে। আর তার নাম হলো ” গেইম অফ লাভ ” মানে ” ভালোবাসার খেলা “।
তুরকে এমন চিন্তিত দেখে তীব্র কটাক্ষ করে জিজ্ঞেস করল,
-_— ভয় পেয়েছ? জানি ভয় পেয়েছ। জানোই তো তীব্রের সাথে যেকোন কিছুতেই তোমার হার নিশ্চিত। ”
—— ” দেখুন… ”
—— ” রিলাক্স এত রাগ করো না। তুমি সবকিছুতে আমার কাছে হারলেও দিন শেষে যে আমি তোমার কাছে বারবার পরাজিত। তোমার হার ক্ষনিকের কিন্তু আমারটা তো অফুরন্ত। ” লম্বা শ্বাস নেয়।
নিশ্চুপ তুর। তীব্র আবার বলে,
—– ” সত্যি তো তুমি ভিতু! ”
রাগ লাগে তুরের। চোখ মুখ শক্ত করে জবাব দেয়,
—– ” একবার ছেড়ে দিন। তারপর দেখুন। ”
—– ” ওকে। ”
, তুরকে নামিয়ে দেয়। তুর নেমেই তীব্রকে ধাক্কা দিয়ে নিজের কাছ থেকে সরাতে চায়। কিন্তু তীব্র ওর হাত ধরে টেনে বুকের সাথে মিশিয়ে হাত গুলো তুরের পিছনে মুড়ে ধরে। তুর রাগে তীব্রের পায়ে পারা দিতে চায়। কিন্তু পারে না। তীব্র এমন কিছু করে যাতে ওর নিজের মাথার চুল ছিড়তে চাওয়ার উপক্রম। কিন্তু হাত বাঁধার কারনে তাও পারছে না। যা ভেবেছে তাই। তীব্র নিজের খেলায় মেতে উঠেছে।
তুর পায়ে পারা দেওয়ার সাথে সাথে তীব্র নিজের হাঁটু দিয়ে তুরের হাঁটুর ভাজে বারি মারে। তৎক্ষনাৎ দু’হাঁটু গেঁড়ে বসে পরে তুর। কিন্তু উঠার চেষ্টা করেও পারে না। কারন তীব্র ওর হাঁটু থেকে পায়ের গিঁড়া নিজের পা দ্বারা মাটিতে আটকে রেখে নিজেও ওর সাথে মাটিতে বসে পরেছে। তুরের দু’হাত আগে থেকেই তীব্র নিজের বাম হাতে তুরের পিঠে আটকে রেখেছে। তীব্র এক’পা দিয়ে তুরের পা আটকে আরেক পায়ের হাটু উঠিয়ে, তাতে ডান হাতের কনুই রাখে। নিজের গালে হাত দিয়ে তাচ্ছিল্যের সুরে বলতে থাকে,
—— ” আহারে বেচারি আমার কথা শোনার জন্য কত তাড়া। লড়াই শুরুর আগেই হার স্বীকার করে নিল। এই যাহহ… আমিও কত বোকা! এটা ভুলে গেলাম কী করে? আমি তো ওদের মত গুন্ডা নই। আমি তো… ”
—– ” আপনি… ”
তীব্র এমন ভাবে তুরকে আটকে রেখেছে যে ও নড়তেই পারছে না। তুরের ছটফটানি দেখে তীব্র বেশ মজা লাগল। তাই ওকে আরো রাগানোর জন্য বাম হাতে তুরের হাত আরো শক্ত করে চেপে ধরে ডান হাতে ওর ঠোঁট স্পর্শ করল। তুর প্রচন্ড গর্জে বলে,
—— ” এখানে আমি রোমান্স করার জন্য আসিনি আপনার সাথে। ”
তীব্র না চাইতেও বিষম খেয়ে হাসল,
—— ” সরি… ( নিজের মুখ চেপে হেসে। তারপর নিজেকে নরমাল করে বলল৷) তুমি নাহয় রোমান্সের জন্য আসোনি। কিন্তু তুমি তো ভালো করেই জানো আমি রোমান্সের জন্য তোমাকে নিয়ে এসেছি। এই দাঁড়াও দাঁড়াও… ( চমকে উঠে তুর। তীব্রের ভাব এমন যে কত গুরুত্বপূর্ন কিছু মনে পরেছে।) এই তুমি কী বললে? তুমি আমার সাথে এসেছ। কিন্তু আমি তো তোমাকে জোর করে এনেছি আমার জানা মতে তাহলে… ”
নিশ্চুপ তুর।বুঝতে পারছে কথার মানে। মাথা নিচু করে তাকিয়ে আছে। এটা দেখে তীব্র ওর থুঁতনি ধরে উঁচু করে ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চোখে চোখ রাখে।
_—– ” এর মানে কী এটাই ভাববো আমি তোমাকে জোর করে নিয়ে এলেও তুমি মানসিক ভাবে আমার কাছে আসতে চাইছিলে। শুধু মুখ ফুটে বলতে পারনি। ”
—— ” বড্ড বেশি ভাবেন আপনি। এইটা ভুলে গেলেন কিভাবে আপনি নিজের সাথে আমাকে জোর করে এনেছেন। আর এখানে সেন্সলেস অবস্থায়। তাহলে আমি কিভ……”
আর বলতে দিল না তুরকে। বন্ধ করে দেয় ওর কথা। সুন্দর কিছু মূহুর্ত তিক্ততার কথা শুনতে চায় না । তুর এতক্ষন ছটফট করলেও তীব্রের স্পর্শে শান্ত হয়ে যায়।কিছুক্ষন তীব্র ওর দিকে দেখতেই দেখে, তুর চোখ বন্ধ করে ভারী শ্বাস নিচ্ছে।
তীব্র হালকা কণ্ঠে বলে,
—–” জানো তো বোকা পাখি তোমার দুইটা মারাত্তক দোষ আছে।
১। তোমার বুক ফাটে তো মুখ ফুটেনা। আর,
২। বুকের মাঝে ভালোবাসা সাগর নিয়ে বসে থেকে সেই সাগরের বিষগুলোই শুধু মুখে আনো।আরে বাবা মাঝে মাঝে ভালোবাসা বের করলে কী কমে যাবে নাকি? ”
—– ” আপনি… ” আবার রাগীয়ে দিল তুরকে।
—– ” আমি জানি… বললাম তো আমি জানি, তুমি অনেক তেজস্বী, ঝাঝালো একজন নারী। সেটা বলার কী আছে। পাবলিক জানে এসব। তোমার বলতে হবে না। ” চোখ মেরে।
তুরের মুখে কোন কথা নেই। ক্লান্ত হয়ে পরেছে তীব্রের সাথে ঝগড়াতে। মেয়েরাও বোধহয় এতটা কনফিউজড করতে পারে না। যতটা তীব্র করেছে।
হঠাৎ তীব্র চিৎকার করে বলল, ” তুর.. ”
সচকিত হয়ে তুর জবাব দেয়, কী? ”
তুরের গালে হাত দিয়ে বলে, ” চল একটা খেলা খেলি। যার নাম… ”
ভ্রু কুঁচকায় তুর। বাঁকা হাসে তীব্র, ” এত নেগেটিভ ভাব কেন? আমি যা খেলতে চাই তার নাম ( তুরের দিকে এগিয়ে ) #বাঘ_বন্দী_খেলা… উফফস… সরি ওটা হবে বাঘীনি বন্দী খেলা হবে। তুমি তো ফিমেইল… ”
তুর নিজের শরীরটাকে ঝারা মেরে বলে,
—— ” আমাকে কী আপনার শত্রু ভাবছেন নাকি? ”
হেসে উঠে তীব্র,
—— ” অবশ্যই। বিয়ের পর থেকেই তুমি আমার শত্রু। কোন এক মহাপুরুষ বলেছেন , বিয়ে আর যুদ্ধে শুধু একটাই তফাৎ। যুদ্ধে শত্রুর ক্যাম আলাদা হয়। আর বিয়েতে একসাথে থাকতে হয়। “
নিশ্চুপ তুর। শুধু রেগে তীব্রের দিকে তাকিয়ে আছে। সেটা দেখেও না দেখার ভান করে তীব্র।
—– ” আমাকে কী এভাবেই আঁটকে রাখবেন? ”
—– ” ছাড়লেই তো ছটফট করবা। যদিও ভালোই লাগে৷ ”
—– ” ছাড়ুন। ” চোখ পাঁকিয়ে।
—– ” যদি আমার কথা শোন তো। ”
মুখ ফিরিয়ে বলল,
—– ” কখনো না। ”
তীব্র মুখটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়।
—– ” কথা ছিল কিন্তু হেরে গেলে আমার কথা শুনতে হবে। আর তুমি হার স্বীকার করছ না। আবার আমার কথাও শুনছ না। মানে চুরি করে আবার বাটপারি। ” রাগী ফেস করে।
নিশ্চুপ তুর। তীব্র কিছুক্ষন ভেবে আবার বলে,
—– ” আচ্ছা ছেড়ে দিতে পারি যদি… ”
-_– ” যদি কী? ”
—- ” ছেড়ে দিলে যদি এখান থেকে নিজের পায়ে সেচ্ছায় চলে যাও। মানে ছেড়ে দেওয়ার ৩০মিনিটের মধ্যে যদি তুমি চলে যাও তাহলে। ”
ভ্রু কুঁচকায় তুর। সত্যি ওকে যেতে দিবে। অবিশ্বাস্য।
—– ” আপনি সত্যি যেতে দিবেন। ”
মাথা উপর নিচ করে তীব্র।
—– ” এমনি যেতে দেবেন? আটকাবেন না? ”
মাথা নাড়িয়ে না জানায়।
—— ” তাহলে ডান। ”
—— ” আমি কিছুই করব না। তবে মনে রেখ তুমি যদি যেতে না পার তাহলে আজকে আমি যা বলব তোমাকে তাই তাই করতে হবে, শুনতে হবে, বলতে হবে। ডিল… ”
—– ” ওকে ডিল। ”
তখনি তীব্র তুরের হাত ছেঁড়ে দেয়। আঁটকানো পা থেকে নিজের পা উঠিয়ে নিতেই তুর দ্রুত উঠতে যায় যাতে তীব্রের হাতের ভর ওর পায়ের গীড়ায় পরে। আর সাথে সাথে তুর “উহুহ” করে উঠে। তীব্র দ্রুত উঠে,
—— ” ছেড়েছি না যেন বাঁন ছুটিয়ে দিয়েছি। পাগল হয়ে গেছে। যাই হোক তাড়াতাড়ি উঠে যাও। ”
তুর কিছু বলতে গিয়েও বলল না। মনে মনে বলল, ” একবার বেড়োই তারপর বুঝাবো। ”
—– ” কীহল উঠো। সময় চলে যাচ্ছে। ”
—- ” হ্যা… ”
তুর উঠতে গেলেই কুঁত করে উঠল। পায়ের দিকে তাকাতেই দেখে উঠতে পারছে না। ওদিকে তীব্র তাড়া দিচ্ছে।
—– ” কীহল উঠো? ”
তুর জোরে ট্রাই করতেই প্রচন্ড ব্যাথায় চিৎকার করে উঠল। তীব্র দ্রুত ওর কাছে গিয়ে ” কী হল? ”
-_– ” পায়ে ব্যাথা করছে। উঠাতে পারছি না।”
—– ” কই দেখি? ”
তীব্র ওর ব্যাথা পা’টা দেখল। তারপর বেশ দুঃখী মুখ করে বলল,
_—- ” এই যাহহ.। তোমার পা তো মঁচকে গেছে। এবার তুমি কী করে বাইরে যাবে। বাইরে ছাড় হাঁটবে কীভাবে? ”
—– ” আমার পা নাড়াতে পারছি না। আর আপনি… এই দাঁড়ান আমি বলার আগেই আপনি কিভাবে বুঝলেন আমার ডান পায়ে লেগেছে। আপনি তো আমার ডান পায়েই পরেছিলেন। মানে আপনি ইচ্ছে করে… ” বলেই কান্না শুরু করে দিল বাচ্চাদের মত।
—— ” বুঝতেই পেরেছ তাইলে আর কী বলব? এখন ৩০মিনিটে কেন? সারা রাতেও পারবে না। যদি না আমি চাই। বাইরে রে তো ছাড় বাথরুমেও না। ”
—— ” আপনি এটা করতে পারেন না। ”
—– ” সরি বেবি। করে ফেলেছি। যুদ্ধে আর প্রেমে নাকি সব কিছু জায়েজ। আর উভয়টাই কোন কিছু পরিকল্পনা মত হয় না। এখন চলো এমনিতেও হেরে যাবে। কান্নাকাটি মাটি থেকে উপরে কর। মেঝেতে ভালো লাগছে না।”
বলেই তুরকে কোলে তুলে নেয়। আর তুর প্রায় কেঁদেই দেয় বাচ্চাদের মত। ভ্যা…
—— ” আপনি এভাবে আমার সাথে শত্রুতা করলেন? ” অ্যা…
—- “ যুদ্ধ মানে শত্রু শত্রু খেলা।
যুদ্ধ মানে আমার প্রতি তোমার অবহেলা।”
তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তুর। তাই দেখে তীব্র ন্যাকামি করে বলে,
—– ” ওলেলে বাবুটা।এটা আমার না। বাংলা ছবির কমন ডায়লক। ”
—– ” তীব্রররর….. ” কানফাটানি চিৎকার দেয় তুর.…..
,
,
,,
,
,
,
,
,
[ বাকিটা পরের পর্ব গুলোতে জানবেন🖤 ]
Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr