#ফিরে_আসা_সিক্রেট_মাফিয়া (Politics_02)
#লেখকঃরবিউল_হাসান।
#পর্বঃ০৫

তিনজনে কথা বলছিল তখনই দরজায় কারো দাঁড়িয়ে থেকে লুকিয়ে তাদের কথা শোনে।মানে তিনজনের সব কথা শুনে ফেলে।

রবি কারো উপস্থিতি বুঝতে পেরে রাহীকে ইশারা করে।রাহি তাড়াতাড়ি দরজার কাছে গিয়ে দেখো অন্য কেউ নয় বরং রাহীর খুব কাছের ফ্রেন্ড দরজায় দাঁড়িয়ে তাদের কথা শুনছে। রাহী তাকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে টেনে ভেতর নিয়ে আসলো আর দরজা বন্ধ করে দিল।

রাহি তার ফ্রেন্ডকে দেখিয়ে রবি কে বলল…
— হচ্ছে আমার ফ্রেন্ড কায়েম….

রাহী কথা শেষ করার আগেই রবি তার মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে বলল হ্যাঁ আমি চিনি ও আমারও ফ্রেন্ড।

— মানে বুঝলাম না কিভাবে তোর ফ্রেন্ড হয় আমি আসলে কিছু বুঝিতেছি না একটু বুঝিয়ে বল।
রবিঃ আরে তুই হচ্ছিস আমার স্কুল লাইফের ফ্রেন্ড আর কায়েম হচ্ছে অনেক আমার কলেজ লাইফের ফ্রেন্ড।
— ও আচ্ছা তারমানে আমাদেরই লোক?
রবিঃ আমাদের এই তো লোক। আর এখানে ও ছাড়াও আরো তিনজন আছে মানে মোট ছয় জন আছিস আমার লোক।
— বলিস কি! কিভাবে এসব পসিবল হলো? আরেক টিমে তোর লোক ঢুকিয়ে দেওয়া তো অনেক রিস্ক তাও কিভাবে করলি এত কিছু?

রবিঃ আমি চাইলে অনেক কিছু করতে পারি আরো। চাইলে রাফসানকে আরো আগে মেরে দিতে পারতাম কিন্তু ওর কর্মকাণ্ড কিছু টা বাকি ছিল।
— কি বাকি ছিল?
রবিঃ অপরাধের উচ্চ সীমায় পৌঁছানোর জন্য কিছুটা সময় বাকি ছিল সেই সময়টাই আমি তাকে দিছি।

–তাহলে এখন আমাদের মোট কাজটা কি হবে বা আমরা এই তিমটা কি রাখব নাকি এটা শেষ করে দিব?
রবিঃ না এত সহজে শেষ করা যাবে না এত সহজে শেষ করি তাহলে ওরা সবাই একত্র হয়ে আবার একটা নতুন টিম গঠন করবে।
— তার মানে আস্তে আস্তে তাদের টিম টাকে শেষ করে দিতে হবে তাইতো?
রবিঃ না শেষ করার আগে ওদেরকে সঠিক পথে আনতে হবে কাজের জায়গা ঠিকে দিতে হবে তাহলে ঠিক হবে।
–আচ্ছা ঠিক আছে সে নাহয় করবো তো বল এখন আমাদের কাল থেকে কি কাজ হবে?
রবিঃ কাল থেকে তেমন কিছু করবোনা আপাতত কালকে এখানে যা সিস্টেম আছে সব আমাকে নতুন সিস্টেমের আপডেট করতে হবে। এখানকার কম্পিউটার ল্যাপটপ যা আছে সবকিছু নতুন আনতে হবে।
— মানে এক কথা বলতে গেলে, এ বাসার মধ্যে যে সমস্ত জিনিস আছে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে আবার নতুন ভাবে জিনিস আনতে হবে এইতো?
রবিঃ হ্যাঁ সেটাই করতে হবে যাতে আমাদের কোন কাজের প্রতি ভুল না হয় আর সঠিকভাবে কাজ করতে পারি।
— আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে আমরা এখন বাসায় যাচ্ছি আর সব কিছু রেডি করতেছি।
রবিঃ ওকে আর হ্যাঁ আমি বেঁচে আছি এটা শুধু তুষারের পরিবার আর তোরা জানিস।অন্য কেউ যাতে না জানে।
–ওকে।

তারপর বাসা থেকে সবাই চলে গেলো।রাতে রবি কম্পিউটার গুলো ঘেঁটে দেখলো কিছু পাই কি না।কিন্তু এখানে তেমন কিছু নেই।
তারপর রবি ডিনার করে ঘুমিয়ে গেল।সকালে ঘুম থেকে ওঠে রাহীকে ফোন দিল।সে এসে হাজির। তারপর রবির কথা মতো সবাইকে একটা জায়গায় নিয়ে এলো।সবার সাথে রবিকে রাফসান বলে পরিচয় করিয়ে দিল।সবার নামও বলল।আর রবি এটাও বলে দিল আজ থেকে পুরোনো কোনো নিয়ম থাকবে না।আজকে থেকে নতুন নিয়মে এই মাফিয়াদের দল চলবে।আজ থেকে কোনো গরীবের টাকা মেরে খাবে না।বরং বড় লোকদের টাকা মেরে খাবে।

প্রায় ত্রিশ মিনিট রবি সবার উদ্দেশ্য কথা বলে।শেষ কথা বলে আজ থেকে পুরো টিমের দায়িত্ব থাকবে রাহী আর সিকদারের উপর।কেউ যদি এই দুই জনের কথা অমান্য করে তাঁকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
রবির এমন কথায় সবাই একটু আড় চোখে তাকাচ্ছে। রবি ভালো করে বুঝতে পারছে তার কথা গুলো কেউ সহজে নিতে পারছে না।রবি শেষ বারের মতো সবাইকে আবার ওয়ার্নিং দিল যদি কেউ অন্যায় করে আজ থেকে তাহলে কঠিন শাস্তি হবে তার।

তারপর রবি একটা স্টাইল করে হাঁটা শুরু করল।চলে আসলো রাফসানের বাসায়।রবির কাছে দু’জন সারাক্ষণ থাকে রাগী আর সিকদার। রবি রাহীকে বলল রাফসান কোথায়?

রাহী হাসতে হাসতে বলল সে তো অনেক আগে তিন হাত মাটির নিচে চলে গেল।রবি আবার জানতে চাইলো কোথায় আছে এখন।তখন রাহী একটা জায়গার নাম বলল।রবি সে জায়গায় গেল।আর গিয়ে দেখে এখনো রাফসানের লাশ সেখানে আছি। রবি ভালো করে দেখে একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে চলে এলো।বিকালে কম্পিউটার নিয়ে আসা হলো।বাসার সব কিছু চেইঞ্জ করে ফেলল। এমন কোনো কিছু রাখে নাই যার কারণে পরবর্তীতে সমস্যা হতে পারে।
রবি কম্পিউটার ওপেন করল।ইমেইল লগইন করতে ঐ দিকে রাশেদের ফোনে এলার্ট চলে গেল। রাশেদ তাড়াতাড়ি করে কম্পিউটারের সামনে বসে পড়ে আর রবিকে ট্রেক করার ট্রাই করে।রবি জানতো এমন কিছু হবে তাই আগে থেকে ট্রেকিং করতে না পারার মতো করে দিছে।
একটু পর রাশেদ রবিকে মেইল করল…..
–কে তুই আর জানিস কার মেইল হ্যাক করছিস?
রবি রিপ্লাই দিল,আমি আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী। আর আমি হ্যাক করি নি।সোজা পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করছি।
–কিভাবে পসিবল এটা এই পাসওয়ার্ড তো আমি আর সে ছাড়া কেউ জানে না।
রবিঃভিপি সাহেব এত জানাজানির দরকার নেই।আপনার কাজ গুলো ঠিক মতো করবেন ওকে।আর হ্যাঁ কিছু দিন পর নির্বাচন এমপির দিকে নজর রাখবেন আর রাধিকা নামের মেয়েটিকে একদম বিশ্বাস করবেন না।
–আমি জানি না আপনি কে তবে আপনি জানেন না আপনি কি বলছেন।
রবিঃআপনার ভালোর জন্য বললাম।আপনার সিক্রেট সব রাধিকা এমপিকে বলে দেয়।আপনার দলে থেকে আপনার দলকে শেষ করে দিচ্ছে বুঝেন নাই?
–আমি এসব বিশ্বাস করি না।
রবিঃপরে আপনাকেই পস্তাতে হবে তাতে আমার কিছু হবে না।
–কি প্রমাণ আছে রাধিকার বিরদ্ধে?

এবার রবি একটা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বললো,প্রমাণ আছে তবে সেসব দিলে আপনি ওকে মেরে ফেলবেন।আর নির্বাচনের আগে কোনো ঝামেলা হউক তা আমি চাই না।বেস্ট অপ লাক।

রাশেদ বুঝতে পারছে না কি করবে এখন।রবি থাকলে এতক্ষণে কিছু করতো কিন্তু সে তো নেই তাই রাশেদ কিভাবে কি করবে বুঝে ওঠতে পারছে না।হঠাৎ রাশেদের ফোন বেজে ওঠে। রাশেদ ফোন বের করে দেখে রাধিকা। রাশেদের এবার খটকা লাগে। আদৌ কি রাধিকা তার দলের না এমপির। রাশেদ আর কিছু না ভেবে ফোন তুললো। ওপাশ থেকে রাধিকা বলল…
–হঠাৎ কোথায় গেছ সামনে নির্বাচনকে ঘিরে কিন্তু প্ল্যানিং করার কথা ছিল।করবে না?
রাশেদঃএসব নিয়ে এত তাড়া কিসের তোমার?
–না বলছিলে তাই জিজ্ঞেস করলাম আর কিছু না।

রাশেদঃআমার প্ল্যানিং একদম সিম্পল। ঠিক আছে আসছি আমি সবাইকে একত্রে করে নাও।প্ল্যানিং বুঝিয়ে দেব।রাধিকা রহস্যময় হাসি দিয়ে ফোন কেটে দিল আর সবাইকে এক করে নিলো।অর্থাৎ রবির বানানো ঠিমকে।এই টিমে নতুন অনেকে আসছে টিম টা আগের থেকে অনেক বড় হয়েছে। রাশেদ গিয়ে পুরো টিমকে নিয়ে একটা মিটিং শেষ করলো।সবাই ওঠে চলে যেতে চাইলে রাশেদ সবাইকে থামিয়ে বলল রবি থাকা অবস্থায় যারা এই টিমে ছিলে তারা একটু বস।বাকিরা চলে যাও।

রাশেদেরও সন্দেহ হচ্ছে রাধিকার উপর। কারণ যে রবির মেইল থেকে মেইল করছে সেও নিশ্চয় বোকা নয় এত ঝুঁকি নিয়ে রাশেদকে মেইল করবে। কারো মেইল হ্যাক করার কারণে অনেক বড় শাস্তি হতে পারে তাই রাশেদের মনে রাধিকাকে নিয়ে সন্ধেহের বীজ তৈরি হয়ে গেল।

রাশেদ কথা শোনে নতুন সবাই বাইরে চলে গেল।পুরোনো সবাই ভেতরে আছে।আর রাধিকও রাশেদের পাশের চেয়ারে বসা।রাশেদ রাধিকাকে বলল তুমি বসে আছ যে?
–কেন আমি থাকলে সমস্যা নেই তো।
রাশেদঃনা সমস্যা নেই কিন্তু এভাবে মিটিং করতে বলেছে আর একজনের কথা যেন আরেক জন না জানে সেটা খেয়াল রাখতে বলেছে।
–মানে কি কে বলেছে?
রাশেদঃতারেক ভাই বলেছে।আমাদের টিমকে কয়েকটা বিভাগ করতে আর প্ল্যানিং গুলো ভাগ ভাগ করে দিতে।এই আরকি।
–তো আমি জানলে সমস্যা কই?

এবার রাশেদের সন্দেহের তীর আরো জোড়ালো হলো।রাধিকা তার মানে এমপির লোক।রাশেদ পুরোনো সবাইকে বলল, আজ তাহলে আর কোনো প্ল্যানিং হবে না।

রাধিকা বুঝতে পারে সে আছে তাই রাশেদ পরের প্ল্যান কি বলছে না।রাধিকা চালাকি করে রাশেদকে বলল..
–আচ্ছা ঠিক আছে আমি যাচ্ছি তোমরা পরবর্তী কি প্ল্যান আছে কর।

এই বলে রাধিকা চলে গেল।রাশেদ ভালো করে জানে এত সহজে রাধিকা যাওয়ার কথা নয়।কিছু একটা করে তো নিশ্চয় গেছে।সামনে থাকা সবাই জানতে চাচ্ছে পরবর্তী প্ল্যান কি হবে।

রাশেদ চুপচাপ করে বসে আছে আর রাধিকার বসা চেয়ার ভালো করে দেখছে।সেখানে রাধিকার ফোন রাখা।রাশেদ বুঝতে পারল।রাধিকা ফোনে রেকর্ড রেকর্ডিং নিশ্চয় চালু করে দিছে।

#To_be_continue…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here