ত্রিমোহনী
(৫)
#ফারহানা_আক্তার_রুপকথা
__________________________
যৌবন রে, তুই কি রবি সুখের খাঁচাতে।
তুই যে পারিস কাঁটাগাছের উচ্চ ডালের ‘পরে
পুচ্ছ নাচাতে।
তুই পথহীন সাগরপারের পান্থ,
তোর ডানা যে অশান্ত অক্লান্ত,
অজানা তোর বাসার সন্ধানে রে
অবাধ যে তোর ধাওয়া;
ঝড়ের থেকে বজ্রকে নেয় কেড়ে
তোর যে দাবিদাওয়া।

যৌবন রে, তুই কি কাঙাল, আয়ুর ভিখারী।
মরণ-বনের অন্ধকারে গহন কাঁটাপথে
তুই যে শিকারি।
মৃত্যু যে তার পাত্রে বহন করে
অমৃতরস নিত্য তোমার তরে;
বসে আছে মানিনী তোর প্রিয়া
মরণ-ঘোমটা টানি।
সেই আবরণ দেখ্ রে উতারিয়া
মুগ্ধ সে মুখখানি।

(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

হাতের কাগজখানি উল্টেপাল্টে দুটো পৃষ্ঠা খুবই মনযোগে পড়ছে তনু। প্রথম পৃষ্ঠা জুড়ে শুধু রবীন্দ্রনাথের কবিতা ‘যৌবন রে, তুই কি রবি সুখের খাঁচাতে’ দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় কয়েকটা বাক্য। এমনই বাক্য যা পড়ে তনুশ্রী শুধু একটা শব্দই উচ্চারণ করতে পারলো, ‘কাপুরুষ!’
কাগজখানি হাতের মুঠোয় মুচড়ে ফেলে দিলো সোজা বিনে। নাকের পাটা ফুলে উঠেছে রাগে,ফর্সা গালে রক্তিমাভা চোখের পাতা দুটো বড্ড ফ্যাকাশে যেন রাগের স্রোত ওই দুটো চোখ ছুঁতে পারেনি। বিষন্নতা, কিছু হারিয়ে ফেলার শোকে চোখ দুটোকে মরা মাছের চোখের মত নিষ্প্রাণ লাগছে৷ নিজের ঘরের পড়ার টেবিলে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করলো তনুশ্রী । মুহূর্তেই ভেসে উঠলো কলেজের প্রথম দিনের ছবিটা। মানুষটা কত জেদ ধরে বলেছিলো, ‘ আজকের ক্লাস কলেজে নয় আমার কাছে করবে। কি করবে তা জানি না।’ তনুশ্রী কত করে বোঝালো, ‘ আমি পারবো না। আপনি তো জানেন আমার সাথে বড় আপুও আসবে। আপুর পরিচিত সবাই আমি ক্লাস ফাঁকি দিলে বাড়িতে খবর ঠিক পৌঁছুবে।’ সে শুনলো না গোঁ ধরে রইলো । ভালোবাসার মানুষটিকে খুশি দেখতে চায় বলে তনুশ্রীও কম চেষ্টা করলো না। রুপশ্রী যখন কলেজে নিয়ে এলো তাকে তখন তনু আবদার করলো আজকে সে ক্লাস করবে না। পুরনো বান্ধবী এশা অন্য কোথাও ভর্তি হয়েছে তাই মন খারাপ। রুপশ্রী কথাটাকে সত্যি মনে করে বলল তাকে এশার কাছে নিয়ে যাবে। রুপশ্রী জানতো এশাদের বাড়ি কোথায় তাই সে বলল, ‘চল’।

তনুশ্রী বার কয়েক জানতে চাইলো কোথায় যাবে৷ রুপশ্রী জবাব দিলো না। তারা গাড়িতে বসতেই এশাদের বাড়ির ঠিকানা বলল ড্রাইভারকে। চমকে গেল তনু তারমানে কি আপু এখন তাকে নিয়ে সেখানে যাবে! ভয় হলো তনুর এশা কলেজে চলে গেছে নিশ্চয়ই । দ্রুত ব্যাগ থেকে ফোন বের করে মেসেজ দিলো এশাকে। ভাগ্য ভালো হওয়ায় এশাও তৎক্ষনাৎ রিপ্লাই দিলো। এশা সত্যিই কলেজে চলে গেছে। তবে তাদের বাড়িতে তার মাও নেই।স্বস্তি হলো তনুর তার মানে বাড়ির গেইট থেকেই আপুকে বিদায় করতে পারলে সে মানুষটাকে ফোন করে বলবে তাকে নিয়ে যেতে। হলোও তাই, এশাদের বাড়িট গেইটে গাড়ি থামতেই তনুশ্রী বের হয়ে গেল গাড়ি থেকে, ‘আপু তোমাকে আর আসতে হবে না। তুমি ইউনিভার্সিটি চলে যাও দেরি হয়ে যাবে তোমার।’

রুপশ্রী একবার হাতের কব্জিতে ঘড়িটা দেখলো। সত্যিই ক্লাস তার শুরু হয়ে গেছে৷এখন যেতে যেতে সে ক্লাসটা পাবে না তবে দ্বিতীয় ক্লাস আজ বারোটা ত্রিশে। হাসি হাসি মুখ করে তনুশ্রীর দিকে তাকালো রুপ, ‘ ভেতরে যা আর শোন বাড়ি যখন ফিরবি চাচুকে কিংবা বাবাকে বলিস গাড়ি পাঠাতে। একাই বেরিয়ে যাস না কিন্তু।’ তনুশ্রী মাথা নেড়েছিলো শুধু মুখে কিছু বলেনি। মন বলে চলছিলো বারবার, ক্ষমা করে দিও আমায় আপু।

রুপশ্রী যেতেই তনু ফোন করলো মানুষটাকে। কি যে খুশি হয়েছিলো তখন সেই মানুষটা। একটা দিনের কয়েকটা ঘন্টা তনুর কাছ থেকে পেয়ে উন্মাদ হয়ে গিয়েছিলো যেন। বন্ধুর কাছ থেকে বাইক ধার করে নিয়ে এসেছিলো সে। এশাদের বাড়ির সামনে থেকে তনুকে নিয়ে গেল। কতরকম ঘোরাফেরা আর হাজারো রঙিন স্বপ্নের আলোচনা মানুষটা সেই একদিনেই করে ফেলেছিলো। বারবার বলছিলো, ‘আমার দেহশ্রী বড় হয়ে গেল! কলেজে যাবে এখন থেকে ইশ, আমারতো যে করেই হোক এবার চাকরিটা জোগাড় করতেই হবে। বলা তো যায় না কখন শ্বশুরমশাই মেয়ের বিয়ে নিয়ে চিন্তিত হোন। তার আগেই তো আমার হাতে এই হাত দুটোকে বেঁধে নিতে হবে চিরজীবনের জন্য।’ লজ্জায় মরছিলো তনুশ্রী কথাগুলো শুনে৷ লোকটা যে কি! এখনই বিয়ের ভাবনা এত?

চোখের কোণ বেয়ে গড়ালো তপ্ত দুফোটা জল। অতীত ! সবটাই অতীত এখন। মাত্র তো বছর দেড় আগের কথা এগুলো। এতোটাই যদি তাড়া ছিলো হার মানার তবে কি দরকার ছিলো ভালোবাসি বলার! ক্ষমতা না থাকলে ভালোবাসায় জড়াবেই কেন? কাপুরুষ সব কাপুরুষ। মন নিয়ে ঘর করা না পুরুষ মানুষ গুলোর খেলার শখ হয় শুধু। ইকবাল ভাইয়াও তেমনই শুধু খেলার জন্যই ভালবাসে আপুকে তার বেশি কিছুই না।

নয়ন ইন্ডিয়া গেল তার কেটে গেছে কয়েক মাস। এ ক’মাসে রুপশ্রী, তনুশ্রী কিংবা শ্রেয়সী এই ত্রিমোহনী, তিনটি নদীর মোহনার মতোই তিন বোন বদলে গেছে অনেকটা। শ্রেয়সী আজকাল পড়ালেখার বাইরে একটু আধটু বড় বোনের কাছে যায় কিন্তু তনুর ধারেকাছে ঘেষার সুযোগ তার হয় না। গম্ভীর, চুপচাপ তনুশ্রী এখন রুক্ষ মেজাজী হয়ে গেছে। তার সাথে বাইরের জগতের সম্পর্ক ধীরে ধীরে একেবারেই মুছে গেছে। কলেজে যায় না সে সময়মত সাজেশন কালেক্ট করা আর দিনরাত পড়াশোনায় ব্যস্ত। বাড়িতে এসে পড়ানোর একজন শিক্ষক ছিলো সপ্তাহ খানেক হলো তাকেও ছাড়িয়েছে। বাড়ির কারো শাষণ,বারণ তার কানে প্রবেশ করার ক্ষমতা যেন হারিয়ে ফেলেছে। রুপশ্রী বেশ কয়েকদিন তার বাবা মায়ের সাথে নয়নের ব্যপারে কথা বলার চেষ্টা করছে। মনে মনে অনেকগুলো বাক্য সাজিয়ে বাবার সামনে দাঁড়াতেই সেই বাক্যরা এলোমেলো হয়ে যায়। কেমন যেন ছন্নছাড়া লাগে তার নিজেকে। নয়ন প্রতিরাতে কল করতেই তার হৃৎপিণ্ড রক্তশূন্য হয়ে পড়ে। বড়াবাড়ি রকমের আবদার থাকে নয়নের যা রুপশ্রীর পক্ষে পূরণ করা একেবারেই সম্ভব নয়। প্রথম প্রথম ভালোবেসে চুমু খাওয়ার আবদার ছিলো অনিচ্ছা সত্ত্বেও কয়েকবার তা সে করেছে। আজকাল তার কথাবার্তা অসংলগ্ন হয়ে গেছে। রুপশ্রীর কৈশোরে প্রেমের অভিজ্ঞতা ছিলো না। যৌবনে হবু বাগদত্তাকে ভালোবাসতে গিয়ে অশ্লীলতার পরিচয় পাচ্ছে৷ মনে মনে ঘৃণা লেগে গেছে তার ভালোবাসার নামে। আংটিবদল হলেই কি সবটা দেওয়া যায় হোক না তা দূর থেকেই! প্রতিরাতেই নয়নের সাথে কথা বলতে গিয়ে নেটওয়ার্ক সমস্যার বাহানা করে ফোন কাটতেই রুপশ্রী বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়। দমবন্ধ লাগে তার কথা বলার সময়টুকু তাই হয়তো বারান্দায় দাঁড়াতেই তার নিঃশ্বাস সতেজ হয়। বাইরের খোলা হাওয়া না সামনের ওই দরজা দিয়ে আসা আলোটুকু তার স্বস্তির কারণ তা জানে না। শুধু জানে মাঝরাতে ঘোর অন্ধকারের মাঝে ওই আলোতে একটুখানি সুখ এসে হানা দেয় তার বারান্দায়। অস্পৃশ্য তবুও স্পর্শমান লাগে সেই আলো ।ওই ঘরের মালিকটি অত রাতেও জেগে থাকে কেন? সেও কি কারো সাথে প্রেমবাক্য চালায়! নাকি নয়নের মত কোন অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ আচরণ করে? রুপশ্রীর দিন আর রাতের একমাত্র দাবীদার হয়ে আজকাল বড্ড কষ্ট দেয় নয়ন। এমনই যদি চলতে থাকে তবে এই সম্পর্ক আজীবন কি করে বয়ে বেড়াবে সে! নয়ন ভালোবাসে বলেই তো বিয়ের প্রস্তাব রেখেছিলো। রুপশ্রী কোথাও শুনেছিলো ভালোবাসা নিজের মধ্যে বাঁধতে নেই। ভালোবাসাকে তো ছেড়ে দিতে হয়। সে নিজেই নিজের গন্তব্য ঠিক করে নেয়। মা- বাবাকে বলে দিবে নয়নকে সে বিয়ে করতে পারবে না। কিন্তু মা – বাবা যদি প্রশ্ন করে কেন পারবে না? কোন উত্তরই সে দিতে পারবে না।

শরতের শেষে এক বিকেলে রুপশ্রী বাবার কাছে বায়না ধরলো কক্সবাজার যাবে বলে। নয়ন ফিরে আসবে আর এক সপ্তাহ পরে। নয়নের পরিবার এ সপ্তাহেই এসে বিয়ের তারিখ ঠিক করতে। রুপশ্রীর বাবা সেদিন রাজী হয়ে গিয়েছিলো।বাড়িসুদ্ধ সবাই কক্সবাজারে গেল তবে কারোই জানা ছিলো না তাদের পাশের বাড়ির একটা ছেলেও সেদিন চট্টগ্রামে গিয়েছে। হুম, ইকবালও গিয়েছিলো চট্টগ্রামে তবে কক্সবাজারেও তার যাওয়া হলো। চট্টগ্রামে ভালো একটা চাকুরির সুযোগ পেয়েছিলো ইরফান যেচে পড়ে সেই চাকরিতে ছোট ভাইকে গছালো। নিজের দরকার জেনেও সে ইকবালকে পাঠিয়েছে যেন এই চাকরির জন্য ঢাকা শহর ছাড়ে। নিজের জন্য না হয় অন্য আরেকটা খুঁজবে! তবুও ভাইটা যেন চোখের সামনে ভালোবাসার মানুষটির বিয়ে দেখার মত যন্ত্রণা না পায়। ইকবাল চাকরির ইন্টারভিউ শেষ করেই কক্সবাজার গিয়েছিলো একটা দিন থাকার জন্য । হয়তো ওই সময়টা তার বিক্ষিপ্ত, বিধ্বস্ত হৃদয়টার একাকীত্ব কামনা ছিলো। সেই কামনা পূরণের তাগিদেই পৌছে গিয়েছিলো সেখানে। এখানেও নসীব হায়! যার থেকে পালিয়ে বেড়ানো সেই ভাঙাচোরা স্বপ্নের মুখোমুখিই হতে হলো। খুব ভোরে এসেছিলো ইকবাল কলাতলী বিচে। হাটতে হাটতে অনেকটা দূর ঝাউবনের দিকে এগোতেই কানে এলো একটা ডাক।অতিপরিচিত কন্ঠ শুনে থমকে গেল সে। ভাবলো হয়তো ভ্রম হচ্ছে বুঝি! দিনরাত সারাটাক্ষণ তো ওই একজনকে নিয়ে ভাবনঘরে ব্যস্ত থাকে হয়তো তাই সেই মানুষটার আশেপাশের সবাইকেই খেয়াল করছে। সমুদ্র তটের শীতল ফুরফুরে হাওয়া মনটাকে যতোটা সতেজ করছে ঠিক ততোটাই স্নায়ুবিক অস্বস্তি হলো ডাকটা শুনে।ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই অবাক হলো ইকবাল। শ্রেয়সী দৌড়ে আসছে বালুচর থেকে পেছনে পেছনে রুপশ্রী আর তনুশ্রী। তারা ধীর পায়েই হেঁটে আসছে। ইকবালের চোখ সেদিকেই থেমে গেল। সাদার সাথে আকাশনীল মিশে আছে তার অঙ্গে। সাদা কূর্তির সাথে নীল স্কার্ট গলার স্কার্ফটাও আকাশী নীলের মাঝে। দূর থেকে যেন পুরো আকাশটাই এগিয়ে আসছে তার দিকে। হৃৎস্পন্দনের গতি বাড়ছে একটু একটু করে। নিজের অজান্তেই কখন যেন একটা হাত উঠে এলো বুকের বা পাশে। হৃৎপিণ্ডটা কি এখানেই থাকে! ঢিপঢিপ আওয়াজটা কি বুকের ঠিক এখান থেকেই আসছে? রুপশ্রীর পা যতোটা আগাচ্ছে বুকের ভেতর শব্দতরঙ্গও তত স্পষ্ট আর উচ্চ হচ্ছে । রুপশ্রী কি পাশে এলেই শুনবে এই আওয়াজ! সেকি বুঝতে পারবে তার হৃদয়ের আকুল আবেদন? মন মানছে না কেন এলো সামনে আবার?

শ্রেয়সী সামনে দাঁড়াতেই ইকবালের খেয়াল হলো। সে একাধারে তাকিয়ে আছে সেদিকে,যেদিকে তাকানোর অধিকার তার নেই। সমুদ্র সৈকতে এই ভোরের হাওয়া প্রবল মনে হচ্ছে ইকবালের। হাওয়ায় যেন বালুও ঘুরে ঘুরে উড়ে উড়ে চোখে মুখে পড়লো। এতক্ষণের খোলা চোখ ঢেকে গেল তার। দৃষ্টিও বুঝি এই হঠাৎ আগমন সইতে পারলো না।

‘ভাইয়া!’

-তুমি এখানে?

-আপনি জানেন না আমরা কক্সবাজার বেড়াতে এসেছি কাল।

‘ওহ’ ইকবাল অন্যমনস্ক হয়ে বলল৷ শ্রেয়সী একবার ইকবালের দিকে তাকিয়ে আবার পেছনে তাকালো। ভাইয়া তনুশ্রী আপুকে দেখেই হয়তো এমন নিস্পৃহ হয়ে গেছে,এমনটাই ভেবে নিলো সে। রুপশ্রী, তনুশ্রী কাছে আসতেই দ্বিধায় ভুগলো ইকবাল৷ কি বলা যায় এখন! তারা পরিচিত তবুও অপরিচিতের মত৷ রুপশ্রীর সাথে কথা বলতে ভয় হয় তার। এক অন্যরকম ভালোলাগাময় ভয় আর জড়তাও। আর তনুশ্রী সবসময় তার দিকে এমন করে তাকায় যা দেখে সে বুঝতে পারে না মেয়েটা কি তাকে ঘৃণা করে! ইতস্তত করতে করতেই প্রশ্ন করলো রুপশ্রী, ‘ কেমন আছেন?’

ইকবাল কল্পনাতেও ভাবেনি কখনও রুপশ্রী তাকে কখনও যেচে কিছু জিজ্ঞেস করতে পারে। তার কি এখন খুশি হওয়া উচিত, আনন্দ প্রকাশ করা উচিত? কিন্তু কেন করবে প্রকাশ!

-ভালো আপনা,, তোমরা?

‘ভালো’ জবাব দিলো রুপশ্রী।

-ক’দিন থাকবে? ইকবাল জিজ্ঞেস করলো।

-তা জেনে আপনার কি কাজ? রুক্ষ স্বরে বল্ তনুশ্রী যা রুপশ্রী, শ্রেয়সী কারোই ভালো লাগেনি। শ্রেয়সী বলল, ‘ আমরা পরশু কাল চলে যাবো। নয়ন ভাইয়ার আব্বু আম্মু আসবে তো আপুর বিয়ের তারিখ ঠিক করবে বলে।’ দম না ফেলেই বলে ফেলল শ্রেয়সী তাই ধমকে উঠলো তনু। রুপশ্রী মুখটা হাসি হাসি রেখে বলল, ‘ আপনি কদিনের জন্য এসেছেন?’

-রাতের বাসেই হয়তো চলে যাবো।

-‘হয়তো!’ বিষ্ময়ে ভ্রু কুঁচকে এলো রুপশ্রীর। তনু তাড়া দিলো হোটেলে চলে যাবে বলো।

ইকবাল বলল, ‘ যে কাজে এসেছি তা হয়ে গেছে। আর দিনটা আছে ঘোরার জন্য তাই রাতেই ফিরে যাবো।’ রুপশ্রী কৌতূহল জাগলো ইকবাল কি কাজে এসেছে তা জানার। তবে সে মুখে সেই আগ্রহটা প্রকাশ করলো না। তনুশ্রী আবারও বলল, ‘ আপু কথা শেষ হলে চলো আমি হোটেলে ফিরবো।’

-তনু আপু আরেকটু থাকি না। ভাইয়ার সাথে দেখা হলো একটু ঘুরি চলো।শ্রেয়সী বায়না ধরলো৷ তনুশ্রী বিরক্তিমাকা স্বরে বলল, ‘ আমি এখানে আর এক মুহূর্ত থাকতে চাচ্ছি না বোর হচ্ছি।’

-বোর তো হবেই তোমার ক্রাশ তোমারই বোনের সাথে গদগদ হয়ে কথা বলছে তো। হিংসে তো একটু হব,,,,,,, শ্রেয়সী কথাটা শেষ করার আগেই তনুশ্রী কষে এক থাপ্পড় মারলো শ্রেয়সীর গালে। আর সেই থাপ্পড়ের কয়েক সেকেন্ড বাদেই তনুশ্রীর গালে তার চেয়েও জোরে থাপ্পড় পড়লো।

চলবে

(ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here