বড় আপার বিয়ে ঠিক হতেই আনন্দের ধুম পরে গেল। ইন্জিনিয়ার পাত্র পেয়ে মা বাবা দুজনেই খুশিতে বাঁধনহারা। সব আত্মীয় স্বজনদের বিয়ের কয়েকদিন আগে থেকে আসতে হবে, এই বলে দাওয়াত করতে শুরু করে দিয়েছে।বড় মেয়ের বিয়ে বলে কথা!এমনিতেই নানার বাড়ি এবং দাদার বাড়ির সবাই বিয়ের সাত আট দিন আগেই এসে হাজির হবে।বাবা পরিবারের বড় ছেলে এবং শ্বশুর বাড়ির ছোট জামাই হওয়ায় পারিবারিক অনুষ্ঠান গুলোতে বেশ চাপে পরতে হয় আমাদের।আমার মামা খালা এবং চাচা ফুফুদের মাঝে একধরনের নিরব যুদ্ধ শুরু হয় যে কোনো অনুষ্ঠানেই।এক পক্ষের দাবী আমরা ওদের থেকে ওপর পক্ষকে বেশি মূল্যায়ন করি।ওপর পক্ষেরও একি কথা।এই নিয়ে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয় আমাদের।শুধু আমরা নই যেকোনো অনুষ্ঠানেই দুই পরিবারের গ্যাদারিং হবেই।তার একটা বড় কারণ, আমরা সব কাজিনরা। কাজিনদের সংখ্যাটা নেহাতই কম নয়। হিসেব করলে বিশের কোটা পার হয়ে যাবে।তবে অনেকে পড়াশোনার কারণে দেশের বাইরে থাকে।কয়েকজনের বিয়ে শাদী হওয়ায় আগে থেকে এসে গ্যাদারিং করতে পারে না।তবুও দেখা যাবে বারো থেকে চৌদ্দজন বিয়ের আগেই এসে উপস্থিত হবে।

বিয়ের শপিং করার আনন্দ, গায়ে হলুদের থিম নিয়ে প্ল্যান করা এসব কিছুর আগেই আমার মন থেকে বিয়ের আনন্দ কর্পূরের মতো উড়ে গেল,

‘মিশকাত ভাই আসবে শুনে।’

পুরোনো ক্ষত দগদগে হয়ে উঠলো।হয়ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে গেছে।তিনবছর আগের সেই বিষাক্ত দিনটা মানসপটে উঁকি দিচ্ছে।আমার মনে হলো এবার বড় আপার বিয়েটা আমার জীবনে আনন্দ নয় শাস্তি রূপে এসেছে।তা না হলে মিশকাত ভাইয়ের সাথে আমার আবার দেখা হবেই বা কেন?হওয়ার তো কথা নয়?

নিজের বোনের বিয়েতে মিশকাত ভাইয়ের কাছে অপমানিত হয়ে বিয়ের সবটুকু আনন্দ মাটি হয়ে যাবে আমার।পারিবারিক প্রতিটি অনুষ্ঠানে যতটা সম্ভব আমি পালিয়ে বেড়িয়েছি ওই মানুষটার কাছ থেকে।মিশকাত ভাই যে আমায় অপমান করে তার বড় একটা কারণও আছে।পুরোনো কাসুন্দি ঘাটতে ইচ্ছে হয় না।কিন্তু মিশকাত ভাইয়াকে কে মোটেও সহ্য হয়না আমার।চরম লেভেলের অসভ্য একটা ছেলে। ভদ্র, সভ্য, মেধাবী ছাত্র, সুদর্শন, সুপুরুষ হিসেবে গোটা আত্মীয় মহলের কাছে পরিচিত।অথচ কেউ জানেই না ছেলেটা সুপুরুষ নয় ,কুপুরুষ! আর এই বিষয়ে একমাত্র অবগত আমি নিজেই।আমার মতো অসুন্দরী,লেখাপড়ায় ডাব্বা মারা, ঘরকুনো একটা মেয়ের কথা কেউ কখনো বিশ্বাস করবে না।এসব ভাবতে গিয়ে মাথা ধরে গেল।কষ্ট গুলো মাথাচাড়া দিচ্ছে।হঠাৎ দমবন্ধ হয়ে আসতে চাইছে। রান্নাঘরে গিয়ে এককাপ চা বানাতে এলাম।চা বানাতে গিয়ে মনে পরলো,এই যে আমি কফি খেতে পারি না, এটা নিয়েও মিশকাত ভাই আমায় অপমান করেছিলো।মোর্শেদা আপার বিয়ের সময় চোখ মুখ কুঁচকে বলেছিলো,

তুই কফিও খেতে পারিস না, তনু?পারিস টা কি তাহলে?আজকালকার মেয়েছেলে হয়ে কাপে চা নিয়ে ছফছফ শব্দ তুলে খাস?ছি ছি,ম্যানার্স শেখ তনু। তা না হলে তোকে নিয়ে ফুপি কোথাও বের হতে পারবে না।

আমি সেদিন ওয়াশরুমে ঢুকে কেঁদেছি ঘন্টাখানেক।পরে অবশ্য বুঝতে পেরেছি ওই মানুষটা জন্মেছেই আমায় অপমান করতে।তাই নিজে এতো কষ্ট না পেয়ে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি।আমি তো জানি মিশকাত ভাই কেন আমার সাথে এমন আচরণ করে!তাই সবটা সহ্য করা শিখতে হয়েছে।এই কষ্ট গুলোর পথ তো আমি নিজ হাতে তৈরী করেছি।তবুও খারাপ লাগে আমার।মন বলে তো আমারও কিছু আছে?

কিরে তনু চায়ের পানি তো কমে যাচ্ছে,চা পাতা দিস না কেন?

মায়ের কথায় ভাবনা থেকে বের হতে হলো।দ্রুত হাতে চা পাতার কৌটো টা হাতে নিলাম।একটু পর চায়ের কাপ হাতে ঘরে এসে দেখলাম, বড় আপা ফোনে কথা বলছে।

বিয়ের ডেট ফাইনাল হবার পর থেকেই হবু জামাইর সাথে কথা বলছে।বড় আপার চোখে মুখে খুশির ঝলক।যা দূর থেকেও দৃষ্টিগোচর হয়।আপা জীবনের শ্রেষ্ট সময় মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমি আর ঘরের ভেতর ঢুকলাম না।চা নিয়ে ছাদে উঠে গেলাম।

আমাদের বাড়িটা ডুপ্লেক্স। ব্যবসার শুরুতে ইস্কাটনে চারকাঠা জায়গা কিনে রেখেছিল বাবা। বছরতিনেক আগে বাড়ি করেছেন।আমার সবথেকে পছন্দের জায়গা হলো ছাঁদ। ছাঁদে সআমি দোলনা রেখেছি।বিভিন্ন ফুলের গাছও আছে।আমার মতো ঘরোয়া টাইপ মেয়ের অবসর সময় কেটে যায় এই ছাঁদেই।

ছাঁদে ওঠার পর মনো হলো,মিশকাত ভাই এই প্রথম বোধহয় আমাদের এই নতুন বাড়িতে আসবেন।মোহাম্মদপুরের পুরোনো ফ্লাটে অনেকবার আসলেও এই নতুন বাড়িতে আসে নি একবারও।বড় মামা আসলেও মামি বা মিশকাত ভাই কখনো আসে নি।বড়মামির না আসার বড় একটা কারণ, মা!
মায়ের সাথে কিছু একটা বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে কয়েকবছর আগে।তবে এবার বড় আপার বিয়ে উপলক্ষে বড়মামি আসবেন। খুব বেশি সময় ছাঁদে থাকতে পারলাম না।ছোট ভাই তন্ময় এসে ডেকে নিয়ে গেল।

মায়ের ঘরে ঢুকতেই মা তা একগাদা কাজের হুকুমজারি করলো।তনুর অবশ্য ঘরোয়া কাজকর্মের প্রতি একটু আগ্রহ বেশি।বড় আপা সেদিক থেকে পিছিয়ে আছে।বড় আপা তো ডিম ভাজি ছাড়া কোনো রান্নাই জানে না।মায়ের প্রথম সন্তান হওয়ার দরুন সবসময় একটু বেশি আদর পেয়েছে বড় আপা।বড় আপার জন্মের চার বছর পর তনুর জন্ম।তন্ময়ের জন্ম তার আরও তিন বছর পর।ঠিক করা হলো সমস্ত আত্মীয় স্বজনদের জন্য উপরের সবকয়টা ঘর ঠিকঠাক করে রাখা হবে।নিচের তলায় যত কাজকর্ম সব হবে।সে অনুযায়ী বিছানার চাদর পর্দা সবকিছু নিয়ে তনু উপরে উঠে গেল।একমাত্র কাজের মধ্যে থাকলেই সে’ মিশকাত ভাই ‘নামক চিন্তা থেকে দূরে থাকবে।

দেখতে দেখতে বিয়ের কেনাকাটা শুরু হয়ে গেল।তনু একরাশ মন খারাপ নিয়ে সবটা করলান।একসময় তার মনে হলো আমি কেন এত বিচলিত হচ্ছি?এবার তো নিজের বাড়িতেই থাকবো, সবকিছু নিজের মতো হবে,তাহলে এত মন ছোট করার কি আছে?তিন বছরে অনেক কিছুই অন্যরকম হয়ে গেছে।মিশকাত ভাইকে আগে যেভাবে এড়িয়ে চলেছি তার থেকে দ্বিগুণ এড়িয়ে চলবো।অপমানিত হওয়ার কোনো জায়গা রাখবো না।সব থেকে বড় কথা হলো শুধু শুধু অপমান নেবোই বা কেন?প্রতিবাদ করবো না কেন? এখন অনেকটা বড় হয়েছি,অনেক কিছুই বুঝতে শিখে গেছি।এই তো গেল এপ্রিলে একুশে পা দিলাম।এসব ভবনা ছেড়ে বিয়েতে মন দিয়ে ভালো হবে।মিশকাত নামের অধ্যায় টা খুলতে চাইলাম না নতুন করে।

পড়ন্ত বিকেলের সূর্যটা রক্তিম আভা ছড়িয়েছে,যেন সবাইকে মনে করিয়ে দিচ্ছে নীড়ে ফেরার সময় হয়েছে।ঠিক সে সময়ে ছাঁদে উঠেছিলাম ফুল গাছ গুলোতে পানি দিতে। বড় আপার বিয়ের জন্য ব্যস্ত সময় কাটছে।ঠিকমতো যত্ন নিতে পারছি না গাছ গুলোর।ছোট বালতি থেকে পানি তুলে গাছগুলোতে ঢালছি।কোনো কোনো গাছে একটু হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।ফুল আমার খুব পছন্দের একটা জিনিস,অবশ্য শুধু আমার নয়, প্রায় অনেকেরই প্রিয় জিনিস। ঠিক সে সময় গাড়ির শব্দে নিচে ঝুঁকলাম কৌতুহলী হয়ে।

এমন সময় আবার কোন আত্মীয় এলো?

আমাকে একসাথে অবাক এবং অসহায় করে দিয়ে বড় মামা,মামির সাথের মিশকাত ভাই সিএনজি থেকে নামলো।এক ঝলকে চিনে ফেললাম সেই মানুষটাকে।চেনা নিশ্বাস কি কখনো অচেনা হয়!আমার হাসফাস লাগতে শুরু করলো।দৌড়ে নেমে এলাম ছাঁদ থেকে।ওই মানুষটার মুখোমুখি হওয়ার কোনো ইচ্ছেই নেই আমার।মা ডাকলেও যাবো না।পরে মামার সাথে ঠিক দেখা করে নিবো।বসার ঘরের অনেক কিছুই কানে আসছে।যখন শুনতে পেলাম মা তন্ময়কে বলছে আমায় ডাকতে তখন ঝটপট বিছানায় উঠে পরলাম।ঘুমের ভান করে কাথা গায়ে দিয়ে শুয়ে থাকলাম।

তন্ময় ‘তনুপি’ বলে ডাকতে ডাকতে ঘরে ঢুকলো।তনুকে শুয়ে থাকতে দেখে এগিয়ে এলো।তনুকে ভালো ভাবে পরখ করে বুঝলো, তনুপি ঘুমোচ্ছে।তন্ময় ফিরে যেতে যেতে ভাবলো সে তো একটু আগেই তনুপিকে ছাঁদে যেতে দেখলো,এর মধ্যেই তনুপি ঘরে এসে ঘুমিয়ে পরলো কখন?তন্ময় সুবোধ বালকের ন্যায় ভাবতে ভাবতে বেরিয়ে গেল ঘর থেকে।

তন্ময় বসার ঘরে গিয়ে তনুর ঘুমিয়ে থাকার বিষয়টি স্পষ্ট করলো সবার কাছে।আমি বিছানায় বসে সবটা শুনলাম।

মিশকাত ঝুঁকে আছে নাস্তার প্লেটের ওপর।তার অতি প্রিয় ফুপির হাতের বানানো জর্দা সেমাই খুব যত্ন করে আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছে।যেন জাগতিক সবকিছু বাইরে অবস্থান করছে সে।উপস্থিত কারো কোনো কথা তার কানে ঢুকছে না।মিশকাত হাত থাকা দামী ব্র্যান্ডের ঘড়িটার দিকে তাকালো।প্রায় ছয়টা বাজতে চলেছে।এতদামী ঘড়ি সে কখনোই পরে না আজ পরেছে বিশেষ কারণে। ঘড়িটা তাকে তার খুব কাছের এক বন্ধু জন্মদিনে গিফট করেছে।এখন মনে হচ্ছে ঘড়িটা পরার প্রয়োজন ছিলো না,এমনকি আয়রা আপার বিয়েতে আসারও।

ব্লু জিন্স, টিশার্ট আর ডেনিম জ্যাকেট পরা মিশকাত বেশ সুদর্শন দেখাচ্ছে।

তন্ময় তো বলেই ফেলেছিল, ভাইয়া তুমি তো অনেক পাল্টে গেছ!

মিশকাত মুচকি হেসেছে শুধু।এই পরিবর্তন গুলো তো সে নিজেই চেয়েছে।মিশকাতের বাবা সরকারি চাকুরীজীবি। খুব বেশি বিলাসবহুল জীবন ধারণ না করতে পারলেও খুব একটা খারাপ অবস্থা কখনো হয়নি।সমাজে সবসময় চলনসই একটা অবস্থানে থাকতে পারে।সে তুলনায় তনুদের অবস্থা ওদের থেকে ভালো।শুধু ভালো বললে বিশেষনটা ঠিক মতো হবে না।একটু বেশিই ভালো।তনুদের বাড়িতে ঢোকার পর থেকেই মিশকাতের মাথায় কয়েকধরনের ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছে।বসার ঘরে দামী সোফা,ঝাড়বাতি, শোপিচের চাকচিক্য দেখেই মিশকাত হিসেব মেলাতে ব্যস্ত হয়ে পরেছে। এর আগে হিসেব নিকেষ গুলো অন্যরকম হয়নি তার।তিনবছরে অনেক কিছুই পাল্টে গেছে তাহলে!তবে হিসেব টা কি তা বোধহয় জানার উপায় নেই।

আয়রা মিশকাতকে উপরে নিয়ে গেল ঘর দেখিয়ে দেয়ার জন্য।মিশকাত যেতে যেতে বললো,

বিয়ের কনে জন্যই কি তোমার গ্লামার বেড়ে গেছে, আপা?

আয়রা মিশকাতের থেকে একবছরের বড়।মিশকাত তাকে এত সম্মান দিয়ে আপা ডাকে কেন কে জানে?

আয়রা লজ্জায় টুকটুকে হয়ে গেল।ইদানীং সে কারণে অকারণে লজ্জা পাচ্ছে।এই লজ্জাটুকুর কারণ, রাফাত সাহেব।

আয়রার লজ্জা রাঙা মুখটা দেখে মিশকাতের খুব ভালো লাগলো।সে আবার বললো,

তোমার হবু বর সাহেব শুনলাম ইন্জিনিয়ার, তা নাম কি সেই ভাগ্যবান পুরুষের?

আয়রা দ্বিগুণ লজ্জা নিয়ে কাঁপা স্বরে বলল,

“রাফাত ইসলাম।”

আশ্চর্য! , আয়রার নামটা বলতেও অন্য রকম এক ভালো লাগা কাজ করলো।রাফাতে সাথে বিয়ে ঠিক হওয়ার পর পৃথিবীর সবকিছুই তার বড্ড বেশি ভালো লাগছে।নতুন অনুভূতির সাথে পরিচিত হয়েছে।আয়রা খুব নরম,সহজ সরল টাইপের মেয়ে।দুনিয়ায় এত প্যাচগোজ,বাস্তবতার নির্মম জটিলতার কোনোটা সম্পর্কেই বিশেষ কোনো জ্ঞান নেই।শায়লা বেগম বড় মেয়েকে সবকিছু থেকে দূরে সরিয়ে রেখে খুব যত্নে, আহ্লাদে বড় করেছেন।

রাতে আরও বেশকিছু মেহমান আসলো।তনু সন্ধ্যার পর ফাঁক বুঝে মামা, মামির সাথে দেখা করে নিয়েছে।গ্রাম থেকে তারই সমবয়সী ফুফাতো বোন এসেছে।তনু রাতে খেয়ে নিয়েছে ওদের সাথেই।সে সবরকম চেষ্টা করছে মিশকাতের নজরে না পরার।

আজ তনু বড় আপার সাথে ঘুমোয়নি।আপা তার অর্ধেক রাত হবু জামাইর সাথেই কাটিয়ে দেয়।কুটকুট করে কথা বলে যা সে পাশে শুয়েও স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারেনা। তাই সে আজ বড় আপাকে মন খুলে কথা বলার সুযোগ দেয়ার জন্য গ্রাম থেকে আসা ফুপাতো বোনের সাথে ঘুমিয়েছে।তবে কোনো কারণে ঘুমটা ভেঙে গেছে তার।ঘরের মধ্যে ভারী নিশ্বাসের অনুভূতি হচ্ছে। যা খুব একটা অচেনা লাগছে না ।ঘুমের ঘোর থেকে বের না হতেই মুখে খুব শীতল কিছুর স্পর্শে ভয়ে বিরাট চিৎকার করে উঠে বসলো।তনুর চিৎকারে বোধহয় গোটা বাড়িটাই কেঁপে উঠেছে,তা না হলে একে একে সবাই এসে দরজার বাইরে জমা হতে সময় নিলো না, কেন?

#তনয়া
#পর্ব-১

চলবে..

p.c-Aysha Siddika

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here