#ক্ষ্যাত যখন মাফিয়া
#পার্টঃ০৩
#লেখকঃরবিউল হাসান
আর কিছু বলার আগে একজন স্যার আসল।তাই দারোয়ান বেটা আর কিছু বলতে পারে নাই।
আমি আর সাগর বাসায় চলে আসলাম।
বার বার মনে হচ্ছে কেউ আমায় ফলো করছে……
তাও আমি কোনো পাত্তা না দিয়ে নিজের বস্তির ভিতরে ডুকে গেলাম। গিয়ে আমার রুমে শুয়ে পড়লাম।অনেক দিন থেকে মা আর আপুর সাথে কথা বলি না।তাই ফোন দিলাম আপুকে।
আপু ফোন রিসিভ করল……
আপুঃকেমন আছিস ভাই?
আমিঃএইতো আপু অনেক ভালো এই লাইফটা।
আপুঃআমি জানি ভাই তুই কষ্টে আছিস। তাও মাত্র একটা বছরই তো। একটু কষ্ট কর।আসল হীরে খুজে পাবি।
আমিঃহুম আপু।জানো আপু এই গরীব হয়ে বেঁচে থাকাটা খুব কষ্টের। বড় লোকদের একটু রাত উঠলেই তা গরীবের উপর ঝাড়ে।
আপুঃকি করবি বল।মাত্র একটা বছর ভাই কষ্ট কর প্লিজ।
আমিঃমা কোথায় একটু কথা বলব।
আপুঃওকে আমি দিচ্ছি…..
মাঃহ্যালো বাবা কেমন আছিস?
আমিঃএইতো মা বেশ ভালো। তুমার শরীর ভালো তো?
মাঃহ্যা ভালো।নিজের খেয়াল রাখিস বাবা।আর তোর কাজ শেষ না হওয়া অব্দি লেগে থাকবি।
আমিঃহ্যা মা দোয়া করবে।
মাঃআমি সবসময় তোর জন্য দোয়া করি বাবা।
আমিঃওকে মা, আপুকে দাও…..
আমিঃআপু মায়ের খেয়াল রেখ।আর নিজেরও খেয়াল রাখবে আমাকে নিয়ে একদম চিন্তা করবে না।আর রাশেদের সাথে কি তোমার কথা হয়?
(রাশেদ হল আমার বন্ধু)
আপুঃহ্যা মাঝে মধ্যে হয়, আর যখনই কথা হয় তখনই কি বলে জানিস?
আমিঃকি বলে?
আপুঃবলে তুর খবর দিতে।শুধু চায় তোর সাথে একটু কথা বলতে।কাল তো তোর নাম্বারও চেয়েছে।আমি দেয় নি।
আমিঃভালো করছ।আর নাম্বার দিবেও না।মনে রাখবে আমি কিন্তু একটা বছর গরীবের মত থাকতে চায়।আর হ্যা রাশেদের নাম্বার টা আমাকে টেক্সট করে দিও।
আপুঃওকে।
আমিঃওকে রাখছি তাহলে….
আপুঃওকে,নিজের খেয়াল রাখিস।
আমিঃহুম তুমিও, love you very much apu💝🥰
আপুঃlove you too vai💕
আমিঃallaha hafiz….
তারপর ফোন কেটে দিলাম। তখনই আপু রাশেদের নাম্বার আমাকে টেক্সট করে দিল।আমার পুরাতন সিম আপুর কাছে রেখে আসছি।যাতে কেউ আমার সাথে যোগাযোগ করতে না পারে।নতুন সিমে কারো নাম্বার নাই।তাই আপুর থেকে রাশেদের নাম্বার নিলাম।
বস্তিতে একা থাকি।নিজের কাজ নিজেকেই করতে হয়।তাই খাবার তুলে দিলাম চুলায় আর পাশে ভাঙা টেবিলে পড়তে বসলাম।কিছুক্ষণ পড়ার পর খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
পরের দিন কলেজে গেলাম। কলেজে ডুকার আগে সাগরকে ফোন দিলাম। সে কলেজে নাকি বাইরে জানতে।
সে কলেজে এখনো আসে নি।জ্যামে পড়ে গেছে আসতে একটু সময় হবে।তাই আমি কলেজে ডুকতে যাব তখন……
কি ভাবছেন দারোয়ান আটকায়ছে?
আরে না দারোয়ান বেটা আমার দিকে থাকিয়ে আছে, কিছু বলছে না।আমিও কিছু না বলে ডুকে গেলাম। কিন্তু দারোয়ানের পথ না আটকানোতে আমার খটকা লাগলো।
সাত পাঁচ না ভেবে আমি ক্লাসের দিকে রওনা দিলাম। তখনই সিনতিয়া ডাক দিল।
আমি সিনতিয়ার কাছে গেলাম….
আমিঃজ্বী বলেন কি করতে হবে?(আমাকে দিয়ে কিছু করানোর জন্য তারা আমাকে ডাকে,আর কোনো কারণ ছাড়া না)
কিন্তু এখানে মারিয়া বা বাকিরা কোথায় সিনতিয়া একা কেন?
সিনতিয়াঃনা কিছু করতে ডাকি নি।শুধু আপনাকে একটু হুশিয়ার করতে চায়।
আমি সিনতিয়ার কথা শুনে অবাক হলাম,যে মেয়ে গুলো তুই ছাড়া কখনো কথা বলেনি আজ সে মেয়েদের একজন আপনি করে বলছে কারণ কি?
আমিঃআপনি কি হুশিয়ার করতে চান?আর আমাকে তুই না বলে আপনি কেন বলছেন, আমিতো ক্ষেত, বস্তির ছেলে, ভিখারির মতে দেখতে…..
সিনতিয়াঃএসব আমাকে কেন বলছেন, এসব কি আমি আপনাকে কখনো বলছি?
আমিঃনা তা বলেন নি।কিন্তু বলতে কতক্ষণ, যাই হোক কি বলবেন বলেন।
সিনতিয়াঃআপনি মারিয়ার থেকে একটু দূরে থাকবেন।আসলে আমি তার ফ্রেন্ড ঠিকই কিন্তু সেটা নামে মাত্র। আসলে কলেজের সবাই তাকে ভয় পাই তাই তার সাথে ফ্রেন্ডশীফ করি। প্রকৃত অর্থে আমি মারিয়ার কাজ গুলো মোটেও পছন্দ করি না। কি করব বলেন নিজে ঠিক থাকতে হলেও তার সাথে বন্ধুত্বের অভিনয় করতে হচ্ছে।
আমিঃসত্যি কি আপনি চাপের কারণে তার সাথে বন্ধুত্ব করার ভান করছেন?
সিনতিয়াঃহুম।তার সাথে মিশে থাকলে নিজের পড়াশোনা ঠিক মত করতে পারব আর না থাকলে বুঝেনই তো….
আমিঃধন্যবাদ আপনাকে।
সিনতিয়াঃশুনেন, আপনার নাম্বার টা কি পেতে পারি?
আমিঃআমার নাম্বার নিয়ে কি করবেন?
সিনতিয়াঃযতটুকু পারি মারিয়ার থেকে আপনাকে দূরে রাখার চেষ্টা করব।
আমিঃতার দরকার নেই, ধন্যবাদ।
সিনতিয়াঃকিন্তু আমার দরকার।
আমিঃঠিক বুঝলাম না, আপনার দরকার মানে?
সিনতিয়াঃআমরা তো একি ক্লাসে পড়ি,বলতে গেলে আমরা ফ্রেন্ড তাই ফ্রেন্ডের নাম্বার রাখা উচিত।
আমিঃওকে নিন।018977978##
সিনতিয়াঃধন্যবাদ।
আমিঃঠিক আছে এখন আমি আসি।
আমি চলে আসলাম ক্লাস রুমে।আজকে মারিয়াকে দেখি নি।তার দলের একজন ছাড়া অন্য কাউকেও দেখি নি।
তাদের কথা একপাশে রেখে ক্লাস করতে লাগলাম।স্যার আমার ১০ মিনিট পর সাগর আসল।তারপর দুইজন ক্লাস করতে লাগলাম।
দুইটা ক্লাস শেষ করে তৃতীয় ক্লাসে প্রিন্সিপাল স্যার আসল।
প্রিন্সিপালঃসবার ক্লাস কেমন লাগছে আজ?
সবাইঃভালো স্যার।
প্রিন্সিপালঃভালো হওয়ারই কথা আজকে তো একজন ক্লাসে নেই।কলেজের পরিবেশটাও আজ অনেক ভালো আছে।সবাই মনোযোগ দিয়ে ক্লাস কর তাহলে…..
বুঝলাম প্রিন্সিপাল স্যার কার কথা বলছে।মারিয়ার কথা বলছে স্যার।কি মেয়েরে ভাই।এই মেয়ে না থাকলে কলেজের ছাত্র_ছাত্রী থেকে শিক্ষক পর্যন্ত সবাই ভালো থাকে।যাক ভালোই হল না এসে অন্তত একটা দিন ঠিক মত ক্লাস করতে পারব।
আমি আস্তে করে সাগরকে বললাম।সিকদারের নাম্বার তার কাছে থাকলে আমাকে নাম্বার টা দিতে। আমার কাছে সিকদারের নাম্বার নেই।
সাগর আমাকে সিকদারের নাম্বার দিল।ক্লাস শেষ করে সাগরকে বললাম।চল সিকদারকে দেখে আসি,তুই বাসা ছিনিস?
সাগরঃনা আমি তো বাসা ছিনি না।
আমিঃওকে ফোন দিয়ে জেনে নিচ্ছি তার বাসা কোথায়?
তারপর সিকদারকে ফোন দিলাম। প্রথমে রিং বাজল কিন্তু ধরে নি।আবারো ফোন দিলাম তখন ধরল।
সিকদারঃকে বলছেন?(আমার নাম্বাটাও সিকদারের কাছে নেই)
আমিঃআমি সিকদার বলছি😁
সিকদারঃতাহলে আমি কে?
আমিঃতুই হয়তো…… কে হতে পারিস বলতে😁
সিকদারঃদেখেন ভাই, আমি বুঝছি আপনি আমাকে ছিনেন।আমি অসুস্থ ফান করার মুড়ে নেই এখন।রাখলাম….
ফোন কেটে দিতে যাবে তার আগেই আমি নিজের পরিচয় মানে রবিউল হাসান তার কলেজ বন্ধু, দিলাম।
সিকদারঃআরে তুই কি মনে করে?
আমিঃআসলে আমার কাছে তুর নাম্বার ছিল না তাই ফোন দিতে পারি নি। এখন সাগর থেকে নিয়ে তুকে ফোন দিলাম। আচ্ছা আমরা তুর সাথে দেখা করতে চায় তাও তুর বাসায়,বল তো তুর বাসাটা কোথায়? আসলে আমরা ছিনতেছি না……
সিকদারঃআচ্ছা আমি ঠিকানা টেক্সট করে দিচ্ছি তুরা আয়।
আমিঃওকে।
সিকদারের দেওয়া ঠিকানায় গেলাম।সামনে থাকিয়ে দেখতেই চোখ কপালে উঠে গেল।এত বড় বাড়ি আবার এত সুন্দরও, চারপাশে ক্যামরা লাগানো।দেখে তো মনে হয় না এই বাসাটা ভাড়া দিছে। এটা কি তাহলে সিকদারের আসল বাসা?
না কিছু মাথায় ডুকছে না।সিকদারকে ফোন দিয়ে দেখি কি বলে…..
আমি ফোন দিতে যাব তার আগেই সিকদার আমাকে ফোন দিল।সিকদার আমার কান্ড গুলো কম্পিউটারে দেখছিল।তাই আমি ফোন দেওয়ার আগে আমাকে ফোন দিল…..
আমি ফোন রিসিভ করে বললাম…..
আমিঃভাই এটা কোথায় নিয়ে আসলি?
সিকদারঃঠিক জায়গাতেই আনছি। গেইট খুলে ভেতরে ঢুক ফোন কাটবি না।
আমিঃওকে।
গেইট খুলে ভেতরে ডিকতেই একজন আমাদের দাড় করাল,বলল কোথায় যাচ্ছি কার কাছে?
আমাদের কথা গুলো সিকদার শুনছিল।সিকদার বলল আমাকে ফোনের স্পিকার অন করতে আমিও করলাম।
সিকদার লোকটাকে বলে দিল আমরা তার কাছে যাচ্ছি। তখন লোকটা আমাদের সিকদারের কাছে নিয়ে যায়।
আমাদের সিকদারের রুমের সামনে দিয়ে লোকটা চলে আসে।আমি রুমের দরজা নক করতে যাব, তখনই সিকদার দরজা খুলে দিল।
আমিঃএটা কি তুর বাসা?
সিকদারঃআগে তো ভিতরে আয়…..
আমিঃহুম।
ভিতরে গিয়ে দেখি বাসাটা আরো সুন্দর, বাইরে যেমন সুন্দর ভিতরে তার থেকে বেশি সুন্দর। চারপাশে কি সুন্দর প্যাইনটিং লাগানো।এক কথায় অসাধারণ……
সিকদারঃবস কেমন আছিস বল?
আমিঃআম ঠিক আছি,কিন্তু তুই কেমন আছিস?
সিকদারঃহুম আমি ভালো।আর সাগর তুই কেমন আছিস?
সাগরঃভালো।তুর বাসা এটা?
সিকদারঃহুম কেন বলতো?
আমিঃআসার সময় যে ভাবে দেখলাম বাসাটা, মনে হল তুই অনেক বড় লোক তাই বললাম।
সিকদারঃবল কি খাবি?
আমিঃআরে কিছু খাব না।তুর অবস্থা জানতে আসলাম।
সিকদারঃতা কেমনে হয়?বল চা না কপি?
সাগরঃকপি হলে ভালো হয়😇
সিকদারঃওকে আমি বানিয়ে আনতেছি।
আমিঃআরে তুই বানিয়ে আনতে যাবি কেন বাসায় তো আরো অনেকে আছে?
সিকদারঃহ্যা আছে। ওকে বলছি…….তুরা বস।
সিকদার নিচে চলে গেল।বাসাটা দু-তলা। তার নামের সাথে বাসাটারও মিল আছে।২মিনিট পর সিকদার চলে আসল।কপি হাতে নিয়ে।
আমিঃতুই কেন কষ্ট করতে গেলি?
সিকদারঃআরে না।আম্মু বানিয়ে দিছে, জাস্ট আমিতো আনলাম।আর কিছু না।
সাগরঃওকে।এখন কপি দেয়😇
তারপর তিনজন বসে বসে কপি খেলাম, সাথে আড্ডাতো হয়ে গেলই।
আমিঃআচ্ছা সিকদার, আমার যতটুকু মনে হয়, তুই চাইলে মারিয়ার এই কাজের বাধা দিতে পারিস।কিন্তু তুই এমনটা করিস না কেন?
সিকদারঃতুই ঠিক বলছিস, চাইলে বাধা দিতেই পারি।আর মারিয়া চাইলে কি পারে জানিস?
সাগরঃকি?
সিকদারঃমারিয়া চাইলে আমাকে মেরে মাটির নিচে পুতে দিতে তার থেকে ভালো তার সাথে লাগতে না যাওয়া।
তখন একটা মহিলা রুমে প্রবেশ করল।সিকদারের দিকে থাকাতে সে বলল……ওটা তার মা।
আমরা আন্টিকে সালাম দিলাম।আন্টি সালামের জবাব দিল।আন্টি কেমন আছে জানতে চাওয়াই বলল একমাস ছেলে ভালো না থাকলে কি আর মা ভালো থাকে?আন্টি সিকদারের কথা বলল, যা আমরা ঠিকই বুঝছি। তারপর আন্টি চলে গেল।
আমি সিকদারকে বললাম……
আমিঃতুই কি এক ভাই?
সিকদারঃহুম। আমার আর কোনো ভাই নেই।একটা বোন আছে।
সাগরঃকই তাকে তো দেখলাম না।
সিকদারঃআপু ভার্সিটি থেকে এখনো আসে নি।
আমিঃআচ্ছা তুই কি কাল কলেজ যাবি?
সিকদারঃ না কাল যাব না পরের দিন থেকে যাব।শরীরে এখনো ব্যাথা আছে।
আমিঃসরিরে আমার জন্য তুকে মার খেত হল।
সিকদারঃআরে সরি বলছিস কেন।মারিয়ার সাথে আমিও কথা কাটাকাটি করছি তাই এমন করছে।
আমিঃতাহলে তুই বিশ্রাম নে।আমরা আজ আসি।
সিকদারঃরাতে খেয়ে যা।
আমিঃআরে না,বাসায় গিয়ে খাব।তুই বিশ্রাম নেয়।আসি………
সাগর আর আমি সিকদারের বাসা থেকে বের হয়ে আসলাম।তারপর একটা রিকশা নিয়ে কলেজের কাছাকাছি চলে আসলাম। এখন দুই জনকে দুই দিকে যেতে হবে।তাই দু জন দুই দিকে চলে গেলাম।সাগর নিজের বাসার দিকে আমি আমার বাসার দিকে।
আমি বস্তির কাছে গিয়ে রিকশা থেকে নেমে পড়লাম।রিকশার ভাড়া দিয়ে আমি বস্তির ভিতরে গিয়ে চারপাশে দেখে নিজের রুমে চলে গেলাম। রুমে ডুকে দাড়াতেই কেউ একজন আমাকে……..…..
দৌড়াবে…….
❣️গল্পটা কেমন হল তা কমেন্ট করে জানাবেন✅
✅সবাই নিয়মিত নামাজ আদায় করবেন।✅
✅ভুল দেখলে ধরিয়ে দিবেন।✅
❌সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।নিজে নিরাপদে থাকুন অন্যকেও নিরাপদে থাকতে দিন❌
❌করোনার সময়ে অযথা বাইরে ঘুরাঘুরি করবেন না❌
❌অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষেধ❌
…………..আল্লাহ হাফেজ…………