গল্প :- #অবহেলা_না_ভালোবাসা ♥
পর্ব :- ০৪
Writer :- Kabbo Ahammad
.
.
.
:- আমার কথায় রিয়া আমার দিকে কেমন যেনো একটা করুন দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো।
হয়তো মনে হয় আমার কাছে সে এমন কিছু একটা আশা করেনি।
তারপর আমি লক্ষ করলাম যে ওর চোখের কোণ দিয়ে নীরবে পানি ঝরছে।
তার পর হঠাৎ কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে এসে আমায় জড়িয়ে ধরে। তারপর কাঁদতে কাঁদতে আমায় জড়িয়ে ধরে থাকা অবস্থায় বলতে থাকে:-

—I’m Sorry Kabbo…..!! I’m So Sorry..
প্লিজ আমাকে তুমি ক্ষমা করে দেও প্লিজ.! তুমি বিশ্বাস করো তুমি চলে যাওয়ার পর থেকেই আমি আর একটুও ভালো নেই।
:-কেন না তুমি যখন আমার কাছে ছিলে আর যখন সারাক্ষণ ধরে আমার কেয়ার করতে।
সারাক্ষণ যখন আমায় ফোন করে আমার ভালো-মন্দ “আমার খাওয়া না-খাওয়ার কথা জিজ্ঞাসা করতে তখন না আমার তোমার আমার প্রতি এতো কেয়ার টাকে অনেক বিরক্তিকর লাগতো।
তখন আমার নিজেকে তোমার এতো কেয়ার করার মধ্যে কেমন যেনো নিজেকে বন্ধি-বন্ধি লাগতো।
আমার তখন নিজের মনে হতো যে হয়তো তুমি আমাকে সাশনে আবদ্ধ করতে চাচ্ছ।
তাই আমার তখন তোমার দেখানো এতো ভালোবাসা দেখে অনেক রাগ হতো।
তখন আমার মনে হতো যে তুমি আমার প্রতি হয়তো একটু বেশিই জোড় খাটাতে চাচ্ছো।
তাই আমি নিজে থেকেই আর তেমন তোমার সাথে তখন খুব বেশী একটা কথা বলতাম না আর।
তুমি আমায় ফোন দিলেই আমি তখন ইচ্ছে করেই তোমার ফোন তুলতাম না।
আর যখন তুমি আমার ফোনের পর ফোন দিয়েই যেতে
তখন অনেকটা তোমার প্রতি বিরক্ত হয়েই ফোন ধরে তোমার সাথে অনেক বাজে ব্যাবহার করতাম।
তখন আমি তোমার আমার প্রতি এইবভালোবাসাটা বুঝতে পারিনি।
কিন্তু বিশ্বাস করো কাব্য যখন তুমি আমায় ছেড়ে অস্ট্রেলিয়াতে স্টাডি করার জন্য সেখানে চলে যাও আর তার পর থেকেই আমি তোমাকে অনেক মিস’করতে শুরু করি।
মিস’করতে শুরু করি তোমাের আমার প্রতি এতো কেয়ার!! তোমার ফোনে আমার খাওয়া-না খাওয়ার”আমার ভালো-মন্দ গুলোকে জিজ্ঞাসা করার।
আর জানো কাব্য আমি না তুমি চলে যাওয়ার পরেই বুঝেছিলাম যে তোমাকে আমার এই জীবনে কতো খানি দরকার।
তুমি চলে যাওয়ার পরেই বুঝেছিলাম তোমার আমার প্রতি সেই সীমাহীন ভালোবাসাটা।
কিন্তু আমার বুঝতে তখন একটু বেশিই দেড়ি হয়ে গিয়েছিলো।
হয়তো তুমি জানো তুমি চলে যাওযার পর আমি সারাক্ষণ হাতে ফোন নিয়ে বসে থাকতাম শুধুমাত্র এই আশায় যে এই বুঝি তুমি আমায় ফোন করবে।
আর ফোন দিয়ে আমায় জিজ্ঞাসা করবে যে আমি রাতে খেয়েছি কিনা।
কিন্তু নাহ্ তুমি আর আমাকে ফোন করো নি।
তুমি তখন আমার প্রতি তোমার অভিমানটাকেই বসিয়ে রেখেছিলে।
আর জানো তুমি চলে যাওয়ার পর থেকেই প্রতি রাতে আমি তোমার কথা ভেবে না ঘুমিয়ে শুধু কাঁদতাম।
তুমি আমার কাছ থেকে চলে যাওয়ার পর থেকেই আর আমার রাতে ঘুম হয়না। শুধু তোমার কথা ভেবে।
:- প্লিজ কাব্য প্লিজ আমাকে তুমি শেষ বারের মতো করে ক্ষমা করে দেও!!
আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি আমি আর কখনই তোমায় আমার প্রতি একটি অভিযোগও তুলতে দেবো না।
কিন্তু প্লিজ “আমাকে শেষ বারের মতো করে ক্ষমা করে দেও প্লিজ!! প্লিজ কাব্য প্লিজ……

:-এই বলেই রিয়া আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো!!
এদিকে রিয়ার বলা কথা গুলো শুনতে শুনতে কখন যে আমার চক্ষে পানি চলে এসেছে তা আমি নিজেই বুঝতে পারিনি।
তাই তাড়াতাড়ি করে রিয়া দেখার আগেই হাত দিয়ে নিজের চক্ষের পানি গুলো মুছে ফেললাম॥
পরে নিজেকে অনেক শক্ত করে রিয়াকে আমার বুক থেকে ছাড়ালাম॥ তারপর ওকে আমি বললাম:-

–আরে আপনি কিসের কথা বলছেন!!!
আর কিসের জন্য আমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছেন বলেন তো আমি তো কিছুই বুঝতেছিনা॥ আর তাছাড়া আপনি আমার কাছে যে সবকিছুর জন্য ক্ষমা চাচ্ছেন তার সবই আমি অনেক আগেই কবে ভুলে গেছি॥ আমার আর ওসবের কিছুই মনে নেই॥
আর আপনি তো আমায় সেদিন খারাপ কিছু বলেন নি॥ আপনি সে দিন ঠিকি বলেছিলেন।
আপনি সেদিন আমাকে আমার স্থানটাও দেখিয়ে দিয়েছিলেন॥
আর আমাকে বুঝিয়ে দিয়ে ছিলেন যে আমার মতো ছেলেরা কখনোই প্রেম করতে পারে না॥
আমাদের মতো আন্-স্মার্ট ছেলেরা কখনোই কারো বয়ফ্রেন্ড হতে পারেনা।
আর আপনি সেদিন আমার সাথে তাই ঠিক কাজটাই করেছেন॥
তাই তো আমি আজকে নিজেকে এতোদূরে নিয়ে আসতে পেরেছি॥
তাই তো সেদিনের পড় থেকেই নিজের মন থেকে ভালোবাসা নামের বস্তুু টাকেই মন থেকে বের করে দিয়েছি॥
আর যানেন এখন না আমার আর কারো জন্য মন আর কাঁদে না।
তবে হ্যাঁ একসময় এই আমার পাগল মনটাই কারো জন্য অনেক কাঁদতো!!
কিন্তুু এখন আমি আমার মনটাকে কাঁদতে কাঁদতে এতো বুঝিয়েছি যে সেও আমার কথা মতো আর কারো জন্য কান্না করা বন্ধ করে দিয়েছে॥
এখন আর আমার বুকের ভিতর কারো জন্য কোনো
অনুভূতি সৃষ্টি হয়না॥
তাই আমি আর আপনাকে আমার পাষান মনের কাছে ফিরিয়ে নিতে পারবো না॥
I’m So Sorry….. আমাকে ক্ষমা করবেন॥
আমি আর আপনাকে আমার জীবনের সাথে জড়াতে পারবো না॥
আর তাছাড়া আমি এমনিতেও আপনার সাথে যায় না!
তার চেয়ে বরং আপনি না হয় আপনার মতো কাউকে খুজে নিন ‘যে আপনার সাথে মানাবে॥
কিন্তুু আমি আর পারবো না ‘আমাকে ক্ষমা করবেন॥এই বলেই আমি আমার রুম থেকে বাইরে বের হয়ে ছাদে চলে এলাম॥

কেন না আর কিছুক্ষণ যদি আমি ওর সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম তাহলে আমি আর নিজেকে ওর সামনে ধরে রাখতে পারতাম না॥
তবে আসার সময় রিয়ার দিকে হালকা লক্ষ করে দেখেছিলাম যে সে ওর মাথা নিচু করে নীরবে চোখের পানি ঝরাচ্ছে।
.
.
.
ছাদে এসে কিছুক্ষণ পর নিচে তাকিয়ে দেখলাম যে রিয়া ও আঙ্কেল-আন্টি তারা সবাই বাসায় চলে যাচ্ছে। তাই আমি আর তাদের দিকে না তাকিয়ে আবারো আমার রুমে চলে এলাম.!! আর এসেই ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে আম্মু এসে আমায় ডাক দিয়ে আমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে যান॥
তাই আমিও উঠে আগে ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে এলাম
সকালের নাস্তা করার জন্য। নিচে এসে দেখিযে আব্বু-আম্মু ওরা সবাই আমার জন্য নাস্তার টেবিলে বসে আছে। তাই তাড়াতাড়ি করে নিচে এসে আগে নাস্তার টেবিলে বসে পড়লাম। আমি নাস্তা করতে করতে হঠাৎ আম্মু বলে উঠেন যে:-

–“বাবা” কাব্য। তুই আজ একটু নাস্তা করার পড় এখন স্টেশনে যাসতো আব্বু আমার।
কেন না তোর বড় খালার মেয়ে নীলা আজকে আমাদের বাসায় আসছে। তাই তুই একটু বাসায় একা একা বসে না থেকে ওকে স্টেশন থেকে নিয়ে আসিস বাবা আমার ঠিক আছে (আম্মু)

— হুমম্ ‘আচ্ছা ঠিক আছে আমি গিয়ে নীলাকে স্টেশন থেকে বাসায় নিয়ে আসবো।

–ঠিক আছে বাবা.!!

তারপর আমি আর তাদের কিছু না বলে নাস্তা করে সোজা স্টেশনের দিকে চলে গেলাম।
আর আমি স্টেশনে পৌঁছেই দেখি যে আমার বড় খালার মেয়ে নীলা আগে থেকেই এসে বসে আছে।
তাই আমি আর সেখানে দাভড়িয়ে না থেকে সোজা ওর
কাছে চলে গেলাম। আমাকে ও দেখার সাথে সাথেই দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।

(ও আপনাদের তো বলাই হলো না যে এই মেয়ের আবার আমার গায়ে পড়ে কথা বলার অভ্যাস আছে)

তারপর আমি ওকে অনেক কষ্টে নিজের কাছ থেকে ছাড়িয়ে বললাম:-

–কি’রে নীলা তুই তো দেখি অনেক বড় হয়ে গেছিস ..।
তুকে তো এখন আর চেনাই যায়না। তুই কখন এসেছিস। আর আমাকেই বা কিভাবে চিনলি।

–আমি তোমায় আন্টির ফোনে ছবিতে দেখেছিলাম
আর আমি সেই কখন থেকে এখানে এসে দাড়িয়ে আছি সেটা কি তুমি জানো??

–স্যরি’ রে তুকে দাড় করিয়ে রাখার জন্য। আচ্ছা চল
এখন বাসায় যাই “তারপর পরে না হয় তোর সাথে বাসায় গিয়ে কথা বলবো।

এই বলেই আমি নীলাকে নিয়ে আমার বাইকের পিছনে বসতে বললাম। কেন না সে নাকি আমার সাথে যাওয়ার জন্য আগে থেকেই ওর সব কাপড় “লাকেজ আগে থেকেই আমাদের বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছিলো।
তারপর নীলা আমার বাইকের পিছনে বসলেই আমি আমার বাইক টা স্টার্ট করে বাসার দিকে আসতে থাকি।

কিন্তুু হঠাৎ নীলা বললো কাব্য বাইক থামাও..!!
বাইক থামাও বলে জোড়ে জোড়ে চিত্কার শুরু করে॥
তাই আমি সাথে সাথেই সেখানে রাস্তার একপাশে একটা ফুচকার দোকানের সামনে বাইকটা থামাই॥
আমার বাইক থামানোর সাথে সাথেই নীলা আমার হাত ধরে টানতে টানতে বলতে লাগলো যে সে নাকি এখন ফুচকা খাবে॥ আমি ওকে না করার সত্ত্বেও আমার কথা না শুনে জোড় করে ফুচকা ওয়ালা কে দুই প্লেট ফুচকা বানাতে বললো॥ এদিকে আমার অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ওর সাথে ফুচকা খেতে এবং ওর সাথে আমাকে বসতে হলো॥
নীলার সাথে ফুচকা খেতে খেতে হঠাৎ করেই নীলা আমাকে একবার ওর হাত দিয়ে ফুচকা খাওয়াবে এই বলেই সে আমার দিকে একটা ফুচকা হাতে নিয়ে আমার মুখের কাছে নিয়ে আসে॥
আমি খাবোনা বলে অন্য দিকে মুখ ফিরে তাকাতেই আমার চক্ষুচড়কগাছ॥

কেন না আমি সেদিকে তাকাতেই দেখলাম যে রিয়া সেখানে আমার আর নীলার দিকে একটা রাগি মুড দিয়ে নীরবে চখের কোন দিয়ে হালকা পানি আটকে রেখেছে।
রিয়াকে দেখে মনে হয় সে আমার সাথে এখানে নীলাকে আশা করেনি।
তাই আমিও ওকে রাগানোর জন্য ওকে দেখিয়ে দেখিয়ে নীলার হাতে ফুচকা খেতে থাকলাম।
পরে রিয়াকে আরও রাগানোর জন্য আমি নিজের হাতে একটা ফুচকা তুলে নীলার মুখের কাছে নিয়ে এলাম॥ “আর নীলাও আমার হাতে ওকে খাওয়ানোর জন্য ফুচকা দেখে সাথে সাথেই তা নিজের মুখে পুরে নেয়॥

এদিকে আমি আড় চোখে রিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি সে এবার আমার দিকে অনেক আহতো চোখে তাকিয়ে সমানে চোখের পানি ঝরাচ্ছে॥
তাই আমি তখন ওকে দেখে বলি:-

–আরে রিয়া আপনি এখানে!!
ফুচকা খেতে এসেছেন নাকী? তা আপনি একা কেন? আপনার সাথে কেউ নেই॥
আসুন আসুন আমাদের সাথে বসে একসাথে ফুচকা খাবেন॥(আমি)

–আরে তুমি রিয়া আপু না!!
হ্যাঁ ‘হ্যাঁ তুমি তো রিয়া আপুই। আরে আপু কেমন আছেন আপনি? আর একা এখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? আসুন আসুন আমাদের সাথে বসে একসাথে ফুচকা খাই ‘আসুন প্লিজ। (নীলা বললো)

–ধন্যবাদ তোমাদের।
কিন্তুু আমার না এখন একটু জরুরী কাজ বাকী আছে তাই আজ আর তোমার সাথে বসে ফুচকা খেতে পারলাম না। তবে হ্যাঁ অন্য আরেক দিন তোমার সাথে বসে ফুচকা খাবো তোমাকে কথা দিলাম। আচ্ছা তার আগে তুমি আমায় এটা বলো তো যে তুমি কাব্যর কে হও?
তোমাকে তো আমি এর আগে ওর সাথে কখনো দেখিনি? (রিয়া বললো নীলাকে)

–আরে আপু আপনি আমায় চিনবেন না। আমি হলামম….!!!!

নীলাকে ওর কথা শেষ করার আগেই ওর মুখে একটা ফুচকা ডুকিয়ে দিলাম॥ তারপর আমি রিয়াকে বললাম:-

–আরে আপনি ওকে চিনবেন না॥বআমি আপনাকে সেদিন একজনের কথা বলেছিলাম না। এই হলো সে।যার কথা আমি গতকালকে আপনাকে বলেছিলাম।

–এর মানে কী কাব্য ‘আমি তোমার কথার কিছুই বুঝলাম না..!!!
এই মেয়েটা তোমার কে হয়? ভালো করে বলো আমায়
(কথাটা একটু রেগেই বললো রিয়া)

আর রিয়ার এমন রাগি মুড দেখে আমি আর সেখানে না থেকে সাথে সাথেই বলে উঠলাম:-

–আচ্ছা আমরা এখন উঠি ‘আমাদের আবার বাসায় যেতে হবে। আপনার সাথে না হয় অন্য কোন দিন কথা হবে আশি কেমন। এই নীলা চলো আমরা বাসায় যাই। এই বলে আমি তখন নীলার হাত ধরে রিয়ার সামনে ওকে নিয়ে গিয়ে আমার বাইকে উঠতে বললাম॥
আর নীলাও সাথে সাথে আমার বাইকে উঠে পড়লো।
নীলা আমার বাইকে উঠার পর আমি এবার ওকে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে বললাম।
কেন না আমি তখন আড় চোখে রিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি সে আমাদের দিকে অনেক রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে॥

তারপর নীলা আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরার পড় আমি বাইক স্টার্ট করে রিয়ার সামনে দিয়ে চলে আসলাম।
আর আসার সময় বাইকের লুকিংগ্লাসে তাকিয়ে দেখলাম যে রিয়া তখনও এক নজড়ে আমাদের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নীরবে চোখের পানি ঝরাচ্ছে॥আমার তখন ওর চোখের পানি দেখে হঠাৎ করে বুকের বাম পাশটাই কেনো জানি ব্যাথা অনুভব করতে শুরু করলাম॥
ওর কান্না দেখে কেনো জানি আমারও চোখের কোণে পানি চলে এসেছিলো॥
কিন্তুু সেটা রিয়াকে বুঝতে দেইনি..॥
.
.
.
চলবে…………………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here