তুই_একমাত্র_আমার_অধিকার পর্ব ১৭
ছোহা_চৌধুরী
#পর্ব১৭
সকালে চোখ খোলেই দেখলাম আমি একদম শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে একদম ওর সাথে মিশে শুয়ে আছি।আর শুভ্র জেগে আছে।আর ওকে দেখে মনে হচ্ছে অনেকক্ষন যাবতই মনে হয় জেগে আছে।আমি তাই ওকে প্রশ্ন করেই বসলাম।
গুড মনিং মিস্টার নির্লজ্জ
শুভ্র হেসে বললো,গুড মর্নিং সুইটহার্ট।
তুমি কখন ঘুম থেকে জাগলে?
শুভ্র বললো, প্রায় এক ঘন্টার মতো হবে।
আমি কিছুটা অবাক হয়ে বললাম,এক ঘন্টা আগে!বাট এখনো বিছানা থেকে উঠোনি যে?
কি করে উঠবো বলো!একে তো তোমাকে রেখে উঠতেই ইচ্ছে করেনা।আর তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছো।আমি তাহলে কিভাবে উঠবো?
আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম, কিভাবে মানে!আমাকে ছাড়িয়ে পরে উঠবে।
আমি যদি উঠে যেতাম তোমাকে ছাড়িয়ে তাহলে তোমার ঘুমের ডিস্টার্ব হতো।আর আমার কাছে অন্য কাজ থেকে তুমি বেশি ইম্পরট্যান্ট। তাই তোমাকে ডিস্টার্ব করিনি।আর আমার সজাক শুয়ে থাকতে মোটেও খারাপ লাগছিলো না।তোমার ঘুমন্ত মুখ দেখতে আরো ভালো লাগছিল।
হয়েছে হয়েছে। এবার উঠে ফ্রেশ হও।ফ্রেশ হয়ে অফিস যাও।বাই দা ওয়ে তুমি কি সত্যি সিংগাপুর যাবে?
সে বিষয়ে রাতে এসে কথা বলি!আমাকে এখন ফ্রেশ হয়ে বের হতে হবে।অনেক বুঝাপড়া বাকি আছে।অনেক হিসাব নেয়া বাকি যেগুলো আমি সুদে আসলে উঠাবো।তুমি ব্রেকফাস্ট করে নাও শুভ্র বললো।
আমি ওর কথার ধাঁচে বুঝতে পারলাম,শুভ্র অনেক রেগে আছে যুথি আপুকে নিয়ে।আমার সামনে খুব কষ্ট করে নিজের রাগ কনট্রোল করছে। তাই বললাম,কিন্তু শুভ্র…
ফ্রেস হয়ে গিয়ে ব্রেকফাস্ট করো বললাম তো।শুভ্র কিছুটা জুড়েই কথাগুলো বলেছে।
তাই আমি কথা না করে বাড়িয়ে নিজের কাজে চলে আসলাম।কাল থেকে ভার্সিটিতে যেতে হবে। তাই আস্তে আস্তে নিজেকে আজকে প্রস্তুত করতে হবে।তাই নিজের কাজে লেগে পড়লাম।
____________ _______________
যুথি,যুথি
শুভ্র তুই!এতো সকালে যে?কোনো সমস্যা হয়েছে নাকি?মামি বললো।
মামি যুথি কোথায়?
কেন রে বাবা!
তোমার মেয়ে কোথায় ওইটা বলো আগে।
যুথি ওর রুমেই আছে।তুই যা আমি তোর জন্য নাস্তা নিয়ে আসছি।
মে আই কাম ইন মিস যুথি।
আরে শুভ্র ভাইয়া তুমি, এতো সকালে যে?
কি করবো বল।বাই দা ওয়ে নিচে আয় তুই।
কেন ভাইয়া?বিয়ের কথা বলবে বুঝি?
তুই নিচে আয় আগে। তুই নিজের চোখে দেখতে আর নিজের কানে শুনতেই পারবি যে আমি কি বলি,বলে শুভ্র নিচে চলে গিয়ে সোফায় ওয়েট করতে লাগলো।
_____________ _____________
হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো।ফোনে মাই স্টুপিড হাজবেন্ড লিখা দেখে তাড়াতাড়ি করে ফোন রিসিভ করি।
হ্যালো শুভ্র,
গুড মর্নিং নিরাপাখি, ব্রেকফাস্ট করেছো?
হুম।তুমি?
আমার চিন্তা বাদ দাও।আমি তোমাকে একটা এড্রেস সেন্ট করে দিচ্ছি। ইমিডিয়েটলি এই এড্রেস এ চলে আসো।
কোথায় আসবো?
মামার বাসায়।
বাট কেন?দেখ শুভ্র আমি কোনো ঝামেলা চাই না।শুধু তোমাকে নিয়ে শান্তিতে থাকতে চাই।
আমি সেটা জানি ম্যাম।আপনাকে আসতে বলছি আপনি আসবেন।আমি ড্রাইবারকে বলে দিচ্ছি।
ওকে।
_______ _________
কি হয়েছে কি শুভ্র? আর কার জন্য ওয়েট করছিস?
আসলেই দেখতে পারবে মামি,শুভ্র বলল
মে আই কাম ইন?আমি দরজায় দাড়িয়ে বললাম।
ইয়েস।তোমার জন্যই ওয়েট করছিলাম,শুভ্র বলল।
আমি মামিকে সালাম দিয়ে গিয়ে শুভ্রের পাশে বসলাম।
মামি তুমি কি ওকে চিনো?শুভ্র প্রশ্ন করলো।
মামি হেসে বললো,চিনবো না কেন?ও হচ্ছে নিরা।তোর ওয়াইফ।
আচ্ছা মামি আমার লাইফে নিরাপাখি ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা কি তুমি জানো?
আজব আজব প্রশ্ন করছিস কেন তুই?কি হয়েছে খোলে বলতো মামি কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললো।
মামি তুমি আগে উত্তর দাও।ওর গুরুত্বটা কি তুমি জানো?
আমি ঠিক যতটুকু জানি যে নিরা হচ্ছে তোর লাইফলাইন।তোর বেঁচে থাকার জন্য যেমন অক্সিজেন প্রয়োজন তেমন নিরাকে ও তোর প্রয়োজন।
ও আচ্ছা। তো তোমার মেয়ে কি কথাগুলো জানে?
জানবে না কেন? যুথি এখন যথেষ্ট বড় হয়েছে।
আর আমার রাগ সম্পর্ক কি যুথি জানে?আমি আমার নিরাপাখি কে কেউ আঘাত করলে কি কি করতে পারি সেটা কি জানে?
মামি চোখ রাঙিয়ে যুথি আপু কে বললো,কি করছিস তুই?শুভ্র তো এমনি এমনি রেগে যাওয়ার ছেলে না!
থাক আগে এই রেকর্ড টা শোনো।বলে শুভ্র যুথি আপুর সাথে শুভ্রের কনভারসেশন টার রেকর্ড ছেড়ে দিলো।
হয়তো বা যুথি আপু চিন্তাই করতে পারেনি এমন কিছু হবে।পুরো রেকর্ডটা শুনে মামির মুখ রাগে লাল হয়ে গেছে। মামি উঠে গিয়ে ঠাস ঠাস করে যুথি আপুর গালে থাপ্পর লাগিয়ে দিলো।আমি তো পুরো অবাক।আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে মামি কে আটকালাম।বললাম,আপু হয়তো বুঝতে পারেনি।আমি বুঝিয়ে বলছি বলে যুথি আপু কে বলে আপুকে আপুর রুমে নিয়ে গেলাম।
____________ _____________
কি ব্যাপার শুভ্র এতো বিজি যে তুমি?
একটু বিজিই।সিংগাপুর যাওয়ার জন্য সবকিছু রেডি করছি তো সব তাই আরকি।
তুমি কি সত্যি যাচ্ছো?
হুম।তুমিই তো বললা যে যেতে।
তা কবে যাচ্ছো?
এই তো ১২ তারিখের দিকে।
ও আচ্ছা।
হুম।তুমি তোমার আর আমার ব্যাগ গুছিয়ে রেখো কিন্তু।
বাট আমার ব্যাগ কেনো? আমি কিছুটা অবাক হয়ে বললাম।
কেন আবার সিংগাপুর যাবো তাই
মানে?তুমি সিংগাপুর যাবা আমি কোথায় যাবো?
তুমি ও সিংগাপুর যাবা।
হুয়াট?আমি যাবো মানে?আর আমার পাসপোর্ট তুমি কোথায় পেয়েছো?
আলমারির ড্রয়ারে ছিল।
বাট তুমি তো আগে বলোনি একথা?তুমি তো বলেছো যে শুধু তুমি যাবে!
হুম।বাট আমি তো এটা বলিনি যে আমি একা যাবো!তুমি তো জানোই যে আমার বেবিগার্লকে ছাড়া আমি ঘুমাতে পারিনা।আর প্রথমে ৬ মাস থাকার কথা ছিল।বাট পরে ঠিক হয়েছে ১ বছর।এক বছর মানে ১২ মাস।মানে ৫২ সপ্তাহ মানে ৩৬৫ দিন মানে ৮৭৬০ ঘন্টা মানে ৫২৫৬০০ মিনিট মানে ৩১৫৩৬০০০ সেকেন্ড। যেখানে এক সেকেন্ডই না দেখলে সব কিছু অসহ্য লাগে সেখানে ৩১৫৩৬০০০ সেকেন্ড কীভাবে থাকবো বলো?
স্টপ। তুমি জানো যে আমি গনিতে কাঁচা। আর তোমাকে হিসেব করতে হবে না।এতটুকু শুনেই মাথা ঘুরছে।
তাই নাকি?চল ডক্টর এর কাছে যাই
আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম,কেনো?
কেন আবার,তুমি না বললে মাথা ঘুরছে! তাই গিয়ে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করাবো বলে শুভ্র দাঁত কেলিয়ে হাসতে লাগলো।
আমি রাগে,দুঃখে জায়গা ত্যাগ করলাম।এমন নির্লজ্জ, বেয়ারা, মানুষের সামনে এখন বসে থাকলে বাকি মান সম্মান টুকু ও যাবে।
_________ ____________
বড়িতে গেলাম অনেক দিন পর।………
চলবে……