#অপূর্ণ_ভালোবাসা
#লেখকঃরবিউল_হাসান
#পর্বঃ০৫

আরো কিছুক্ষণ আপুর সাথে কথা বললাম, সাদিয়ে আপুর কানে কানে কি যেন বলল আপু আমার দিকে চেয়ে মুচকি হেসে চলে গেল……….
(আপুর যাওয়ার পর)
সাদিয়াঃকেমন আছেন ভাইয়া?
আমিঃআলহামদুলিল্লাহ ভালো, তুমি?
সাদিয়াঃভালো।
মিমঃআমি যে একটা মানুষ এতক্ষণ ধরে এখানে বসে আছি আপনি দেখছেন না?(আমাকে বলল)
আমিঃহ্যাঁ দেখছি তো,কেমন আছেন এখন আপনি?
মিমঃভালো আছি তো অনেক ভালো।
সাদিয়া তুই একটু বাইরে যা তো।(মিম সাদিয়াকে বলল)

সাদিয়া বাইরে চলে গেল,এখন আমি আর মিম ছাড়া কেউ নাই।

তারপর মিম যেটা করল………..
বিশ্বাস করেন রাসেল ভাই এটার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
মিম সোজা এসে আমাকে ঝড়িয়ে ধরে কান্না করে দিল।
আমিঃএই আপনি কি করছেন? ছাড়েন পাঠক বৃন্দ দেখলে কি বলবে।
মিমঃকে কি বলবে তাতে আনার কিছু যায় আসে না।আর আপনি নিজেকে কি মনে করেন?আমাকে বাচিয়ে নিজে মরে যাবেন? আমি তাতো হতে দিব না।
আমিঃআরে ছাড়েন তো……..(যদিও ভালোই লাগছিল পাঠকের কথা চিন্তা করে ছাড়তে বললাম)
মিমঃছাড়তে পারি তবে একটা শর্ত আছে।
আমিঃকি শর্ত আবার?
মিমঃআমাকে তুমি করে বলতে হবে।
আমিঃআচ্ছা ঠিক আছে বলব।এখন ছাড়েন।
মিমঃনা হয়নি আবারো আপনি বলছেন।তুমি করে বলেন।
আমিঃআচ্ছা ঠিক আছে ছাড়ো এবার।

মিম আরো কিছুক্ষণ কথা বলে নিচে চলে গেল।

আমি রাহীকে ফোন দিয়ে বললাম তুর সাথে কথা আছে রাতে বাসায় আসবি।
রাহীঃকি বলবি তা আমি জানি।তবে চিন্তা করিস না রাতে একসাথে থাকব।
আমিঃঠিক আছে তাড়াতাড়ি আসবি।

মিম আর তানিয়া এখনো বাসায় আছে তাই আপু কে ডাকলাম।
আমিঃআপু মিম আর তানিয়া এখনো এখানে কেন?
আপুঃএখানে কেন মানে তুকে দেখতে আসছে।আর কি হবে…..
আমিঃআপু তোমার কথায় কিছুটা রহস্য আছে কাহিনি কি বল তো….?
আপুঃতুকে এত কাহিনি শুনতে হবে না,আগে সুস্থ হ তারপর সব শুনবি।
(আমি জানি আপু আর কিছু বলবে না তাই রাহীর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম)

রাহী রাতে আসল।

আমিঃবস এখানে।
রাহীঃহুম(বলে আমার পাশে বসল)
আমিঃকাহিনি কি বলতো? মিম, আর তানিয়া এখনো এখানে কেন?
রাহীঃসেটা অনেক বড় কাহিনি তুকে এখন বলা ঠিক হবে না।
আমিঃযা তাহলে তুই চলে যা বাসায় গিয়ে ভালো করে ঘুমা।
রাহীঃআরে রাগ করিস কেন?
আমিঃতো তুকে নিয়ে নাচব নাকি?মাকে বললাম কাহিনি কি বলল না, আপুকে বললাম তাও বলল না এখন তুকে বলছি তুইও বলতেছিস না, তো এখন কি করব?নাচব নাকি?
রাহীঃআচ্ছা বলছি শুন তাহলে….
আমিঃতাড়াতাড়ি বল।
রাহীঃতুই যখন মিমকে ব্লাড দিচ্ছিলি তখন দুই ব্যাগ দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে পেলিস।আর আজ তুর জ্ঞান ফিরল ৭ দিন পর।
আমিঃকিহ্ সাত দিন আমি অজ্ঞান ছিলাম?
রাহীঃহুম সাত দিন পর নয়তো এক্সিডেন্টের তারিখ আর আজকের তারিখ দেখ।
আমিঃ(দেখলাম তারিখ সত্যি তো ৭ দিন হয়ে গেল)
রাহীঃএবার বিশ্বাস হল তো?
আমিঃহ্যাঁ,তাইতো বলি, অনেক দিন কিছু খাসনি এই কথাটা কেন বলল।এখন বুঝলাম।তারপর কি হল বল।
রাহীঃ(তুই জ্ঞান হারিয়ে পেলার পর তানিয়া আর মিমের বাবা-মা আসে।আমার কাছে এসে বলল তুমি কি রাহী,আমি বললাম কে আর আপনারা কি তানিয়া ও মিমের বাবা-মা।ওনারা হ্যা বলল।

তারপর ওনারা বলল মিম আর তানিয়া কোথায়। আমি দেখিয়ে দিয়ে বললাম ওখানে কিন্তু এখন ডাক্তার নিষেধ করছে ওদের সাথে কথা বলতে।ওনারা আচ্ছা ঠিক আছে বলে আমাদের সাথে বাইরে অপেক্ষা করতে লাগল।

কিছুক্ষণ পর ডাক্তার তোর রুম থেকে বেরিয়ে আমাদের কাছে আসে।

ডাক্তারঃযিনি রক্ত দিচ্ছেন তার নাম কি আর আপনারা তার কি হন?
আমিঃওর নাম রবি।আমাদের ফ্রেন্ড।
ডাক্তারঃরবি জ্ঞান হারিয়ে পেলছে দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়ার কারণে এখন উনার অবস্থা থেমন ভালো না।

সাথে সাথে আমি আর মাহমুদ তোর কাছে আসলাম। দেখছি তোকে স্যালাইন দিছে।

অপরদিকে,মিমের জ্ঞান পিরল প্রায় ২ ঘন্টা পর। ডাক্তার ওদের কাছে গিয়ে বলল আপনাদের হবু জামাইয়ের অবস্থা থেমন ভালো না।আপনাকে ২ ব্যাগ ব্লাড দেওয়ার কারণে উনি জ্ঞান হারিয়ে পেলছে।

ডাক্তারের কথা শুনে যেন সবাই আকাশ থেকে পড়ল (ওনারা তো জানে না জামাই কে?)তারা বলল আমাদের হবু জামাই মানে কি বলছেন আপনি?
ডাক্তারঃআমি তো রবির কথা বলছি কেন ওনি কি আপনাদের হবু জামাই নয়?

সাথে সাথে তানিয়া বলে উঠল
হ্যাঁ উনি আমার দুলাভাই।
আর আম্মু আব্বু আমি তোমাদের বুঝিয়ে বলছি।

ডক্টর আপনি এখন আসতে পারেন।(তানিয়া বলল)

ডাক্তার যাওয়ার পর তানিয়া বলল

তানিয়াঃমা যে রক্ত দিছে তার নাম রবি।ওনি আমাদের কলেজে পড়ে আমাদের বড়।(মিমের সাথে বাসে যে ঘটনা হয়ছিল সেটা বলল)
তারপর, পুলিশের ভয়ে কেউ আমাদের হেল্প করছিল না কোথাথেকে রবি ভাইয়া আর তার বন্ধুরা এল তারপর ওরা আমাদের হসপিটালে আনল।

রবি ভাইয়াকে দুলাভাই বলছি কারণ এটা না বললে ডাক্তার আমাদের ট্রিটমেন্ট করত না।হয়তো রবি ভাইয়া মিমের স্বামী পরিচয় দিয়ে আমাদের ট্রিটমেন্ট করিয়েছে।

তাই ডাক্তার যাতে সত্যি টা না জানে আমিও ডাক্তারের সাথে তাল মিলিয়ে দুলাভাই বললাম।

(এমনিতেও রবি ভাইয়াকে দুলাভাই বানালে অনেক ভালো হবে—ছোট করে বলল)

তারপর ওদের বাবা মা তুকে দেখতে আসে।
আমি তুর আম্মুকে ফোন দিয়ে তোর অবস্থা জানালাম।তখন তোর আপু আর আন্টি হসপিটালে যায়।
গিয়ে তুর অবস্থা দেখে সে কি কান্না।

মিমের আম্মু, তানিয়ার আম্মু আর তুর আম্মু বন্ধু হয়ে যায়।
৩ দিন হসপিটালে রাখার পরেও যখন তুর জ্ঞান পিরছে না।তখন মিম যে কান্না তুর কিছু হয়ে গেলে নাকি সে আত্নহত্যা করবে।

তিন দিন পর হসপিটাল থেকে তুকে বাসায় নিয়ে আসলাম।
আর এই তিন দিন মিম তুর পাশে চায়ার মত ছিল।
তোর আপু আর আন্টি তো মিমকে কোনোভাবে তুর রুম থেকে বের করতে পারে না।বিষয়টা তুর আম্মু যখন মিমের মাকে জানায় তখন মিমকে বাসায় যাওয়ার জন্য বলে তাও যায় না সে।
ওর একটাই কথা তুই যতদিন সুস্থ না হস ততদিন সে যাবে না।সারারাত তুর পাশে জেগে থাকত।

আমার মনে হয় সে তুকে ভালোবাসে।
নয়তো এমনটা কেউ করতে পারো না।
মিম ঠিক মত খাবার টাও খাইনি সারারাত কান্না করত, আজকে সকালে অনেক বুঝানোর পর সে নিজের বাসায় গেল।ওখানে গিয়েও নাকি কান্না করতেছে।
আর তোর আম্মু যখন ফোন দিয়ে বলল তোর জ্ঞান ফিরল তখন আমি মিমকে ফোন দিয়ে জানায় তাই মিম সাথে সাথে চলে আসে।আমি যতটুকু বুঝছি মিম তোকে ভালোবাসে।)
এটা ছিল কাহিনি।

(আমি রাহীর কথা শুনে তো অবাক।এত কিছু ঘটে গেল আমার জন্য)

আমিঃআর কিছু কি হয়ছে মাঝখানে?

রাহীঃহুম, হসপিটালে পুলিশ আসছিল। পুলিশের ওসি কে জানিস?

আমিঃমজা লস আমি অজ্ঞান ছিলাম, কেমনে জানব আমি?
রাহীঃওসি হল আমার মামা।(রাহীর মেঝ মামা এখানকার ওসি)
আমিঃওহ্ তাহলে তো ঝামেলা হয় নি আর।
রাহী কি ঝামেলা হবে, মামা নিজে ছিল সাথে সবার জন্য হসপিটালে খাওয়ার ব্যাবস্তা করছিল।আর সব ঝামেলা মামা সামলিয়ে ছিল।
আর কোন ঝামেলা হয় নি।

আমিঃতাহলে মিমের ব্যাপার টা কি করব এখন?
রাহীঃকি আর করবি প্রেম করবি!
আমিঃদেখ আমি সিরিয়াজ, তুই জানিস আমি প্রেম ভালোবাসা এসবে নাই। কিন্তু সে যদি আমাকে ভালোবাসে তাহলে আমারও কিছু করার নাই।
রাহীঃআমি জানি তুই প্রেমের মধ্যে নাই, কিন্তু মিম সত্যি তোকে ভালোবাসে। নয়তো এভাবে তোর পাশে থাকত না।সারাক্ষণ ছায়ার মত ছিল তোর পাশে।
যাইহোক, এসব নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না।এসব পরে ভাবা যাবে।
আমিঃহুম।

কিছুক্ষণ পরে আম্মু রাহীকে ডাকল রাহী আম্মুর কাছে গেল।

রাহীঃহ্যাঁ আন্টি কিছু বলবে?(আম্মু রাহীকে নিজের ছেলে ভাবে,রাহীও আম্মুর সাথে একদম ফ্রী তাই তুমি করে বলে)
আম্মুঃশুন মিম আর তানিয়াকে ওদের বাসায় দিয়ে আয়।অনেক রাত হয়ে গেছে।
এই সময় আর থাকাটা ঠিক হবে না।

রাহীঃঠিক আছে আন্টি দিয়ে আসতেছি।

তোমারা রেড়ি তো?(মিমকে বলল)

মিমঃ৫ মিনিট দাড়ান আসতেছি।৫মিনিট পর মিম আর তানিয়া তাঁদের বাসার দিকে রওনা দিবে।তার আগে আমার কাছে আসল রাহী নিচে বসে আছে।

#সবাইকে অনুরোধ করছি দৌড়াবে এর পরের টা একটু পড়বেন।

তানিয়াঃভাইয়া আমরা চলে যাচ্ছি, নিজের যত্ন নিবেন।কাল আমরা আবার আসব।
আমিঃআর আসার কি দরকার আমি তো এখন ঠিক আছি।আর তোমরা আসলে তোমাদের কষ্ট হবে।
তানিয়াঃনা সমস্যা নাই আমরা আসব নিয়মিত আপনি আমাদের জন্য যা করছেন তা হয়তো অন্য কেউ করবে না।আপনি আমাদের জন্য এত কিছু না করলে আপনার এই অবস্থা হত না।

আর হয়তো মিমও এখানে থাকত না।(মিমের দিকে থাকিয়ে)
দেখলাম মিম কান্না করতেছে।

তানিয়া মিমের দিলে থাকিয়ে চলে গেল।
মিমঃএখন কেমন লাগতেছে আপনার?
আমিঃহুম আগের থেকে ভালো।আপনার?
মিমঃআমার শারীরিক অবস্থা ভালো হলেও মনের অবস্থা একদম ভালো নেই।
আমিঃআপনার মনের আবার কি হল।(দেখলাম মিম রেগে আগুন, চিন্তা করলাম আমি কি বললাম এত রেগে গেল।হয়তো মনে কি হল বলায়)সরি আসলে আমি এমনি বললাম।এখানে রাগ করতে হবে কেন?
মিমঃআবরো আপনি বলছেন কেন?
আমিঃতাই বলে এত রাগ করার কি আছে?
মিমঃঅনেক কিছু আছে আপনি বুঝবেন না।আচ্ছা আপনি নিজের যত্ন যত্ন নিবেন।আমি কাল আবার আসব এখন আসি।(বলে কিছুটা চলে গেল হঠাৎ ফিরে এসে জড়িয়ে ধরল)
আমিঃআরে কি করছে?
মিমঃআস্তে করে বলল,ভালোবাসি।(এটা বলে তাড়াতাড়ি চলে গেল)
আমিতো তার যাওয়ার দিকে থাকিয়ে আছি।

মিম নিচে গিয়ে গিয়ে রাহীকে বলল চলেন ভাইয়া যাওয়া যাক।

রাহীঃহুম চল।
বাসা থেকে কিছু দুর যাওয়ার পর।
মিমঃতা ভাইয়া আপনার বন্ধু প্রেম করে না কেন?
রাহীঃওর এসব প্যারা নাকি ভালোলাগে না।তবে আমি যতটুকু জানি এখন কিন্তু পড়বে।(মিম বুঝতে পারল মিমকে ইঙ্গিত করে কথা টা বলল)
মিমঃআরেকটা কথা জানার ছিল।
রাহীঃকি কথা?

#To_be_continue…….
#RK9023DXWC
#অনুমতি_ছাড়া_কপি_করা_নিষেধ।
#গল্পটা_কেমন_হল_জানাবেন।
#ভালো_লাগলে_শেয়ার_করবেন।
#সবাই_নিয়মিত_নামাজ_আদায়_করবেন।

ভুল দেখলে ধরিয়ে দিবেন। নয়তো বার বার ভুল হতে পারে।মনে রাখবেন মূর্খের ভুল ধরিয়ে দিলে আপনি হবেন তার শত্রু,আর জ্ঞানীর ভুল ধরিয়ে দিলে আপনি হবেন তার বন্ধু।

মানুষ মৃত্যু থেকে বাঁচার চেষ্টা করে জাহান্নাম থেকে নয়,কিন্তু মানুষ চাইলে জাহান্নাম থেকে বাঁচতে পারে,মৃত্যু থেকে নয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here