#অভিশপ্ত_জীবন
পর্ব ৫
লেখিকা #Fabiha_Busra_Borno

অনেক ভেবে আমি ও সিদ্ধান্ত নিলাম যে, মুহিতের সাথে যাবো। তাই মুহিত আমাকে শিখিয়ে দিলো সে রাস্তায় থাকবে, যে কোন উপায়ে বাড়ি থেকে বের হতে হবে আর যদি বের হতে না পারি তাহলে দুইদিন পরে মুহিত রাতে আমাকে নিতে আসবে বাড়ির পিছনে। রাতে বাড়ি থেকে বের হওয়া অনেক রিক্স তাই আমি পরের দিন সকাল ১০ টাই রাস্তায় যাবো বললাম। রাতেই কাপড় সহ কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে নিলাম এবং সামান্য কিছু টাকাও। কাল সকালে মা-য়ের সাথে দেখা করতে যাবো আর বিকালে চলে আসবো। খালা আমাকে একা যেতে দিবেন না সাথে খালুকে নিয়ে যেতে বলে। কিন্তু খালু গেলে তো হবে না। তাই আমি খালুর নানা কাজের কথা মনে করে দিলাম আর অভয় দিলাম একা তো এর আগেও যাওয়া আসা করেছি তাই কোন প্রব্লেম হবে না। যেহেতু সকালে গিয়ে বিকালে আসবো তাই জামা কাপড় এর ব্যাগ দেখলে সন্দেহ করতে পারে এজন্য আগেই বাড়ির পিছনে একটা খড়ির ঘর আছে সেখানে রেখে এসেছি।

এমন কাজ করবো তা চিন্তার বাইরে ছিলো, হয়তো এটাই শেষ বাবা মায়ের মুখে চুনকালি দেওয়া। আল্লাহ যেন আমার জীবন টা অন্য ৮/১০ জন মেয়ের মতো সুখী করে। নানা চিন্তা ভাবনা নিয়ে সামনে পা বাড়াচ্ছি কিন্তু পায়ে কোন শক্তি পাচ্ছি না। মন একবার বলছে সামনে যেতে আর ১০ বার বলছে পিছনে যেতে। সিদ্ধান্ত এতো দূরে এসেছে যে ফিরে যাওয়া অসম্ভব। মুহিত অটোরিকশা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি চুপচাপ অটোরিকশাতে উঠলাম আর সাথে সাথে চলতে শুরু করছে। মুহিত আর আমি পিছনের সিটে বসেছি। মুহিত মাঝে মাঝে আমাকে এটা সেটা জিজ্ঞেস করে আমি শুধু সেগুলোর উত্তর দিচ্ছিলাম। পাশের বাস স্ট্যান্ড এসে দুটো ঢাকার টিকিট কেটে অপেক্ষা করছি বাসের জন্য। ১২ টাই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। পৌঁছাতে পৌঁছাতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আমার খালাশাশুড়ির ছেলে তার বউকে নিয়ে এখানে থাকেন। প্রথমে আমরা তার কাছে উঠি। কিন্তু উনাদের রুম একটা তাই আমাদের থাকার সমস্যা হচ্ছে। রাত কোন রকম কাটছে,, সকাল হতে না হতেই উনারা যে যার কাজে চলে গেছেন। আমি আর মুহিত বর্তমানে একা ঘরে। মুহিত আস্তে আস্তে আমার খুব কাছে চলে আসছে, তাকে বাঁধা দেওয়ার মতো কোন ইচ্ছে আমার মধ্যে নাই। আমি ও চাইছি সে আরো কাছে আসুক। বিগত কয়েকটি মাসের অতৃপ্ত বাসোনা পুর্ন হোক। বদ্ধ ঘরে দুটো মানব মানবী তাও যদি তারা স্বামী স্ত্রী হয় এবং এক সাথে থাকলে যা ঘটে ঠিক তাই হলো মুহিত আর সুমির মাঝে। সুখের সাগরে হাবুডুবু খাওয়া শেষে ক্লান্ত দেহে সুমি মুহিত কে বললো

শিমলার মা কে তালাক দিবে কবে?

তালাক দিবো কিন্তু এতো টাকা তো নাই। দুইজন চাকরি করে কিছু টাকা সঞ্চয় করার পরে তোমাকে সাথে নিয়ে গিয়ে ওই ব্যা/শা কে তালাক দিবো। তোমার সাথে এতো দিন যে অন্যায় করেছি তার জন্য তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।

তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি বলেই তো আজ আমি আবারও তোমার কাছে এসেছি। দয়া করে আমাকে আর নতুন করে ধোঁকা দিও না। মা বাবা আত্মীয় স্বজন সবাই কে ছেড়ে আমি শুধু তোমার কাছে আসছি। আবারও যদি আমাকে ধোঁকা দাও তাহলে ফিরে যাওয়ার কোন যায়গা নাই একমাত্র মৃত্যু ছাড়া।

কেটে গেছে এক সপ্তাহ, নতুন বাসা নিয়েছি আমরা, মুহিত একটা গার্মেন্টসে চাকরি পেয়েছে আমি ও পেয়েছি। ইচ্ছে ছিলো দুজন একই অফিসে চাকরি করবো কিন্তু তা হয় নি। একজনের টাকা দিয়ে থাকা খাওয়ার খরচ চলবে আর অন্যজনের টাকা সঞ্চয় হবে।নতুন করে এমন হাজারো স্বপ্ন দেখা শুরু করি।

এখানে আশার পর থেকে দুজনেই চাইছি একটা বাচ্চা নিতে। মুহিতের নাকি প্রতিদিন ৪/৫ ঘন্টা করে ওভার-টাইম কাজ করতে হয়। ছেলেটার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বেশ কিছু দিন থেকে শরীর খারাপ লাগছে। মুহিতের কাল অফিস নেই। আমাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার সময় মুহিত বারবার বলছিল সে বাবা হবে। ছোট ছোট হাত পা নিয়ে বাবু আসবে আমাদের ঘরে। মুহিতের এমন আনন্দ দেখে আমার ভিষণ ভালো লাগছিলো।

হুম আবারও আমি প্রেগন্যান্ট, খুশিতে আকাশে পাখির মতো উড়তে ইচ্ছে করছে । পরম যত্নে আমাকে আগলে রেখেছে মুহিত। প্রতিদিন অফিস থেকে আসার সময় আমার জন্য ফলমুল কিনে আনে, আমাকে আর চাকরি করতে দেয় না। কিন্তু ওইযে কথায় আছে,, অভাগীর কপালে সুখ সই না। প্রেগন্যান্সির খবর পাওয়ার পরে মুহিত ভাবি কে তালাক দিয়ে আসে। যেহেতু দেনমোহর শোধ করে নি তাই মুহিত এবং আমার নামে মামলা করে ভাবি। এদিকে ৫ মাস চলছে আমার, পেট ভারী হয়ে গেছে। গত দুই বার বাচ্চা নষ্ট হওয়ার কারণে এখন এমনই বাচ্চাটা নষ্ট হয়ে গেলো। ভেঙে পড়লাম আবারও। মুহিত পাগলের মতো চলাফেরা করে সব সময়। ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া বা ঘুমায় না। আমার সাথে ভালো করে কথা ও বলে না। কি থেকে কি হয়ে গেছে কিছুই বোধগম্য হচ্ছে না। কিভাবে এই পরিস্থিতি সামলিয়ে উঠবো।

মুহিতের নামে ওয়ারেন্ট বের হয়েছে। তাই মুহিতের গার্মেন্টসে কাজ করা সম্ভব না। এতো গুলো টাকা এক সঙ্গে জোগাড় করা সম্ভব না আমাদের। আমি অন্য গার্মেন্টসে কাজ নিই, আর মুহিত বিভিন্ন রকম কাজ রাজমিস্ত্রী, রিকশা, বা হোটেলের কাজ করে। এভাবে আর কত দিন,, তাই সবাই পরামর্শ দিলেন, মুহিত কে পুলিশের কাছে স্যালেন্ডার করতে। স্যালেন্ডার করার কয়েকদিন পরে জামিন নেওয়া যাবে তারপর দিনে দিনে দেনমোহর শোধ করা যাবে।

আমি আর মুহিত বাড়ি চলে আসছি। শাশুড়ীর কাছে আমাকে রেখে মুহিত স্যালেন্ডার করে। জমানো কিছু টাকা ছিলো তা দিয়ে মেজো ভাসুর এবং বড় ভাসুর মিলে ১০ দিন পরে জামিন করে নেই। মেঝো ভাসুর আবারও বিয়ে করেছেন। এই বউটা অনেক ভালো। মেয়ে দুটোর খুব যত্ন করে।

দুজন আবারও ঢাকায় চলে আসছি। দুই মাস পরপর হাজিরা ডেট পরে, প্রতি বার ৪০ হাজার টাকা দিতে হবে। এতো টাকা জোগাড় করা অসম্ভব। এইসব টাকা পয়সার চিন্তা আর বাচ্চা না হওয়ার চিন্তায় শুকিয়ে যাচ্ছি। এরইমধ্যে মরার উপর খাড়ার ঘাঁ নিয়ে আসে ইউসুফ। মুহিত কে কল করে মাঝে মাঝে। আমরা কেমন আছি সেটা জানার জন্য নাকি আমার মা গোপনে ইউসুফের মোবাইল থেকে কল করে। মুহিত আমাকে বলে, তোমার মা তোমার সাথে কথা বলবে। তোমাদের পাড়ার একজনের মোবাইল থেকে কল করেছে। অনেক দিন পরে নানা অশান্তি ভেদ করে ভালো কোন সংবাদ শুনতে পেয়ে চোখে পানি চলে আসে। কিন্তু প্রতিনিয়ত ঘটা ঘটনার মতো এটাও উধাও হয়ে যায় নাম্বার দেখার সাথে সাথে। আমি জানি ইউসুফ ওইসব মিথ্যা কথা বলেছে। মা কখনোই ইউসুফের কাছে যাবে না। সুযোগ বুঝে একদিন আমি ইউসুফের সাথে কথা বলি আর তাকে অনেক বুঝায় যেন আমার কোন ক্ষতি করে না।আর আমি ইউসুফের নাম্বার ব্লক করে দিই।

আমি বুঝতাম না কথা গুলো রেকর্ড করার অপশন চালু করে রেখেছে মুহিত। আমাদের কথোপকথন সব রেকর্ড থেকে শোনে ফেলে। এতো দিন বাপের বাড়ি থেকে ইউসুফের সাথে কি কি করছি এইসব নিয়ে চিল্লাচিল্লি করে আর প্রতিনিয়ত গায়ে হাত তোলে। যে মেয়ে গ্রামে ছেলে পটিয়ে ফসটি/নসটি করতে পারে সেই মেয়ে শহরেও কত কি করে তার হিসাব নাই, এইসব কথা বলে আর আমাকে সর্বক্ষণ সন্দেহ করে। কারো সাথে প্রয়োজন বিষয়ে কথা বলতে গেলেও মুহিত তাকে নিয়ে সন্দেহ করে।

মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে বিষ খেয়ে মরে যায় নয়তো গলায় দড়ি দিই কিন্তু সাহসে কুলোয় না। মুহিত আর আমার সাথে তেমন শারীরিক সম্পর্ক করে না। যদি কখনো আমি জোর করি তাহলে কাছে আসে।

দুই বার কেইসের হাজিরা মিস গেছে, টাকা নাই তাই। কোট থেকে নাকি জরুরি নোটিশ পাঠিয়েছে বাসায়। মুহিত আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলে আবারও ওই বউ নিবে কারণ দুজনের চরিত্র একই। মাইরের আঘাত ভুলা যায় কিন্তু এইসব কথার আঘাত সহ্য করা যায় না। অফিস থেকে বাসায় আসার পরে মুহিত মোবাইল নিয়ে পরে থাকে। কার কার সাথে এতো হেসে হেসে কথা বলে জানিনা। তবে বুঝতে পারছি মুহিত নতুন কোন মেয়ের সাথে কথা বলে। কার সাথে কথা বলে জিজ্ঞেস করলেই ইউসুফের কথা তুলে আমাকে মারতে শুরু করে। সেদিন পাশের রুমের এক মেয়ে বললো, ভাই ওই মোড়ের পাশে বসে কারো সাথে কথা বলছে। আমি আসার সময় বেশ কিছু কথা শুনতে পায়। ভাই বলছে,, মোবাইল তোমার বুকে রাখো তারপর ভাই চুমু দেওয়ার শব্দ করে। এটা দেখেই আমি বুঝতে পারছি ভাই কি কথা বলছে তাই তারাতাড়ি চলে আসে সেখান থেকে।

আমি জানতাম এমন কিছু হবে, তাই আগে থেকেই মনকে শক্ত করে রেখেছি,, আজ এর একটা বিহিত করেই ছাড়বো। মুহিত আসলো কিছুক্ষণ পারে আর রাতে ওর ডিউটি। বাসায় আসার সাথে সাথে আমি জিজ্ঞেস করি আবারও কার সাথে এইসব করছো, মাথার উপরে একটা কেইস ঘুরছে নতুন করে কিছু করলে আমি ও আরেকটা দিবো লু/চ্চামির একটা লিমিট থাকে। সাথে সাথে মুহিত তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেছে। আর আমাকে দুনিয়ার না-জবান কথা বলে গালিগালাজ করতে লাগে। আমি ও সমান ভাবে বলে যাচ্ছি। মোবাইল বুকের উপর রেখে চুমা না দিয়ে সরাসরি দিবে, কে মানা করেছে। মুহিত রাগে ঘরে দরজা লাগিয়ে দিয়ে স্টিলের খাটের পাঁয়া খুলে বেধড়ক মারধর করে। মনে হচ্ছে আমাকে আজ মেরেই ফেলবে তার প্রতিযোগিতা
য় নেমেছে। জান বাঁচানোর তাগিদে আমি মুহিতের হাত পা ধরে জীবন ভিক্ষা চাইছি। বাইরে থেকে সবাই থামতে বলছে এবং দরজা ধাকাচ্ছে। বাড়িওয়ালা এসে বাইরে থেকে চিল্লাতে লাগছে । ঘরের মধ্যে থালাবাসন এর পাশে বটি(তরকারি কাটার যন্ত্র) দেখতে পাই। পায়ে মেরে মেরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই আমার, নিজের জীবন সবার আগে, তাই কোনভাবে নড়তে নড়তে বটি দিয়ে মুহিত কে এক কোঁপ মারি, কোথায় লেগেছে জানি না। সেকেন্ড কয়েক মুহিত নিজেকে নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পরে। এই ফাঁকে আমি হামাগুড়ি দিয়ে দরজা খুলে দিই আর বাইরে থেকে সবাই এসে আমাকে নিয়ে যায়। ঘরে রক্ত দেখে সবাই মনে করে আমার রক্ত।কিছু কিছু মানুষ মুহিতের হাত বেঁধে দিচ্ছে (হাতে কোপ লেগেছে) আর কেউ কেউ আমার সমস্ত শরীরে পানি দিচ্ছে। ফর্সা শরীরে মাইরের আঘাত স্পষ্ট। ফেটে রক্ত বের হওয়ার অবস্থা হাত পা পিঠ সব গুলো লালচে হয়ে গেছে, মুখে থাপ্পড় মেরেছিল তাই ঠোঁট কেটে রক্ত বের হচ্ছে।

মুহিত বাসা থেকে চলে গেছে অনেক আগেই। পাশের রুমের দুজন মহিলা আর বাড়িওয়ালা মিলে আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন। আগের মচকানো পায়ে আবারও আঘাত লাগার জন্য গুরুতর অবস্থা হয়েছে। ব্যান্ডেজ করে দিয়েছেন আর মেডিক্যালে থাকতে হবে বেশ কিছু দিন। বাড়িওয়ালা চাচা আব্বার নাম্বার নিয়ে কল দিলেন। আব্বাকে সব কিছু বলে ঢাকায় আসতে বলে আজকে দিনের মধ্যে। সন্তান যতই অপরাধ করুক, বাবা মা সন্তানের বিপদে সবার আগে এগিয়ে আসে এবং ক্ষমা করে দেয়। আব্বা আর মা রাতেই চলে আসে। কেটে যায় আরো ১০/১২ দিন। মুহিত পালিয়েছে ওই মেয়ের সাথে। মেয়েটা মুহিতের অফিসের। কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয় না। জমানো কোন টাকা পয়সা আমার কাছে নাই। সব মুহিতের কাছে থাকতো। বাড়ি ভাড়া দেওয়া লাগে নি, বাড়িওয়ালা আমাদের কে বিদায় করতে পারলে বাঁচে। কোন রকম মেডিক্যাল বিল শোধ করে আমাকে গ্রামে আব্বার বাড়িতে নিয়ে আসে।প্রায় দুই বছর পরে আবারও বাপের বাড়ি আসছি।ছোট বোন পপি ক্লাস ফাইভে পরে আর শামিম নিউ টেন।

মায়ের আদর যত্ন ভালোবাসায় একা একা হাঁটাচলা করতে পারি। মুহিতের কেইসে আমি 2 নাম্বার আসামি ছিলাম। যেহেতু দুই-তিন টা হাজিরাতে মুহিত উপস্থিত হয় নি তাই কোট অবমাননার দায়ে আবারও ওয়ারেন্ট বের হয় আমার নামে সহ। এক আঘাত সহ্য করতে না করতে আরেক আঘাত আমার দুয়ারে করা নাড়ে। জীবন টা অতিরিক্ত তিতা লাগছে। আমার জন্য মা বাবা ভাই বোনের ও জীবন অশান্তিতে ভরে থাকে। এক রাতে পুলিশ এসে আমাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এতো দিনের এতো মাইর এতো কষ্ট এতো অপমানে যে পরিমাণ আঘাত পাইনি, পুলিশে ধরার পরে তার থেকে দশগুণ বেশি আঘাত পেলাম। মুহিত কোথায় আছে জানি না। পুলিশেও খুঁজে পাচ্ছে না। প্রায় দের মাস পরে আমার জামিন হয়। অনেক টাকা পয়সা লেগেছে আমাকে ছাড়ানোর জন্য।

মুহিত কে স্বামী তালাক করেছি জামিনের দিনেই।যেহেতু আমাদের দেনমোহর মাত্র দশ হাজার তাই কোন মামলা করি নি। আব্বা আমাকে একটা সেলাই মেশিন কিনে দিলেন। গ্রামের মানুষের জামা কাপড় সেলাই সব কাঁথা সেলাই করে ভালোই ইনকাম হতো বাড়ি থেকে প্রয়োজন ছাড়া তেমন বের হই না। এদিক সেদিক থেকে অনেক বিয়ের প্রস্তাব আসা শুরু করে। কারো বউ মারা গেছে, কারো বউ বাচ্চা রেখে চলে গেছে কেউবা তালাক দিয়েছে এমন পাত্র। বিয়ের প্রতি আমার আর কোন অনুভূতি নাই। তাই আমি প্রতিটি প্রস্তাব ফিরিয়ে দিই। ভাইয়ের এসএসসি পরীক্ষা শেষ এখন কলেজে যায়। পপিও বড় হচ্ছে। কোন ডিভোর্সি মেয়েকে বাড়িতে রাখলে ছোট ভাইবোন দের ভালো বাড়িতে বিয়ে হবে না। নিজেকে মানিয়ে নিলাম যে, মেয়েরা সব সময় কোন না কোন ছেলের উপর নির্ভরশীল। হয় সে বাবা,ভাই নয়তো স্বামী। তাই আমি আবারও নতুন করে জীবন সাজাতে মনস্থির করলাম।

মুহিতের অংশের কিছু জমি বিক্রি করে মুহিত শিমলার মায়ের দেনমোহর শোধ করে মামলা মিটিয়ে নিয়েছে। এখন ওই গার্মেন্টসের মেয়েকে নিয়ে বাসায় থাকে। মেয়েটা নাকি মুহিতের মায়ের সাথে দিন রাত ঝগড়া করে। মাঝে মাঝে মুহিত বউয়ের কথা শুনে মায়ের গায়ে হাত তোলে। কিছু দিন আগে মায়ের গায়ে হাত তোলার জন্য মুহিতের বড় ভাই মুহিত এবং ওর বউ কে মেরেছিলো। লোক মুখে সব কথায় আমাদের কানে আসে।

আজ একটা নতুন প্রস্তাব এসেছে। পাত্রের বউ মারা গেছে ক্যান্সার হয়ে। এক ছেলে এক মেয়ে আছে। বউ ছেলে বিয়ে করেছে মেয়ে নাকি ক্লাস টেনে পড়ে। বয়স আমার আব্বার থেকে দুই এক বছর বেশি হবে মনে হয়। উনার অনেক জমিজমা আছে সাথে মাছের হ্যাচারী আছে। টাকা পয়সা, খাওয়া দাওয়া, পোশাক আশাকে কোন অভাব হবে না। পুরুষ মানুষের বয়স নাকি কোন ব্যাপার না তাই আমাকে নানান জন নানান রকম ভাবে বুঝাতে লাগলো,,,,,,

চলবে,,,,,

[আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। সামনে এক্সাম যেন ভালো দিতে পারি।আর দয়া করে সবাই আমার পেইজে লাইক/ফলো দিয়ে পাশে থাকুন ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here