#তুমি শুধু আমার
#লেখিকাঃমোনালিসা
#পর্বঃ৩
মেঘ গাড়ি থেকে নেমে বৃষ্টির সামনে গিয়ে হাত বারিয়ে বলে,,,,
মেঘ;;বৃষ্টি চলো,,,,
বৃষ্টি;; যাবো না আমি কোথাও যাবো না,শুনতে পেরেছেন আপনি, আমি কোথাও যাবো না?আমি আমার বাবা মার কাছে ফিরে যাবো।
মেঘ;;কেনো যাবেন না তুমি আমার সাথে?তুমি কি ভেবেছো আমি আমার বউকে এখানে ফেলে রেখে চলে যাবো তা তো হবে না জানেমান, যেতে তো হবেই তোমাকে, তুমি যদি সেচ্ছায় আমার সাথে না আসো তাহলে কিন্তুু…..
বৃষ্টি;;তাহলে কি? কি করবেন আপনি?
মেঘ;;কি করবো?এই বলেই মেঘ বাকাঁ হাসি দিয়ে বৃষ্টি কে পাজা কোলে তুলে নেয়।
—-বৃষ্টি চিৎকার করে বলে উঠে?এই কি করছেন আপনি কোলে নিয়েছেন কেনো, আমি বলছি আমাকে নিচে নামান।
মেঘ;;জানেমান, আমি তোমাকে আগেই বলেছি সেচ্ছায় আমার সাথে আসতে কিন্তুু আমার কথা তো তুমি শুনলে না,,তাই বাধ্য হয়ে আমার বউটা কে কোলে তুলে নিতে হলো।
বৃষ্টি;;ভালো হচ্ছে না কিন্তুু,আমি বলছি, আমাকে নিচে নামান, আমি হেটে যেতে পারবো।
—-মেঘ,বৃষ্টির কথায় কান না দিয়ে গাড়ির দরজা টা পা দিয়ে ঠেলে সামনে এগিয়ে যায়। বাড়ির মেন দরজার সামনে দাড়াতেই এলিনা খান আর বাড়ির কিছু সার্ভেন্ট, মেঘ আর বৃষ্টি দুই কে দেখা মাএই তারা সামনে এসে দাড়ায়।
এলিনা খান;;দাদু ভাই, এসেছিস তোরা,সেই কখন থেকে তোদের জন্য পথ চেয়ে বসে আছি।এতো দেরি হলো কেনো দাদু ভাই?
মেঘ;;আর বললা দাদি,,তোমার এই আদরের নাতবউয়ের জন্য দেরি হয়েছে,, সে তো আসবেই না?
এলিনা খান;;কেনো? কি হয়েছে দাদুভাই?
মেঘ;;দাদি,এইখানেই দাড়িয়ে সব কথা শুনবে না কি?ভেতরে যেতে দিবে কোনটা?
—এলিনা,ও হ্যা আয় আগে ভিতরে আয়, দাদু ভাই বউ কে কোলেই রাখবে না কি কোল থেকে নামাবে?
মেঘ;;কি করবো দাদি তোমার নাতবউ তো গাড়ি থেকে নামছেই না,,বার বার বলছে মেঘ আপনি আমাকে কোলে তুলে না নিলে আমি কিন্তুু যাবো না?কি আর করার দাদি বাধ্য হয়ে আমার বউটা কোলে তুলে নিতে হলো।
বৃষ্টি;;কি মিথ্যেবাদীরে বাবা?আমি না কি বলেছি কোলে নিতে(মাফিয়া কোথাকার,বিরবির করে)
—-এলিনা,মেঘের কথা শুনে মুচকি হাসি দেয়।
এলিনা খান;;বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে বলে, মাশাআল্লাহ,খুব সুন্দর, আমার দাদুভাইয়ের পছন্দ আছে।নাম কি তোমার?
বৃষ্টি;;সুমাইয়া রহমান বৃষ্টি,,,
—-এলিনা, খুব সুন্দর নাম,তোমাকে অনেক ধন্যবাদ আমার দাদুর ভাইয়ের জীবনে আসার জন্য,আমি দাদু ভাইয়ের কাছ থেকে সব শুনেছি তুমি আমার দাদুভাইকে খুব ভালোবাসো।এতো দিন আমি মেঘকে সামলেছি আজ থেকে তুমি আমার দাদুভাই কে সামলাবে।
বৃষ্টি;;অবাক হয়ে শুধু এলিনার কথা গুলা শুনছে আর মনে মনে ভাবছে মাফিয়াটা দেখি মিথ্যারঝুলি খুলে বসেছে, এই কথাটা বলেই যেই না বৃষ্টি মেঘের দিকে তাকিয়েছে ওমনেই মেঘ বৃষ্টিকে চোখ টিপ মেরে বসে। মেঘের এই কান্ড দেখা মাএই বৃষ্টি তার চোখ সরিয়ে নেয়।
এলিনা খান;;(সোনিয়া কে উদ্দেশ্য করে বলে) বৃষ্টি কে মেঘের রুমে নিয়ে যাও।
সোনিয়া;;জি দাদি আম্মু,,,চলুন ম্যাম,এই বলেই সোনিয়া বৃষ্টিকে মেঘের রুমে নিয়ে যায়।বৃষ্টি মেঘের রুমে ঢুকেই পুরো অবাক হয়ে যায়, চারপাশে বিভিন্ন কালারের ফুল দিয়ে খুব সুন্দর করে সাজানো, দেয়ালে অনেক বড় ফ্রেমে একটা ছবি টানানো, আর সেই ছবিটা আর কারোর না মেঘের।
বৃষ্টি, পুরো রুম টা ঘুরে ঘুরে দেখছে,হঠ্যাৎ বৃষ্টির চোখ পরে বারান্দাতে, বৃষ্টি সেই দিকে এগিয়ে গিয়ে বড় থাইগ্লাস টা হাত দিয়ে সরিয়ে আরও বেশি অবাক হয়ে যায়,,,বারান্দার একপাশে বিভিন্ন রকমের ফুল গাছ দিয়ে সাজানো আর তার পাশে ছোট্ট একটা দোলনা, দোলনা টাও বিভিন্ন রকমের ফুল দিয়ে খুব সুন্দর করে সাজানো, বৃষ্টি এইসব দেখা মাএই তার মুখে হাসি ফুটে উঠে,বৃষ্টির মনে হচ্ছে কত বছরপর যেনো সে হাসলো আর মন ভরে নিঃশ্বাস নিলো।এই সকল ভাবনার মাঝেই মেঘ তার রুমে আসে।
—-বৃষ্টি, মেঘ কে দেখা মাএই তার মুখের হাসি গায়েব হয়ে যায়।
মেঘ;;বৃষ্টি কে দেখা মাএই সামনে এগিয়ে যেতে থাকে,,মেঘকে সামনে এগিয়ে আসতে দেখে বৃষ্টি ভয়ে পিছিয়ে যেতে থাকে,, এক সময় বৃষ্টি দেয়ালের সাথে আটকে যায়,মেঘকে কাছে আসতে দেখেই বৃষ্টি মেঘে বলে, আপনি আমার কাছে আসবে না,আপনি আমার কাছে আসলে আমি নিজেকে নিজেই শেষ করে দিবো।
মেঘ;;রিলেক্স বৃষ্টি,তুমি শান্ত হও,,,,,
বৃষ্টি;;শান্ত হবো মানে,আপনি আমার জীবন টা ধ্বংস করে দিয়ে বলছেন আমি শান্ত হবো,,,আমি কখনই আপনাকে স্বামী হিসাবে মেনে নিবো না,আপনার মতো একজন খুনিকে কখনই আমি ভালোবাসতে পারবো না।আপনি একজন খুনি, আমার চোখের সামনে আপনি একটা লোক কে খুন করেছেন।আপনি একজন খুনি?
মেঘ;;এতোখন শান্ত হয়ে বৃষ্টির সব কথাই শুনছিল, কিন্তুু শেষের কথা টা শুনা মাএই মেঘ রেগে গিয়ে বৃষ্টির বাহু শক্ত করে ধরে দাঁতে দাতঁ চেপে বলে,,,,,
—-মেঘ,একদম চুপ,আর একটা কথাও বলবেনা আর কি বললে তুমি আমি খুনি,,,হ্যাঁ আমি খুনি, আমি মাফিয়া আর এই খুনির সাথেই তোমাকে ছাড়া জীবন থাকতে হবে।তুমি প্রথম মেয়ে যাকে প্রথম দেখাতেই আমি ভালোবেসেছি তাই তোমাকে যাতে না হারাই তাই তোমার বিয়ে ভেঙে তোমাকে বিয়ে করেছি বুঝলে তুমি,,,,,,
বৃষ্টি তো মেঘের রাগ থেকেই প্রচুর ভয় পেয়ে যায়, কারন এতোক্ষন ধরে মেঘ বৃষ্টির উপর একটুও রাগ দেখায়নি,এখন যেনো বৃষ্টি মেঘের সব কথা শান্ত হয়ে শুনছে।
বৃষ্টি;;মেঘ প্লিজ, আমাকে ছাড়ুন আমার খুব লাগছে,,,,
তখনই মেঘ বৃষ্টিকে সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেয়,,,
মেঘ;; আর হ্যা শোন, তোমাকে আমি কি ভাবে বিয়ে করেছি সেই কথা দাদি যেনো জানতে না পারে(বৃষ্টি কে উদ্দেশ্য করে)।
-তুমি প্রথম মেয়ে যাকে দেখা মাএই আমার বুকের ভিতর টা এক অদ্ভুদ অনুভব হয়েছিলো,,,আমাকে দেখে তোমার ভয় পাওয়া দুটো চোখ,তোমার ওই গোলাপী ঠোটঁ আর তোমার ওই ঘনো কালো চুল সব কিছু মিলিয়ে আমি পাগল হয়ে গেছি শুধু মাএ তোমার জন্য,,,,যেই মেঘ আহমেদ চৌধুরী নিজের কাজ ছাড়া কিছুই বুঝতো না আর আজ সেই মেঘ আহমেদ চৌধুরীর চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছো তুমি,,,তাই তো রনি কে দিয়ে তোমার সব খবর আমি নেই, তুমি কোথায় যাও কি করো সব কিছুর রনি আমাকে বলতো,,,যখন রনি মুখে শুনলাম তোমার বিয়ে হচ্ছে তখন আমার পৃথিবী পুরো উল্টে গেলো,,,তোমাকে পাওয়ার জন্য আমাকে এতো কিছু করতে হলো।
—-বৃষ্টি,মেঘের মুখে এইসব শুনা মাএই এতোটাই রেগে যায় যে মেঘের সার্টের কলার ধরে বসে,,বৃষ্টি রাগেই মাথা এইটাও ভুলে যাই যে,,, বৃষ্টি মেঘের অনেকটাই কাছে চলে এসেছে,,,,,,মেঘের প্রতিটা নিঃশ্বাস বৃষ্টির মুখে পরছে,মেঘ বৃষ্টির দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে।
“মেঘেকে এইভাবে তাকানো দেখে বৃষ্টি বুঝতে পারে যে ও মেঘের অনেক কাছে চলে এসেছে,,,বৃষ্টি যেই না মেঘের কাছ থেকে সরে আসবে ওমনি মেঘ বৃষ্টির কোমড় চেপে ধরে।মেঘের হাতের ছোয়া পেয়ে বৃষ্টি কেঁপে উঠে।তখনই বৃষ্টি বলে উঠে?
বৃষ্টি;;কি করছেন আপনি?ছাড়ুন আমাকে?
মেঘ;;তুমি তো প্রথমে আমার কাছে আসলে, আমাকে ধরলে আর এখন ছেড়ে দিতে বলছো কেনো?
বৃষ্টি;;আমি বললি মেঘ, আপনি আমাকে ছাড়ুন?
মেঘ;; আর যদি না ছাড়ি তো কি করবে শুনি?
—-বৃষ্টি, আপনার লজ্জা করে না একটা অচেনা মেয়ে কে ছড়িয়ে ধরতে?
মেঘ;;না,,,লজ্জা করে না, আর লজ্জা করবেই বা কেনো আমি তো আমার বিয়ে করা বউ ধরেছি,, অন্য কাউকে তো ধরিনি,,,তাহলে লজ্জা করবে না কেনো?
বৃষ্টি;;ভালো হচ্ছে না কিন্তুু, আমি বলছি আমাকে ছেড়ে দিন।
মেঘকে কাছে আসতে দেখে বৃষ্টি চোখ বন্ধ করে ফেলে,,মেঘ বৃষ্টির এই কান্ড দেখা মাএই বৃষ্টি ছেড়ে দিয়ে, মেঘে প্যান্টের পকেটে হাত গুজে দাড়িয়ে মেঘ বলে উঠে….
#চলবে,,,,,,
জানি না কি লিখেছি,,,ভুল হলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here