বন্ধ_দরজায়_তুমি🖤Part: 09..+10.
#Written_By_Mêhèriyâr_Mêhèr
….
তীব্র তুরের মুখে বাতাস দিতেই তুর একবার জোরে শ্বাস টানে। তারপর তীব্র ওকে।পানি খাওয়াও। ঠিক তখন তুর আবার তাকে আবছা ভাবে দেখে যে ওকে পানি খাইয়েছে। তারপর আবার জ্ঞান হারায়। দুর্বলতা ওকে আর সায় দেয় না। কিছুক্ষন পর ওর শ্বাসের গতি ঠিক হয়ে আসে। । তীব্র ওর মুখ আর ঠোঁট থেকে চুল সরিয়ে ওর গালে আলত স্লাইড করে। তীব্র কি করছে ও নিজেও জানে না। ও আবার তুর গাড়িতে তুলে এবার শক্ত করে বুকের মাঝে আকড়ে ধরে যাতে একটুও পরতে না পারে…..
,
,তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো তুরের সাথে এতকিছু হয়ে গেছে তার কোনোকিছুই তুরের মনে নেই। কারন প্রথম দিকে তুর নেশাগ্রস্ত ছিল আর পরে সেন্সলেস….. ও শুধু দুইবার দুইটি লোককে আবছা ভাবে দেখেছে যে তীব্র ছিল…..
প্রায় মাঝ রাতের দিকে বাড়ি ফেরে তীব্র। তীব্রের কথায় বাধ্য হয়েই অনেকটা দ্রুত ড্রাইভ করে আসতে হয়েছে।
বাড়ি ফিরে ও তুরকে নিয়ে কি করবে ভেবে পায় না। মেয়েটাকে এনেছে ঠিক আছে কিন্তু রাখবে কই। এমনটা না যে ওর বাড়িতে কোনো রুম নেই। কিন্তু সেখানে এই মেয়েটাকে কোথায় রাখবে…. রিদ্ধ খুব ভালো ভাবেই তীব্রের অসহায় অবস্থা বুঝতে পারল। কিন্তু এই সুযোগ ছাড়া যায় নাকি। তাই অনেকটা অবুঝের মত বলে…..
— এখন কি হবে? স্যার এই মেয়েটা এখন থাকবে কই? 😕 না মানে আমার বাড়িতে রাখলে তো আমার সমস্যা নেই😁 কিন্তু আমার গার্লফ্রেন্ড জানতে পারল ব্রেকয়াপ। আর বাবা মা জানতে পারলে তো ঘর থেকে বের করে দিবে। 😑 নাইলে ওকে রাখতে কোনো সমস্যা হত না😁
রিদ্ধ বেশ ভালোই বুঝল তীব্র রেগেছে। আর এটাও বুঝল তীব্র এটা নিয়ে আজগরের মত ফোস ফোস করবে কিন্তু কিছু বলবে না। এই একটা ব্যাপারে রিদ্ধ নির্ভয়ে থাকতে পারে যে তীব্র রাগলেও কিছু বলবে না।
— স্যার এখন কি করবেন? আচ্ছা মেয়েটা যে রুমে ছিল সেই রুম রেখে আসব?
এবার বেশ বিরক্ত হয়ে রাগী কন্ঠে উত্তর দেয় তীব্র……
— ওকে নিয়ে তোমাকে না ভাবলেও চলবে।
তারপর কোলে তুলে সোজা নিজের রুমে পা বাড়ায়। তুরকে নিয়ে ওর বিছানায় শুইয়ে দেয়। রিদ্ধ এবার আরো বেশি অবাক হয় যে লোকের কাছে আজ পর্যন্ত হাজার চেষ্টার পর কোনো মেয়েকে কাছে আনতে পারল না। এমনকি ওর বাড়িতে কোনো মহিলা স্টাফ পর্যন্ত রাখা হয় না। সে কিনা এই মেয়েটিকে তার বাড়িতে না তার রুমে নিজের বিছানায় জায়গা দিয়েছে….. কিন্তু কেন???
তীব্র তুরকে বিছানায় শুইয়ে ওর পুরো শরীর একবার স্কান করে নেয়। শরীরে লাল লেহেঙ্গা। সাজ দেখে বোঝাই যাচ্ছে বিয়ে বাড়ি থেকে আনা হয়েছে। তীব্র ওকে দেখার জন্য কপালে হাত দিতে গিয়েও থমকে যায়। কিছু একটা ভেবে রিদ্ধকে বলে উঠল…..
— ডা. কে ফোন দিয়ে এই মুহুর্তে আসতে বলো।
— কিন্তু স্যার ডা. অরুনকে কেন?
— রিদ্ধ…..
— ওকে স্যার….
তারপর রিদ্ধ ডা. অরুনকে ফোন। মাঝরাতে এটা কারো জন্যই কাম্য নয়। কিন্তু যেহেতু তীব্রের ফোন তাই ডাক্তার অরুন তীব্রের বাড়িতে আসে। ওনাকে দেখে বোঝাই যাচ্ছে ওনি রেগে আছে। ও সরাসরি তীব্রের রমে যায়। গিয়ে রিদ্ধর মত ওনি নিজেও শকড খায় তীব্রের বেডে একটা মেয়েকে আবিষ্কার করে। আর এটাও বুঝতে পারল তীব্র কেন তাকে ডেকেছে..……
ও তুরকে দেখে নিল। তারপর একটা ইনজেকশন পুশ করিয়ে বলল…..
— এর জন্য মাঝ রাতে আমাকে হয়রান না করলেও পারতে রিদ্ধ।
— আমি নিজেই হয়রান আপনাকে কি বলব?
তীব্র চুপচাপ এতক্ষন দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু এবার ডা. অরুনের কথায় থমকে গেল।
— আচ্ছা মেয়েটা কে? দেখে তো মনে হচ্ছে বিয়ের কনে। অনেক বেশি টানা হ্যাচরা করা হয়েছে তাই এই অবস্থা । আর গালে এই দাগগুলো কেন?
— সেটা আপনার না জানলেও চলবে। যেটা করতে এসেছেন তাই করুন। [ তীব্রের এবার রাগ লাগল ও কেন ডেকেছে অরুনকে। তীব্রের কথায় অরুন স্মিত হাসল। ও হয়ত এমন কিছুই আশা করেছিল। ]
— সেটা আপনার পারর্সোনাল ব্যাপার। সে যাই হোক আমার কাজ শেষ বাকিটা আপনি করে নিতে পারবেন।
তীব্র চুপ…….
— আর হ্যা…. মেয়েটার ড্রেসটা চেঞ্জ করে মুছিয়ে দিতে হবে নাহলে কিন্তু ঘায়ে ইনফেকশন হয়ে যাবে সেটা আপনাকে বলে দিতে হবে না আমার। সো আমি কি কাউকে পাঠাব। [ তীব্র রাগী চোখে ওর দিকে তাকায় ] না মানে আমার জানা মতে এখানে কোনো মেয়ে থাকে না তাই……
এবার তীব্র বেশ কড়া কন্ঠে বলে উঠল…..
— সেটা আপনার না ভাবলেও চলবে। I will manage…..
ওর কথায় হালকা হাসল অরুন…
— I know. You will manage…..
তারপর তুরের দিকে তাকিয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন। এবার ফ্যাসাদে পরল তীব্র। ও রিদ্ধের দিকে তাকিয়ে রিদ্ধ বেশ বড় একটা হাই তুলল… এর মানে তীব্রের কাছে স্পষ্ট….
— স্যার অরুন স্যার তো বলল মেয়েটার ড্রেস চেঞ্জ করতে হবে। এখন সেইটা কি আমাকেই বলবেন? তাহলে আগেই…..
— Just shut up & get lost….
প্রচন্ড রেগে গেল তীব্র। ছেলেটা অতিরিক্ত করছে এই মেয়েটাকে নিয়ে। রিদ্ধ রুম থেকে কোনো মতে পালিয়ে বাচে। দরজার বাইরে দাড়িয়ে রিদ্ধ বলে….
— আরে আজব এই কাজটা করতে বললে তো মানা করতাম না। এবার স্যার তো বললোই না উল্টো বের করে দিল…..
ওরা রুম থেকে বেড়িয়ে যেতেই তীব্র প্রচন্ড বেগে দরজা আটকে দেয়। তারপর তুরের কাছে যায়। তারপর বিছানায় ওর পাশে বসে…..
তীব্র ওর দিকে বেশ কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে। ওর গালের দিকে নজর যেতেই দেখে থাপ্পাড়ের ছাপ স্পষ্ট। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কেটে গেছে। ওর পায়ের দিকে নজর যেতেই দেখে সেখানে পুরো কাপর রক্তে শুকিয়ে গেছে। তিনদিন আগের কাপর চেঞ্জ করে শরীর না মুছালে ইনফেকশন হয়ে যাবে। তীব্রের প্রথমে খুব হ্যাজিট্রট লাগছিল
কিন্তু কি মনে করে পানি আর তোয়ালে নিয়ে এলো। ওর একটা কথাই মনে হলো দায়িত্বের চেয়ে বড় কিছু না। আর জিবনের চেয়ে বেশি কিছুই না।
তারপর লাইটটা নিভিয়ে দিল তীব্র। তুরের শরীর মুছিয়ে ওর একটা লম্বা সাদা শার্ট তুরের গায়ে জড়িয়ে দিল। ওর মাথার চুল গুলো খুলে মাথা ধুইয়ে মুছে দিল। তারপর ঘুমন্ত তুরকে ওর ঘুমের মধ্যেই স্যুপ খাওয়ালো।
নিজের কাজ শেষ করে তুরের মাথার কাছে বসে তুরের মাথায় হাত দেয় তীব্র… ভেজা লম্বা চুলগুলো বালিশে ছড়িয়ে রাখে। তারপর তুরের মুখের খুব কাছে যায়। ঘুমন্ত তরকেই জিজ্ঞেস করে…..
— এই মেয়ে কি করেছ তুমি? যেখানে তোমাকে শাস্তি দেওয়ার কথা সেখানে আমি তোমার সেবা করছি। অন্যায় জানা সত্ত্বেও কেন তোমার থেকে নিজেকে দুরে রাখতে পারছি না। কেন টানছ আমাকে? এই জন্যই কি এত কিছুর পর কোনো কিছুই শেষ হয়নি বরং নতুন করে শুরু হয়েছে।
,
,
,
,
তীব্র আর কিছু না বলেই সোফায় গিয়ে শুয়ে পরে। বুকের মধ্যে একটা বালিশ রেখে বিছানায় শুয়ে থাকা তুরকে দেখতে থাকে….আর ভাবে… কি হতে কি হয়ে গেল।মেয়েকে নিয়ে এসেছিল কষ্ট দিতে উল্টে এখন তার সেবা করতে হচ্ছে……..
,
,
,
,
,
,
,
,
,সকালে ঘুম থেকে উঠে তীব্র তুরের কাছে যায়। ওকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে তীব্র একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে। সারারাত একটুও ঘুমাতে পারেনি সোফায়। অন্য রুমে ও শুতে পারে না। আর তুরকে অন্য রুমে রাতে শিফট করার ইচ্ছেটা জাগেনি সারাদিনের এত ক্লান্তির পর……..
তারপর তীব্র ফ্রেশ হতে চলে যায়। তীব্র একটা টাওজার আর গলায় তোয়াল পেচিয়ে বেড়িয়ে আসে। ফিরে এসে টি টেবিলের ব্লাক কফিটা তুলে সিপ দিতেই টিভি অন করে। তখন গতকাল রাতের ব্রেকিং নিউজে দেখতে পায়। যে অজানা সবাইকে বাচিয়েছে তাকে সবাই দোয়া দিচ্ছে। নিউজটা দেখেই বাকা ঠোঁটে হাসে তীব্র…… তারপর কার কাছে একটা ফোন দেয়…..
— মেয়েগুলোর অবস্থা কি?
— স্যার আপনার কথা মত সব মেয়েদের পুলিশের উপর না ছেড়ে আমরা নিজ দায়িত্বে ওদের বাড়ি পৌছানো দেখব।
— গুড। সবমেয়েদের বাড়িতে পৌঁছে আমাকে জানাবে…..
তারপর ফোনটা কেটে তীব্র কফি হাতে তুরের কাছে যায়। কফিটা পাশের টেবিলে রেখে তুরের দুপাশে হাত দেয়। যাতে তীব্রের ভেজা চুলের পানি তুরের মুখে পরে। তা দেখে তীব্র আরেকটু চুল গুলো ঝাড়া দেয়। যাতে তুরের মুখে পানি পরে। কিন্তু তুরের ঘুম ভাঙে না। তাই তীব্র ওর বা হাত দিয়ে মুখে উড়ে আসা চুল গুলো তুরের কানের নিচে গুজে দেয়। প্রথম কোনো মেয়ের এতটা কাছে তীব্র। কিন্তু কোনো খারাপ লাগা নেই…… তারপর তীব্র তুরকে বলে উঠল……
— কনগ্রাচুলেশন মিস. তায়্যিরাত.. আপনার জন্য আজ অনেকগুলো মেয়ে আজ জীবন নষ্ট হওয়া থেকে বেচে গেল। কিন্তু আফসোস আপনি বাচতে পারবেন না। অন্যায় যখন করেছেন শাস্তি আপনি পাবেন তবে সেটা অন্যভাবে…….. সত্যি বলেছিল ও…মেয়েদের মাঝে অদ্ভুত মায়া থাকে। আর তোমার মাঝে তা হয়ত একটু বেশি….. নাহলে এত কিছুর পর কেউ এই চেহারাটা দেখতে চায়। আমিও দেখতে চাই কি আছে এই নিস্পাপ চেহারার মাঝে……
তারপর তুরের একদম কাছে চলে যায় তীব্র
ওর আঙুল দিয়ে তুরের কপাল থেকে নাক বড়াবড় টেনে বুড়ো আঙুল দিয়ে ঠোঁট স্পর্শ করে…..
তখনি রুমের দরজায় নক পরে। আর তীব্র ওকে ছেড়ে উঠে দাড়ায়….. গায়ে একটা শার্ট জড়িয়ে ভিতরে ডাকে… ম্যানেজার এসেছে….
— ফাইল সবকিছু কমপ্লিট হয়েছে যা দিয়েছি।
_- জি স্যার….
তারপর ওনি ওনানেই দাড়িয়ে রইলেন তীব্র বুঝতে পারল ওনি কিছু বলতে চায়।
— যা বলার বলে ফেলুন…
— স্যার আমি রিদ্ধের কাছে সবটাই শুনেছি
আপনি কতটা রিক্স নিয়ে মেয়েটাকে বাচিয়েছেন…….
_- হ্যা তো….
— তাহলে এই মেয়েটি তো ওদের মত। সবাইকে যখন বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন তাহলে এই মেয়েটিকে এখন এখানে রেখে কি করবেন। ওকে বাসায় দিয়ে আসলে হত…..
ম্যানেজারের কথার তীব্রের চোখ মুখ শক্ত হয়ে এলো। ওনি বুঝলেন তীব্র রেগে গেছে….
— এই মেয়েটা কি আপনার। না ওর সাথে আপনার কোনো সম্পর্ক আছে? [ সোজা ভাবে দাঁড়িয়ে ]
— না মানে… আপনি তো ওদের হাতে ওকে তুলে দেবেন না তাই বলছিলাম…
— আমি আপনার কাছ থেকে কিছু শুনতে চেয়েছি? চাইনিতো। ফ্রিতে এডভাইস দেওয়া বন্ধ করুন। আপনাকে যার জন্য মাইনে দেওয়া হয় শুধু তাই করুন।
তখনি রিদ্ধের প্রবেশ….
— স্যার তায়্যিরাতের বাবা মা পাগলের মত ওকে খুজছে। পুলিশে ও খুজছে কিন্তু কোন কিনারা করতে পারছে না।
— যাতে না পারে তার ব্যবস্থাই করেছি।
— কিন্তু স্যার আপনি মেয়েটাকে এখনো রেখেছেন কেন? আপনি মেয়েটাক খারাপ কোথাও দেবেন বলে তো মনে হয় না।
— তোমাদের দুজনের দেখছি ওকে নিয়ে বেশি চিন্তা। ওকে বলছি…. এখনো মেয়েটাকে কি করব তা ভাবিনি। শুধু এতটুকু জানি মেয়েটা ওর বাড়ি ফিরছে না।
— তাহলে ওই মেয়েটাকে বাচাতে গেলেন কেন? আর ওর জন্য এতগুলো মেয়েকে বাচালেন কেন? [ ম্যানেজার ]
— কারনটা খুব সিম্পল ওই মেয়েগুলোকে বাচানো আমার দায়িত্ব ছিল। আর এই মেয়েটাকে ওদের হাতে তুলে দেওয়া আমার ভুল ছিল। কারন ও আমার শিকার। তাই ওকে শাস্তি দেওয়ার অধিকার ও আমার..…. ওর সাথে যা করার তা আমি করব…..
— কিন্তু…
— এ নিয়ে আমি আর কথা বলতে চাই না। মেয়েটার টপিক আজ থেকে তোমাদের মুখে যেন না শুনি তাহলে কিন্তু মেয়েটার চেয়েও খারাপ অবস্থা হবে তোমাদের…..
— ওকে স্যার….
— আর শোন…
— বলুন..
— মেয়েটাকে এখান থেকে শিফট করার ব্যবস্থা করো বিরক্ত লাগছে আমার।
রিদ্ধ আর ম্যানেজার নিজেদের মুখ দেখাদেখি করে চলে যায়…..
—- ওকে স্যার…. 🙄
ওরা আর দাড়ায় না। চলে যায় রুম থেকে। ওদের চলে যেতে তীব্র তুরের কাছে যায়। তারপর ওর পাশে বসে ওর পালস চেক করে। তারপর একটা ইঞ্জেকশন ইনজেক্ট করে তুরের বডিতে…….. তুর ব্যাথায় ভ্রু কুচকে আবার শান্ত হয়ে যায়….
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
এভাবে কেটে যায় ৩ দিন। এই ৩দিনে একবারের জন্য হলেও চোখ খোলেনি তুর । কিভাবে খুলবে এতোদিন তীব্র ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে তুরকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছিল।
তুর আলত করে চোখ খোলে। তিনদিনে এভাবে ঘুমিয়ে থাকার কারনে আর ৬ দিন নিস্তেজ থাকার কারনে তুরের শরীর প্রচন্ড দুর্বল। তার মাঝে তীব্র ওকে যতটা ওকে খাইয়েছে তাই গেছে পেটে। এখন তা আছে বলে মনে হয় না।
তুর অনেক কষ্ট করে উঠে বসার চেষ্টা করে কিন্তু কিছুই দেখতে পায় না। কারন পুরো রুম অন্ধকার। অনেকটা দুর্বল হওয়ার কারনে ও আলত করে মাথা নাড়ে। হাত দিয়ে চারপাশটা বোঝার চেষ্টা করতেই তুর বুঝতে পারে ও মেঝেতে পাতা বিছানায় শুয়ে আছে। তারপর ভাঙা গলায় আলত আওয়াজে বলে উঠল….
— এখানে কেউ আছে… থাকলে প্লিজ সাড়া দিন। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে…..
এতটুকু বলে আবার নিস্তেজ হয়ে পরে তুর। এই রুম লক করা যার চাবি শুধুমাত্র তীব্রের কাছে। তাই অন্য কেউ তুরকে খাবার দেওয়া তো দুরে থাক দেখতেও পারবে না।
,
,
,
,
,
,
,,
,তুর আবার চোখ খোলে কিছুর শব্দ। বুঝতে পারে এটা দরজা খোলার শব্দ। তুর সেদিকে তাকিয়ে একটা পুরুষালি ছায়া দেখতে পায়। যা দেখে তুরের কলিজা কেপে উঠে। ধীরে ধীরে ছায়া রুপি মানুষটা তুরের কাছে আসতে চায়। তুর তার চেহারা দেখতে পাচ্ছে না। ও ভয়ে শোয়া থেকে উঠে বসে নিজেকে গুটিয়ে বলে….
— কে…?? কে এখানে….
তখনি দরজাটা বন্ধ হয়ে যায়। তুর বুঝতে পারে ছায়ারুপি মানুষটি রুমের ভিতরে আছে কিন্তু অন্ধকারের জন্য তাকে দেখতে পাচ্ছে না। তুর তাই অনেক চেষ্টা করে দুর্বল শরীর নিয়ে উঠে দাড়ায়…. তারপর আধো আধো ভাবে অন্ধকার হাতরে বেড়ায়। তখনি কোন শক্ত কিছুর সাথে ধাক্কা খায়। প্রচন্ড ঘাবড়ে যায় তুর। কারন দরজা খোলার আলোতে যতটুকু দেখেছে তাতে এখানে দেয়াল থাকতে পারে না।
তুর কাপা কাপা হাতে সামনে হাত দিয়ে দেখার চেষ্টা করতে সেখানে হাত বুলায়। কিন্তু নিজের অজান্তেই তুর তীব্রের বুকে থেকে ওর উঠে ওর গালে হাত বুলায়। আর তীব্র চুপচাপ অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থেকে তুরের কান্ড অনুভব করে…. ঠিক তখনি তুরের একহাত তীব্রের বুকে আরেকহাত তীব্রের ঠোঁট স্পর্শ করে। যাতে তীব্রের হৃদয়ের ধকধকানি আর গরম নিশ্বাস দুইটাই তুর ফিল করতে পারে। বুঝতে পারে ওর সামনে কোনো লোক দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর তখন সেই হোটেলের কথা মনে পরে যেখানে ওকে আটকে রাখা হয়েছিল। আর একটা লোককে ওর নামে টাকা ধরতে দেখেছে। তারমানে এটা কি সেই লোক….. কথাটা ভেবেই তুর লোকটার থেকে হাত দুরে সরে যায়।
এভাবেই কিছুক্ষন জড় হয়ে থাকে তুর। অন্ধকার তাই দেখতে পারছে না। কিন্তু হঠাৎ ও ফিল করল ওর পিছনে কারো অস্তিত্ব। ধীরে ধীরে তুরের পিঠে কারো গরম নিশ্বাস ফিল করতে পারল। তখনি তুরের দুহাত টেনে হাত গুলো তুরের পিছনে আটকে তুরকে নিজের মধ্যে আবদ্ধ করতে চাইলো কেউ। ভয়ে কুকড়ে উঠল তিল…. তুর এবার নিজেকে আটকাতে না পেরে ভয়ে পাগলের মত কান্না করতে থাকে……
— প্লিজ ছাড়ুন কমাকে। এমনটা করবেন না আমার সাথে। কে আপনি?
কিন্তু তুরের কোনো কথাই যেন লোকটার কানে গেল না………
,#বন্ধ_দরজায়_তুমি🖤
#Written_By_Mêhèriyâr_Mêhèr
#Part: 10…….
হঠাৎ তুর ফিল করল ওর পিছনে কারো অস্তিত্ব। ধীরে ধীরে তুর নিজের পিঠে গরম নিশ্বাস ফিল করতে পারল। তুর সরে যাবে তখনি তুরের দুহাত টেনে নিজের মধ্যে ওকে আবদ্ধ করতে চাইলো কেউ। ভয়ে কুকড়ে উঠল তিল…. তুর এবার নিজেকে আটকাতে না পেরে ভয়ে পাগলের মত কান্না করতে থাকে……
— প্লিজ ছাড়ুন আমাকে। এমনটা করবেন না আমার সাথে। কে আপনি?
তুর দুর্বল শরীরেও নিজেকে, ছাড়ানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তুরের কোনো কথাই যেন তীব্রের কানে গেল না। হঠাৎ করে তীব্রের কি হয়ে গেল তীব্র নিজেও জানেনা। তুরের স্পর্শ পেয়ে নিজেকে আর সামলাতে পারে না তীব্র…. ও তুরকে ওভাবেই কাছে টেনে ওর বুকের মাঝে তুরের পিঠ ঠেকিয়ে তুরের ঘাড়ে আলত করে ঠোঁট বুলাতে থাকে। তুর অঝোরে চিতকার দিয়ে কাদতে শুরু করে। কিন্তু ওর আওয়াজ এই বন্ধ ঘরের বাইরে যাবে না। যা শুধু একজনের কানেই যায়। আর সে হচ্ছে তীব্র…. তুরের কান্নায় তীব্রের হুশ ফেরে। তুরকে কাদতে দেখে অন্ধকারের মাঝেই তুরকে নিজের দিকে ফিরিয়ে নেয়। তুর নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চায় কিন্তু পারে না। তীব্র একহাত দিয়ে ওর কোমর পেচিয়ে আরেকহাত দিয়ে জোর করেই ওর চোখের পানি মুছিয়ে দেয়…. তারপর নরম গলায় বলে উঠে….
-_ সামান্য ছোয়াতে যদি এভাবে চোখের পানি ফেলো তাহলে তো সারাজিবনে এই চোখের পানি শেষই হবে না। এভাবে পানি ফেলে অপচয় করো না। খুব বেশি দামী তোমার চোখের পানি। এত সহজে ফেল না সস্তা লাগে আমার কাছে আর সস্তা জিনিস আমার একদম পছন্দ নয়। তোমার চোখে পানি দেখার জন্য আমি এত কিছু করব তা তুমি ভাবতেও পারবে না। কারন… তোমার চোখ থেকে ঝরা মুক্ত দানা আমার মনের শান্তির খোড়াক।
লোকটির কন্ঠস্বর শুনে তুর থমকে গেল। সবটা ধোয়াসার মত লাগল। এত সুন্দর মিষ্টি কন্ঠ কোনো পুরুষের হতে পারে। জানা ছিল না তুরের। শান্ত গলা শান্ত সমুদ্রের মত শোনা গেলেও কথাগুলো উত্তাল সমুদ্রের চেয়েও বেশি ভয়ানক।
এতক্ষন সবটা শান্ত হলেও এবার তুর আরো ভয় পেয়ে গেল। নিজের গালে কারো ঠোঁটের স্পর্শ পেয়ে। তুরের ছটফটানি আরো বেড়ে গেল। কিন্তু এই ছায়ারুপি মানুষটার থেকে কিছুতেই ছাড়া পাচ্ছে না। তুর ফিল করতে পারল তুরের ঠোঁটের দিকেই লোকটির বিচরন হতে চলেছে। আর এটাও বুঝতে পারল এই দুর্বল শরীর নিয়ে ও চাইলেও কিছু করতে পারবে না। তবুও নিজের শেষ চেষ্টা দিয়ে ট্রাই করল নিজেকে ছাড়ানোর। কিন্তু কোনো লাভ হলো না। তুরের হিচকি উঠে কান্নার বেগ বেড়ে গেল। কিন্তু শব্দ হলো না। লোকটির গরম শ্বাস তুরের ঠোঁটে…. তুর হাল ছেড়ে ভাগ্যের কাছে নিজেকে সমর্পণ করতেই হঠাৎ মোবাইলের রিংটন বেজে উঠল। হ্যা ওই লোকটির মোবাইলের রিংটন। তীব্র তুরকে একহাত দিয়ে ধরে রাখা অবস্থায় মোবাইলটা বের করে দেখল…..
মোবাইলটা দেখা মাত্রই ও খুব দ্রুত তুরকে ছাড়িয়ে নিল নিজের থেকে। মোবাইলের আলোতে যতটুকু বুঝল তুর তাতে মনে হলো লোকটি নাম্বারটি দেখা মাত্র ঘামতে শুরু করেছে। লোকটি নিজের চোখ মুখ মুছে খুব উত্তেজিত হয়ে কলটা ধরে জিজ্ঞেস করল…
_- কি হয়েছে? [ ভয় মাখা কন্ঠে ]
— স্যার তাড়াতাড়ি হাসপাতালে চলে আসুন। ওনার অবস্থা ভালো না।
কথাটা শুনে লোকটার কন্ঠে অদ্ভুত এক ভয় শুনতে পায় তুর।
— আমি এখনি আসছি।
মোবাইলটা কেটে লোকটা একটা ঘুশি মারে। বোঝাই যাচ্ছে এটা দেয়ালে লেগেছে তাই এমন ধুম শব্দ হয়েছে। এবার তীব্রের চোখ মুখ শক্ত হয়ে আসে। এতক্ষন ও তুরকে ভয় দেখানোর জন্য কাজ গুলো করলেও এবার ও রেগে গেছে। তুরের নিশ্বাসের শব্দতেই তীব্র বুঝতে পারল ও কোথায়……
তীব্র গিয়েও ওর চুলের গুলো নিজের মুঠোয় প্রচন্ড জোরে চেপে ধরে। ব্যাথায় তুর ছটফট করছে কিন্তু কিছু বলতে পারল না। শুধু বুঝল লোকটির রাগান্বিত নিশ্বাস তুরের মুখে পরছে।
— তোকে আমি ছাড়ব না। তোর জন্য যা হয়েছে তার সবটার মুল্য তোকে দিতে হবে। ওর যদি কিছু হয় তাহলে……
— ছাড়ুন লাগছে আমার….
তীব্র কিছু বলতে গিয়েও বলল না। শুধু এটাই বলল….
— ব্যাথা কাকে বলে? আর কষ্ট কি এবার তুই বুঝবি।
তুরকে খুব জোরে ধাক্কা মেরে বেড়িয়ে যায় তীব্র। তীব্রের ধাক্কায় অন্ধকারে দেয়ালের সাথে বাড়ি খায় তুর। তীব্র দরজা খুলে বেড়োনের সময় হালকা আলো বের হলেও ও যাওয়ার পর সবটা অন্ধকার হয়ে যায়। আর তুর লোকটার কথার আগা মাথা না পেয়ে ওখনেই মুখ গুজে কাদতে থাকে….
,
,
,
,
,
তীব্র হসপিটালের জন্য বেড়িয়ে যাওয়ার পর তুর অন্ধকারে ওখানেই কাদতে থাকে। তুর খুব ভয় পায় অন্ধকারে কিন্তু এখন ওর জিবন থেকে যেন অন্ধকার শেষ হতে চাচ্ছে না।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
— আচ্ছা তুমি কি কোনোদিন আমাকে একটু বিশ্বাস করতে পারো না নাকি😡।
— আমি কি বলেছি বিশ্বাস করি না। তুমি সেদিন রাতে কই ছিলা বললেই তো হয়।
— হানিমুন করতে গেছিলাম।😡😡 [ বিড়বিড় করে ] আরে শোনা কাজে গেছিলাম।
— কি এমন কাজ যে রাতেও ফোন ধরতে পারোনাই।
— [ সালার এই মাইয়াদের সাথে প্রেম করে মানসে করে ]
— দেখ রিদ্ধ তুমি কোথায় ছিলা যদি না বলো তাইলে কিন্তু ব্রেক-আপ….
— এই না না… জান, মান, বেবি, শোনা, আপদ-বিপদ সব তুই এমন কথা বলে না।
— আপদ-বিপদ মানে😡😡
— হায় হায় কি বললাম🤕 আপদ বিপদ মানে… দুঃখ- কষ্টের সাথি….
— চুপ কর মিথ্যুক…
— এই জান না। শোনো আমার ক…. যাহ কেটে দিল….
তারপর ফোন কেটে দেয়। আর রিদ্ধ মাথায় হাত দেয়…..
— ওরে কেউ থাকলে আমারে মারো। মারো মুঝে মারো😭😭 এ আমি কার সাথে প্রেম করি। সালা এই স্যারের চাকরি করতে গেলে গার্লফ্রেন্ড থাকে না। আর চাকরি গেলে গার্লফ্রেন্ড আর বউ হবে না। আর যদি এইটা বউ হয় তাহলে আমি থাকমু না😭 এখন আমি কি করতাম….. সালার এই সন্দেহ বাদী গার্লফ্রেন্ডের সাথে প্রেম করা যায়। ২৪ ঘন্টায় ৪৮ বার সন্দেহ। আর তিনবার করে ব্রেক-আপ… মন চায় সন্যাস নিয়া নেই.. 😤😤😤 যত্তসব ব্রেক-আপ ওয়ালি…
তারপর আশেপাশে দেখে নিজের চুল গুলো ঠিক করে নিজের বাড়ি ফেরে রিদ্ধ….
,
,
,
,
,
,
,,
,
,,
ওদিকে মাঝ রাতের দিকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরে তীব্র….. তীব্রের চোখে রক্ত জমে আছে। ও হাসপাতালে রাতে থাকতে চেয়েছিল কিন্তু পারেনি। ওকে ডা. অরুন এলাও করেনি। তাতে তীব্রের ক্ষতি হবে বেশি।
, তীব্র সোজা নিজের রুমে যায়। নিজের ড্রয়ার থেকে একটা গান বের করে….. তারপর তুরের রুমের দিকে পা বাড়ায়। দরজা খুলতেই ঘুম ঘুম চোখে উঠে বসে পরে তুর…. তীব্র রুমে ঢুকে লাইট জালায়। আর তুর বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায়। তীব্র সোজা রুমের ভিতরে ঢুকে তুরের কপাল বড়াবড় বন্দুক তাক করে।
এই প্রথম বার তুর তীব্রকে দেখতে পেল। দুজনেই এই প্রথম সামনাসামনি হলো। তীব্র বন্দুক ধরে দাঁড়িয়ে আছে। আর তুরের ঠোঁটসহ শরীর প্রচন্ড কাপছে। তখনি তীব্র বিন্দুকের টিগারে আঙুল দেয়। তুর লোকটার আগা মাথা কিছুই খুজে পায় না। কিন্তু বুঝতে পারে লোকটি ওর উপর প্রচন্ড রেগে আছে। গলা শুকিয়ে আসছে তুরের সত্যি লোকটি ওকে মেরে ফেলবে নাকি…. উত্তর খুজে পায় না তুর….
তখনি তীব্র টিগার প্রেস করে। আর তুর ভয়ে চোখ বন্ধ করে চিতকার করে উঠে…… কিন্তু কিছুক্ষন পর যখন কোনো কিছুর আভাস পায় না তখন চেয়ে দেখে…. ওই লোকটি দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে একপায়ে দাঁড়িয়ে আছে বন্দুকটা নিজের কপালে স্লাইড করতে করতে…..
তুর তীব্রের দিকে তাকিয়ে ঢোগ গিলতেই তীব্র রক্তলাল চোখে তুরের দিকে তাকায়….. তুরের নজর ওর নজরে পরলে তুর পিছিয়ে যায়। আর তীব্র ওর দিকে এগোতে থাকে। একসময় তুর দেয়ালের সাথে মিশে যায়। আর তীব্র একহাত দেয়ালে ভর দিয়ে বন্দুকটা তুরের কপালে বেশ জোরেই চেপে ধরে ……
তীব্রের চোখ রাগে রক্তলাল হয়ে আছে আর তুরের চোখ পানিতে ভরে গেছে কিন্তু শব্দ করতে পারছে না। অসম্ভব কাপছে তুরের ঠোঁট জোরা। এইটা দেখে তীব্র বন্দুকটা ধীরে ধীরে তুরের কপাল থেকে ঠোঁটের কাছে এনে বন্দুক দিয়ে স্লাইড করতে থাকে। বন্দুকের ধারালো অংশের খোচায় ব্যাথা পায় তুর যাতে আলত কেটে যায় ঠোঁটটা। তুর কিছু মুখ খুলতে যাবে… তার আগেই তীব্র বলে…
— হুসস… ঠোঁট দিয়ে যেন তিল পরিমান আওয়াজ না হয়। তাহলে কিন্তু [ গানটা লোড করে আবার তাক করে ]….
তুর আর কিছু বলতে পারে না। কিন্তু কান্নার বেগটা বেড়ে কাপতে থাকে…… তীব্র তখন ওর মুখের আরো কাছে যায়। তখনি একটা বাজে গন্ধ তুরের নাকে আসে। হ্যা তীব্র ড্রাংক। তবে খুব বেশি না। কন্ট্রোল করার মত…… কিন্তু তুর তা সহ্য করতে পারল না।
— প্লিজ আমি গন্ধটা সহ্য করতে পারছি না। সরে দাড়ান আমার থেকে। [ খুব জোরে চিতকার করে ]
তুরের মুখে এটা শুনে তীব্র তুরের কোমর পেচিয়ে ওকে নিজের একবারে কাছে নিয়ে আসে। তুরের মুখে ইচ্ছে করেই ফু দিতে থাকে। তুর সহ্য করতে না পেরে পাগলের মত ছুটাছুটি করতে থাকে। কিন্তু তীব্রকে ছাড়তে পারে না। ও যত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে তীব্র ততটাই ওকে নিজের মাঝে টেনে নিচ্ছে…..
এবার তুর সহ্য করতে না পেরে বমি করার অবস্থায় চলে এলো। কিন্তু তার জন্য পেটে কিছু থাকতে হবে। বিগত কয়েকদিন যাবত তুরের পেটে কিছুই পরেনি। বমি করতে পারলে হয়ত ভালো হত। কিন্তু না পারার কারনে পেট থেকে সব উগড়ে চলে আসছে। কিন্তু মুখে শুধু তিতার অনুভব হচ্ছে আর কিছু না। যা সহ্য করার মত না। আর না পেরে উত্তেজিত হয়ে তুর বলে উঠল……
— প্লিজ এই বন্দুকটা দিয়ে আমাকে মেরে ফেলুন তবুও আমাকে ছেড়ে দিন দোহাই লাগে….
কিন্তু ওর চিতকার তীব্রের কানে গেলেও ওর হৃদয় স্পর্শ করতে পারে না। ইচ্ছে করেই ও তুরের হাত আরো জোরে চেপে ধরে। যাতে তুরের কান্নার পরিমান টাও বেড়ে যায়…. তাতে অদ্ভুত আনন্দ পায় তীব্র…..
— খুব কষ্ট হচ্ছে তোমার… যদি মেরে ফেলি তাহলে….
— দয়া করে তাই করুন। আমি আর সহ্য করতে পারছি না। আপনার মুখে মদের বাজে গন্ধে আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
কথাটা শুনে তীব্র তুরের ঠোঁটের কোনে আলত করে ঠোঁট বুলায়….
— এতটাই খারাপ লাগছে এই সামান্য গন্ধটা।
— তার চেয়েও জঘন্য লাগছে আপনার প্রতিটি স্পর্শ।বিষের চেয়েও বিষাক্ত লাগছে তা। প্লিজ মারার হলে আমাকে মেরে ফেলুন কিন্তু আমাকে প্লিজ ছোবেন না
ছাড়ুন আমাকে…..
তীব্রকে ধাক্কা দিয়ে বমি করার চেষ্টা করে। কিন্তু পারে না। কিন্তু তুরের শেষ কথাটা যেন তীব্রের কানে বাজতে থাকে যে তীব্রের ছোয়া মেয়েটার কাছে বিষের চেয়েও বিষাক্ত লাগছে…….
তুরের দিকে তাকাতেই দেখে ও পেটে হাত দিয়ে বমি করার চেষ্টা করছে। কিন্তু পারছে না। তীব্র বুঝতে পারছে। তাতে বেশ উপভোগ করছে ও….. জোরে জোরে নিশ্বাস নিয়ে তীব্রের দিকে তাকাতেই তীব্র একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে অন্যদিকে মুখ ঘুড়িয়ে নেয়। তুরের মনে হলো তুরের এসব লোকটার কাছে নাটক মনে হলো।
তীব্র ওর থেকে একটু দুরে যায়….. এটা দেখে তুর এবার আর ভয় পায় না। কিন্তু পেটের ব্যাথায় পেটে হাত দিয়ে থাকে। তীব্র ওর থেকে দুরে দেয়ালে হেলান দিয়ে আপাদমস্তক তুরকে দেখে নেয়। এবার তুর নিজের দিকে তাকায়। যা দেখে ও আকাশ থেকে পরে। কারন ওর শরীরে শুধু একটা ঢিলা সাদা শার্ট, যা হাটু অবধি রয়েছে। এটা দেখে ও তীব্রের দিকে তাকায়। তীব্র তখনো বাকা ঠোঁটে হাসছিল আর ওকে দেখছিল…… তুর আশে পাশে কিছু পায় না। তবে বিছানায় একটা চাদর পায়….. ওইটাকে উঠিয়ে নিজের গায়ে জড়িয়ে ওখানেই দেয়াল গেষে বসে পরে। ও এটা ভেবে স্তব্ধ ও একটা লোকের সামনে এতক্ষন এভাবে দাড়িয়ে ছিল। তবে এটা ভাবার অবস্থায় নেই যে ওর ড্রেস কে চেঞ্জ করেছে। চাদর জড়িয়ে নিজেকে গুটিয়ে মাটির দিকে তাকিয়ে ওভাবেই কাপতে থাকে তুর।
এটা দেখে তীব্র ওর কাছে যায়। তারপর ওর পাশে নিজেও দেয়াল গেষে বসে পড়ে একটা সিগারেট জালায়…. তারপর তা টানতে থাকে। পুরো রুম ধোয়ায় ভরে গেছে। তুরের শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে কিন্তু সেটা ফিল করার অবস্থায় ও নেই। শ্বাস টানতে কষ্ট হচ্ছে কিন্তু বুঝতে পারছে না তুর…… তীব্র এটা দেখে আরেকটা সিগারেট ধরালো। সিগারেটে একটা ফু দিয়ে নিজেই থেকেই বলল…..
— মিষ্টি মিষ্টি হয়। জোর করে মিষ্টি খাওয়ালে কিন্তু তা তেতো লাগে না। এখন যদি তুমি সেটা সহ্য করতে না পারো সেই দোষ অন্য কাউকে দিতে পারো না।
তুর কিছু শুনছে কিনা নিজেই জানেনা।
ওকে চুপচাপ দেখে তীব্র নিজের মনেই ভেবে মুচকি হেসে উঠে …..
— চাইছিলাম মৃত্যু দিব তোমায়। কিন্তু তোমার তো মৃত্যুর চেয়েও আমার ছোয়া বেশি যন্ত্রণাদায়ক মনে হচ্ছে। তাহলে দরকার কি মেরে ফেলার। তুমি নিজেও তোমার নিজের কষ্টের রাস্তা আমাকে বলেছো। আমার ছোয়া তোমার কাছে বিষ হলে এই বিষ দিয়েই মারব আমি তোমায়। তোমার দেওয়া বিষেই আমি আমার মনের বিষক্ষয় করব।
তুরের দিকে তাকিয়ে লাইট নিভিয়ে দিল তীব্র…..
চলবে