#খুনসুটি_প্রেম
writer : সুরমা
part: 1
আজ মিতু আর রাকিবের তৃতীয় বিবাহ বার্ষিকী।মিতু খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ আদায় করে নিলো।আল্লাহর কাছে আরো একবার সুখরিয়া আদায় করলো।অনেক যুদ্ধের পর আজ তারা এই দিনটা পেলো।
নামাজ শেষ করে নিচে গিয়ে সকালের নাস্তা তৈরি করে নিলো।কাজ শেষ করে মিতু নিজের রুমে এসে দেখে রাকিব এখনো ভল্লুকের মতো ঘুমিয়ে আছে।ঘড়িতে দেখে সকাল ৭টা বাজে।৯টায় রাকিবের অফিস।মিতু প্রত্যেকদিন রাকিবকে ঘুম থেকে উঠাতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে যায়।
সকাল সকাল বেচারীর মাথাটাই নষ্ট করে দেয় রাকিব।রাকিবকে এভাবে ঘুমাতে দেখে মিতুর মাথাই নষ্ট হয়ে গেলো।গ্লাসে করে পানি এনে রাকিবের মুখে ডেলে দেয় মিতু।
ঠান্ডা পানি মুখে পড়ার সাথে সাথেই হুরমুর করে উঠে পড়ে রাকিব।মিটমিট করে তাকিয়ে দেখে মিতু গ্লাস হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।রাকিব মিতুর আচঁলটা টেনে মুখটা মুছে আবার শুয়ে পড়ে।
এবার বেচারী মিতুর তো রাগে গাঁ জ্বলে যাচ্ছে।প্রত্যেক দিন এক কাহিনী করে রাকিব।
-এই,তুমি এখন উঠবা নাকি আমি এবার গিয়ে গরম পানি নিয়ে আসবো?
-আর একটু ঘুমাতে দাও না গো।
-এখন আবার ঘুমালে আজ আর অফিস যেতে হবে না।অনেক ঘুমিয়েছো।এবার উঠো বলছি।
-আর দু মিনিট
-এক মিনিটও না।উঠো বলছি,উঠো।(একমতো টেনেই তুলে)
রাকিব মিটমিট করে তাকিয়ে একটা মুছকি হাসি দিয়ে মিতুকে নিজের কাছে টেনে নিলো।রাকিব মিতুর কোলে নিজের মাথা রাখলো।মিতু রাকিবের চুলে আস্তে করে বিলি কেটে দিলো।
-এই টুনির মা,
-হু
-আজ আমাদের বিবাহ বার্ষিকী না
-হু
-আজ অফিসে না গেলে হয় না?
-না,
-কেন?
-আগে কাজ তার পর অন্য কিছু।একজনের জন্যতো আর এতো জনের ক্ষতি করা যায় না।
-তুমি কি চাইছো,আমি কয়েকশ বিয়ে করি?
-কি??তুমি আমাকে রেখে বিয়ের চিন্তা করছো?তোমার এতো সাহস,আমি থাকতেও এই চিন্তা মাথায় আনলে?আমার এখন ইচ্ছে করছে তোমাকে গরম পানিতে চুবাই,,
-আরে এতো রাগ করছো কেন টুনির মা।আমি কি এসব চিন্তা করতে পারি?তুমি বললে একজনের জন্য কাজ বাদ দেওয়া যাবে না।তাই আমি মনে করলাম আজ অফিসে না যাওয়ার জন্য কয়েকশো বিয়ে করতে হবে।
রাকিবের কথা শুনে মিতু রাগে গজগজ করতে লাগলো।রাকিবের চুলে এলোপাতাড়ি টানতে শুরু করলো।
-আরে টুনির মা,করছো টা কি?আমার চুল গুলো কি ছিড়ে ফেলবে নাকি?
-শয়তান,খবিশ,তুমি আমাকে একটুকুও ভালোবাসো না।ভ্যা,ভ্যা,ভ্যা
-কে বললো আমি তোমাকে ভালোবাসি না?আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি।আমার জীবনের একমাত্র ভালোবাসা তুমি।আমিতো মজা করছিলাম।
-সত্যি তো,
-হু, এই টুনির মা।আজ বাসায় থাকি না?একটা দিনেই তো,আজকে আমাকে বাসায় থাকতে দাও নাগো
-একদম না।উঠে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে অফিসে যাও।
-এই টুনির মা,
-অহ্,কি?বার বার ডাকো কেন?
-যেতেই হবে???
-হু
-তাহলে,একটা কিস দাও প্লীজ,
-কিহ?
-হু
-তুমি উঠবে কিনা বলো
-একটা দিয়ে দাও তাহলেই উঠে যাবো
-দিবো না।এখন উঠো বলছি।
-না দিলে আমিও আজ উঠছি না,
রাকিব বায়না ধরে বসে থাকে।মিতু খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে কিস না করলে রাকিব উঠবে না।মিতু রাকিবের চুলে মুঠো করে কপালে একটা ভালোবাসার পরশ একে দিলো।
-এটা কি হলো?
-কি হবে।কিস করলাম।এবার উঠো
-এটাকে কিস করা বলে?
-তাহলে কি বলে?
-না,এসব কিসে হবে না
-হবে না মানে?
-হবে না মানে হবে না।এখানে কিস করো।(ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে)
-ওয়াক,থু,মুখে গন্ধ,যাও গিয়ে ব্রাশ করো আগে।
-উহু,সব সময়তো কিস করার সময় আমার মুখের থুথু সব খেয়ে ফেলো।আর এখন আসছে মুখে গন্ধ,
-তুমি এতো বাজে কথা কেমনে বলো?এখন গিয়ে ফ্রেশ হবে নাকি তোমার জন্য অন্য ব্যবস্থা করবো,
-তাহলে আমার কিসটার কি হবে?
-তুমি যাবে কিনা?
-আগে আমার কিসটা দাও,
-ও আল্লাহ,একটা মই ফেলে আমাকে উঠাইয়া নেও।এই ছেলে নির্ঘাত আমাকে পাগল বানিয়ে ছাড়বে।
-তোমাকে আমি পাগল বানাবো কি।তুমি তো আমাকে পাগল বানিয়ে দিয়েছো।আর নিজে পাগলি হয়ে গেছো,
-তোমার সাথে কথা বলাই বৃথা।মন চাইলে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো।না চাইলে যা খুশি করো।
মিতু রেগে নিচে চলে গেলো।রাকিব উঠে ওয়াশরুমে ডুকে গেলো।কিছুক্ষণ পর বের হয়ে মিতুকে জোরে জোরে ডাকতে লাগলো,
-টুনির মা,একটু রুমে আসো নাগো।দরকার আছে।
রাকিবের চেল্লানি শুনে মিতু উপরে আসে।এসে দেখে রাকিব হাতে টাই নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।বিছানায় কাপড় এলোমেলো করে ফেলে রেখেছে,
-কতোবার বলেছি টাই বাঁধাটা শিখে নাও।কিন্তু তুমি আমার কথা কানেই নেও না।আর প্রত্যেকদিন সব কাপড় এলোমেলো না করলে কি তোমার হয় না?
-আমি কি করবো।কিছু খুঁজে না পেলেতো এলোমেলো করতেই হবে।আর আমার টাই সব সময় তোমাকেই বেঁধে দিতে হবে।সারা জীবন তোমার বাঁধা টাই নিয়েই অফিস যাবো।
-হ্যা,আমাকে কেমনে সব সময় ডিসটাব করতে পারো তাই তো খুঁজো তুমি।(টাই বেধে দিয়ে)এই নাও।এবার যাও নয়তো দেরি হয়ে যাবে।
মিতু রাকিবকে টাইটা বেধে দিয়ে সব গুলো কাপড় আলমিরাতে ঘুছিয়ে রাখলো।তারপর এদিকে তাকাতেই দেখলো রাকিব আগের মতো সেইম জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে।মিতু রাকিবের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো,
-কি ব্যাপার।এখনো এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন?
-আমার পাওনাটা দিয়ে দাও আমি চলে যাই।
-পাওনা মানে?কিসের পাওনার কথা বলছো??
-এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে?আমি তোমার কাছে একটা কিস পাওনা আছে।সেটাই দাও।আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে,তাড়াতাড়ি দাও।
মিতু কিছুক্ষন চুপ করে রাকিবের দিকে চেয়ে রইলো।এই ছেলেকে কিছু বলে লাভ নেই।যা বলবে তাই।অযথাই এখন কথা না বাড়িয়ে দিয়ে দিলেই চলে যাবে।মিতু মুহুর্তেই রাকিবের কাছে গিয়ে রাকিবের পায়ে পা দিয়ে উচু হয়ে এক হাত দিয়ে রাকিবের কাধে আর এক হাত দিয়ে রাকিবের চুল ধরে মুখটা নিজের দিকে এনে রাকিবের ঠোঁট দুটি নিজের দখলে নিয়ে আসলো।
কয়েক সেকেন্ডেই মিতু রাকিবকে ছেড়ে একটু সরে আসে।সাথে সাথে রাকিব মিতুকে টান দিয়ে নিজের বুকের সাথে লাগিয়ে গভীরভাবে মিতুর ঠোঁট দুটি চুষতে থাকে।
মিতুর দম প্রায় বন্ধ হয়ে আসছে।কিন্তু রাকিব তো ছাড়ার নামেই নিচ্ছে না।সেতো মিতুর ঠোঁটের স্বাদ নিতেই ব্যস্ত।মিতু রাকিবকে ধাক্কা দিতে লাগলে রাকিব মিতুর হাত দুটি ধরে পেছনে নিয়ে ধরে।মিতুর মাথার চুল থেকে বেন্ডটা খুলে দিয়ে চুল গুলো ধরে কিস করতে থাকে।
৩মিনিট পর মিতু এক রকম জোর করেই রাকিবের কাছ থেকে দূরে এসে হাপাতে থাকে,,
-তুমি কি আমাকে মেরে ফেলবে নাকি?
মিতুর কথায় রাকিব কিছু না বলে আবার আলতো করে মিতুর ঠোঁটে কিস করে।
-মারতে যাবো কেন?তোমাকে আজীবন এই বুকে আগলে রাখবো।
-এভাবে কেউ কিস করে?আর একটু হলেতো আমার দমটা আটকে যেতো।আমার ঠোঁট দুটি একদম ফোলে গেছে,,,
-ও এতোক্ষণ তাহলে আমি তোমার ঠোঁটে কিস করছিলাম?আমার মনে হচ্ছিল চকলেট খাচ্ছিলাম।তাইতো ছাড়ছিলাম না।চকলেটটা কিন্তু খুব টেস্টি ছিল।তুমি চাইলে,আমি প্রতিদিন এই চকলেটটা খেতে চাই,
কথাটা বলেই রাকিব হাসঁতে লাগলো।মিতু রাকিবের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকাতেই রাকিবের মুখ থেকে হাসি উড়ে গেলো।রাকিব বুঝতে পারলো,এখন আর এখানে থাকা যাবে না।তাহলে কাল বৈশাখী ঝড় উঠবে।তাই সে চুপটি করে রুম থেকে বের হয়ে যায়।
চলবে😍😍