#ফুচকাওয়ালা যখন স্পেশাল অফিসার
#পর্বঃ০২
#লেখকঃরবিউল_হাসান

চারপাশে থাকিয়ে দেখলাম কেউ আছে কি না।
কিন্তু কেউ নাই তাই পকেট থেকে ফোন বের করে একজনকে ফোন দিলাম ১০ মিনিটের মধ্যে ৩ টা গাড়ি আসল।তার আগে আমি ওখান থেকে সরে গেলাম।

(ওরা আমার লোক ছিল, এখানে থাকা একজনই আমাকে চিনে তাই আমি সরে গেছি সেখান থেকে)
আমি ঘুরে বাসায় চলে আসলাম।
রাতে একজন ফোন দিয়ে যা বলল তাতে মাথায় রক্ত উঠে গেল।
ফোন দিয়ে বলল মেয়েটাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।

আমি তাকে বললাম মেয়েটাকে সুস্থ হলে ঠিক সে যায়গায় পাঠিয়ে দিও যেখানে তাকে পেলে দেওয়া হয়েছিল।(বলে ফোন কেটে দিলাম)

তারপর কলেজে গেলাম।ফুচকা বিক্রি করে আবার বাসায় চলে আসলাম।৭ দিন পর পর আমাকে মাটির ৫০০ ফুট নিচে যেতে হয়।

আজকেও যাইতে হবে।তবে সেখানে ফুসকাওয়ালা হিসেবে নয়। R.K হিসেবে।

আজ একদিন হল মেয়েটা এখনো সুস্থ হয় নি।
রাত ২ টা…..
চলে গেলাম আমার ভাঙাচোরা বাসার পেছনে।পিছনে গিয়ে একটা গাছের নিচে মাটি সরিয়ে একটা বাটন টিপলাম।সাথে সাথে একটু দুরে মাটির নিচে একটা পথ হয়ে গেল।
সেখানে গেলাম, মাটির নিয়ে গেলাম সিড়ি দিয়ে। ৫ হাত মত নিচে গিয়ে একটা রোমে ডুকলাম কাপড় পড়লাম R.K। ওখানে একটা লিফট আছে সেখানে যেতে হলে এই রোম থেকে বের হয়ে শ্বাস বন্ধ করে যেতে হবে।(নয়তো অটো ফায়ার হবে লিফট থেকে)

নিয়ম অনুযায়ী শ্বাস বন্ধ করে গেলাম লিফটের কাছে।
লিফটের দরজায় স্ক্যানার আমাকে স্ক্যান করার পর দরজা খুলে গেল।
লিফটে ওঠে তার পর শ্বাস নিলাম।তারপর লিফটের বাটন টিপ দিলাম।

৩ মিনিটের মধ্যে লিফট থামল ৫০০ মিটার মাটির নিচে।

লিফট থেকে নামার সাথে সাথে ৫০০+ আর্মি অফিসার স্যালুট দিল আমাকে।

আমার পাশে একজন ছিল সে আর কেউ না আমার বন্ধু রাশেদ। আমার সব কথা তার সাথেই হতো।সে বলল
স্যার কালকের মেয়েটাকে ধর্ষণ করেছে এই এলাকার এম পির বাগিনা।

আমিঃকি বললি তুই, তুকে কতবার বলছি স্যার বলবি না আমাকে।
রাশেদঃআচ্ছা ঠিক আছে আর বলব না।
আমিঃগুড় বল এখন এম পির বাগিনার নাম কি?
রাশেদঃওর নাম সায়েম।খুজ নিয়ে আরো জানলাম,সায়েম তিনটা মেয়েকে ধর্ষণ করছে এম পির বাগিনা বলে প্রতিবার বেচে যায়।আবার চোরাকারবারি কাজও করে।ইয়াবা,ড্রাগস,হিরোইন সব কিছুতে তার হাত আছে।
আমিঃঠিক আছে সায়েমের ঠিকানা দেয়।
রাশেদঃ………….এটা তার ঠিকানা।
আমিঃঠিক আছে মিটিং এ বসি।
রাশেদঃহুম ৫ মিনিট পর সবাই কনফারেন্স রুমে আসবে।
আমিঃগুড়।

৫ মিনিট পর সবাই কনফারেন্স রুমে গেলাম সবাই স্যালুট দিল।

সবাইকে বসতে বললাম।

আগে বলে দিয় এখানে দশ জন বড় বড় অফিসার আছে কেউ সেনাবাহিনীতে, কেউ নৌ বাহিনীতে আবার কেউ বিমান বাহিনীতে।সবার নাম একি রকম এই নাম গুলো আমার দেওয়া।(Rh1,Rh2,Rh3,++এগুলো নাম)

আমিঃরাশেদ এদের সব বলে দিছিস তো আজ কি নিয়ে কথা হবে?
রাশেদঃহুম সব বলা আছে।
আমিঃগুড়, তো গাইস আপনাদের আগে বলা হয়েছে আজকে এখানে কিসের আয়োজন। তো আমি কথা না বাড়িয়ে আসল কথায় আসি।
সবাই এক সাথেঃইয়েস স্যার।
আমিঃগুড় সবার রিপোর্ট রেড়ি তো?
সবাই এক সাথেঃইয়েস স্যার।

আমিঃগুড়, রাশেদ তুমি ফাইল গুলো নিয়ে নাও।(এরাও আমার মত ৭ দিনে একবার আসে যখন আমি ডাকি)
তার পর এদের ফাইল নিয়ে বাকি ৭ দিনে কি কি করবে বুঝিয়ে দিলাম।
Rh6:স্যার আমাদের খবর আছে আপনাকে কেউ মারতে চায়।
আমিঃআমি জানি?আর কোনো প্রশ্ন?
Rh3:স্যার আপনি জানার পরেও কেন নিজের সেইপ্টি নিচ্ছেন না?
আমিঃআপনারা হয়তো ভুলে যাচ্ছেন আমি কে?
Rh4:না স্যার ভুলতেছি না, কিন্তু আপনার প্রতি আমাদের একটা ভালোবাসা আছে।তাই আমরা আপনার সেইপ্টি নিয়ে কথা বললাম।
আমিঃআর কোনো প্রশ্ন আছে কারো?
সবাই একসাথেঃনা স্যার।
আমিঃগুড় তাহলে এবার আসা যাক।
সবাই একসাথেঃইয়েস স্যার।

আমিঃচল রাশেদ…..
রাশেদঃচল।
আমিঃতা তোর দিন কাল কেমন যাচ্ছে?
রাশেদঃএইতো ভালো।
আমিঃহুম।
রাশেদঃআচ্ছা তোকে মারতে চায় জেনেও তুই এভাবে আছিস কেন?
আমিঃমারতে চায় বললে কি পারবে?হিম্মত থাকতে হবে।
রাশেদঃআচ্ছা তাও নিজের খেয়াল রাখিস আজ আসি।
আমিঃঠিক আছে খেয়াল রাখিস।

(ওহ আপনাদের তো বলাই হয়নি এই মাটির নিচের শহরে আসতে ১০ টা দরজা আছে সব টা আমার মত। সব দরজায় পাসওয়ার্ড আছে আর প্রতিটি দরজা, একটা একটা শহরে গিয়ে খুলে)

সেখানে চলে এলাম প্রায় রাত ৪ টা।
এসেই ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে ঘুম থেকে উটে আবারো কলেজে গেলাম।
আমার সেই চারজন কাস্টমার বসে আছে।
রাকিবঃতা মামা কেমন র?
আমিঃহ মামা ভালা আছি।তোমরা কেমন আছ?
রাকিবঃহ্যা মামা ভালো।এখন ফুচকা দাও।
আমিঃএই নাও মামা।

একটু পর রিমি আসল।
দেখি ফুচকা দেন তো?
ফুচকা দিলাম খাচ্ছে। হঠাৎ পুলিশ এসে আমার সামনে দাড়াল।

পুলিশ আসার সাথে সাথে ওরা বিল দিয়ে চলে গেল।
পুলিশঃকিরে কি অবস্থা তুর?
আমিঃজ্বী স্যার ভালো।
পুলিশঃতা সন্দেহ জনক কাউকে দেখলি নাকি?
আমিঃনা স্যার তেমন কাউকে তো দেখি নি, তবে একটা মেয়েকে কেমন জানি লাগে?
পুলিশঃকি কোন মেয়ে?
আমিঃএকটু আগে যে এখানে ফুচকা খেল সে মেয়েটা।
পুলিশঃওকে কাল তাকে দেখব।আর কাউকে সন্দেহ জনক লাগে?
আমিঃনা স্যার।
পুলিশঃঠিক আছে সন্দেহ জনক কাউকে দেখলে জানাবি।
আমিঃজ্বী স্যার।
পুলিশ চলে গেল, আমিও ফুচকা বিক্রি করতে লাগলাম।

কলেজ শেষে আবারো বাসায় চলে এলাম।R.K অন্য কেউ নয়, আমিই R.K

রাতে আবারো সে যাইগায় দাড়ালাম যেখানে মেয়েটাকে পেলে দিছিল।এখন মেয়েটা এখানে আসবে।তাই তার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।

কিছুক্ষণ পর মেয়েটা আসল।আমি একটু অন্ধকারে ছিলাম তাই আমাকে দেখে নি। চারপাশে তাকাচ্ছে।

আমিঃএই যে মিস আপনার নাম কি?
মেয়েটাঃআপনি কি সে যে আমাকে আসতে বলেছেন?
আমিঃহুম আমি,আমিই কালকে আপনাকে হসপিটালে নেওয়ার ব্যাবস্তা করছিলাম।তা আপনার নাম?
মেয়েটাঃআমি আরোহী।
আমিঃআচ্ছা, আমি আপনাকে আঘাত দিতে চাচ্ছি না কিন্তু আমি নিজে না শুনে কোনো কিছু বলি না।তাই বলছি কি আপনার সাথে সে দিন কি হয়ছিল?
আরোহীঃআমি সে দিন বান্ধবীর বাসায় গেছিলাম,সেখান থেকে আসতে রাত হয়ছিল তবে বেশি রাত না।এই ধরেন ১০ টা মত।সাথে আমার ফ্রেন্ড ও ছিল, আমরা হেঁটে হেঁটে আসছিলাম হঠাৎ একটা গাড়ি আমাদের সামনে থামে, সাথে সাথে আমার ফ্রেন্ড দৌড় দেয় কিন্তু কিছু বুঝে ওটার আগে তারা আমাকে ধরে পেলে।
তারপর তাদের সাথে আমাকে নিয়ে গিয়ে……..(আর কিছু না বলে কাঁদতে লাগল)
আমিঃএতটুকু তো?নাকি মাঝখানে আরো কিছু হয়ছে?
আরোহীঃহুম এতটুকু।
আমিঃআচ্ছা আপনার ফ্রেন্ড কি মেয়ে ছিল?
আরোহীঃহুম। সে ভালো আছে তার কিছু হয় নি যা হবার সব আমার………….

আমিঃআপনার সাথে অসভ্যতা কে কে করছে?
আরোহীঃসব একজনে করছে এম পির বাগিনা।
আমিঃএম পির বাগিনা কি সায়েম?
আরোহীঃহুম সায়েম। কিন্তু আপনি সামনে আসছেন না কেন?
আমিঃআমি সামনে আসলে আপনি ভয় পাবেন।
আরোহীঃকেন ভয় পাব আপনি কি ভুত না জ্বীন যে ভয় পাব?
আমিঃআচ্ছা এখন তো আমি আপনার সাথে খারাপ কিছুও করতে পারি।আপনি ভয় পাচ্ছেন না?
আরোহীঃনা কারণ কিছু করার হলে আপনি সে দিনই করতে পারতেন তখন আমি সবচেয়ে অসহায় ছিলাম।কিন্তু আপনি তা করেন নি।
আমিঃআচ্ছা গুড়, আমি একটা শর্তে আপনার সামনে আসতে পারি।যদি আপনি আমার পরিচয় গোপন রাখেন।
আরোহীঃআচ্ছা গোপন রাখব।

আমিঃআমি হলাম R.K
(দেখলাম মেয়েটা সাথে সাথে পিছিয়ে গেছে,এখনো আমার চেহারা দেকে নি তাতে এই অবস্থা, না জানি চেহারা দেখলে কি করবে)
আরোহীঃকিহ আপনি R.K যে খুন করে যাচ্ছেন?
আমিঃসরি মিস আমি R.K টিকই, কিন্তু খুনি নয়, ধরেন আপনার বিচার কেউ করবে না শত হলেও এমপির বাগিনা বলে কথা, এখন আপনি যদি কাউকে দিয়ে সায়েমকে শাস্তি দিন তাহলে কি আপনি খুনি হবেন?
কখনো না আইন অপরাধীকে শাস্তি দেয় নি তাই আপনি দিছেন এখানে খুনি হওয়ার কিছু নাই।
আরোহীঃসরি আমি বুঝি নি।
আমিঃঠিক আছে এখন যাচ্ছি তাহলে?
আরোহীঃআরে কি বলেন, আপনার চেহারাই তো দেখলাম না।
আমিঃচেহারা দেখাটা কি খুব জরুরি?
আরোহীঃযে এত বড় একটা হেল্প করল তাকে দেখব না তা কেমনে হয়?আর সারা শহরের মানুষ তো আপনাকে দেখার জন্য পাগল, আমি না হয় একটু আগে দেখব। প্লিজ সামনে আসুন।

আমিঃচোখ বন্ধ করেন তাহলে।
আরোহীঃচোখ বন্ধ করতে হবে কেন?
আমিঃদেখার সাথে সাথে শক খাবেন তাই চোখ বন্ধ করেন।
আরোহীঃওকে করলাম এখন সামনে আসেন।
আমিঃএবার চোখ খুলেন।

আরোহীঃএই কি আপনি এখানে কেন? R.K কোথায়?
আমিঃআমিই R.K
আরোহীঃদেখেন ফান করবেন না,আপনি তো আমাদের কলেজে ফুচকা বিক্রি করেন।
আমিঃওটাতো শুধু মাত্র লোক দেখানো।
আরোহীঃসত্যি আপনি R.K তো?
আমিঃহুম সত্যি, যাই হোক এখন আপনি বাসায় যান এম পির বাগি নাকে একটু দেখে আসি।
আরোহীঃওকে tnx
আমিঃশুনেন আমি কে সেটা যাতে কেউ না জানে।
আরোহীঃহুম কেউ জানবে না।
আমিঃগুড় You can go now……
আরোহীঃok byee…

আরোহী চলে গেল, আমিও এম পির বাগিনার বাসার দিকে রওনা দিলাম।
বাসার সামনে সি সি ক্যামরা লাগানো তাই পিছন দিকে যেতে হবে।
পিছনে গিয়ে দেওয়ালের পাইপ বেয়ে দু -তলায় উটলাম। সায়েমের ঘর দু-তলায়।জানালার কাচ ভেঙে ভিতরে ডুকে দেখি সায়েম মত খাচ্ছে।আমার একটা অভ্যাস আমি মাতাল অবস্থায় কাউকে মারি না তাই, তাকে একটা চেয়ারের সাথে বেদে নিলাম। মুখে পানি দিয়ে কিছুক্ষণ পর যখন ঠিক হল…….

To_be_continue…….।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here